বাবা, আমার করোনা পজিটিভ হলে কি আমাকে জঙ্গলে ফেলে দিয়ে আসবে?
ছেলের এমন প্রশ্ন শুনে বাবা ছেলেকে জড়িয়ে ধরে, ‘না বাবা, কোনদিনও না, কখনোই না। বাবারা কখনোই ছেলে-মেয়েদের বোঝা মনে করে জঙ্গলে ফেলে আসে না। বাবা তুমি বাড়ি থেকে বের হবে না, তাহলে তোমাকে করোনা ধরতেই পারবে না।’
_______________________________
শিলা ও সাগরের ডিভোর্স হয়ে গেলো আজ। সাগরের উপহার গুলো ফেরত দিলো শিলা। ফেরত উপহারের মাঝে স্বামীর দেওয়া শেষ উপহার এন্ড্রয়েড মোবাইল ফোনটিও ছিলো। যা ডিভোর্সের মূল কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিলো।
___________________________
সারাজীবন ঘুষ খেয়ে বিশাল সম্পদের মালিক হয়েছেন জামাল উদ্দিন সাহেব। কিন্তু ছেলে মেয়েদের মানুষ করতে পারেননি।
জামাল উদ্দিনের লাশ বিশাল অট্টলিকা বাড়ির আঙ্গিনায়। ৩ ছেলে ও ২ মেয়েরা জামাইসহ এসেছেন। লাশ দাফন করার আগেই ছেলে মেয়েদের মাঝে মারামারি লেগে গেলো বাসার ভিতর। তুমুল মারামারি। আত্বিয়স্বজন সেই মারামারি থামাতে ঘরে ছুটলেন।
লাশ পড়ে রইলো একা।
সেই সুযোগে একদল কুকুর লাশকে ক্ষত-বিক্ষত করে ফেললো নিমিষেই। এলাকাবাসীর কেউ-ই আগে কখনো কুকুরগুলোকে দেখেছেন বলে মনে পড়লো না কারোই।
______________________________
সতীনের একমাত্র ছেলেকে ঘাড়ে বসিয়ে খাওয়ায় শবনম।
দ্বিতীয় স্বামীর ঘর ভাঙার ভয়ে সতীনের ছেলেকে খাওয়ানো শুরু করলেও তার মুখ দেখতে চায় না সে।
________________________
ছাত্র: স্যার, দেখি আমায় আপনি কিভাবে ফেল করান!
স্যার: গুড, তাহলে এবার তুমি ভালোই পরীক্ষা দিয়েছো?
ছাত্র: আমি এবার পরীক্ষাই দেইনি।
__________________
সারারাত অপেক্ষায় থাকলো রাশেদ। গতকাল সকলে বলেছে, আগামীকাল একটি নতুন সকাল আসবে, সব দুঃখ কষ্ট চলে যাবে। সম্ভবনাময় আলোকিত হবে সব।
কিন্তু কোথায়? তার যেভাবে সকাল শুরু হয় সেভাবেই শুরু হলো। জীর্ণশীর্ণ ছেঁড়া কাঁথায় বেড়িয়ে যাওয়া পা আজও বেড়িয়েছে। বিকট যান্ত্রিক আওয়াজে ঘুম না আসা সকাল সেই-ই। তবে নতুন সকাল কই?
___________________________
আকবর সাহেবের বিয়ে হয়েছে দশ বছর। মাত্র দুই দিন হলো তিনি প্রথম বাবা হলেন। কিন্তু বাবা হয়েও তিনি তার সন্তানকে কোলে তুলে নিতে পারছেন না। জন্মের পর হতেই তার সন্তান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের. … তে।
শিশু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার প্রতিদিন দুপুরে আসে আর একটি কথাই বলে- আকবর সাহেবকে ‘বাবু হেসেছিলো একবার’। ডাক্তার ১০ দিন যাবত এই একই প্রশ্ন করছেন আকবর সাহেবকে। যতবারই তিনি প্রশ্নটি শোনেন ততবারই তার কান্না পায়।
__________________
চালের বস্তা দুর্বল হলে যা হয়। এক পাশে ফুটো হয়ে ধড়-ধড় করে পড়তে শুরু করলো। মাথা থেকে নামাতে নামাতে বেশ কিছু চাল রাস্তায় ইট পাথরে মিশে গেলো।
রহিমা শাড়ির আঁচল দিয়ে শক্ত করে বেঁধে নিলো। তাতে ঠিকমতো ঢাকা হলো না বুকটা।
ইজ্জত! হায়রে গরীবের ইজ্জত!
