১.
উত্তর পত্র
আমার একটা অন্যায় খামের ভিতর
ডাকপিওনের ব্যাগে ঝুলতে ঝুলতে যাচ্ছে;
১০/১১ হাবিবুল্লাহ স্ট্রিট, রাজধানী __
নিজেকে অপেক্ষার শেকলে বাঁধলাম,
লাম বলে মীম’এ যাওয়ার সাথে সাথেই শেকলে জং ধরে গেলো।
তবুও কোনো কবুতরের ডানা-
আমার বাড়ির দিকে ঝাপটায়নি আজ পর্যন্ত।
২.
বিচ্ছেদের কোনো দু’আ থাকলে
আমাদের কোনো কথা ছিল না
কাগজে কলম শুয়ে থাকতো__
আমি শব্দহীন ঠোঁট নড়াতাম,
সক্কাল সন্ধ্যা তুমি রেলিংয়ে মুখ ঝুলিয়ে রাখো
হাওয়া তোমাকে চিনে ফেললেই বইতে শুরু করে
তুমি মক্কার দিকে মুখ ঘুরিয়ে নিতে।
মুয়াজ্জিন তোমার কানে আযান পৌঁছে দিলে
তুমি সিজদায় খোদার সাথে কথা বলতে,
আমি দূর থেকে আমিন বলতাম।
তারপর থেকে__
আমাদের এখন আর কোনো কথাই হয় না।
৩.
মনগড়া কবিতা
টেবিলে আঙুল ঠকঠকিয়ে অপেক্ষা গুণন করার পর
কেনো যেনো তুমি ভাগ হয়ে যাও__
ছাদ পেটা ঘরে ঝুলে থাকা সিলিংফ্যানে টলছে
তোমার জন্য লেখা মনগড়া কবিতার কোলাজ।
আজ তুমি নেই,
মনে হয়
দূর কোনো গলির পথে অচেনা ফেরিওয়ালার ঠোঁট।
আমার ঘরের
খুলে রাখা জানালা’র পাঁজর দিয়ে নক্ষত্রের নীড় দেখে
খাঁচায় বন্দী হয়ে থাকা জোড়া কোয়েল
চেঁচিয়ে যাচ্ছে রাতের কানের কাছে;
প্রেম হোক সবার মুক্তির পথ, হে জেলার মুক্তি দাও।
৪.
হাবিবুন নাজিরা
আম্মার মুখটা নরম মাটির আঁচড়ে আঁকা
আমার শেষ ঠিকানা;
তার চোখ জুড়ে বাছুর ছানার দুরন্ত শৈশব
চুল মেঘলা আকাশে ঢেকে যাওয়া বর্ষাকাল
ঠোঁটে ঘাসের গায়ে জন্ম নেওয়া শিশিরের ফুল
হাতের তালুতে পুকুরের চঞ্চল ঢেউয়ের রেখা
কপালে যেন কৃষকের সোনালি ধানের ক্ষেত
গায়ে যেন জড়িয়ে নিয়েছেন পূর্ণিমার চাদর
পায়ের কদমে কেঁপে ওঠা আমার হৃদ স্পন্দন
আঁচলের গিটে ঝনঝন করা বুধবারের নয়ার হাট
হাঁটু গেড়ে বসা মুনাজাতের অক্ষর, পশ্চিম মুখ
এসব কিছু জড়োসড়ো করে আম্মা
শীতল পাটির মতো
কোল বিছিয়ে বসে থাকা সরল ছায়াবৃক্ষ।