আগের বউটাকে ছেড়ে ছিল বাচ্চা হবার পর।
আশিকের বাবা মরার অপেক্ষা করছিল আশিকের মা। আশিকের বাবা তো ছেলেকে বউ ছাড়তে দিবে না। কিন্তু তিনি কোনোভাবেই ছেলেকে বউয়ের সাথে সহ্য করতে পারেন না।
সে কথা মুখ ফুটে বললে তো সবার কাছে খারাপ হয়ে যাবেন। তাই আশিকের বাবা মরার পরই শুরু করে দেন নাটকীয়তার।
কথায় কথায় বউটার পায়ে পা দিয়ে ঝগড়া বাঁধিয়ে নিজে চুপ থেকে ছেলের কাছে ইনিয়েবিনিয়ে বিচার দেয়।
তুই তোর বউ বাচ্চা নিয়ে থাক, আমাকে বিদায় কর।আমি ভাইয়ের বাড়ি চলে যাই।
কদিন পর পর ভাইয়ের বাড়ি চলে যায়।
প্রেসার বেড়ে যাবার কথা বলে মিছে অসুস্থতার ভান করেন।
এক পর্যায়ে বলে বসলেন তোর বউয়ের সাথে আমি থাকবোনা। ও থাকুক। তুই আমাকে বাদ দে।
আশিক মাহমুদাকে অনেক অত্যাচার করেও যখন বাড়ি থেকে বের করতে পারেনি, তখন ফুপুকে দিয়ে বুঝিয়ে মাহমুদাকে বাবার বাড়ি পাঠিয়ে দেয়।
তারপর মাহমুদার আর কখনো স্বামীর ঘরে ফেরা হয়নি।
তালাকনামা পৌঁছে যায় তার কাছে।
আশিকের মা খুশিতে পা নাচান আর হিন্দি সিরিয়াল দেখেন।
২.
চার বছর পর….
আশিক আজ আবার মেরেছে সুচনাকে। কয়েক মাস আগে মায়ের পরামর্শে সুচনাকে আলাদা বাসায় রেখেছে।
তারপর থেকে শারীরিক মানসিক অত্যাচার চলছেই।
কদিন থেকেই সুচনাকে বলছিল ঔষধ খেতে। যাতে বাচ্চাটা না থাকে।
আগের বউটার বাচ্চার খরচ দিতে হয়, এখন এর বাচ্চা হলে সেটারও খরচ দিতে হবে।
তাছাড়া মা বলেছে বাচ্চা কাচ্চা যেন না হয়।
কিন্তু সুচনা কোনোভাবেই বাচ্চা নষ্ট করবে না। আশিক মারতে মারতে এক পর্যায়ে সুচনার পেটে লাথি মারে। মাথায় খুন চেপে গেছে আশিকের। একেতো বিয়ের সময় কোনো টাকা পয়সা দেয়নি সুচনার পরিবার। পরবর্তীতে টাকার কথা বললে সুচনার পরিবার প্রতি মাসে পাঁচ অথবা দশ হাজার করে টাকা দেয়। এটা নিয়ে মায়ের মন খারাপ।
মা তো ঠিকই বলে। জামাইকে তো মানুষ হেল্প করেই। তাছাড়া উপহার হিসেবেও তো কয়েক লাখ টাকা দিতে পারে ব্যবসা করার জন্য। কিন্তু সুচনার পরিবার তা দিচ্ছে না।
এমন বউ কি দরকার?!
আবার যদি এই বাচ্চা হয় ! উহ!!
সুচনা পেট চেপে ধরে। আশিক বলে- নাটক না করে ঔষধ খেয়ে নে। আমি কোনো বাচ্চা চাই না।
তোর জন্য এসব টেনশনে আমার আম্মার প্রেসার বেড়ে গেছে। আম্মা অসুস্থ হলে তোকে মেরেই ফেলবো।
বাচ্চা নষ্ট না করবি না তো তোকে ছেড়ে দেবো। বলে আবারো একটা লাথি মেরে বাসা থেকে বেড়িয়ে আসে। আগে থেকে রেডি করে রাখা তার উকিল বন্ধুর কাছে গিয়ে ডিভোর্স পেপারে সই করে।
তারপর আশিক তার মাকে কল দিয়ে বলে-
আম্মা, কাজ হয়ে গেছে। চিন্তা করিয়েন না। আমি সই করে দিয়েছি।
আর পেটের টাকেও লাথি মেরে এসেছি। ওটাও টিকবে না।
আপনি কোনো টেনশন করবেন না। নইলে আপনার প্রেসার বেড়ে যাবে। আমি আসতেছি।
ছেলের কথা শুনে আশিকের মা খুশিতে পা নাচান আর হিন্দি সিরিয়াল দেখেন।