মুগ্ধতা ব্লাড ব্যাংকে আপনার দেওয়া তথ্য বাঁচাতে পারে একটি জীবন। আপনার তথ্য দিন, প্রয়োজনে রক্ত খুঁজুন এখানে।

চিঠি

লাদেন মোড়ল নজির

৭ জানুয়ারি, ২০২৩ , ১:৪৭ অপরাহ্ণ

চিঠি

প্রিয় কবিসাব,

প্রথমেই সালাম ও শরতের শিউলির শুভেচ্ছা নিবেদন করলাম। 

অর্ধ- ভাঙ্গা হৃদয় নিয়ে আমি আবারও আপনার কদমে হাজির! এতে হয়তো আপনি বিস্মিত! বিশ্বাস করুন- আপনার মুখে সেদিন “ভুলে যাও” কথাটি শ্রবণমাত্রই যেন বিনা মেঘের বজ্রপাতে আমার মস্তক খন্ড-বিখন্ড হয়ে গিয়েছিল। কী ভুল হয়েছে আমার? নিজেকে প্রশ্ন করেছি বারবার। কিন্তু কোনো উত্তর না পেয়ে শুধু পেয়েছি স্মৃতি দগ্ধ জালা, অগ্নিস্রোতে ভাসিয়ে দিয়েছি কত স্মৃতির ঢালা। নিরীহ নেত্রের প্রতিটি অশ্রুকণা প্রতিনিয়ত শুধায়- ” আর কত পোড়াবে আমায়.? আমিও তো একটা মানুষ নাকি!” 

বিশ্বাস করুন, ঐ বসন্তে যখন আপনার পিতার দেওয়া নীল শাড়িটি উপহার পেয়েছিলাম তখনই প্রথম ভাবির মুখে শুনেছিলাম আপনার নামটি। অতঃপর সাধনা- আপনাকে একবার দেখব। প্রায় দেড় বছর সাধনার পর শ্রাবণের এক নিরাক পড়া প্রকৃতির উত্তপ্ত রৌদ্রশিখায় আপনার জলন্ত লাবণ্য দর্শনে আমি আপনাকে মনের মানুষ ভেবেছিলাম। পড়েও ছিলাম আপনার লেখা কয়েকখানা কবিতা। এরপর থেকে এমন কোনো রাত নেই, যে রাতে আপনার বইয়ের কবিতা আমি পড়িনি! প্রথম সাক্ষাতে আপনি আমাকে ‘বিজয়িনী’ নাম দিয়ে বলেছিলেন- “শোনো, বিজয়িনী, তুমিই হয়তো আমার কবিতার শব্দমালা। কারণ, তোমার অনুপস্থিতিতে আমার কবিতারা শব্দহীনতায় আক্রান্ত হয়ে নিষ্প্রাণ হয়ে যায়! আর নিষ্প্রাণ মানেই তো অস্তিত্বহীন আর আমার কবিতার অস্তিত্বহীনতা মানেই তো আমি এক প্রকারের জিন্দা লাশ! “

এভাবে ভালোবাসা এত গভীরতার পরেও বেলাশেষে ফ্যামিলির চাপে আমার হাতটি ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন!

তবুও আমি বিশ্বাস করি, আপনি কবি! আপনি চাইলে সাধনা আর তপস্যা দ্বারা পাথরকে ফুলরূপে ফোটাতে সক্ষম! শুনুন,আজকে আমি আগের মতো ভালোবাসা চাইতে আসিনি, কারণ আমি জানি আমার ক্ষেত্রে আপনার ভালোবাসা পাওয়ার স্বপ্ন দেখা আর বামন হয়ে চন্দ্র পাওয়ার স্বপ্ন দেখা সমান কথা! আপনি আমাকে চেনেন হয়তো বেশিদিন হয়নি, তবে আমি আপনাকে দু’বছর ধরে চিনি। এ যেন দুই শতাব্দীর সাধনা! 

আজ হয়তো আপনার প্রশ্ন যে, আমাকে আপনি চান না! এমতাবস্থায় আপনাকে আমি ভুলে যাই না কেন? প্রত্যুত্তরে বলব- আপনি তো এক অনন্য ব্যাক্তিত্ব, কবি মানুষ। তাই আজ থেকে দুবছর পূর্বে রোপণকৃত একটা শেফার্ডস বৃক্ষকে আপনি অনুভূতির নেত্র দ্বারা দর্শন করিয়েন, ঐ বৃক্ষটির গজানো শাখা-প্রশাখা ও শিকড়ের গভীরতা নিয়ে একটু ভাবিয়েন। কোনো বিপদশঙ্কুল সরঞ্জাম ছাড়া ঐ বৃক্ষটিকে এক টান মেরে উপরে ফেলতে পারেন কিনা চেষ্টা করে দেখবেন।

যদি সফল হন তাহলে ধরে নিয়েন আমিও আপনাকে ভুলতে যেভাবেই হোক সফল হব বলে কথা দিয়ে গেলাম। আর যদি ব্যর্থ হন তাহলে ধরে নিয়েন আপনাকে ভুলতে আমিও ব্যর্থ…! এতে ক্ষমার অযোগ্য হলেও কিছু করার নেই! 

ইতি- 

আপনার কবিতার বিজয়িনী।