এই প্রতিভাবান তরুণ তুর্কির জন্ম ২৩ আগস্ট ২০০০ তারিখে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায়। বাবা, মোঃ নাজিমুল ইসলাম খান একজন শিক্ষক এবং মা, সেরিনা আখতার বানু একজন গৃহিণী। প্রথম লেখা প্রকাশ হয় ২০১০ সালে, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র লালমনিরহাট জেলা শাখার বার্ষিক সাময়িকী তে ।
‘তরুণ তুর্কি’ তে আজ প্রকাশিত হচ্ছে নাজমুন নাহার নিশি এর পছন্দ-অপছন্দের বিষয়গুলো।
প্রিয় বই: আমার কাছে প্রতিটা বই-ই নিজের মত সুন্দর! প্রতিটা বই ই সদ্য হওয়া প্রেমের মতো। স্পেসিফিক করে কোনো বইকে প্রিয় উপাধি দেয়া যায়না। ছোটবেলায় ছিলো ‘কাকাবাবু সমগ্র ‘, ‘আঙ্কল টমস বিন’, ‘তেত্তোচান’ কিংবা ‘জুলভার্ন’। তারপর সময়ের সাথে সাথে পথের পাঁচালি, গৃহদাহ, সাতকাহন, ন-হন্যতে ইত্যাদিতে রুপান্তরিত হয়ে গেছে!
প্রিয় লেখক: লেখক হিসেবে অবশ্যই শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়।
প্রিয় খাবার: মায়ের হাতের যেকোনো রান্না। মায়েরা যা রাঁধে তাই অমৃত হয়ে যায়।
প্রিয় মানুষ: মা! এই মানুষটা আমার জীবনের সবচেয়ে বড় মোটিভেশন।
আদর্শ মানুষ: আদর্শ শব্দটা আসলে অনেক কিছুর বিশ্লেষণ করে। যদি আদর্শ কে প্রতিফলন রুপ দিই তবে অবশ্যই হযরত মুহাম্মাদ (সা.)। আর যদি যে আদর্শকে চোখে দেখে লালন করি তবে এখানে প্রথমত ‘মা’, দ্বিতীয়ত ‘বাবা।’ মায়ের কাছে দেখে-শুনে আদর্শ শিখেছি, আর বাবাকে দেখে।
প্রিয় স্থান: আমার গাছ ঘেরা বাড়িটা, আমার পৃথিবীর স্বর্গ!
প্রিয় মুহূর্ত: মুহূর্ত ক্ষণস্থায়ী। মুহূর্ত যখন বিস্মৃতি হয়ে যায় তখন তাকে সামলে রাখা মুশকিল। এজন্য মুহূর্তকে আমি বরাবরই ভয় পাই। তবে মাকে কখনও জড়িয়ে ধরে ভালবাসি বলা হয়নি আমার। যেদিন বলতে পারবো সেটিই হবে আমার জীবনের সবচেয়ে প্রিয় মুহূর্ত!
প্রিয় কবিতা: কেউ কথা রাখেনি, এক অপ্রেমিকের জন্য, কথোপকথন।
প্রিয় বাক্য/উক্তি: অনেক আছে। কখনও বা তারাশঙ্করের ‘জীবন এত ছোট ক্যানে’! অথবা, ‘যাহাকে কেন্দ্র করিয়া ঘুরি, না পাইলাম তাহার কাছে আসিবার অধিকার, না পাইলাম দূরে যাইবার অনুমতি’!
যেমন মানুষ হতে চাই: সেইসব মানুষের মতো, যারা স্রষ্টার প্রিয় হয়ে ওঠে..
যে বিষয়টি পীড়া দেয়: আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা শোধরায় না কেন? রংপুর মেডিকেল কলেজের সামনে গিয়ে অযথা স্বপ্ন দেখার দিনগুলোকে সেরেব্রাম থেকে মুছে দিতে ইচ্ছে করে…
আগামীর পরিকল্পনা: পৃথিবীর বুকে অন্তত একটা পদচিহ্ন রেখে যাওয়া!
নিজের লেখা বাছাইকৃত একটি কবিতাঃ বাছাইকৃত বলা যাবে না হয়তো। কবিতা তো কবিতাই!
দীপশিখার মিটি আলোর রেখা ছুঁয়ে,
সাজিয়ে উঠে দস্যি মেয়ের কুড়েঘর।
অসূর্যস্পর্শা চোখের পাতায় কেঁপে ওঠে ভবিষ্যৎ!
আচমকা ঘরে হানে রুদ্রঝড়ের দাপট!
তারপর-
নাম ওঠে ধর্ষিতার খাতায়।
‘কালো হাত! মুখ বাধা ছিলো ওদের!’
মৃত্যুর এপিটাফের সামনে দাঁড়িয়ে বুলি আওড়ায় শুধু।
শুনে হাসে পাশের বাড়ির বড়বাবু।
‘আজকালকার মেয়ে দস্যি বড়!
দেখনা মিথ্যে বলছে সব-
জামাকাপড়ের শ্রী! বালাই ষাট!’
মিথ্যের কাছে মাথা নাড়ায় আরো কত মানুষ!
প্রকৃতির কানে বেজে ওঠে মিথ্যের প্রতিধ্বনি!
ধিক ধিক করে বেড়ে ওঠে মাকড়সার জালের মতন।
শিশুরা হাসতে ভুলে-
কবির কলমের আঁচড় যায় আটকে।
চন্দ্রফোঁটা দমে যায় দস্যি মেঘের আঁচলে।
তারপর অনেক দিন পর,
ফিনিক্সের হুটহাট আবির্ভাবের মতোন-
আবার বাতাসের সাথে ভেসে আসে ফিসফিসানি।
হাসপাতালের এক কোনে শুয়ে আছে বড়বাবুর মেয়েটা!
বিড়বিড় করেই চলছে,
‘কালো হাত, মুখ বাধা ছিল ওদের’।