মুগ্ধতা ব্লাড ব্যাংকে আপনার দেওয়া তথ্য বাঁচাতে পারে একটি জীবন। আপনার তথ্য দিন, প্রয়োজনে রক্ত খুঁজুন এখানে।

ঝড়

এটিএম মোর্শেদ

৩১ ডিসেম্বর, ২০২২ , ৩:০১ অপরাহ্ণ

ঝড়

ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে খুব ব্যস্ত ভাবে টাইয়ের নট বাঁধছিল রাইসুল। রিমি কোটটা হাতে নিয়ে তার পিছনে দাঁড়িয়ে আছে এমন সময় কলিংবেলটা বেজে উঠল। রিমি ভেবেছিল হয় বুয়ার ছেলে এসেছে না হয় কোনো ভিক্ষুক, তাছাড়া এত সকালে কে আসবে? রিমি একটু জোরেই বলল দেখতো বুয়া কে এসেছে?

দরজার ওপাশ থেকে একজন বললো এক্সকিউজমি বাসায় কেউ আছেন? ভদ্রলোকের গলা শুনে রিমি নিজেই গিয়ে দেখতে পেলো এক যুবক অত্যন্ত স্মার্ট ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে আছে যাকে সে আগে কখনও দেখেনি। কয়েক মুহুর্তের জন্য দুজনেই নিরব। যুবকটি প্রথম মুখ খুললো।

এখানে রাইসুল থাকে? আইমিন জার্নালিস্ট রাইসুল ইসলাম?

রিমি মুখে কোন কথা না বলে শুধু হ্যাঁ সূচক মাথা নেড়ে দরজা চাপিয়ে দিয়ে ভিতরে চলে আসে। রাইসুল তাকে বললো, কে এসেছে? রিমির জবাব, চিনি না দেখো গিয়ে কে এসেছে? রাইসুল দরজা খুলে চিৎকার করে বলে, আরে দিদার! তুমি কোত্থেকে এই সকালে, আর বাসার ঠিকানা কোথায় পেলে? একটা ফোন করলেও তো পারতে, এসো ভিতরে এসো। দিদার রাইসুলের পিছনে পিছনে রুমে ঢুকতে ঢুকতে বললো তোমার মত ফেমাস সাংবাদিক এই ঢাকা শহরে ক’জন আছে যে বাসা খুঁজে পেতে অসুবিধা হবে? আর ফোন করে এলে এমন সারপ্রাইজটা কি হতো? এদিক ওদিক তাকিয়ে দিদার বললো একটু আগে অপরূপা সুন্দরী এক মহিলাকে দেখলাম তাকে দেখছিনা যে, সে নিশ্চয় তোমার…… রাইসুল বলে, রিমির কথা বলছো? রিমি আমার ওয়াইফ। রাইসুল উচ্চ স্বরে ডাকলো রিমি এখানে এসো। রিমি ধীর পায়ে এসে রুমে ঢুকলো। রাইসুল দু’জনের মধ্যে পরিচয় করিয়ে দেয়। দিদার একটু দুষ্টুমি করে বলল সুখেই আছো বন্ধু, বাইরে নাম-যশ সাফল্য আর ঘরে অপরূপা সুন্দরী বউ। সারা পৃথিবী ঘুরেও আমার ভাগ্যে ওসব কিছুই জুটলো না। রাইসুল দিদারকে বলল, নিউইয়র্ক থেকে কবে দেশে এলে? উঠেছো কোথায়? দিদার বললো, গতকাল এসেছি। উঠেছি একটা হোটেলে। ঢাকায় আমার কিছু পার্সোনাল কাজ আছে। দু’তিন দিন সময় লাগবে, তারপর গ্রামের বাড়ি থেকে ঘুরে এসে মুম্বাই যাব। রাইসুল বললো, তা বেশতো হোটেলে না থেকে দু’তিন দিন সময় এখানেই থাকতে পার। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে রাইসুল বললো আমাকে এক্ষুনি বেরুতে হবে, আজ অনেক কাজ আছে, রাত বারটায় ফ্লাইট। দিনের মধ্যে কাজগুলো সারতে না পারলে খুব অসুবিধা হবে। দিদার বললো বারটায় ফ্লাইট মানে, তুমি আবার কোথায় যাচ্ছ? রাইসুল বললো, পি.এম এর সফরসঙ্গী হয়ে তিন দিনের জন্য চীনে যাচ্ছি। দিদার বললো, তোমার ভাগ্য বটে প্রধানমন্ত্রীর সফর সঙ্গী হয়ে বিদেশে সফর কজন সাংবাদিকের ভাগ্যে জোটে?

