মুগ্ধতা ব্লাড ব্যাংকে আপনার দেওয়া তথ্য বাঁচাতে পারে একটি জীবন। আপনার তথ্য দিন, প্রয়োজনে রক্ত খুঁজুন এখানে।

মনের আধাঁর পেরিয়ে

পল্লব শাহরিয়ার

৩ জুলাই, ২০২০ , ১১:২১ পূর্বাহ্ণ

মনের আধাঁর পেরিয়ে

এক

ফুটকী থেকে রাত্রি। এ বাড়িতে কেউ ওকে বৌমা বলে ডাকে না। ঠিক বিয়ের পরে শ্বশুর দুয়েকবার মুখ ফসকে বৌমা বলে ফেলতেন। দুয়েকবারই শুধু। মনে পড়লে রাত্রির এখনও হাসি পায়। সঙ্গে সঙ্গে শাশুড়ির সে কি দাবড়ানি। চোখে কড়া ধমক দিয়ে বলে উঠেছিল, তুমি বুড়ো হতে চাও হও, আমি সেকেলে শাশুড়ি হবো না। একটা কমা না সেমিকোলন দিয়ে, রাত্রির মনে পড়ে, নিলয়ের মা, মানে রাত্রির শাশুড়ি, মুখ ফিরিয়ে চলে যেতে যেতে বলেছিল, কেন রাত্রি বলে ডাকতে কি জিভে তেতো লাগে… এত সুন্দর নাম।

রাত্রি বলে বাপের বাড়িতে কেউ ডাকতো না। সেখানেও সবার মুখেই ফুটকী। বেশ বাজে নাম। স্কুলের মেয়েরা কেউ কেউ জেনে গিয়েছিল বলে প্রথম প্রথম ক্ষ্যাপাত। ডাক নামগুলোর কি সব সময় কোন ইতিহাস থাকে! বাবা-মা আদর করতে গিয়ে সেই মুখে কথা না ফোটার বয়সে কত যে ইকড়ি-মিকড়ি নাম দিয়ে বসে, সেটাই হয়ে যায় ডাকনাম। আর বেচারী বড় হওয়ার পর সেটাই হয়ে যায় অস্বস্তি। বিয়ের পরে নিলয় ওদের বাড়ি গিয়ে যেদিন জানতে পেরেছিল, রাত্রির কি লজ্জা। ফুটকী ছিল শুধু স্কুল কলেজের গন্ডির মধ্যে, ছেলেবেলাতেই তাকে রাত্রি বানিয়ে নিলে কত ভাল হত। তাহলে নামটা নিশ্চয়ই খুব আপন লাগতো। এখন লাগে না, কেমন একটু দূরত্ব আছে। স্কুল কলেজের রোল নাম্বারের মতো। বড় হওয়ার পর কি নাম বদল হয়!

ফুটকী বা রাত্রি কোনটাই অবশ্য ওর কাছে সুন্দর নাম হয় না। শাশুড়ি যাই বলুক। ও বোধহয় মনরাখা কথা। আর ফুটকী নামটাতে ওর যতই লজ্জা থাক, বাপের বাড়িতে গেলে কেউ যখন ফুটকী বলে ডাকে, কি ভাল লাগে। কত নিজের মনে হয়। ছোটবেলায় একটু ছোটখাটো দেখতে ছিল বলে, নাকি মুখে খই ফুটতো বলে, মা একবার হাসতে হাসতে কাকে যেন বলেছিল। নিলয় জানে না, জানলে বলতো, তখন যদি এত কথা ফুটতো, এখন এত চুপচাপ কেন।

রাত্রি, এখন যে একটু চুপচাপ তা অবশ্য নয়। তবে ওর মডার্ন শাশুড়ির মতো অতিরিক্ত প্রগলভতা, অত্যধিক হাসি মস্করা ওর পছন্দ নয়। শাশুড়ি শাশুড়ির মতো হলেই যেন বেশি মানায়। মীনা বলেছিল, তোর মত শাশুড়ি পেলে আমি বর্তে যেতাম। পেয়েছিস তো, তাই জানিস না তুই কি লাকি। শুনে বিষণ্ন হাসি হেসেছে রাত্রি। – দ্যাখ মীনা, এদের কারো বাইরেরটা মডার্ন, হাসিখুশি, কেউ ব্যাকডেটেড, তারপরও ভেতরে ভেতরে সব এক, শুনতে তো পাস।

