(পর্ব-৭)
ইরাও সায় দিয়েছিল
আদর বাড়ে। আদর। শব্দটা উচ্চারণেই কি যেন অর্থ ছিল। রাত্রি তখন শুধুই হেসেছে। কিন্তু এত কিছু মাথায় আসার পরও একটা কথার অর্থ সে কিছুতেই বের করতে পারছে না। কেন তার শ্বশুর শাশুড়িকে ওই কথাটা বলল- রাত্রিকে এখন কিছু বলো না।
রাত্রি কথাটা শুনে ভয় পেয়ে গিয়েছিল। ওর বুকের মধ্যে একটা ভারি পাথর। ‘এখন রাত্রিকে কিছু বলো না। তড়তড় করে সিড়ি দিয়ে নেমে এল রাত্রি, শাশুড়ির সামনে গিয়ে দাঁড়াল, ডাকলো- মা
হ্যাঁ।
শুধু একটা শব্দ। কিন্তু তার চোখের দিকে তাকিয়ে অবাক হয়ে গেল রাত্রি। মনে হল যেন দৃষ্টি কেমন উ™£ান্ত। আর চোখের আড়ালে মনে হয় কান্না থমকে আছে। এক্ষুণি চোখ ফেটে জল বেরিয়ে আসবে।
একদিন একবারও আয়নার দিকে তাকায়নি রাত্রি। কারো দিকেই তাকায়নি। এমন কি নিজের দিকেও নয়। কেমন একটা ঘোরের মধ্যে কেটে গেছে দিনগুলো। এই প্রথম এসে দাঁড়াল আয়নার সামনে। সঙ্গে সঙ্গে যেন বুকের ভেতরটা চমকে উঠলো।
এ কে? একে তো রাত্রি চেনে না, কখনো দেখেনি। সম্পূর্ণ একজন অচেনা মানুষ যেন ওর চোখের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। ওর বুকের ভেতরটা হাহাকার করে উঠলো। নিজেকে াহরিয়ে ফেলার জন্য হাহাকার।
একদিন ওর শুধুই মনে হচ্ছিল ওর সব কিছু হারিয়ে গেছে। কিন্তু সে ভাবনা কেমন অস্পষ্ট। এক এক সময় বিশ্বাসই হচ্ছিল না। যেন দুঃস্বপ্ন দেখছে, এখনি ঘুম ভেঙে যাবে, সঙ্গে সঙ্গে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেরে হেসে উঠবে।
কিন্তু আয়নায় নিজেকে দেখে ওর চোখ ঠেলে জল এল।
এ কাকে দেখছে ও? সর্বাঙ্গে একটা সাদা কাপড়।
একটা দিনও নিছক একটা যন্ত্রের পুতুল হয়ে গিয়েছিল। যে যা বলেছে করে গেছে। কেউ এনে বসিয়ে দিয়ে গেলে বসেই থেকেছে। শুধু একটা অস্পষ্ট ধারণা, কি যেন চিরকালের জন্য হারিয়ে গেছে। কিন্তু আয়নার সামনে দাঁড়িয়েও চমকে উঠল। ওর মুখোমুখি যে দাঁড়িয়ে আছে তাকেও চেনে না, কোনদিন দেখেনি। তার মুখ প্রথম চোখে পড়েনি। শুধু একটা সাদা কাপড়। ক্রমশ তার মুখ স্পষ্ট হয়ে ফুঁটে উঠল। নিস্তেজ প্রাণহীন ধ্বসে পড়া জীবনের একটা মুখ। চোখের নীচে কালি, কপালের শূন্যতা। গলায় দুটি হাতে সর্বাঙ্গ জুড়ে শুধুই নিঃস্ব নিস্তব্ধতা।
ফুপিয়ে কেঁদে উঠল রাত্রি।