রাইসুল যাক ফিরে এসে বিস্তারিত কথা বলা যাবে আমি এখন আসি। দিদার বললো নিয়ম হলো তোমার ওয়াইফকে আপনি বলা এবং ভাবী সম্বোধন করা কিন্তু আমি ওসব পারবো না। রিমিকে রিমি বলেই ডাকবো। রাইসুল হেসে বললো, সে তোমার ইচ্ছে। তবে একটা কথা মাথায় রাখিও এটা নিউইয়র্ক নয়, বাংলাদেশ আর রিমি বাঙালি ললনা। রাইসুল বললো নো প্রবেলেম, তোমাকে কিছু ভাবতে হবে না। তুমি এখন আসতে পার। রিমি ইশারায় রাইসুলকে ভিতরের রুমে ডাকে। কাছে যেতেই বললো, তুমি বাইরে যাচ্ছ, চেনা নাই জানা নাই অপরিচিত একজনের সামনে আমি সারাদিন ঘুরতে পারবো না। তুমি বরং ওকে বলে দাও তুমি যখন বাসায় থাকবে তখন আসতে। রাইসুল হেসে বললো এই কথা? দিদার খুব ভালো ছেলে, দেখবে কিছুক্ষণের মধ্যেই তোমার মনে হবে কতদিনের চেনা। দিদার খুব ভালো জোকস করতে পারে, দেখবে ও সারাক্ষণ তোমাকে হাসিয়ে মারবে। রিমির নাকে একটা টোকা দিয়ে বাই বলে রাইসুল চলে গেল।

রয়া এতক্ষণ বাথরুমে কাপড় কাঁচছিল। বাথরুম থেকে বেরিয়ে এসে বললো, আফা লন আমি অহন যাইগা। ঐ বাসার মেম সাহেব যা খাঁইসটা, দেরি হইলে আমারে ছিড়্যা খাইবো। রিমি বললো, ছিঃ বুয়া ওভাবে বলে না। বুঝিয়ে বললে উনি নিশ্চয় রাগ করবেন না। তাছাড়া তোমার আজকে দুপুরে কোথাও যাওয়া হবে না। বাসায় মেহমান আছে, উনি দুপুরে খাবেন। অবশ্য আমি তোমাকে পান খাওয়ার জন্য অতিরিক্ত একশত টাকা বখশিস দিবো। একশ টাকার কথা শুনে বুয়া আর কথা বাড়ালো না।

