কাজল কালো কেশের ঢেউ
দোলে মৃদু হাওয়ায়,
পদ্মনীল আঁখিতে কী এক অপরূপ মায়া
জড়িয়ে রয়;
বাউল মন সবিস্ময়ে করে ভ্রম আবার! কদমতলে
কাজরীর নেশায় হয়ে বিদ্ধ ছোটে
রুদ্ধদ্বারে তোমার!
জৈবনিক যাতনার আঘাতে ক্লিষ্ট
প্রতিনিয়ত চলে লড়াই,
বাঁচার, সর্পের দংশনও লাগে অতি সামান্য
তোমার মৃদু হাস্যেই যখন
তন্ময় হয়ে রই।
অনুকম্পার ঝর্ণাধারায় সিক্ত করেছ অনেক
পেয়েছি সান্ত্বনা হয়েছি তৃপ্ত,
অবুঝের মতো-
খুশি হয়েছি প্রতিনিয়ত, ভেঙে হৃদয়
যতবারই ডেকেছ পাশে; ছুটেছি অক্লেশে!
তোমার মোহময় আশ্লেষে আশ্বস্ত
হয়েছি শতবার,
নির্দ্বিধায় ভেঙেছি পাহাড় সমুদ্র
আকাশ বাড়ি ঘর
নিশ্চিন্ত নিরাপদ আশ্রয় আমার!
তবুও অসীম তোমার দাক্ষিণ্য
আমার এ ভৃঙ্গার রেখে অপূর্ণ;
রাশি রাশি অমৃত করো পান,
শয়তান-
বলে কি ডাকো এখনো আমায়!
তোমার হৃদয়-মন্দিরে কি নামেনি
হাহাকার?
সবাই বলে পৃথিবী নাকি গোলাকার
অনেকটা কমলালেবুর মতো,
তাই সবকিছুই ফিরে ফিরে আসে।
কিন্তু আমার তো মনে হয় চতুর্ভুজ, আয়তক্ষেত্র, বর্গক্ষেত্র
যতরকম কোণবিশিষ্ট আকৃতি আছে,
সেরকম কিছু একটা হবে।
যদি বৃত্তাকারই হবে, তাহলে সবকিছু ফিরে
আসে কই? ফাগুনের মোহনীয় সুবাসের
মতো কিংবা শরতের শুভ্র কাশফুলের
ছোঁয়ার মতো –
তোমার দেখা পাই কই?
শুধুই অবাক বিস্ময়ে চেয়ে দেখি-
বিমর্ষ সময়ের বিষমাখা তীরগুলো করে
আঘাত প্রতিটি ক্ষণ-
শরীরে আমার।
বিষের প্রভাবে নীলবর্ণ আমি, আর
হৃদয়ের ক্রমাগত রক্তক্ষরণ আমায় করে তোলে
নিতান্তই শ্রীহীন মৃতপ্রায়।
পৃথিবীর আকার সম্বন্ধীয় বৈজ্ঞানিক তত্ত্বটি
কি তবে ভুল?
উত্তর আর দক্ষিণ মেরুর মতোই
ধরণীর দু’প্রান্তে আজীবন পড়ে থাকাই কি
নিয়তি দুজনার!