মুগ্ধতা ব্লাড ব্যাংকে আপনার দেওয়া তথ্য বাঁচাতে পারে একটি জীবন। আপনার তথ্য দিন, প্রয়োজনে রক্ত খুঁজুন এখানে।

আনোয়ার হোসেন আকাশ এর কবিতাগুলো

আনোয়ার হোসেন

১৫ মার্চ, ২০২২ , ১২:২৪ অপরাহ্ণ

আনোয়ার হোসেন আকাশ এর কবিতাগুলো

নিঃস্বতা

অক্লান্ত নিঃস্বতায় রাত্রি বাড়ে

তবু,

মুমূর্ষু প্রভাত রেখায়

তেজস্বী কাব্যের পঙক্তি খুঁজি।

শ্রান্ত শিশিরের শব্দ থেমে গেলে

পড়শির পায়ে পায়ে

বসন্তের আবাহনে হেঁটে বেড়াই।

দীপ্যমান অজস্র মঞ্জরীতে

হৃদয়ের অচ্ছেদ্য অংশে বেণী বাঁধি,

যেখানে খুব্ধচিত্তে

অবিশ্রান্ত অতল স্পর্শ

সৃষ্টি করো তুমি।

যেদিন গৃষ্মের খরতাপে পুড়ছিলে খানিক,

শিমুলের শুভ্র দেহ দখিন হাওয়ায়

আকাশে স্বতস্ফূর্ত ভাসছিলো দল বেঁধে।

উড়ন্ত শালিকঠোঁট

যেনো চুম্বিত রামধনু!

এবারে বর্ষায় একটা কিছু হবে।

তাই কাশবনের পাশ ঘেঁষে

সারদীয়সুখ-দেখে নিজমুখ

নদীজলে হেলান দিয়ে।

গেঁয়োবধূর লজ্জা ভাঙ্গা নবান্নে

ধানের শরীরে লেপটে থাকা পিরিলির প্রলেপ

তোমার স্মৃতির মতো আমাকে

রসকাব্যে আটকে রাখে।

নিঃসঙ্গ নই বলেই

তোমার অশেষ নিষ্ঠুরতা,

যা থেকে উঠে আসে

স্বপ্ন আবিষ্ঠ শব্দ বিভাস।

____________________________

সুখসন্ধি

আর না ভেবে

বিকেলের উঞ্চতা নাও।

লেপের ভাঁজে 

জমে থাকা হীম স্মৃতি,

এবার মঞ্চায়ন করুক

শীত-রোদের সরল সংলাপ॥

___________________________

ফোল্ডার

শুনছো?

দুধে জ্বাল দাও চুলো ভরে

টেস্ট হবে,

চায়ে চুমুক হাতে ফেসবুক

বেস্ট হবে।

এরপর, ধোঁয়ার কুন্ডলিতে উড়াবো

আমাদের যত বিষণ্নতা।

জারুল ফুলের গোলাপী ঢং, রং মেখে

সাজাবে তোমায় প্রজাপতিপাখা।

তুমি উড়ে উড়ে অদুরের তারা হয়ে

জ্বালবে মেঘমুক্ত আলো,

উষ্ণতায় ভরে দিবে মোবাইলের স্ক্রীন।

অতঃপর, আমাদের প্রেম,

স্রোতহীন নদীর জমাট শৈবালের মতো

জমে থাক ফেসবুক ফোল্ডারে।

_________________________________

ভ্রম

কতোদিন তোমাকে দেখিনি, 

কেমন আছো তুমি?

আজ কিছু ভালো লাগছে না,

না লিখতে না পড়তে, 

নিঃসঙ্গ বলেই কি প্রকৃতি এতোটা নিষ্ঠুর!

প্লীজ, লাইনটা কেটো না।

যেটুকু সময় ভোরের শিশির ঝুলে থাকে 

দূর্বা ঘাসের ডগায়, 

মাছদের রূপলি ঠোঁট চুষে খায়

নদীর লবণাক্ত জল,

এর থেকে বেশি সময় নেবো না।

জানো, মাঝে মাঝে খিপ্র গতির

বাতাস হতে ইচ্ছে করে,

ইচ্ছে করে, আঁৎকে উঠা দুঃস্বপ্ন ভেঙে

আধপাকা গমের শিষ থেকে

সূর্যের চুম নিয়ে

দু’হাত ভরে ছড়িয়ে দিই

অব্যক্ত যন্ত্রণার দায়ভার।

মধ্যাহৃের সূর্যে তাকিয়ে থাকার 

তোমার কি চোখ আছে?

তুমি কি আমার কথা শুনতে পাচ্ছো?

কি করে শুনবে,

তোমার মোবাইল নম্বরতো আমার জানা নেই।

____________________________________

নির্বোধ

টাক মাথা নিয়ে

বেলতলায় বসে থাকা ছাড়া

আমার কোনো কাজ নেই।

_____________________________

বধূ বিরাগ

একটি হলুদ ব্যানার দেখে

তোমার কথা মনে পড়লো।

এইতো সেদিন,

হাসিদের উঠোন থেকে

ফিরে গেলে বৃষ্টি ভেজা বালিকা।

তোমার ভ্রুঁ চুয়ে ঝর ঝর ঝরছিলো

জলরক্ত।

তুমি চলে গেলে।

অথচ, তোমাকে পড়াবো বলে

একটি কামিজ এনেছিলাম।

গাঢ়-নীল বুকে কাঁচাহলুদের কাজ।

ভাঁজ খুলে যদি বলতে চন্দ্রমূখী-

সোনাদেহের মাপ জানে যুবরাজ।

শুনছি, তুমি না কি কামিজ ছেড়ে

শরীরে জড়াও শাড়ী? কার সাথে আঁড়ি?

আমি বদলাই নি,

আছি, যে লাউ সেই কদু।

আর তুমি এখন

সিরাজগঞ্জের বধূ।

______________

কবি

রংপুর

আনোয়ার হোসেন
Latest posts by আনোয়ার হোসেন (see all)