ভার্সিটিতে ভর্তি হতে পেরে তমালের সে কী আনন্দ। রেজাল্ট ভালো থাকায় একটা সিঙ্গেল রুমও পেয়ে যায়। নিজ বাসার মতোই পড়ালিখা আর ঘুমের স্বাধীনতা আছে কিন্তু রাত এলেই শরীরটা কেমন ছমছম করে.. মনে হয় রাতে কে যেন ঘরে এসে হাঁটা-চলা করে। তমালের কেন তবে শরীরটা শিউরে ওঠে, এত ভীরু মনের ছেলে তমাল তো নয়।
আজ ঘুম আসছিল না হঠাৎ দরোজাটা খুলে যায়…. কেউ একজন এসে চেয়ারে বসে বই পড়ছে। তমাল দোয়া-দরুদ পড়তে পড়তে বলে
-কে ভাই তুমি? কী চাও এখানে, আর…আর কেমন করেই বা এলে।
অন্যজন বলে, ভয় পেও না, আমি সাগর, আগে এই রুমে থাকতাম। রুমটা বন্ধই থাকে, কেউ এখন ভয়ে থাকে না এই রুমে।
-কিন্তু কেন?? ভয়ে ভয়ে তমাল জিজ্ঞেস করে।
-কেন, সুমী আর সাগর….।সুমী-সাগর এই প্রাঙ্গনে সকলের হিংসের জুটি ছিল। কেউ কেউ ভালোবাসার কথাও বলতো। এখানকার কিছু মাস্তান ছেলেরা সুমীকে অন্যভাবে চাইতো। আমি তাদের সাবধান করাতে শত্রু হয়ে যাই। ওরা আমার ভালোবাসাকে ধর্ষণ করে সুযোগ বুঝে মেরে ফেলে তারপর সেই রাতে ওরা আমার এই ঘরে এসে ঘুমের মধ্যে আমাকে গলা চেপে মেরে ফেলে।
তমাল ভয়ে কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বলতে থাকে, ‘‘তু…তু…তুমি ভুত।’’
অন্যজন বলে- ভুত কি না জানি না, আমাদের দুই আত্মা আজও একসঙ্গে ঘোরে। অন্যায় দেখলে শাস্তি দেই কারণ এইসব ছেলেরা ছলেবলে পার পেয়ে যায়। তোমার ভয় নেই, তুমি ভালো মনের মানুষ। তোমার কোনো ক্ষতি হবে না।
তমাল চুপ হয়ে শুনছিল এদিকে হার্টবিটের কোনো থামার লক্ষণ নেই। ধক্..ধক্…ধক্ করছে তো করছে। এই বুঝি জ্ঞান হারিয়ে ফেলে তমাল। অতঃপর দেখে ছায়াটি একসময় ধীর পায়ে চলে যায়……