মৃত্যু জানুক —আমি তো সেই রক্তের ভ্রুণ অনার্য পিতার!
দুঃসময়ের মুখে ব্রাশ ঢুকিয়ে ঘষে দাও ক্ষুধার্ত দাঁত—
আয়েশী ভঙ্গিতে চিবাক সে রাজহাঁস, পূর্ণিমার রাত।
পালাবে কোথায় বলো—কোন জাদুঘরে? রক্তাক্ত আঙুল—
খসে খসে পড়ে ইশারার ফল, সময় তো বেহায়া করাত!
অবিশ্বাসের ছুরি বিঁধে গেছে বুকে, দিনগুলি ঘাতকের;
কোন দিক তাকাবে, কার অভিমুখে? সবদিক অসুখের!
ঝড়গ্রস্ত তুমি, ক্ষুধাগ্রস্ত আমি, দ্বিধাগ্রস্ত কড়িডোর;
চলে যাওয়ার ফলকে তাকিয়ে এপিটাফ—সবদিক শূন্যের!
মরতে যখন শিখেছি তবে নিয়ে এসো বাদশাহী তলোয়ার,
নিয়ে এসো সেই উজ্জ্বল চাবুক—জল্লাদ¬—জানোয়ার;
আঘাতে কতলে ফুটুক রক্তজবা, আমারই মরণ থেকে
মৃত্যু জানুক—আমি তো সেই রক্তের ভ্রণ অনার্য পিতার!
নরোম রোদের গর্ভাশয়ে কার এত চিৎকার-ধুম,
যোনিপথ আজ কেনো এত আঁধার, কেনো এত নির্ঘুম;
একাকী গাছের জীবনী খসে কেনো পলেস্তরার ন্যায়,
আমি তো সেই বেহালাবাদক—চুমু আর কুমকুম!
নিদ্রা কি কোনো কাঁটা ছাড়া ফুল, কোনো তীব্রতা লঘু ঘ্রান?
এসো, শরিয়ত ভোলা বাতাসের লাহান বেহায়া ফরমান;
আমি তো সেই জাগরুক মাঝি, ভাঙা নৌকোর শীত,
জন্ম থেকে যে তোমাকেই চেনে—জলপাই ও জাফরান।
আমাদের চুমু সন্তরণশীল মাছ, দাও পরির দিঘিতে ঝাঁপ,
শরীর, সে তো কোনো এক কাফের, আদম ও হাওয়ার পাপ
বর্ষাকালের জীবনী হাঁটতে হাঁটতে দীর্ঘ হোক ভায়োলিন,
প্রেমের উপর নাজিল হোক ফের ঈশ্বরের অনুতাপ!
কথা নিয়ো না, কথা দেয়া যেন খেলাফি ঋণের কিস্তি;
রক্তক্ষরণ—ব্লেডবৃষ্টি—দৃশ্যত : যেন অভিশম্পাতের খিস্তি!
চলে যাওয়া কেবল চুমুগুলো প্রায় করাতের মতো কাটে,
অশ্রুর ভেতর চোখের কী অসুখ, নিদারুণ দগদগে স্থিতি!
চাঁদের স্তন ফেটে ফেটে ঝরে জোনাকির ঝিরঝির,
দরজা একা, জানালা একা, একা এই মন্দির-তীর;
মৃত্যুর মতো মহৎ ওষুধ কোনো ফার্মেসি বেঁচে না,
অর্চনা—উৎসবে বেড়ি পড়ানো, দুঃখরা জমে ক্ষীর!
রেজাউল ইসলাম হাসু
তরুণ সাহিত্যিক।
প্রকাশিত বই দুইটা।
এক. ওকাবোকা তেলাপোকা (২০১৬) -শিশুতোষ
দুই. এলিয়েনের দেশ পেরিয়ে (২০১৭)-শিশুতোষ।