ডাইনিং টেবিলে নাস্তা সাজিয়ে রিমি বুয়াকে বললো দেখতো মেহমান কী করছে? বুয়া পর্দা সরিয়ে এক নজর দেখে হাফাতে হাফাতে রিমির কাছে এসে বললো, মেহমানের মতে হয় মাথা খারাপ, রিমি বললো, কেন কী করেছে? বুয়া বললো, দ্যাখেন গিয়া জাইঙ্গা পইরা সামনে ইঠ-বস করতাছে। রিমি হেসে বললো মাথা খারাপ টাথা খারাপ ওসব কিছু না, উনি হয়তো ব্যায়াম করছেন। রিমি গিয়ে পর্দার একপাশ থেকে বললো দিদার ভাই, ডাইনিং এ আসেন চা দেওয়া হয়েছে? কিছুক্ষণ পর দিদার পোশাক পরে ডাইনিং এ চলে এসে বললো, এত খাবার? কতদিন এসব খাওয়া হয় না। রিমি তুমিও বসো। খেতে বসে দিদার বললো, জানো রিমি, গত ছয় বছর পূর্বে নিউইর্য়ক পাড়ি জমাই, জীবিকার সন্ধানে। অনেক স্বপ্ন অনেক আশা নিয়ে গিয়েছিলাম। রাতদিন হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করেছি প্রথম দিকে। অর্থকষ্ট থাকলেও পরবর্তীতে অর্থের কোন অভাব ছিল না। কিন্তু, জীবনে যাকে বলে সুখ, শান্তি ওসব কিছুই পাইনি। একটু সুখের জন্য ওদেশীয় একটি মেয়েকে বিয়ে করলাম, ভেবেছিলাম ভিনদেশে একজন আপনজন পাবো কিন্তু ওটাই ছিল আমার জীবনের মস্ত বড় ভুল। বিয়ের পর তিন-চার মাস লিন্ডার সঙ্গে আমার আন্ডারস্টান্ডিং মোটামুটি থাকলেও পরবর্তীতে ও আমাকে পাত্তা না দিয়ে বয়ফেন্ড, অতিরিক্ত ড্রিংকিং, কোন কোন রাতে বাসায় না ফেরা এসব ওর নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। এ ব্যাপারে আপত্তি করাটা ওর কাছে ছিল হাস্যকর ব্যাপার। বিয়ের এক বছর পর আমাদের একটা মেয়ে সন্তান হলো। ভেবেছিলাম এবার ও শান্ত হবে। সন্তানের বয়স ছয় মাস হলো। আমার শত আপত্তি থাকা সত্ত্বেও একি চাইল্ড কেয়ার হোমে রেখে দিল। স্নেহ, মমতা আমার অস্থিমজ্জায় থাকায় বিষয়টি সহজে মেনে নিতে পারলাম না। উপরন্ত ও আবার উশৃঙ্খল জীবন-যাপন শুরু করলো। একদিন গভীর রাতে ওর সঙ্গে প্রচন্ড ঝগড়া কথা কাটাকাটি হলো, আমার আর সহ্য হচ্ছিল না। এক পর্যায়ে রেগে গিয়ে ওর দু’গালে দুটা চড় বসিয়ে দেই। পরদিন ও সেপারেশন চেয়ে আদালতে মামলা করলো। খুব সহজেই আমাদের সংসার ভেঙ্গে গেল। আমিও হাফ ছেড়ে বাঁচলাম। কিন্তু সন্তানটির সঙ্গে যোগাযোগ করার আমার কোনো অধিকার থাকলো না। আমেরিকার মত দেশে অনেক বেপরোয়া জীবন যাপন করে জীবনটাকে উপভোগ করে থাকে জন্মগত ভাবেই মনে হয় আমি সে স্বভাবের ছিলাম না, তাই স্ত্রী সন্তানকে হারিয়ে ভীষণ ভেঙ্গে পড়ি। কাজ-কর্মের মধ্যে নিজেকে ব্যস্ত রেখে যেকোন ভাবে আরও দুটি বছর কাটিয়ে দিয়ে দেশে ফিরে এলাম। এখন কি করব? স্থির করতে পারছি না। রিমি এতক্ষণ চুপচাপ শুনছিল এবার মুখ খুললো। তাহলে আমেরিকায় আর ফিরে যাচ্ছেন না? বেশতো, একটা ভালো মেয়ে দেখে বিয়ে করে এদেশেই সেটেল্ড হয়ে যান। চাইলে আমরা এ ব্যাপারে সহযোগিতা করবো। দিদার বললো, আবার বিয়ে! না না, বলে উঠে পড়লো। দিদার রিমিকে ডেকে বললো, আমি একটু বাইরে যাব তুমি দরজাটা লাগিয়ে দাও। দিদার বাইরে গেলে দরজা বন্ধ করে রিমি দিদারের কথাগুলো ভাবছিল। তার সরল স্বীকারোক্তি এবং দুঃখময় জীবনের কথা শুনে দিদারের প্রতি তার কেমন যেন একটা মায়া হলো এবং মায়া থেকে সৃষ্টি হলো বিশ্বস্ততা। কিছুক্ষণ পরে দিদার ফিরে এসে বললো রিমি তৈরী হও। ঘরে বসে না থেকে ঢাকা শহরটা একটু ঘুরে দেখি। বাইরে গেলে গাড়ি গেলে গাড়ি রেডি। রাত দশটা পর্যন্ত কনট্রাক্ট করেছি। আজ সারাদিন ঘুরবো, ফিরবো, বেড়াবো, গল্প করবো, রাতে ডিনার শেষে বাসায় ফিরব অবশ্য তোমার যদি কোন আপত্তি না থাকে। রিমি কিছুক্ষণ ভেবে বললো দিদার ভাই, আপনি গাড়িতে গিয়ে বসুন আমি পনের বিশ মিনিটের মধ্যে তৈরি হয়ে আসছি।

