ছেলেবেলায় লেখা প্রথম কবিতাবলির খাতার বদলে কোনো এক শীতে কটকটি কিনে দিয়েছিলাম ছেলেকে। তারপর তিন শ পয়ষট্টি রাত নির্ঘুম কেটে গেছে। তারপর তিনশ পয়ষট্টি ভোর কোনো একটা কবিতার সাথেও সাক্ষাৎ হয় নি। তারপর তিন শ পয়ষট্টি দিন সেই কটকটিআলাকে খুঁজতে খুঁজতে সংখ্যাতীত এপ্রিল হেঁটেছি।
হাঁটতে হাঁটতে কোনো এক এপ্রিলের কড়িডোরে কোনো এক অন্ধ বেহালাবাদকের সাথে সাক্ষাৎ হলে জানা যায়- ওই খাতার কবিতাবলিতে তিনি তার ছলেবেলাকার ঘ্রান খুঁজে পেয়েছিলেন বলে খাতাটি কারো কাছে বিক্রি না করে তার পুরনো ট্রাঙ্কে সংরক্ষণ করেছিলেন।
আর মাঝে মাঝে তুমুল বৃষ্টি নেমে এলে ট্রাঙ্ক থেকে বের করে একটি করে কবিতা শুনতেন কনিষ্ঠ ছেলের কাছে। এবং শাদা মেঘের রেইন কোট পড়ে উনি যেদিন গৃহত্যাগ করে বেড়িয়ে পড়ছিলেন বেগানা বর্ষার সন্ধানে কোনো এক অনন্তর অভিমুখে—সেদিনও শুনেছিলেন।
অবশেষ—সেই কটকটিআলাও ছেলেবেলার মতো কবিতায় ঢুকে হয়ে গেলো আরেক দীর্ঘশ্বাস…
ভূগোল
ভূগোল পরীক্ষা দিতে যাচ্ছি মানুষের ছাঁচ থেকে উঠে আসা কোনো এক মানুষ।
সেই কখন থেকে নবীনগর—নবীনগর বলে স্বরগ্রাম ফাটিয়ে ক্লান্ত-ক্লেদাক্ত কোনো এক বালকের ভূগোল।
যার দুঃখের ভূগোলে কোন এক মা ডালভাতের স্বপ্ন সেলাই করতে করতে চোখের অসুখে ভুগছেন সুদীর্ঘকাল। আর কোন এক অন্ধ বাবা বিড়ির আগুনে পুড়িয়ে যাচ্ছেন ফেলে আসা পৃথিবীর অসুখ।
আমি আধুনিক থলে থেকে ভূগোল বই বের করে সেই ক্লান্ত বালক, অন্ধ বাবা আর দুঃখিনী মাকে খুঁজি কী আশ্চার্য! কোথাও ওদের কোনো কথা লেখা নেই।
এই অভিমানে পরীক্ষা না দিয়ে ঘরে ফিরলে আমি আদৌ ভূগোল পরীক্ষায় পাশ করতে পারি নি….
রেজাউল ইসলাম হাসু
তরুণ সাহিত্যিক, রংপুর।
এই লেখাটি #মুগ্ধতা_সাহিত্য প্রতিযোগিতার অন্তর্ভুক্ত। প্রতিযোগিতার নিয়ম জানতে ক্লিক করুন এখানে