মীনার সঙ্গে তুই তোকারিতে নেমে এসেছে এই ক’মাসেই। আরো কয়েকজনের সঙ্গে গভীর বন্ধুত্ব হয়ে গেছে। কারণ অন্তরের অসন্তোষ বোধহয় সকলেরই এক। একজন শুরু করলেই ভেতরের ক্ষোভ বের করে আনে অন্যজন। শুধু জয়া যা- একটু পৃথক। বেশ চাপা ধরনের। শোনে, কিন্তু পেট থেকে একটা কথাও বের করে না। হাসি হাসি মুখে এমন একটা ভাব করে যেন বেদম খুশির জীবন। সংসারে কোন অতৃপ্তি নেই। অথচ থাকে তো জয়েন্ট ফ্যামিলিতে। জয়েন্ট ফ্যামিলি! বাপরে। শুনে রাত্রি-মীনা দুজনেই বলে উঠেছিল, হেসে ফেলেছিল। তখন খেয়াল হয়নি, ওদের নিজেদেরগুলোও তো তাই, তুলনায় একটু ছোট এই যায়।

জয়াকে সেজন্যই ওরা খুব একটা পছন্দ করে না। দুঃখ এক না হলে কি এক হওয়া যায়। সম্পর্ক গড়ে ওঠে? দুঃখ নেই তা হতে পারে না। তবে এত চাপা স্বভাব কিছুতেই মানতে দেবে না। খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে জিজ্ঞেস করলে ‘হ্যাঁ’ অথবা ‘না’। মনি, সোমাদের তাও বোঝা যায়। ওরা দিব্যি স্বামী আর বাচ্চা নিয়ে আলাদা ফ্ল্যাটে থাকে, শ্বশুড় শাশুড়ির সঙ্গে কোন সম্পর্ক নেই। দুপুরে চট করে বাপের বাড়ি যাওয়া যায়। টেলিফোনে আধাঘণ্টা গল্প করে বলা যায়, মা একটু আমের আচার করো তো, গিয়ে নিয়ে আসবো।

আসলে রাত্রিদের একটা ক্লাব আছে। সে কেজি স্কুলটায় রাতুলকে ভর্তি করেছে তার সামনের মাঠে এই ক্লাব। অনেক মায়েরাই সকালবেলা ছেলেকে স্কুলে পৌঁছে দিতে এসে বসে থাকে, গল্পগুজব করে, যাকে বলে আড্ডা। ছুটির পরও তাদের গল্প চলতেই থাকে, ক্ষিধেপেটে ছেলেটার কথা মনেই থাকে না, সে তাড়া দিলে উল্টে ধমক দিয়ে ফেলে।

এটাকেই রাত্রি মীনা ঠাট্টা করে ক্লাব বলে। এখানেই জীবনের যত ক্ষোভ, দুঃখ, অসহায়তা উজাড় করে দেয়। কে.জি পার হলে আবার তো ভর্তির হাঙ্গামা আছে, কোন স্কুলে কখন ফর্ম দেয় সে সব খবরও পায় এখানেই।

রান্নার লোক ছিল না, একটা গেলে আজকাল আরেকটা কাজের লোক পাওয়া যে কি যন্ত্রণা, রাত্রি একমাস আড্ডা দিতে পারেনি, স্রেফ রান্নাঘরে কাটাতে হয়েছে, শাশুড়ি একটু আধটু সাহায্য যে না করেছে তাও নয়, কিন্তু নিলয়ের মুখে একট মাস কী বিরাগ। রাতুলকে শুধু স্কুলে পৌঁছে দেয়া, পৌঁছে দিয়ে তাড়াহুড়ো করে গোসল-খাওয়া, অফিস যাওয়া। শাশুড়ির আদরের ছেলের কি কষ্ট। রাত্রিকে যে রান্না করে নিলয়কে অফিসে পাঠিয়ে ছুটতে ছুটতে এই চড়া রোদে ঘেমে নেয়ে যেতে হয়েছে রাতুলকে আনতে। সেটা যেন কোন কষ্টই নয়। ঘামশিক্ত শরীরে ফিরে লোডশেডিং বা পানি নেই।

রাত্রির শ্বশুড় অবশ্য সরকারি অফিসে কাজ করেন, সেজন্য অফিস যাওয়ার অত তাড়া নেই। নিলয়ের মতো সেবরকারি নয়, চোখেমুখে গুঁজে ন’টার সময় ছুটতে হয় না।

খবরটা রাতুলের কাছে শুনেছিল, কোন গুরুত্ব দেয়নি, ভাল বুঝতেও পারেনি। শুনতে হল মীনার কাছ থেকেই।

মীনা বললো, সেকী রে শুনিসনি কান্ড!