ওর কিছুই মনে পড়ছে না। ওকি নিজেই একে একে সব খুলে রেখেছে! নিজেই এই সাদা কাপড়খানা শরীরে জড়িয়েছে। কিছুই মনে পড়ে না। ওতো একটা যন্ত্রের পুতুল হয়ে গিয়েছিল।
না, একটু একটু করে মনে পড়ছে এখন।
এখন সমস্ত বাড়ি আবার নিস্তব্ধ হয়ে গেছে।
রাত্রির শুধু মনে পড়ছে সারা বাড়ি লোকজনে ভর্তি হয়ে গিয়েছিল। আর ঘরের মধ্যে দেয়ালৈ পিঠ দিয়ে মেঝেতে বসেছিল রাত্রি। ও চোখে কিছুই দেখছিল না, কানে কিছুই শুনছিল না। উঠে দাঁড়াতেও ওর কষ্ট হচ্ছিল। শরীরে কোন শক্তি নেই।
নিলয়ের বাবা বারান্দার ডেক চেয়ারে দু’হাতে চিবুক রেখে বসে আছেন গুম হয়ে। নিলয়ের মা লুটিয়ে পড়ে আছেন মেঝের উপর। মাঝে মাঝে ডুকরে কেঁদে উঠছেন। নিশির অবস্থাও একই রকম। তারপরও মাঝে মাঝে সান্তনা দিচ্ছে মা’কে, গায়ে মাথায় হাত বোলাচ্ছে। তমাল এক কোণায় দাঁড়িয়ে আছে। সামনের দিকে উ™£ান্তের মত তাকিয়ে ছিল রাত্রি।
আয়নার সামনে থেকে সরে এল রাত্রি। কেউ দেখতে পেলে কে কি বলে বসবে ও কিছুই জানে না। এখন ওর চারপাশ জুড়ে শুধু কি করতে আছে আর কি করতে নেই। এ ক’দিন ধরে ও শুধু একটা যন্ত্র হয়েগিয়েছিল। এখনও শুধুই একটা কর্তব্য।
ক্ষীণভাবে মনে পড়ছে গোসল করে এসে, ওর শরীরে তখন একটুও জোড় নেই, কার কাছে যেন একটা বিরুনি চাইলো। অভ্যাসবশেই হয়ত। হয়ত নিশির কাছে। সঙ্গে সঙ্গে কে যেন বলেছিল, চিরুনি নিতে নেই, আয়না দেখতে নেই।
ওই ঐটুকুই মনে আছে। কে বলেছিল তাও মনে নেই। ওর কাছে তখন বাড়ির সব মানুষগুলোই অর্থহীন।
এখন ওকে শুধুই কর্তব্য হতে হবে।
রাতুল! রাতুল কোথায় কে জানে। ওর গলার শব্দ শোনা যাচ্ছে না। সেই অনর্গল কথা বলে যাওয়া কবে থেকে যে থেমে গেছে রাত্রি জানেও না। হঠাৎ কেমন শান্ত হয়ে গেছে। কোনও প্রশ্নও করে না। হয়তো প্রশ্ন করে করে কোন উত্তর পায়নি বলে আপনা থেকেই থেমে গেছে। আত্মীয়স্বজন যারা এসেছিল, রাতুলকে হয়ত তারাই দেখেছে, গোসল করিয়েছে, খাইয়েছে।
শুধু একবার মনে পড়েছে ও এসে কোলের কাছে বসেছিল, চোখ মেলে মুখের দিকে তাকিয়ে থাকতো, কাউকে কাঁদতে দেখলে ওর চোখেও জল আসত। কখনো শব্দ করে কেঁদে উঠত। কেন তা স্পষ্ট করে জানেও না। মৃত্যু কি তা তো ওর ধারণার বাইরে। চিরকালের জন্য ওর কি হারিয়ে গেছে তাও জানে না।
রাত্রি এ অবস্থাতেই বাবার সামনে গিয়ে দাঁড়াল। কান্না দেখে ওর শুধু মনে হচ্ছিল, এই বৃদ্ধ মানুষটার বড় কষ্ট।
তুমি এসো না, এসো না, আমার সামনে।
