ঈশ্বরের কাছে একটি কবিতা চাইলাম
ঈশ্বর বললো
“নদী দেখো
আকাশ দেখো
পাখি দেখো”
আমি নদীর দিকে তাকাই_
দেখি শান্ত নদীর বুকে সমুদ্রসঙ্গমহীতায় চর জাগে,
নিসঃঙ্গতায় ধীরে ধীরে মরে যায় নদী…
আমি আকাশের দিকে তাকাই_
দেখি বেদনার নীল রঙে ছাওয়া আকাশে
প্রেমহীনতায় মরে যাওয়া কবির বিষাদের উড়াউড়ি!
আমি পাখির দিকে তাকাই_
শুনতে পাই আহত পাখির ডানা ঝাঁপটানোর শব্দ!
কবিতা কোথায়?
ভাবনার এগলি -ওগলি ঘুরে ফিরে আসি শূন্য হাতে,
কবিতা শূন্যতায় মরে যায় আত্মা,
বিষাদে নীল হয়ে যায় মন!
আমি আবার ইশ্বরের কাছে একটি কবিতা চাইলাম_
ইশ্বর বললো “ভাবো”
বিদ্যুৎ চমকের মতো আমার মনে পরে যায়
তোমার হাওয়ায় উড়া চুল, যুগল ভ্রু
হৃদয়ে টাঙানো তৃতীয়ার চাঁদের মতো হাসি।
আমার আর অন্য কিছু ভাবতে হয় না।
সুনয়না তুমিই হয়ে ওঠো কবিতার শ্লোক।
বহুকাল পড়ে আছি
রক্তাক্ত গোধূলির পাড়ে
সময় গিলে নিচ্ছে আয়ু_
প্রতীক্ষিত চোখ পাথর
কেউ আসবে
কেউ হয়তো আসবে
হয়তোবা কেউ আসবে না
দ্বিধাগ্রস্ত মন নৈরাশ্যের হাসি হাসে!
নিজের কাছেই প্রশ্ন রাখে_
কখনো কি কেউ ছিলো?
বিষাদ আমার আজন্ম সাথী, দুঃখ নিজের ছায়া;
আমায় ফেলে যেতে তাঁদের হয় যে ভীষণ মায়া।
বিষাদ থাকে জড়িয়ে আমায়, বলে _ওষ্ঠ সুমধুর;
দুঃখ গুলোও কণ্ঠে ঝুলে হয়ে বাহুডোর।
রাতদুপুরে যন্ত্রণা দেয়, পাই না কোথাও সুখ;
তাড়াতে গেলেই তেড়ে আসে,খায় সে কুঁড়ে বুক।
মিনতি করি, পায়ে পরি, যায় না তবুও ছেড়ে;
অট্টহেসে বলে তাঁরা, লেখা আছি নিয়তি জুড়ে।
বিধির বিধান যায় না খন্ডন,এ নিয়তির পরিহাস;
তাই আজন্ম হাসি মুখে করে যাবো শোকসহবাস।
ভুল মানচিত্র ধরে হাঁটতে হাঁটতে তোমার শহরে চলে এলাম
এসে দেখি-তোমাকে ছোঁয়ে খেলা করে আশ্চর্য মেঘদল,
এখানে হৈ-হুল্লোড়ে দিব্যি আছে তোমার প্রিয় কণ্ঠস্বরেরা,
প্রতিনিয়ত তুমি চোখবুলিয়ে যাচ্ছো
চশমা-ফ্রেমে বন্ধী কিছু স্থিরচিত্রে,
সস্নেহে আঁচল দিয়ে মুছে দিচ্ছো ধূলোবালি
তোমার স্নেহের শুশ্রূষা পায় অবহেলিত পথশিশু, বৃদ্ধারা
পথের কুকুরটিও তোমার খুব প্রিয়।
অথচ আমার জন্য তোমার হৃদয় ভালোবাসাহীন।
আমিই সেখানে অশরীরী, কোথাও নিজের অবয়ব পাইনা,
আমার প্রেমহীনতার চিৎকার কি পৌঁছায় না তোমার কানে?
আমার জন্য ভালোবাসা এতোটা দুষ্প্রাপ্য হলো কি করে?
ঈশ্বরের সৃষ্টির সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে,
তার গুণকীর্তন না করলে,
তার সৃষ্টির অবমাননা হয়,
সৌন্দর্যের অবমাননা হয়
তাইতো তোমাকে এতো বন্দনা করি!
সাজাতে চাই কাব্যিক ছন্দে_
এই অপরিণত হাতেই দুঃসাহস করি
তোমাকে আপাদমস্তক বর্ণনা করার!
প্রতিবারেই ব্যর্থ হই,কাব্যিক ভাষায় দক্ষতা
না থাকার কারনে!
তবুও তোমাকে বর্ণনা করার এ দুঃসাহসিক অগ্রযাত্রা!এখন, সকাল দুপুর সন্ধ্যা রাতে_
তোমাকে সাজাতে উপমা খুঁজি।
যদি না ইশ্বরের সৃষ্টির অবমাননা করা হয়!
যদি না সৌন্দর্যের অবমাননা করা হয়!