খুব সাধারণ ভাবে সেজে দশ মিনিটের মধ্যেই রিমি নিচে এলো। দিদার বললো তোমার হয়ে গেছে, আমি তো ভেবেছিলাম কমপক্ষে এক ঘন্টা লাগবে। রিমি গাড়িতে উঠে বসলে গাড়ি চলতে শুরু করলো। রিমির বুকটা হঠাৎ একটু কেপে উঠলো। দু’দিন আগেও যার সঙ্গে পরিচয় পর্যন্ত ছিল না অথচ কত নিশ্চিন্তে তার পাশে বসে অজানার উদ্দেশ্যে চলেছি। কত অদ্ভুদ সম্মেহনী শক্তি লোকটার। দিদার মনে হয় রিমির মনে ভাবটা বুঝতে পারে। রিমিকে চুপ চাপ দেখে বলে, কী অত ভাবছো ভয় নাই, আমার উপর ভরসা রাখতে পার। রিমি হেসে বলে, ভরসা না থাকলে কি আর আসতাম?

সারাদিন গাড়িতে করে সমস্ত ঢাকা শহর ঘুরলো তারা। মাঝে মাঝে বিভিন্ন পার্কে-রেষ্টুরেন্টে ঢুকে সময় কাটিয়েছে। সারাক্ষণ দিদার অনেক কথা বললেও রিমি তেমন কোন কথা বলেনি। দুপুরে লান্সের পর দিদার জিজ্ঞেস করেছিল, শুনেছি তোমাদের বিয়ে হয়েছে পাঁচ বছর হলো, কোন সন্তানাদি নাওনি কেন? রিমির সংক্ষিপ্ত জবাব, আমরা তো নিতেই চাই কিন্ত হচ্ছে না। দিদার এ ব্যাপারে আর কথা বাড়ায়নি। তখন বিকেল চারটা। হাতে এখনও অনেক সময়। রিমি বললো দিদার ভাই, আর ভালো লাগছে না। চলুন বাসায় ফেরা যাক। দিদার ভাবলো এখন বাসায় গেলে রাতের খাবারের জন্য রিমিকে অনেক পরিশ্রম করতে হবে, তার চেয়ে ভালো হবে ডিনারটা বাইরে সেরে যাওয়া। তাই দিদার বললো, চলো ওয়ান্ডার ল্যান্ডটা ঘুরে আসি। দুজনে গাড়িতে উঠলো ওয়ান্ডার ল্যান্ডের উদ্দেশ্যে।