শুনে আহত হয়ে দু’পা সরে এসেছিল রাত্রি। মনে হয়েছিল, বাবা ওকেই কেন দায়ী করছেন। কিন্তু তারপরই বলে উঠলেন, তোমার দুঃখ আমি দেখতে পারবো না। আর সঙ্গে সঙ্গে রাত্রির শরীরে মনে কি এক অ™ভুত ঠান্ডা প্রলেপ পড়ল। সারা শরীর জুড়িয়ে গেল।
মাথা নিচু করে ধীরে ধীরে বললেন, তোমাকে জানাতে বারণ করেছিলাম। মিথ্যে ভয় পাবে মনে করে। একটু থামলেন। একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললেন- আমার জন্যই হল, কেন যে ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। তারপর বললেন- খবর শুনছিলাম, ভাল করে শুনিনি, কোথাও কি কিছুই না, শুধু কানে গেল একটা দুর্ঘটনার খবর। নিলয় যে ঐ বাসে আসবে আমি তাও জানতাম না। তবু কেন যে ভয় পেলাম। হয়তো সেজন্যই-
রাত্রি ওর সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে পারেনি। পালিয়ে এসেছিল।
এখন সব একটু একটু করে মনে পড়ে যাচ্ছে।
নিশি এসে বলল, রাতুলকে খাইয়ে দিয়েছি, তুমিও খেয়ে নাও। আর রাতুলকে এবার একটু ঘুম পাড়াও।
রাতুল কিন্তু আগের মত রাত্রির পা জড়িয়ে ধরল না। শুধু ওর একটা হাত রাত্রির হাঁটু স্পর্শ করল। ও হয়ত ভাবছে মা দূরে সরে গেছে। সত্যিই তো ও দূরে সরে গিয়েছিল।
নিশির বুদ্ধি নয়, হয়ত মা শিখিয়ে দিয়েছে। রাত্রিকে আবার কাজের মধ্যে ভুলিয়ে দিতে চাইছে। রাতুলের মধ্যে।
এখন আর ওর সামনে কোন কাজ নেই, শুধু কর্তব্য। যা করা উচিত, যা সকলে চায়। এখন আর ওর নিজস্ব বলে কিছু নেই। ওর কোন ইচ্ছে এখন আর ইচ্ছে নয়।
রাত্রির ইচ্ছেও হয় না। এই কর্তব্যগুলোই ওর ইচ্ছে হয়ে গেছে। ও তো এখন একটা যন্ত্রের পুতুল হয়ে গিয়েছে। ও জানে এখন জীবন শুধু নেই। এত বিলাসীতার মাঝেও ওর মনটা এখন দুঃখবিলাসী। তাতে ওর কিছুই যায় আসে না, ওর এখন দুঃখটাই ইচ্ছে।
মানুষ মানুষে কিভাবে সম্পর্ক গড়ে ওঠে, ভেঙে যায়, আবার কেনই বা অন্য কোনো সম্পর্ক তৈরি হতে শুরু করে তা কী কেউ জানে। কোনও মানুষই বোধহয় জানে না। অভ্যাস এক ধরনের নেশা। নিলয় মারা যাবার পর রাত্রি আর ও বাসায় থাকেনি, নিজের বাবার বাড়িতে চলে এসেছে। কিন্তু এখানে এসেও ও নিস্তার পাচ্ছে না, কারণ নিলয় মারা যাবার এখনও চার মাস হয়নি, এরই মধ্যে শ্রাবণ রাতুলের পিতৃত্ব দাবি করে উকিল নোটিশ পাঠিয়েছে। আর কেউ না জানুক রাত্রি জানে এখানে শ্রাবণের জয় হবে। রাতুল যে শ্রাবণের ছেলে, একথা ও নিলয়কেও জানিয়েছিল।