রাত্রিই প্রশ্ন করেছিল, ‘পিংকুকে নিয়ে গেল, ও আবার কে?’

পিংকু ছেলেটাকে সবাই চেনে, যদিও তার মা’র সঙ্গে তেমন সৌহার্দ্য কোনদিন গড়ে ওঠেনি। বরং তারা একটু এড়িয়েই চলত। ছেলেটাকে চেনার কারণ শুধু দেখতে ফর্সা ফুটফুটে নয়, দারুণ ইনটেলিজেন্ট।

সেটা ওর চোখ আর টিকলো নাকেই স্পষ্ট। দোষের মধ্যে উচ্ছিংড়ের মত ছিটকে ছিটকে বেড়ায়, বড্ডা চঞ্চল। কিন্তু তার জন্য আবার ভালও লাগতো। ঐ যে ইনটেলিজেন্ট, হায়েস্ট মার্ক পায়। গুণ এমন জিনিস, দোষটাও ভালবাসা পেয়ে যায়।

কিন্তু ওর মা’কে ওদের একদম পছন্দ নয়। বয়স ওদের মতই, একটাই তো বাচ্চা, কত আর হবে। শরীরে আট আছে। ওদেরই কি নেই? কে যেন ঠাট্টা করে বলেছিল, ইয়াং মাদার্স ক্লাব। ওদের অবশ্য দু’দশজন আছে, যারা একটু বয়স্ক, কাঁধে কোমরে একটু ভারি, দ্বিতীয় কি তৃতীয় সন্তান, একটু দেরিতে, চাই না চাই না করে হঠাৎ দ্বিতীয় প্রহরে মত বদল, কিংবা নিতান্তই অ্যাকসিডেন্ট। একটু ঘোর সংসারী ধরনের।

কিন্তু পিংকুর মা? চালু মেয়ে। ঠোঁটের লিপস্টিক, নখের নেলপলিশ সব সময় ফিটফাট, মাঝে এক একদিন মনির টিপ্পনী। দেখেছিস রাত্রি, ভেতরের জাম পরেনি, কি বেহায়া। অর্থাৎ ব্্রা। ওটাই নাকি এখন নতুন হাওয়া। এক সময় পরাটাই ছিল দোষের। অসভ্যতা। আর এক সময় তো ছিল চাপা জামা। মেয়েদের ওসব থাকই যেন অপরাধ।

পিংকুর মা অবশ্য ওদের সঙ্গে বড় একটা বসত না, পায়চারি করতে করতে এর ওর সঙ্গে কথা বলত, তারপর কখন যে সরে পড়তো কেউ লক্ষ্যই করত না। ছুটি হয়ে গেছে পিংকুকে আটকে রাখত দারোয়ান, ওর মা ছুটতে ছুটতে এসে, মুখে দেরী হয়ে যাওয়ার জন্য আতঙ্ক, ছেলের হাত ধরে তবে মুখে নিশ্চিত হাসি। ব্যাগ থেকে চিরুনি বের করে চুল ঠিক করত।

মীনা আর রাত্রি চোখাচোখি করে ইঙ্গিতে হাসতো। আরো কেউ কেউ। বিল্লুর মা কিন্তু হেসে উড়িয়ে দিয়েছিল- পাগল নাকি তোরা? তাও কি সম্ভব, এই কটকটে রোদের সময়!