সাতদিন পর আজ পেলে ত্রানের চাল। তিনদিন অভুক্ত ছেলে মেয়েরা পথ চেয়ে আছে তার।
রোদে তপ্ত পিচ ঢালা রাস্তায় জোড়ে জোড়ে পা চালায় রহিমা।
_______________________
মহিবর চাচা সুদের ব্যবসা করেন। উনি মনে করেন তিনি অভাবী মানুষকে প্রয়োজনের সময় টাকা দিয়ে সাহায্য করছেন। বিনিময়ে কিছু টাকা নিচ্ছেন। তিনি এই সুদের টাকা দিয়ে একটি তিনতলা বাড়ি বানালেন। এলাকার লোকজন সেই বাড়ির নাম দিলো ‘সুদের টাকার বাড়ি’।
________________________
আবুল সাহেব এক পুরোনো দোকানে একটি মজার আয়না পেলেন। সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার পর আয়নার সামনে ধরলে সহজেই বোঝা যাবে হাত পরিষ্কার হয়েছে কিনা?
অফিস থেকে বাসায় ফিরে বার বার হাত ধোয়ার পরেও আবুল সাহেবের হাত পরিষ্কার হচ্ছে না!
উনি স্পষ্টই বুঝলেন ঘুষখোরের হাত কখনই পরিষ্কার হয়না।
__________________________
মায়ের মৃত্যু সইতে পারলো না টগবগে যুবক শাহজাদা। মাত্র সতেরো ঘন্টার মধ্যে নিজেও মৃত্যুকে আলিঙ্গন করলো সে।
___________________________
টুটুল আর সিমু পাশাপাশি নির্জনে বসে থাকার সময় টুটুলের খুব ইচ্ছে হচ্ছিলো সিমুর গালে চুমু খেতে। কিন্তু ইচ্ছের মৃত্যু হলো অঙ্কুরেই। ইচ্ছের বাস্তবায়ন করতে যদি পাঁচ বছরের ভাল বন্ধুত্বই নষ্ট হয়ে যায়!
____________________
বানের জল এক্কা দোক্কা খেলে
অভুক্ত থেকে যায় সদ্য জন্মনেয়া শিশুটি
যেখানে জন্মদেয়ার পর জ্ঞান না ফেরা মা আর কষ্ট পায় না।
প্রসব বেদনা ভুলিয়ে দিয়েছিলো ক্ষুদার জ্বালা, আর কোন কষ্ট নেই মায়ের
সব কষ্ট দিয়ে গেছে সদ্য জন্মনেয়া শিশুটিকে।
কোথায় আজ সমাজ?
তাকে কী ঠাঁই দেবে বানের জলে ভেসে যাওয়া ভিটে?
১৯৮৮ সালের বন্যায় জন্মনেয়া মা
২০১৭ সালে জন্মদিল মেয়ের।
বানের জলের মতো ভাসতে-ভাসতে শেষ ঠাই হয়েছিল কছিম উদ্দিনের কুঁড়ে ঘরে,
বানের জলের সাথে চলে যাওয়া মায়ের প্রাণটা তছনছ করে দিলো আরেকটি শিশু কন্যার জীবন।
বানের জল এক্কাদোক্কা খেলে
খেলে যায়-দূর দিগন্ত কাছে দেখা যায় না,
শুধু দেখা যায় অবাধ্য জলময় দেশ।