এতদিন যত দুশ্চিনাতা ছিল ওর ওই রাতুলকে নিয়েই। বাবা ভরসা দিয়েছে, উকিল বাবুর আইনের কচকচি যতই ওকে নিশ্চিন্ত করার চেষ্টা করুক, মাঝে মাঝেই ভয় পেয়েছে কোটের বিচার শেষ অবধি শ্রাবণকেই রাত্রির কাছ থেকে রাতুলকে ছিনিয়ে নেবার অধিকার দেবে নাতো। ওর এই নিঃস্ব শূন্য জীবনে রাতুলই একমাত্র লক্ষ্য, একমাত্র আশ্রয়।
‘আফটার অল বাবা তো’ উকিল বাবুর কথাটা ওকে সচেতন করে দিলেও মনের গভীরে গিয়ে পৌঁছালো না। রাতুলের ওপর যে শ্রাবণের কোন অধিকার থাকতে পারে ওর মন তা স্বীকার করতেও রাজি নয়। আমার শরীরের মধ্যেই ও গড়ে উঠেছে, আমার যত্নে ভালবাসায়, কত বিন্দ্রি রাত আর উৎকণ্ঠায়। রাতুল আমার সন্তান, শুধু আমারই, এমন একটা বোধ ওর সমস্ত শরীর মন আচ্ছন্ন করে রেখেছে।
একেবারেই যে জানতো না তাও নয়, আগেই অনেকের কাছে শুনেছিল। তবু কথাটা নতুন করে শুনল, আর সঙ্গে সঙ্গে ভেতরটা তিক্ততায় ভরে উঠল। এই লোকটা, যার সঙ্গে রাত্রি দীর্ঘদিন কাটিয়ে এসেছে, এক ছাদের নিচে, এক বিছানায়কথাটা এখন আর মনেও পড়ে না, ধুসর অস্পষ্ট বিবর্ণ একটা ছবি, ঝড়ে জলে ধুয়ে ধুয়ে যা মুছে গেছে, যে টিকে আছে শুধু এক অসীম ঘৃণা হয়ে। আর সেই লোকটাই কিনা মাঝে মাঝে রাতুলের সঙ্গে দেখা করতে আসবে। আইনের অধিকার নিয়ে।
নিলয় বেঁচে থাকতেও শ্রাবণ ও বাসাতে গিয়েছিল, কই তখন তো একবারও বলেনি আমার ছেলে, কিন্তু এখন কেন সে রাতুলকে তার ছেলে বলে পৃথিবীতে বাঁচিয়ে রাখতে চাচ্ছে। নিলয় থাকতে ও যখন আসতো তখন তেমন অস্বস্তি হতো না, কিন্তু এখন, সঙ্কোচ, লজ্জা, অস্বস্তি মিলে অ™ভুত একটা জড়তা ওকে পেয়ে বসেছে। লোকটার সঙ্গে আবার মুখোমুখি হওয়ার মতো অস্বস্তি আর আছে নাকি। সেজন্য একটা আতঙ্ক ছিলো।
বাবা একদিন বলল- আজ শ্রাবণের আসার কথা, রাতুলের সঙ্গে দেখা করতে আসবে। ভয় পাওয়ার কিছু নেই, তবু রাত্রি ভয় পেয়ে বসলো। ভয় না অস্বস্তি ও নিজেও বুঝতে পারলো না।
রাতুলকে নিয়ে গেল বাবা। শ্রাবণের কাছে রাতুলকে রেখেই বাবা ফিরে এল। এসে বললো- বসার ঘরে বাবা-বেটায় যত খুশি গল্প করুক।
রাত্রি সঙ্গে সঙ্গে বাবার মুখের দিকে তাকালো। বাবা যে নির্বোধের মতো এমন একটা কাজ করে বসবে তা ও ভাবতেও পারেনি। ওই রাতুলকে ঘিরেই ওর যত ভয়। এখন আর আমার জীবনে ওই রাতুল ছাড়া কে আছে কী আছে? চোখে মুখে উম্মার ভাব ফুটিয়ে বলল, রাতুলকে তুমি ওর কাছে ছেড়ে দিয়ে চলে এলে? কেন কাছে বসে থাকতে পারলে না।
