এই প্রতিভাবান তরুণ তুর্কির জন্ম ১৮-ই মে, ১৯৯৮ সালে নীলফামারি জেলার কিশোরগঞ্জ থানার অন্তর্গত সোনাকুঁড়ি গ্রামে। বাবা মো. মোতাহার হোসেন একজন শিক্ষক, মা মাহফুজা বেগম গৃহিণী। প্রথম লেখা মুহাম্মদ খালিদ সাইফুল্লাহ্ সম্পাদিত তারুণ্যের পদাবলিতে প্রকাশিত হয়।
সে লেখাপড়ার পাশাপাশি সবসময় চেষ্টা করে সমাজের অবহেলিত, সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের পাশে দাঁড়াতে। ছিন্নমূল পর্যায়ের এই মানুষদের জন্য কিছু করার তাড়না থেকেই আড়াই বছর আগে কয়েকজন বন্ধুকে নিয়ে প্রতিষ্ঠা করে ‘আলোকচ্ছটা’ নামক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।
এরপর আর পিছু ফিরে তাকাতে হয়নি। গেল আড়াই বছরে সহস্রাধিক মানুষকে সাহায্য করেছে। বন্যায় যখন তলিয়ে গেছে বাড়িঘর, লক্ষ লক্ষ মানুষ পানিবন্দী হয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছিল, তখন শুকনো খাবার হাতে ছুটে গিয়েছে, রাতভর গ্রামে গ্রামে ঘুরে কনকনে শীতে কাঁপতে থাকা মানুষদের গায়ে তুলে দিয়েছে উষ্ণ কাপড়, করোনাকালীন এই মহাসংকটেও থেমে থাকেনি লিফলেট, মাস্ক বিতরণ ও সতর্কতামূলক ক্যাম্পেইন করেছে, অবলা পশুপাখিদের খাদ্য সরবরাহ করেছে, পৌঁছে দিয়েছে নগদ অর্থ ও প্রয়োজনীয় খাদ্য উপাদান।
কাঁধে তুলে নিয়েছে দুজন ছাত্রের সম্পূর্ণ লেখাপড়ার দায়িত্ব। এই সংখ্যা বাড়ানোর প্রক্রিয়া চলমান। এছাড়াও নিয়মিত রক্তদান, ব্লাড গ্রুপিং ও সচেতনতা ক্যাম্পেইন, রিকশাচালক-দিনমজুরদের টিশার্ট বিতরণ, পথশিশুদের নিয়ে সৃজনশীল কর্মকাণ্ড আয়োজন, তাদের পেটপুরে বিরিয়ানি খাওয়ানো ইত্যাদি ধারাবাহিক কর্মসূচি।
লেখালেখির সূচনা ২০১৬তে ঘটলেও বাংলার প্রতি আলাদা একটা টান আর ভালোবাসা তৈরি হয় ২০১৭ তে। এর পিছনে অবশ্য আনন্দ-বেদনা মিশ্রিত একটা গল্প রয়েছে। সেবছর তিন সহস্রাধিক প্রতিযোগীকে পিছনে ফেলে ইস্পাহানি মির্জাপুর বাংলাবিদের বিভাগীয় পর্যায়ে রংপুর বিভাগে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করে জাতীয় পর্যায়ে অংশগ্রহণের সুযোগ লাভ করেছে। জাতীয় পর্যায়ে তেমন ভালো করতে না পারলেও মাঝখানের সময়টাতে বাংলাকে ভালোবেসে ফেলে। ঠিক যেমন সদ্য কৈশোর পেরুনো যুবক হঠাৎ ষোড়শীকে ভালোবেসে ফেলে! ভালোবাসার এই বন্ধনকেই আমৃত্যু বয়ে বেড়াতে হবে।
‘তরুণ তুর্কি’ তে আজ প্রকাশিত হচ্ছে খাদিমুল মুরছালীন রিয়াদ এর পছন্দ-অপছন্দের বিষয়গুলো।
প্রিয় বই: ঈমানদীপ্ত দাস্তান – এনায়েতুল্লাহ আলতামাশ
