. .. ‘তুমি রোজ যে ভাষায় প্রেম নিবেদন করো আমায়
এই কর্পোরেট জীবনে প্রযুক্তির ছড়াছড়িতেও
প্রতি বৃহস্পতিবার পুষ্প পাপড়ি সমেত পত্র লিখ
লাল কাগজে যে ভাষায়
সেই ভাষার জন্য একটি কবিতা লিখবে সেই ভাষায়।’
গত বিকেলে এই আবদার করে বসে
এক একুশ বছর বয়সী বাঙালি নারী।
ক্যাম্পাসে হাঁটতে হাঁটতে কণ্ঠে ঝড় তুলে,
—‘যদি না পাই তবে আজীবন আড়ি!’
মন পৃষ্ঠায় নিভৃতে একা কবিতা সাজাই—
আমি ভাবি, স্মৃতিরা ভেবে যায়—
চোখ বুজে আওড়াই পাঠ্যজ্ঞানজাত ইতিহাস—
বায়ান্ন এর বায়ান্নতম দিবসের সেই প্রহর
সালাম-রফিক-বরকত-জব্বার
কবিতার কম্পিত কলামে হাতে-হাতে প্ল্যাকার্ড ধরাই
প্রতি লাইনজুড়ে লাল কালিতে লিখে যাই,
—‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’
রাস্তার পাশে জীর্ণ দেয়ালে হিন্দি সিনেমার পোস্টার।
মুহূর্তের ভাবনা চকিতে থমকে যায়!
কৃতজ্ঞতা—
একুশ-বায়ান্ন
সালাম-রফিক-বরকত-জব্বার
বাঙালি-বাংলা
স্বর্ণোজ্জ্বল অমর ইতিহাস।
অতঃপর আমি সব—সব ভুলে যাই।
ক্ষমা করো হে একুশ বছর বয়সী নারী
একুশের প্রতি প্রতারণা আমি কীরূপে পারি!
আমার সব কবিতা উচ্ছন্নে যাক
যতদিন না থামবে পরদেশি ভাষার উৎপাত।