করোনাকালে কৈশোরকালে যত্ন অতি প্রয়োজন। কারণ আমরা জানি কৈশোরকাল একটা ঝুঁকির মধ্যে থাকে। এই সময়টা আপনার সন্তান চঞ্চল হয়ে থাকে। ১০ থেকে ১৮ পর্যন্ত আমরা কৈশোরকাল বলি। এমন বয়সে সন্তানরা একটু স্বাধীন থাকতে পছন্দ করে। বিশেষ করে বয়:সন্ধিকালে। তাঁদের আচরণ পরিবর্তন হয়। গলার স্বর পরিবর্তন হতে থাকে। শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন আসে।
একটি উদাহারণ দিই। ক্লাশ সেভেনে পড়ে ছেলে। মা একদিন জানতে পারলো তার ছেলে নিয়মিত সিগারেট খায়। তার সাথে আরো বন্ধুরা।এ নিয়ে মায়ের হৈ চৈ। সন্তানকে মারপিট। সমাধান এভাবে করবেন না। এর জন্য এখন বেশী বেশী সময় দিন আপনি মা বাবা ওর আসল বন্ধু সন্তানকে বোঝান
নতুন কিছুর প্রতি আগ্রহ বেশীই থাকে।
এই বয়সটাই এমন।বর্তমান সময়ে অনেকের আছে মোবাইল। গেমে আসক্তি। সুযোগ পেলেই গেমে ডুবে যাচ্ছে। এতো গেলো আচরণের দিক বেশীরভাগ খেতে চায় না। খাওয়াতে অরুচি। কেউবা সারাক্ষণ বাইরে খেলতে পছন্দ করে। ঘুম কম।
কিশোরীদের বড় সমস্যা হয় তারা প্রিয়ড সময়টা মেনে নিতে পারেনা। এ সময়টা অবসন্ন থাকে।খাবারের রুচি থাকে না। শরীর দুর্বল হয়ে যায়।মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়।
সবচেয়ে বড় সমস্যা এই বয়সে কারো উপদেশ বা শাসন একদম মেনে নিতে চায় না।
এই যে দীর্ঘ ছুটির সময় চলছে ওরা বাসায় হাঁপিয়ে গেছে কারণ এভাবে ওরা অভ্যস্ত নয়। অনেকের মধ্যে স্বাভাবিক আচরণ নাও থাকতে পারে। ভয় পাবার কিছু নেই।
ছুটির এই সময়টাতে আপনি বাবা মা আপনারা ওদের সময় দিন।
ঘরোয়া খেলাগুলো যে গুলো ওরা খেলবার সময় পায়নি এখন ওদের নিয়ে বসে পরেন খেলতে লুডু,কেরাম, কিংবা ধরাধরি মানে সাধারণ জ্ঞানের প্রশ্ন করা উত্তর দেয়া। বাসায় গানের আসর করেন। যারা গান গায় বা শেখে তাঁদের রেয়াজের উৎসাহ দেন। টিভিতে ক্লাশ হচ্ছে ক্লাশ করতে বসিয়ে দেন এবং মনোযোগী হবার পরিবেশ তৈরী করে দেন। ধর্মানুযায়ী প্রার্থনা করতে উৎসাহ দেন। গল্পের ছলে খারাপ দিকগুলো প্রকাশ করুন।ভালো কাজের প্রসংশা করবেন।
পরিবারে টুকিটাকি কাজগুলো করতে শেখান। ছেলেমেয়ের কাজের ভেদাভেদ রাখবেন না। ছেলেকে এক আধটু চা বানানো কিংবা ডিম ভাজা করতে দিন ঘরটাও পরিস্কার করবে। মেয়েও কাপড় পরিস্কার রান্না শেখা সহযোগীতা করা, ফুলের টবে পানি দেয়া। ছেলেমেয়ে কাজের কোন ভেদাভেদ না রেখে বাসাটা জীবানুনাশক দিয়ে পরিস্কার করালেন ফার্নিচারের পরিস্কারের কাজটাও দিলেন। এও বলবেন ওয়াসরুমটাও পরিস্কার করতে পারে। সবটাই কমান্ড করে নয় আপনার হেল্প হবে এমনভাবে এবং কাজ শিখবে সেভাবে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।
যারা একক পরিবারে বসবাস করেন অনেকদিন নানা দাদা মামা চাচা ফুফু খালা বা আরো আত্মিয় স্বজনদের সাথে অনেকদিন যোগাযোগ হয়নি সন্তানদের সাথে এখন সময় আছে সবার খোজ খবর নিলো সবার সাথে কথা বললো সুযোগ থাকলে ভিডিও কলে কথা বললো। এতে বন্ধনটা আরও সুদৃঢ় হলো আত্মিয় স্বজনদের সাথে।
কিশোর কিশোরীদের দুরন্ত এ বয়সে নানা রকম অনিয়মের কারণ হয়ে যায়। দেখা যায় অপুষ্টি, কাশি,রক্ত স্বল্পতা, নিউমোনিয়া, ঠাণ্ডাজ্বর, জন্ডিস, ডায়রিয়া, দূর্বল, মাথাব্যথা, জ্বর এগুলো ছাড়াও আরও অন্যান্য সমস্যা দেখা দিতে পারে।যেহেতু এখন যতটা কম বাইরে যাওয়া যায় ততোই ভালো তাই প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
এই বয়সে ওরা বেশী অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয় হয়ে থাকে। কাজের ফাঁকে ফাঁকে গল্প করবেন বাল্যবিয়ে বা কিশোরী মাতৃত্বের কুফল। এই বয়সে যেহেতু খেতে চায়না তাই বিভিন্ন ধরণের পুষ্টিকর ও সুষম খাবার খেতে হয় বলবেন এবং দিবেন। এবং পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা হাইজিন প্যাড ব্যবহারে উৎসাহিত করুন।বয়:সন্ধিকালিন পরিবর্তন খুব স্বাভাবিক বোঝাবেন।