তিনজন তিনটা আলাদা রুট ব্যবহার করে বুড়িমারি সীমান্তে পৌঁছবো এইরকমই সিদ্ধান্ত হয়েছিল। নিজস্ব পদ্ধতিতে এডভেঞ্চার তৈরি করার একটা চেষ্টা আর কি। সেই মতো ব্যাকপ্যাক পিঠে ফেলে ২৮ তারিখ সকাল সাড়ে ছয়টায় আমি একা বাড়ি থেকে বেরিয়ে স্টেশনের দিকে হাঁটা দিলাম। ট্রেনে মাত্র ষাট টাকায় রংপুর থেকে যে বুড়িমারি পৌঁছানো যায়, আমার জানা ছিল না।
শামসুল মোটর বাইকে প্রায় অর্ধেক রাস্তা পেরিয়ে গিয়ে হাতিবান্ধা স্টেশন থেকে ট্রেনে আমার সঙ্গী হল। তপু বাস ফেল করে শেষে প্রাইভেট গাড়িতে এসে পৌঁছল প্রায় দেড় ঘণ্টা পর । দুপুরবেলা প্রখর রৌদ্রে বুড়ির হোটেলের সামনে পরিচ্ছন্ন চায়ের দোকানে বসে কাপে চুমুক দিতে দিতে তখনো আমরা ভাবতেই পারি নি, সীমান্ত থেকে মাত্র ষাট কিলোমিটার দূরে কতখানি বিস্ময়, কতটা আনন্দ নিয়ে অপেক্ষা করে আছে মূর্তি নদীর তীর, তীর সংলগ্ন জঙ্গলের হাতছানি, চাপ চাপ সবুজ অন্ধকার, আর একটা ভৌতিক ব্রিজ- প্রত্যেক সন্ধ্যায় যার অস্তিত্ব নিয়ে আমার মনে বিস্তর সন্দেহের উদ্রেক হতো।
প্রায়ই, শেষরাতে, ঘুমের আরও ভিতরে ঢুকে যেত চাপরামারির বন্য আহ্বান, সকালে বিহ্বলতা নিয়ে ঘুম ভাঙত সকলের।
মাথার ভিতরে আরেক রকম একটা ব্রিজের অস্তিত্ব টের পেতে শুরু করেছি ততক্ষণে সবাই। সেটাও পরের গল্প।
(আগস্ট ২৮ – সেপ্টেম্বর ২, ২০১৮)
শাহীন মোমতাজ: কবি
[ভ্রমণ বিষয়ক ফেসবুক গ্রুপ গন্তব্য তে যুক্ত হোন ]