ওর ধারণা এয়ারকন্ডিশনড পরিবেশ না হলে অ্যাফেয়ার হয় না। বিল্লুর মা মজার লোক। পাঁচ অক্ষরের নাম, ডাকতে গেলে জিভ এলোমেলো হয়ে যায়। তাই বিল্লু’র মা হয়ে গেছে ও।

ওদের অবাক হওয়া দেখে বলেছিল, কেন রে, বেশ তো লাগে, যখন দৌড়াতে দৌড়াতে এল, হাঁফাচ্ছে একেবারে কথকের থালি নাচ …. বলতে বলতে দুহাতের আঙ্গুল ডিমি ডিমি নাচিয়ে দিয়েছিল। ওরা হেসে লুটোপুটি।

বিল্লুর মা বলেছিল, পারলে আমিও পরতাম, মানে পরতাম না। আবার একচোট হাসিহুল্লোড়,. তারপর বিল্লুর মা- শালা যা একখানা বাড়ি না, ঝেটিয়ে বিদায় করে দেবে।

কখনো কখনো ‘শালা’ বলে ফেলে ও। রুচিতে বাধে ওদের। মেয়েদের মুখে ? ছিঃ। ওরা রেগে গেলে মনে মনে বলে বটে, কিন্তু মুখ ফুটে? তবে বিল্লুর মাতো মজার মানুষ, তাই ওরা গায়ে মাখে না, বলুক।

যাকে নিয়ে এত কথা সেই পিংকুর মা কেন আসেনি সেটাই চোখে পড়ল রাত্রির। পিংকুকে নিয়ে গেল ও আবার কে? রাত্রি প্রশ্ন করেছিল। ও তো অনেকদিন আড্ডা দিতে পায়নি যাদের কাজের লোক নেই, কিংবা সংসারে আরো পাঁচটা কাজ থাকে, আবার অনেকের বাবারাই পৌঁছে দিয়ে যায় বাচ্চাকে। মা এসে নিয়ে যায়। কেউ কেউ ধড়িবাজ, নানা বাহানা বানিয়ে সত্যি মিথ্যে গল্প শুনিয়ে শাশুড়ির ঘাড়ে সংসার দিয়ে আসে, আবার গর্ব করে বলেও। উপায়হীন ভালমানুষ শাশুড়িও আছে।

পিংকুর মা সেই দলের কিনা কে জানে।

বিল্লুর মা ও ব্যাপারে নট নড়নচড়ন। বলে, দ্যাখ মীনা, আমাকে শেখান না, অনেক দেখেছি। শালা শাশুড়ি কখনও ভাল হয় না। হতে পারে না। শাশুড়িরা ভাল বউ হতে পারে, ভাল মা হতে পারে, কিন্তু ভাল শাশুড়িত হওয়া ইমপসিবল।

মীনারা জানে ওটা ওর চাপা রাগ। হবে নাই বা কেন, ওর যৌবনকালটা হয়ত নষ্ট করে দিয়েছে। রাত্রি, মীনারাই কি কম ভুগছে। এখন একটু শান্তি পাওয়া যায় এই যা। কিংবা অভ্যাস হয়ে গেছে তাচ্ছিল্য করতে শিখে।

শাশুড়িদের দোষ দিয়ে কী হবে, ছাগল ছেলেগুলোর জন্যই তো মেয়েদের এই অবস্থা। সোমা, হ্যাঁ, সোমা বলেছিল, স্বামীগুলো ঠিক থাকলে সব ঠিক করা যায়… একটু থেমে বলেছিল, সব তো অপদার্থ।

অপদার্থ, শব্দটা কথার কথা নাকি কিছু বলতে চেয়েছিল সোমা, তা বুঝতে পারেনি ওরা। বিল্লুর মা কি বুঝল কে জনে, হেসে উঠে বললো – সেটাই তো বোঝে না শাশুড়িগুলো, জানলে আর এত হিংসে করত না।

– তা কেন, মুঠো থেকে ছেলে বেরিয়ে যাচ্ছে কে চায় বল। মীনা বোধহয় কথা ঘোরাবার জন্যই বলল। ‘অপদার্থ’ শব্দটাতে আর বেশি টানাটানি করা ওর পছন্দ হচ্ছিল না।

– যাই বল, মেয়েদেরও দোষ আছে, এই পিংকুর মা… পিংকুর মায়ের দিকে চোখ সবারই।

রাত্রি এতদিন আসতে পারেনি, ছুটির পর এসে তাড়াহুড়ো করে রাতুলকে নিয়ে যেত। মীনা কিংবা বিল্লুর মা’র সঙ্গে জমিয়ে গল্পও করা হয়নি। ও তাই বললো- পিংকুকে নিয়ে গেল, ও আবার কে?

মীনাই বললো সে কিরে, শুনিসনি কান্ড!