কিছুটা শীতকাল হলেও হঠাৎ আকাশ খারাপ হয়ে আসছে। বৃষ্টি হতে পারে। রাত নটা নাগাদ তারা বাসায় ফিরলো। সারাদিন ঘোরাঘুরির পর দুজনেই খুব ক্লান্ত। রিমি বললো, দিদার ভাই আপনি কিছু মনে না করলে আজ আর কোন কথা নয়, আমি খুব টায়ার্ড। এখন আমি ঘুমাবো। দিদার বললো, নিশ্চই, তুমি ঘুমিয়ে পড়ো। আমি টিভিতে বিবিসি ওয়ল্ড নিউজটা একটু দেখবো। কিছুক্ষণের মধ্যেই রিমি ঘুমিয়ে পড়ে। রাত এগারোটার দিকে প্রচন্ড ঝড়-বৃষ্টি শরু হয়। বাতাসের ঝাপটা এসে জানালার পর্দাগুলো উড়াচ্ছে তার সাথে হিমশীতল বাতাস। দিদার রিমির ঘরে এসে দেখে সে ঠান্ডায় কুন্ডুলী পাকিয়ে ঘুমাচ্ছে। দিদার জানালাগুলো বন্ধ করে রিমির গায়ে একটা কম্বল টেনে দিল। কি মনে করে রিমির হাতটা ধরে কাছে নিল। দিদারও যন্ত্রের মত রিমির শরীরের পাশে এসে পড়লো। এরপর স্বয়ংক্রিয়ভাবে দুজনের অস্থিরতা বেড়ে গেল। সেই সঙ্গে শরীরের উত্তাপও। বাহিরের ঝড়ের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে ঘরেও ঝড় উঠলো। এক সময় ঝড় থেমে গেলে হঠাৎ রিমি আত্মস্থ হয়ে ঝট করে বিছানায় উঠে বসে। এই আকস্মিক ঝড়ের জন্য সে মোটেও প্রস্তুত ছিল না। লজ্জায়, ঘৃণায় নিজেকে ধিক্কার দিতে থাকলো সে। ব্যালকনিতে গিয়ে বসলো। বাইরে তখনও বৃষ্টি ও বাতাস চলছে। বাতাসের ঝাপটায় পানি এসে তার গায়ে পড়ছে। রিমি ভাবছে এই পানিতে যদি সব পঙ্কিলতা ধুয়ে মুছে যেত। এখন আমি রাইসুলকে মুখ দেখাবো কী করে? তার এত ভালোবাসা, এতো বিশ্বস্ততার সঙ্গে আমি বিশ্বাসঘাতকতা করলাম? না, বিশ্বাসঘাতক হয়ে তার সঙ্গে আমি অভিনয় করতে পারবো না। একটাই উপায় আছে। হ্যাঁ, আমি আত্মহত্যা করবো। পরক্ষণে মনে হলো আত্মহত্যা মহাপাপ, একটা পাক ঢাকতে গিয়ে আর একটা পাপ আমি করতে চাই না। তার চেয়ে এই পাপের শাস্তি যেন আল্লাহ আমাকে দেন এবং সেটা অবশ্যই মৃত্যু। রাতে মিমি আর এক মুহুর্তও ঘুমায়নি। এদিকে দিদারও আকস্মিক এমন ঘটনার জন্য লজ্জিত ও মর্মাহত। রিমির সামনে দাঁড়ানোর মতো সাহস তার নেই। উভয়ের লজ্জার হাত থেকে বাঁচার জন্য দিদার একটি চিরকুট লিলে ডাইনিং টেবিলে রেখে ভোর হওয়ার আগেই দরজা অটোলক করে বেরিয়ে যায়।

চিরকুটে লেখা, রিমি নিশ্চয়ই তুমি বিশ্বাস করবে না যে, আমি একটা অমানুষ আর বিশ্বাসঘাতক নই। তোমাদের কাছে ক্ষমা চাওয়ার বা দেখানোর মতো মুখ আমার নেই। তাই পালিয়ে গেলাম। দুঃখ পাবে নাকি খুশি হবে জানি না। ডাক্তার বলেছে, এ পৃথিবীতে আমার আয়ু বড়জোড় আর এক বছর।

চিরকুটের শেষের লাইনটা পড়ে রিমি আঁতকে ওঠে। দিদার এইচ.আই.ভিতে আক্রান্ত? তাই যদি হয়, দিদারের পরিণতি তো আমাকেও বহন করতে হবে। রিমির মনের ভিতর থেকে কে যেন একজন বলে উঠে, ঠিক হয়েছে, তোমার মতো বিশ্বাসঘাতক, পাপিষ্ঠার জন্য এমন পরিণতি হওয়াই উচিৎ।

এটিএম মোর্শেদ
Latest posts by এটিএম মোর্শেদ (see all)