২০১৭ সালে ডুয়ার্সের গরুমারা জঙ্গলে একটা ট্যুর পরিকল্পনা করেছিলেন গৌতমদা, মানে গৌতম চক্রবর্তী, ভারতের। যদিও সেটা শেষ পর্যন্ত ডুয়ার্সের বদলে ভারতের সুন্দরবনে হয়েছিল। ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও যেতে পারি নি সেবার। ডুয়ার্সের ভূপ্রকৃতি আমার খুবই প্রিয়। বারেবারে যেতে চেয়েছি সেখানে। ২০১৮ তে নানা কারণে বিক্ষিপ্ত হয়েছিল মন। তাকে শান্ত করবার জন্য জঙ্গল আর পাহাড়ের বিকল্প কী হতে পারে? ভেবে, কোনোদিন দেখা না হওয়া ফেসবুক বন্ধু গৌতমদাকে একটা মেসেজ দিলাম ২০১৮ এর শুরুতে, যে, যেতে চাই। নতুন করে পরিকল্পনা শুরু করলেন তিনি। আগস্ট মাসের শেষে ট্যুর প্রোগ্রাম।
জঙ্গলে যাবার জন্য কাতর হয়ে বসে আছি। মাঝে ঠাকুরগাঁও এর সিংড়া ফরেস্টে, দিনাজপুরের নবাবগঞ্জের নামমাত্র জঙ্গলে ঢুঁ মেরে এসেছি ঘণ্টা ক’য়েকের জন্য। আর অপেক্ষা করে আছি।
কথা ছিল ঝুম বৃষ্টির মধ্যে দেখা হবে ডুয়ার্সের মোহনীয় রূপ। কিন্তু আবহাওয়া দপ্তরের বৃষ্টিহীনতার রিপোর্ট মন ভেঙ্গে দিল। সে বছর বাংলাদেশে, রংপুরে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ খুবই কম, সেটা যে ডুয়ার্সকেও আক্রান্ত করে বসে আছে, জানা ছিল না। (অবশ্য শেষমেশ মুহুর্মুহু বৃষ্টি এসে আনন্দে ভরিয়ে দিয়ে গিয়েছিল আমাদের ট্যুর। সেটা পরের গল্প)
আমার ব্যক্তিগত প্রস্তুতি শুরু হয়েছিল গৌতম দার প্রথম ঘোষণার পরপরই। তারপর যুক্ত হল তপু আর শামসুল। আগস্টের শুরু থেকেই মিটিং করি, তিনজন মিলে রংপুরের রাস্তায় ঘুরি- আর প্ল্যান বানাই। পরিকল্পনা জমে উঠতে না উঠতেই নিজেরা সেটা ভেস্তেও দিই। কোথাও বেড়াতে যাবার আগে এটা হল আমাদের সাধারণ অসুস্থতা। ওদিকে ট্যুরের জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর একটা লিস্ট গৌতম দা হাতে ধরিয়ে দিয়েছেন, টর্চ, চার্জারের সাথে সাথে আরও দুইটা জিনিষ, শৈশব আর শালীনতা। তার মধ্যে শৈশবকে তো সঙ্গে নিয়ে ঘুরি, আমার দুশ্চিন্তা, শালীনতা পাবো কোথায়? বাজারে যদি পেয়েও যাই, আমার শরীরের মাপে মিলে যাবে তো?
(আগস্ট ২৮ – সেপ্টেম্বর ২, ২০১৮)
শাহীন মোমতাজ : কবি