রাতুলকে পড়াতে বসিয়েছে, সন্ধ্যাবেলায়, তখন তো কাজের লোক নেই, এই আড্ডায় আসাও হয়নি। মীনার সঙ্গে যদিও বা দেখা হয়েছে, তাড়াহুড়োয় ওর হয়ত মনেও পড়েনি, তাই জানে না, রাতুল বলেছিল, মা, পিংকু খুব কাঁদছিল।

– কেনরে? রাত্রি ছেলেকেই জিজ্ঞেস করল

– ওর মা হাসপাতালে গেছে

একটু থেমে বলেছিল, ও স্কুল থেকে যেতে চাইছিল না, মা নিতে না এলে যাবে না।

রাত্রি ভেবেছিল, অসুখবিসুখ।

তা নয়।

মীনা বলল, ওটা পিংকুর খালা। রোজ আসে। তারপর হেসে বলল, যা ভেবেছিলাম তাই বোধহয়। হাসপাতালটা বাজে কথা, খালাটা বানিয়ে বানিয়ে বলেছে। পিংকুকে বোধহয় সে কথাই বুঝিয়েছে।

মা, আর আসে না তার খালা এসে পিংকুকে নিয়ে যায়, পৌঁছে দিয়ে যায় তার বাবা। এটাতো চোখে পড়ার মত ঘটনা। কৌতূহল হওয়া স্বাভাবিক। সেই কৌতূহলের আশাপ্রদ উত্তর না পাওয়া পর্যন্ত কেউ থেমে থাকতে পারে না। অপরের অন্দরমহল সম্পর্কে কৌতূহল ছাড়া অবসর বিনোদনের কি-বা আছে আমাদের।

মীনা বলল, এসব কথা কদিন আর চেপে রাখবে। একটু থেমে বলল, সোমাটা কী ধূর্ত জানিস না। খালাটা যখন বলছিল, ওর চোখমুখ দেখেই সেন্দহ হয় ওর। কি সাহস, ঠিকানাতো জানতো একদিন হোমটাস্ক জেনে আসবে বলে গিয়ে হাজির।

– তারপর? রাত্রির চোখে একই সঙ্গে কৌতুক আর আতঙ্ক। শুনতে আগ্রহ ঠিকই তবে ভয়ও। আমাদেরও কিছু একটা তো গোপন করার মত, লজ্জা পাবার মত কোন বাড়িতে নেই। এসব মেয়েরা ঠিকই খুঁজে বের করে নেবে। তিলকে তাল বানাবে।

মীনা হাসল, তারপর আর কী। খালাটা ছিল না। বাড়ির কাজের লোকের সঙ্গে দেখা। সেই বলেছে।

কী? কী বলেছে সে?

————————

মীনা গম্ভীর হল, এবার আর হাসল না- চলে গেছে, কোথায় কেউ জানে না। একটু থেমে বলল- কী অমানুষ ভাই, ঐ ফুটফুটে ছেলেটাকে ফেলে রেখে যেতে পারল! আত্মধিক্কারের কণ্ঠে, ‘মেয়েরা দেখছি সব পারে’।

রাত্রির চোখের সামনে পিংকুর চঞ্চল ফুটফুটে মুখটা ভেসে উঠল। বুকের ভেতর একটা মোচড়। কি ভাগ্য নিয়ে জন্মেছিস রে, ক্লাশে হায়েস্ট মার্ক পেলে কী হবে কোথা তোকে এই বয়সেই সারা জীবনের জন্য ফেল করিয়ে দিল। রাত্রির ইচ্ছে হল ছুটে গিয়ে ছেলেটাকে বুকে জড়িয়ে ধরে, সান্তনা দেয়। কিন্তু…

(চলমান…)

মনের আধাঁর পেরিয়ে, পর্ব-২

মনের আধাঁর পেরিয়ে, পর্ব-৩

মনের আধাঁর পেরিয়ে, পর্ব-৪

মনের আধাঁর পেরিয়ে, পর্ব-৫

মনের আধাঁর পেরিয়ে, পর্ব-৬

মনের আধাঁর পেরিয়ে, পর্ব-৭

মনের আধাঁর পেরিয়ে, পর্ব-৮

পল্লব শাহরিয়ার
Latest posts by পল্লব শাহরিয়ার (see all)