প্রিয় লেখক: আখতারুজ্জামান আজাদ
প্রিয় খাবার: কাচ্চি বিরিয়ানি
প্রিয় মানুষ: হজরত মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
আদর্শ মানুষ: হজরত মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
প্রিয় স্থান: মন্টু বানিয়ার মোড়, গুড়াতিপাড়া, রংপুর।
প্রিয় মুহূর্ত: প্রিয়জন ও বন্ধুদের সাথে কাটানো সময়
প্রিয় কবিতা: যদি জিজ্ঞেস করি- কেমন আছো? – আখতারুজ্জামান আজাদ
প্রিয় বাক্য/উক্তি: বেঁচে থাক স্বপ্ন, জিতে যাক তারুণ্য
যেমন মানুষ হতে চাই: যে মানুষ স্বার্থপর হবে না। নিজের কথা না ভেবে অন্যের বিপদে আপদে যে মানুষ সবার আগে এগিয়ে আসবে।
যে বিষয়টি পীড়া দেয়: বাংলাবিদের জাতীয় পর্যায়ে একদম শিশুসুলভ কিছু ভুল করে বাদ পড়ার বিষয়টি।
আগামীর পরিকল্পনা: নিজেকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া। যেন সহস্র বছর পরেও মানুষ বলে, “কেউ একজন ছিল।”
প্রিয়তমা,
একটা আবদার করছি, রেখো না জমা।
একটা ছোট্ট চিঠি লিখে দিবে আমায়?
যা পূর্ণ থাকবে আবেগ আর ভালবাসায়।
তোমার স্পর্শ লেগে থাকবে যে পত্রে,
পাওয়া না পাওয়া বাস করবে একত্রে।
যে পত্রে ফুটে উঠবে তোমার অপূর্ণ আশা,
চিত্রায়িত হবে তোমার অব্যক্ত ভালবাসা।
যে চিঠিতে থাকবে কেবল রঙ্গিন নতুনত্ব,
শুধু আমার নামেই লেখা রবে যার স্বত্ব।
মনের বন্দী কথাগুলো হবে সেথা ছন্দিত,
চিরকাল মম হৃদয়ে রইবে তা নন্দিত।
নন্দিনী,
আমার হৃদয়কারার একমাত্র মুক্ত বন্দিনী।
প্রথম দিনের কথাটা তোমার মনে আছে?
একরাশ লজ্জা নিয়ে তুমি এসেছিলে কাছে।
ইতস্তত বোধ করে নিজের চোখদুটো বুজে,
একখানা চিঠি দিয়েছিলে মম হাতে গুঁজে।
দিয়েছিলে একখানা দুদিন বাদে তারপর,
পাওয়া হয়নি আর কেটে গেলেও বছর।
ভেঙ্গেছিলে প্রথা তুমি বিজ্ঞানের এ যুগে,
লিখেছিলে পত্র কত গভীর অনুভবে ভুগে!
প্রত্যুত্তরে আমিও হয়তো দু-চারটা লিখেছিলাম,
তবে চিঠি লেখাটা কিন্তু তোমা হতেই শিখেছিলাম।
প্রেয়সী,
আমার নয়নজুড়ানো একমাত্র তুমি রূপসী।
এত কাছে থেকেও যদি চিঠি হয় আদান,
এত দূরে গিয়েও তবে করবে না কেন প্রদান?
হয়তো তুমি আগের তুলনায় অনেক ব্যস্ত,
হাজারও গুরুদায়িত্ব তোমার উপর ন্যস্ত।
তবু লিখতেই হবে পত্র তোমায় হলেও কষ্ট,
তোমার মূল্যবান সময় নাহয় হলো একটু নষ্ট।
একটা কাগজের চিঠি যা ধারণ করতে পারে,
সহস্র ফোন-টেক্সট যেতে পারে কি তার ধারে?
অতিশীঘ্রই চিঠি পাব তোমার হৃদয়ের ভাষায়,
প্রতীক্ষায় বসে রইলাম একমনে এই দুরাশায়।