নিঃস্বতা
অক্লান্ত নিঃস্বতায় রাত্রি বাড়ে
তবু,
মুমূর্ষু প্রভাত রেখায়
তেজস্বী কাব্যের পঙক্তি খুঁজি।
শ্রান্ত শিশিরের শব্দ থেমে গেলে
পড়শির পায়ে পায়ে
বসন্তের আবাহনে হেঁটে বেড়াই।
দীপ্যমান অজস্র মঞ্জরীতে
হৃদয়ের অচ্ছেদ্য অংশে বেণী বাঁধি,
যেখানে খুব্ধচিত্তে
অবিশ্রান্ত অতল স্পর্শ
সৃষ্টি করো তুমি।
যেদিন গৃষ্মের খরতাপে পুড়ছিলে খানিক,
শিমুলের শুভ্র দেহ দখিন হাওয়ায়
আকাশে স্বতস্ফূর্ত ভাসছিলো দল বেঁধে।
উড়ন্ত শালিকঠোঁট
যেনো চুম্বিত রামধনু!
এবারে বর্ষায় একটা কিছু হবে।
তাই কাশবনের পাশ ঘেঁষে
সারদীয়সুখ-দেখে নিজমুখ
নদীজলে হেলান দিয়ে।
গেঁয়োবধূর লজ্জা ভাঙ্গা নবান্নে
ধানের শরীরে লেপটে থাকা পিরিলির প্রলেপ
তোমার স্মৃতির মতো আমাকে
রসকাব্যে আটকে রাখে।
নিঃসঙ্গ নই বলেই
তোমার অশেষ নিষ্ঠুরতা,
যা থেকে উঠে আসে
স্বপ্ন আবিষ্ঠ শব্দ বিভাস।
____________________________
সুখসন্ধি
আর না ভেবে
বিকেলের উঞ্চতা নাও।
লেপের ভাঁজে
জমে থাকা হীম স্মৃতি,
এবার মঞ্চায়ন করুক
শীত-রোদের সরল সংলাপ॥
___________________________
ফোল্ডার
শুনছো?
দুধে জ্বাল দাও চুলো ভরে
টেস্ট হবে,
চায়ে চুমুক হাতে ফেসবুক
বেস্ট হবে।
এরপর, ধোঁয়ার কুন্ডলিতে উড়াবো
আমাদের যত বিষণ্নতা।
জারুল ফুলের গোলাপী ঢং, রং মেখে
সাজাবে তোমায় প্রজাপতিপাখা।
তুমি উড়ে উড়ে অদুরের তারা হয়ে
জ্বালবে মেঘমুক্ত আলো,
উষ্ণতায় ভরে দিবে মোবাইলের স্ক্রীন।
অতঃপর, আমাদের প্রেম,
স্রোতহীন নদীর জমাট শৈবালের মতো
জমে থাক ফেসবুক ফোল্ডারে।
_________________________________
ভ্রম
কতোদিন তোমাকে দেখিনি,
কেমন আছো তুমি?
আজ কিছু ভালো লাগছে না,
না লিখতে না পড়তে,
নিঃসঙ্গ বলেই কি প্রকৃতি এতোটা নিষ্ঠুর!
প্লীজ, লাইনটা কেটো না।
যেটুকু সময় ভোরের শিশির ঝুলে থাকে
দূর্বা ঘাসের ডগায়,
মাছদের রূপলি ঠোঁট চুষে খায়
নদীর লবণাক্ত জল,
এর থেকে বেশি সময় নেবো না।
জানো, মাঝে মাঝে খিপ্র গতির
বাতাস হতে ইচ্ছে করে,
ইচ্ছে করে, আঁৎকে উঠা দুঃস্বপ্ন ভেঙে
আধপাকা গমের শিষ থেকে
সূর্যের চুম নিয়ে
দু’হাত ভরে ছড়িয়ে দিই
অব্যক্ত যন্ত্রণার দায়ভার।
মধ্যাহৃের সূর্যে তাকিয়ে থাকার
তোমার কি চোখ আছে?
তুমি কি আমার কথা শুনতে পাচ্ছো?
কি করে শুনবে,
তোমার মোবাইল নম্বরতো আমার জানা নেই।
____________________________________
নির্বোধ
টাক মাথা নিয়ে
বেলতলায় বসে থাকা ছাড়া
আমার কোনো কাজ নেই।
_____________________________
বধূ বিরাগ
একটি হলুদ ব্যানার দেখে
তোমার কথা মনে পড়লো।
এইতো সেদিন,
হাসিদের উঠোন থেকে
ফিরে গেলে বৃষ্টি ভেজা বালিকা।
তোমার ভ্রুঁ চুয়ে ঝর ঝর ঝরছিলো
জলরক্ত।
তুমি চলে গেলে।
অথচ, তোমাকে পড়াবো বলে
একটি কামিজ এনেছিলাম।
গাঢ়-নীল বুকে কাঁচাহলুদের কাজ।
ভাঁজ খুলে যদি বলতে চন্দ্রমূখী-
সোনাদেহের মাপ জানে যুবরাজ।
শুনছি, তুমি না কি কামিজ ছেড়ে
শরীরে জড়াও শাড়ী? কার সাথে আঁড়ি?
আমি বদলাই নি,
আছি, যে লাউ সেই কদু।
আর তুমি এখন
সিরাজগঞ্জের বধূ।
______________
কবি
রংপুর