মুগ্ধতা ব্লাড ব্যাংকে আপনার দেওয়া তথ্য বাঁচাতে পারে একটি জীবন। আপনার তথ্য দিন, প্রয়োজনে রক্ত খুঁজুন এখানে।

পাঞ্জেরী তোকেই বলছি

মুগ্ধতা.কম

২৭ জুন, ২০২০ , ৮:২৩ অপরাহ্ণ

হেলেন আরা সিডনীর কবিতা - পাঞ্জেরী তোকেই বলছি

পাঞ্জেরী

চুরি করে কোনো এক দিন, তোর ডায়েরিটা পড়েছিলাম,

মস্ত ভুল করেছিলাম, তাই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।

কিন্তু তোকে কিছু না বলে পারছি না

আমার সমস্ত অনুভূতি দিয়ে তোকে অনুভব করছি আজ

বিশ্বাস কর আমি বুঝতে পারছি, আমি দেখছি স্বার্থান্বেষী হাতগুলো তোর কন্ঠনালী চেপে ধরেছে, নিষ্ঠুরতার দাম্ভিক হাতে যথেচ্ছারিতার চাবুক পেটাচ্ছে

তুই পুড়ছিস অমানবিকতার জলন্ত লাভায়.. আর

জীবনের পরিধিটাকে ধীরে ধীরে ছোট থেকে ছোট করছিস ।

 

পাঞ্জেরী

দুর্ভাগ্যের বিস্তীর্ণ পথ ধরে অনেক তো হাঁটলি, দুঃখের পাহাড় নিয়ে সহস্র সময় কাটিয়ে দিলি,

কী পেয়েছিস বলতো?…অপমান – অপবাদ,

জমার খাতায় শুধুই নিয়েছিস, শূন্যতার কঠিন অভিশাপ।

তোর আনন্দ বোঝার এখন আর কেউ নেই

তোর ভালো চাওয়ার অবশিষ্টাংশটাও আজ আর নেই,

জ্বলজ্বল স্মৃতির জোনাকিরা অন্য কোথাও জ্বলছে,

হ্যাঁ, স্মৃতি বলবো….কারণ যখন সময় তখন তোর পাশে আজ কেউ নেই

জীবন বাজি রেখে ঘাম ঝরিয়ে – রক্ত পানি করে, বুকটা জুড়ে মিথ্যেই কল্পচিত্রের ছবি এঁকে গিয়েছিলি

মায়ের বোধে – ভালোবাসার অটুট বিশ্বাসে ।

 

পাঞ্জেরী

না বলবো না কিছু ; আমিও বুকে পাথর চেপে আছি

তুই বড় বেশি অভিমানী – জেদী

আবার ভালোবাসার কাঙ্গালিনী

ঝরা পাপড়ির মতো ঝুরঝুর ঝরে পরছিস বুঝেও কারো অমঙ্গল কিংবা একবিন্দু ক্ষতি চাস নি জীবনের সঙ্গে জীবন মিলিয়ে পাশে কেউ নেই দেখেও-

সর্বস্ব ক্ষয়ে এবার পথে দাঁডাবার কথা ভাবছিস, আমি জানি তুই কষ্টে জ্বলবি, দুঃখ ছুঁয়ে থাকবি

এতোটা কাল তুই ফুটো বালতিতে জল ঢেলেছিস, অন্ধের মতো ভালোবেসেছিস যাদের

তারা তোকে ভালোবাসেনি-করেছে শুধুই ঘৃণা,

তাই তো বন্ধ্যা…বন্ধ্যাই থেকেছিস, মা হতে পারিস নি!

তবু কোন ভালোবাসার বিশ্বাসে তুই এতো অনঢ়, জল ছলছল চোখে ছানি ফেলেছিস

আশার বুকে সমস্ত রক্তনালীতে হতাশার সিল মেরেছিস

শীতল মায়ার মনটা বিষে বিষে করেছিস নীল পদ্ম এতো সহনীয় মানুষ হয় কী করে, বলতে পারিস?

 

পাঞ্জেরী

সময়ের এই কলিকালে মমতার পরাকাষ্ঠে মরলেও

খুঁজে পাবি না কোনো ভালোবাসার তল,

তুই যাদের ভাবিস আপন, তারা তোকে জানে পর ওরা আর ফিরবে না তোর মমতার বুকে,

ওরা জড়িয়ে আছে অন্য এক ভালোবাসার বুকে ওদের আকাশচুম্বী স্বপ্নের কাছে তুই বড় তুচ্ছরে! ঘর-বাড়ি, টাকা – পয়সা এগুলোই এখন দামী

তুই হয়ে গেছিস এখন অনেক বেশী অদামী,

তোর বুকে পা রেখে ওরা উপরে ওঠার সিঁড়ি খুঁজছে,

তুই সত্যি কতো বোকা, বাস্তবতাকে জেনেও ওদের সেই ছেলেবেলার কথাগুলো,

আজো মনে রেখেছিস, কি আবেগেই না বলেছিল –  কান্না করো না মা, আমরা বড় হয়ে গেলে-

সব ঠিক হয়ে যাবে ; সুখ আসবে মাগো..

দেখ্, ওরা বড় হয়েছে ; মানবিক মানুষ হয় নি।

ওরা ঠিক না করে ; সব করে দিল বেঠিক

ওরা সুখী না করে, একাই সুখ খুঁজে নিল।

 

পাঞ্জেরী

সময়টা এখন এমনি ; সকলে ছেড়ে গেলো তোকে  আমি যেতে যেতেও পারছি না তোকে ছেড়ে যেতে

তোর স্বচ্ছতার গভীর ভালোবাসা আমায় জড়িয়ে ধরে,

আমি জানি, আমি চলে গেলে তুই আর বাঁচবি না তোর সুখ – দু:খ ; আনন্দ – বেদনার ভাগ আমায় দিস

আমার কাছেই কাঁদিস ; আমার কাছেই হাসিস।

কী করে যাইরে বলতো… পারি না যেতে

তাই তো আমি আজো তোর ভালোবাসার

কাঙ্গাল রয়ে গেলাম।

তোর শেষ বিদায়ে হবে আমার বিদায়,

আমি যে তোর বিবেক, কষ্টের বিবেক

হাত – পা বাঁধা বিবেকবোধ।