মুগ্ধতা ব্লাড ব্যাংকে আপনার দেওয়া তথ্য বাঁচাতে পারে একটি জীবন। আপনার তথ্য দিন, প্রয়োজনে রক্ত খুঁজুন এখানে।

আফতাব ভাই লেখাগুলো পড়বেনতো?

রবীন জাকারিয়া

২৪ নভেম্বর, ২০২২ , ১২:২৪ অপরাহ্ণ

আফতাব ভাই লেখাগুলো পড়বেনতো? রবীন জাকারিয়া

আফতাব ভাই সম্পর্কে কিছু বলার পূর্বে আমার নিজের সম্পর্কে একটু না বললে পাঠ করতে ছন্দ পতন ঘটবে৷ কেননা উল্লেখ করবার মতো আমার তেমন কোন খ্যাতি নেই৷

আমি ছোটবেলা থেকে টুকটাক লেখালেখি করতাম৷ সেগুলো কখনো পাড়ার লিটল ম্যাগাজিনে কিংবা রংপুরের আঞ্চলিক পত্রিকায়৷ ব্যাস! এতটুকুই৷ সেটাও নব্বইয়ের দশকে৷

যেহেতু আমার বাড়ি মুনসিপাড়ায় এবং সর্বদা কাচারি বাজারে আড্ডা মারতাম৷ তাই রংপুর শহরের সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক, মিডিয়া ব্যক্তি থেকে শুরু হালের উদীয়মান মস্তানদের সাথে খুব গভীর না হলেও হাই-হ্যালো সম্পর্ক ছিল৷ যার কারনে সাংবাদিক আফতাব ভাইকে চিনতাম৷

এরপর পেশাগত কারনে প্রায় পঁচিশ বছর দেশের বিভিন্ন এলাকায় থাকার কারনে নতুন জেনারেশন এমনকি পাড়ার ছেলেরাও আমাকে মনে করতো ভাড়াটে৷ হয়ে গেলাম ছিন্নমূল৷

এই দীর্ঘসময়ে বাহিরে থাকলেও অবসরে লেখালেখিটা চালিয়ে গিয়েছি৷ হয়তো প্রকাশিত হয়নি৷ তবে ল্যাপটপে সংরক্ষণ করতাম৷

বাসার পাশেই নর্থ ব্রিজ নামে একটা আধুনিক স্কুল প্রতিষ্ঠার সংবাদ শুনে আমাদের ছেলে-মেয়েকে সেখানে ভর্তি করাই৷ ওখানেই পরিচয় ঘটে জাকির ভাই ও আদিল ভাইয়ের সাথে৷ তাঁরা দু’জনে শহরের পরিচিত লেখক৷ ওঁদের অনুরোধে আমি আমার লেখাগুলো পাতাপ্রকাশে পাঠালে নিয়মিত জমিয়ে রাখা কবিতা, ছড়া, গল্প লেখাগুলো প্রকাশিত হতে থাকে৷ উপলদ্ধি হয় প্রযুক্তির সীমানাহীন অগ্রযাত্রা৷ এরপর মুগ্ধতা ডট কম, বায়ান্নর আলো, ফিরেদেখাসহ দেশে এবং ভারতের বিভিন্ন অনলাইন পত্রিকা আর যৌথ কাব্যগ্রন্থ, গল্পগ্রন্থ প্রকাশিত হয়৷ বলা যায় পাতা প্রকাশের কল্যাণে আমার নতুন করে লেখক স্বত্ত্বা জেগে উঠে৷

এই সময়ে হঠাৎ করোনা’র প্রাদুর্ভাবে বাসা থেকে ভার্চুয়াল অফিস করবার অনুমতি আমাকে আরো বেশি সাহিত্য লেভেলে সংযুক্ত করবার পথ সুগম করে৷ এই সময়ে আমার সুযোগ হয় রংপুরের বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক ব্যক্তিদের কাছাকাছি আসবার৷ ফলে লেখক, সাংবাদিক আফতাব ভাইয়ের সাথে একটু সখ্যতা তৈরি হয়৷ দেখা হয়৷ কথা হয়৷ উপদেশ দেন৷ শুনি৷ ভালো লাগে৷ নিজেকে ভাঙ্গি৷ গড়তে থাকি নতুন করে৷

মনে পরে কবি ও প্রকাশক সাকিল মাসুদ ভাইয়ের ‘ফিরেদেখা’র আয়োজনে বাংলাদেশ-ভারত যৌথ সাহিত্য আসর অনুষ্ঠিত হয়৷ সেখানে কেউ একজন আমাকে পরিচিত করে দিচ্ছিলেন৷ আফতাব ভাই ওনাকে থামিয়ে বললেন, “আমি ওকে চিনি৷ ওর লেখায় মৌলিকত্ব আছে৷” পরে আমাকে কাছে টেনে বললেন “তুমি লিখে যাও৷ ভালো-মন্দ সেটা পরে বিবেচনা করবে না৷ লিখতে লিখতেই একদিন আরো ভালো কিছু হবে৷ সেদিনের জন্য আমি অপেক্ষায় থাকবো৷” আমাকে দারুণভাবে উজ্জীবিত করেছিল ওনার কথাগুলো৷ একটা ভালো লেখার জন্য এখন আমি প্রতিনিয়ত লিখি৷ স্বপ্ন হলো একটা ভালো লেখা যেন আফতাব ভাইকে দেখাতে পারি৷

আমি আপনার কথা রেখেছি৷ কিন্ত আপনি রাখলেন না৷ আফতাব ভাই লেখাগুলো পড়বেনতো? কার সাথে কিংবা কোন অভিমানে এমন করে হঠাৎ চলে গেলেন?

এখন কে বলবে, “তুমি লিখে যাও৷ ভালো-মন্দ সেটা পরে বিবেচনা করবে৷”

ওপাড়ে ভালো থাকুন আফতাব ভাই৷

(১৭ নভেম্বর আফতাব ভাইয়ের জন্মদিন উপলক্ষে)

(লেখক কর্তৃক আপলোডকৃত। অসম্পাদিত)

রবীন জাকারিয়া
Latest posts by রবীন জাকারিয়া (see all)