নিঃসঙ্গ অন্ধকারের হাত ধরে ঘর ছেড়ে রোডে নামি।
প্রতিবেশী ছায়ারা ঠিকানা জানতে চায়। আমার কোনো ঠিকানা নেই।
যেতে হবে বলে যাচ্ছি।
হাঁটতে হাঁটতে জীবনে তাকিয়ে দেখি দুপুর এসে গেছে প্রেমে।
একটি নদীর চোখে ভাসতে ভাসতে কয়েকশো বিকেল খরচ করি।
পেছন ফিরে দেখি- শীত এসে গেছে। এবার কুয়াশায় হাঁটা।
আগুনকে রঙ ভেবে কুয়াশায় হাঁটতে হাঁটতে ঘরে ফেরার রোড খুঁজি।
প্রত্যেক মানুষের ভেতর আমাকেই দেখি।
হেঁটে যাচ্ছি অডিসিয়্যুসের মতো।
ডোডোপাখির মতো গান গাচ্ছি।
হ্যামিলন বাঁশিওয়ালার মতো বাঁশি বাজাচ্ছি।
নিরুদ্দেশ নদী ডেকে ডেকে জড়ো করছি ব্যক্তিগত মাঠে।
যেখানে কোনো প্রথা নেই, মসজিদ নেই, মন্দির নেই,
বাইবেল নেই, নেই যুদ্ধের জয়োধ্বনি।
কেবল লালন ফকিরের মরমী গীত- ‘মিলন হবে কত দিনে’…
সকাল হলে রাতের জন্য হাহাকারের পাখিগুলো উড্ডীনশীল হয়ে ওঠে।
বিকেল হলে সকালের জন্য প্রার্থনাগুলো ধর্মপরায়ণশীল হয়ে ওঠে।
চলে যাওয়া যে-কোনো আমার অধিক মনে পড়ে।
অধিক দেখতে পাই পেছন, সামনে দেখা যে-কোনোর চেয়ে।
বোধ হয় চলে যাওয়া মেনে নিচ্ছি!
বোধ হয় চলে যাচ্ছি…
মানুষের বয়স মাপতে বৃদ্ধ পৃথিবী চোখ বন্ধ করে শুরু করে অঙ্ক গণনা।
জীবনানন্দের আমগাছ জানে
মানুষের বয়সের কাছের পৃথিবীর বয়স কতো নগন্য।
যেমন ছায়াদের চেয়ে পাতারা কতো স্বল্পায়ু নিয়ে পৃথিবীতে আসে।
অঙ্ক বইয়ের ভেতর থেকে ভেসে আসে দেবদূতের কণ্ঠ-
ধরি মানুষের বয়স ক,
পৃথিবীর বয়স খ
ক বয়স বাড়াতে চায়,
খ বয়স কমাতে চায়।
জন্মের বয়স কমিয়ে মৃত্যুর পাশে শুয়ে পড়ি।
অনেক সেপ্টিপিনদুপুর আমাকে তাড়া করে বেড়ায়।
ভেতরে অনেক সেপ্টিপিন বয়ে যাই।
বেকুফ সেপ্টিপিনবিক্রেতা এসব জানে না বলেই-
রোজগারের জন্য রোজ রোজ আমার কাছে সেপ্টিপিন বেচে।
লেখক : তরুণ সাহিত্যিক।
প্রকাশিত বই দুইটা।
এক. ওকাবোকা তেলাপোকা (২০১৬) -শিশুতোষ
দুই. এলিয়েনের দেশ পেরিয়ে (২০১৭)-শিশুতোষ।