ডায়াবেটিস নিয়ে আমার বাবা পঁয়ত্রিশ বছর বেঁচে ছিলেন। সত্তর বছর বয়সে তিনি মারা যান। অর্থাৎ জীবনের অর্ধেক সময় তিনি ছিলেন ডায়াবেটিসের পেশেন্ট। বাবা প্রথমদিকে চিকিৎসকের পরামর্শে ট্যাবলেট খেলেও পরে ট্যাবলেটে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ না হওয়ায় ইনসুলিন নিতেন। স্ট্রোক করার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত নিজেই ইনসুলিন নিতেন।
বিজ্ঞাপন
বাবা প্রথম স্ট্রোক করেন ২০০৩ সালে, রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রথমে ভর্তি করা হয়, সেখানে অবস্থার উন্নতি না হলে, পরে ঢাকায় বারডেমে এবং সর্বশেষ ঢাকার হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট হাসপাতালে সতেরো দিনের চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরেন। আমার বাবার ছিল প্রচণ্ড মনের জোর। যেটা যেকোনো রোগে অসুস্থ হলে রোগীর জন্য খুবই প্রয়োজন। আমি একসময় ঔষধের দোকান করতাম, সেজন্য ফার্মাসিস্ট ট্রেনিং করতে হয়েছিল। সেখান থেকেই জেনেছিলাম একজন ডায়াবেটিস পেশেন্টকে অবশ্যই 3D মেনে চলতে হবে।
১ম D মানে হচ্ছে Diet, ২য় D মানে হচ্ছে Drug, এবং ৩য় D মানে হচ্ছে, Discipline। আর একজন ডায়াবেটিস পেশেন্টকে অবশ্যই নিয়মিত (অন্ততপক্ষে ১৫ দিনে একবার) ব্লাড সুগার পরীক্ষা করাতে হবে এবং একজন অভিজ্ঞ ডায়াবেটোলজিস্টের অধীনে থেকে চিকিৎসা নিতে হবে। ডায়াবেটিস নিয়ে অনেক কুসংস্কার সমাজে প্রচলিত আছে সেগুলোতে কান দেওয়া যাবে না।
আমার বাবা দু’বেলা রুটি খেতেন এবং সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে, উনি যেকোনো তরকারি দিয়ে রুটি খেতে পারতেন। আরেকটি কথা পরিবারের সদস্যদেরও ডায়াবেটিস পেশেন্টদের সচেতন করতে হবে, নিজে সচেতন হতে হবে, পেশেন্টদের প্রতি যত্নশীল হতে হবে। আমার বাবার সাথে থেকে এবং চিকিৎসা সংক্রান্ত কাজে জড়িত থেকে যতটুকু জেনেছি, ডায়াবেটিস নিয়ে
ভয় পাবার কিছু নেই, সঠিক চিকিৎসা ও নিয়মাবলী মেনে এটি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।