আইনমাফিক বাবা ছেলের সঙ্গে দেখা করতে এসেছে, হয়ত একটু আদর করবে, দুটো কথা বলবে, সে সময় সেখানে আর একজন কি বসে থাকা ভালো দেখায়। কথাই তো বলবে, বলুক না যত খুশি। একটা বড় ব্যাগ এনেছে শ্রাবণ, হয়তো রাতুলের জন্যই। কিছু উপহার-টুপহার। যদি তার মন চায় দিক না।
রাত্রি দেখলো বাবা ওর কথা শুনে ওর মুখের দিকে তাকিয়েছে। হেসে বললো- রাতুলকে নিয়ে তো পালিয়ে যাবে না।
একটা সহজ কথা বাবার মাথায় ঢোকেনি বলে ও বিস্মিত না হয়ে পারল না।
বলে উঠল, রাতুলকে একা ছেড়ে দিয়ে এলে ওর কাছে, একা পেয়ে কি মন্তর পড়াবে তুমি জানো। সব কিছুর মধ্যে আতঙ্ক তো ওই একটাই। মাঝে মাঝে দেখা করতে আসবে শুনে সেজন্যই ভয় পেয়েছিল। মাকে ছেড়ে থাকার কথারাতুল ভাবতেই পারে না। বরং বাবার প্রতি ওর টান কম। কেন থাকবে সেই ভালোবাসা। নিলয় কি কোনো দিনও ওকে সেই ভালোবাসা দিতে পেরেছে, যা শ্রাবণ দিতে পারতো। কিংবা শ্রাবণও কি পারতো না…
কিন্তু কে জানে, এখন যদি ছেলের ওপর বেশি বেশি ভালোবাসা দেখাতে শুরু করে। ওই বয়েস তো শুধুই ভালোবাসা চায়, আদর পেলেই সেটাকে ভালোবাসা ভেবে বসে। আর সে ব্যাপারে শ্রাবণ কম দক্ষ নয়। রাতুলের কথা কি বলবে, রাত্রি নিজেই কি ওর ভালোবাসাকে চিনতে পেরেছিল? ওর তো সবটাই শুধু অভিনয়।
রাত্রির ভয়, শুধু ওকে জব্দ করার জন্যই হয়ত দেখা করতে আসার নামে একটু একটু করে মায়ের বিরুদ্ধে রাতুলের মন বিষিয়ে দিতে চাইবে শ্রাবণ। ওইটুকু বাচ্চা ছেলে, ও কিবা বোঝে, কি বা জানে। ভয় সেজন্যই। রাত্রি বাবার হাত ধর তুলে বললো, তুমি যাও, তুমি যাও। ওদের কাছে বসো গিয়ে।
রাতুল শ্রাবণের সঙ্গে বসে গল্প করছে, মাঝে মাঝে শব্দ করে হেসে উঠছে। হাসির কথাটা কী তা রাত্রির কাছে পৌঁছাচ্ছিল না।
শ্রাবণের উপস্থিতিটুকু ওর কাছে বিরক্তিকর মনে হচ্ছিল, চলে গেলেই যেন বেঁচে যায়। আবার স্বাভাবিক হয়ে উঠতে পারে। তার ওপর রাতুলের অত গল্পে মজে যাওয়া, হেসে ওঠা সে আরেক যন্ত্রণা। রাত্রি কোথায় চাইছে শ্রাবণের সঙ্গে রাতুলের দূরত্ব আরো বেড়ে থাক, তার বদলে তাকে এত কী ভাল লাগছে তার সঙ্গ। রাত্রি চেয়েছে রাতুলকে নিজর মতো করে গড়ে তুলতে; ভেতর থেকে বলে উঠতে চেয়েছে, আমিই তোর বাবা, আমিই তোর মা।
(চলমান…)