প্রেসক্রিপশন এগিয়ে দিয়ে ডাক্তার বললেন,
ঔষধগুলো ঠিক মত না খাওয়ালে আপনার পিতা আর…
সাধ আর সাধ্যের সাত কিলো দূরে, অনিক ফার্মেসি থেকে
আব্বার জন্য প্রতি রাতে একটু একটু করে আয়ু কিনে বাড়ি ফিরি।
বোকা বাবা বালখিল্য হেসে
পরিবারের আরেকজনের কাছে ফেরত পাঠান।
মশারীর নিচে কারো হাতের উল্টো পিঠ ভিজে যায়।
সাতারবিদ্যা বুঝিবা বৃথা যায় তোমার সমুদ্রপ্রবণ অঞ্চলে।
কুহেলিকা নিয়ে বলেছো বিস্তর আর পুস্তকে মরীচিকার বিজ্ঞান।
আত্মবিশ্বাসে বলীয়ান, দিয়েছি সদুত্তর – “জানো তো সাতার?” এর বিপরীতে।
টুকরো টুকরো ঘুমের শেষ দৃশ্যে
তোমার ঐ মুখভঙ্গি, কেবলি ব্যঙ্গ মনে হয়।
“যেই ধান পাইবে তার যোগ্য দাম, সেই ধানের বীজ থাকি মুই জাগি উঠিম”
এই ছিল শেষ নিশ্বাসে নানাজির একটি বাক্য। মায়ের মুখে শোনা এই অঘটিত কিংবদন্তী।
মাতামহের মুখ দেখিনি বলে, উৎসুক হাতে
কত মওসুমে উর্বরা কাদায় মুঠো মুঠো ছিটিয়েছি ধান।
আসন্ন আমনে কোনো ধানী জমি ঘিরে
লক্ষ লক্ষ কৌতূহলী চোখ কি হয়ে উঠবে একেকটি বিস্ময়চচিহ্ন?
মায়ের মৃত্যুতে সন্তানের চোখে
শোককে প্রকাশ হতে দেখে ভাবি-
আমাদের কান্নাগুলি গতানুগতিক।
মাথার ওপরে পাখি উড়ে গেলে কেউ তো কাঁদে না,
চুল কাটাবার কালে কাঁদে না কখনো।
মাতা মরে গেলে দুঃখ পেতে হয়,
দুঃখ পেলে কেঁদে দিতে হয়
এতো জানি স্নায়ুর কৌশল!
পৃথিবীর প্রথম মাতার মৃত্যুদিনে
অশ্রু ফেলেছে কি সন্তানেরা?
শুধু দুঃখ পাওয়াতে কি সীমাবদ্ধ ছিলো শোক?
হয়তো বা যাপিত জীবনে প্রাপ্ত অপূর্ণতা
স্নায়ুকে জোগায় এই প্রণোদনা,
তারপর জননীর মৃত্যুকালে আসে অপূর্ব সুযোগ।
ঐ ছেলেটা, কোন দিকে যাচ্ছে?
যে আজ ভূষিত হলো সীমার-পাথর উপাধিতে
কোথায় সে যাচ্ছে? ঐ নির্জন নিভৃত পুকুর পাড়ে?
তার সাথে এইবার দ্বিপাক্ষিক আলোচনা হবে।
পরিচয়? -এনজিও ওয়ার্কার।
কাজটা কি ধরনের ভাই?
-পল্লী এলাকায় সুখী দম্পতির তালিকা প্রস্তুতি।
হাউ ডু ইউ ডু দ্যাট?
যে কখনো শোনে নাই, ‘এ দেহ তোমার’
ভোরে, তার কলতলা থেকে ফেরা দেখে
আধ-খোলা চোখে বিছানার তৃপ্তজন
হ্যাঁ, হ্যাঁ ঠিক এই জায়গায় একটা শট।
এ ছবি পাঠিয়ে দিচ্ছি সদর দপ্তরে।
শাহেদুজ্জামান লিংকন
লেখক ও চিকিৎসক।