এটা খুবই স্বাভাবিক একটি প্রশ্ন যে, করোনা ভাইরাস আতঙ্কের সময়ে যখন মানুষ দিনের পর দিন ঘরের ভেতর সময় কাটাচ্ছেন তারা সঙ্গীর সাথে যৌন সংসর্গে যেতে পারবেন কি না। এর উত্তর গুগলে শত শতবার খোঁজা হচ্ছে। বাংলায় কিছু আধা চটি পত্রিকা এ সম্পর্কে রগরগে ছবি দিয়ে কেউ বলছে পারবেন কেউ বলছে পারবেন না।
কিন্তু এ ব্যাপারে বিশেষজ্ঞ মতামত আসলে কী? মুগ্ধতা ডট কমের পক্ষ থেকে পাঠকের সুবিধার্থে এর উত্তর দুই ভাবে সাজিয়ে লেখা যায়:
এর উত্তর হলো, আপনারা দুজনেই কমপক্ষে দুই সপ্তাহ পরিপূর্ণ হোম কোয়ারান্টাইনে ছিলেন, বাইরে একবারও যান নি, বাইরের কেউ একবারও আপনাদের কারও সংস্পর্শে আসে নি কিংবা বাইরে থেকে আসা ব্যক্তির সংস্পর্শে থাকা ব্যক্তির সংস্পর্শে আসেন নি এবং এই সময় পর্যন্ত আপনারা কেউ সর্দি, কাশি, জ্বর, শ্বাসকষ্ট বা এ জাতীয় উপসর্গে ভোগেন নি- তাহলে আপনারা দুই সপ্তাহ পর যৌন সংসর্গ বা সহবাসের জন্য নিরাপদ।
এর উত্তর হলো, এক নম্বর প্রশ্নের উত্তরের কোন ব্যতিক্রম বা নড়াচড়া হলে আপনাদের জন্য এখন যৌন মিলন অনিরাপদ। এর কারণ হলো:
ক. সর্দি, কাশি থেকে নিঃসৃত ড্রপলেট ভাইরাস ছড়ায়।
খ. মুখের লালা, রস ইত্যাদি থেকে ভাইরাস ছড়ায়।
গ. আপনার হাত সঙ্গীর মুখে পড়লে সেখান থেকে ভাইরাস সংক্রমিত হতে পারে।
ঘ. মোট কথা, করোনা ভাইরাস ছড়ানো রোধে যে সামাজিক দূরত্বের কথা বলা হচ্ছে, আপনার সহবাসের দ্বারা সেই শর্ত লঙ্ঘিত হচ্ছে। কাজেই আপনারা এখন অনিরাপদ।
ফোর্বস সাময়িকী এ প্রসঙ্গে একটি মজার বিষয়ের অবতারণা করেছে তা হলো, আপনার যৌন মিলনের মাধ্যমে যে শুক্রাণু-ডিম্বাণুর মিলন হচ্ছে তাতে ভাইরাস ছড়ায় না। কিন্তু চুমুরস বা লালার মাধ্যমে ছড়ায়। তাহলে আপনি কি তিন ফুট দূরে থেকে চুমু বিনিময় না করে সহবাস করতে পারবেন? যদি পারেন তাহলে আপনি নিরাপদ!
এ কথা বলা যায় যে, কোভিড-১৯ একটি ভয়ংকর রকমের চরিত্র পাল্টে ফেলতে সক্ষম ভাইরাস, কাজেই এর সম্পর্কে অনেক কিছুই এখনও চূড়ান্তভাবে বলা যায় না। গবেষকেরা এখনও এর চরিত্র সম্পর্কে পরস্পরবিরোধী বা স্ববিরোধী কথা বলছেন এর এই বৈশিষ্টের কারণেই। সুতরাং সাবধান থাকতে দোষ কী! কিছুদিন না হয় ধৈর্য ধারণ করলেন।
তথ্য সহায়তা :
দ্যা নিউইয়র্ক টাইমস, দ্যা ফোর্বস, নিউইয়র্ক সিটি হেল্থ গাইডলাইন।