কোভিড-১৯ বৈশ্বিক মহামারীর কারণে প্রায় বিগত এক বছর থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এই দীর্ঘ সময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার ফলে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন বিঘ্নিত হওয়ার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যেও নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এই প্রভাব এতটাই তীব্র যে শিক্ষার্থীরা আত্নহত্যার মত চরম সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছে। সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমে এ ধরণের খবর পাওয়া যাচ্ছে। সরকার এ সকল নানাবিধ দিক বিবেচনা করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। তবে, এতটা দীর্ঘ সময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার পর পুনরায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত হওয়ার পথ সহজ হবে না বলে আমরা অনুমান করি। যখন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গিয়েছিল তখনও এটার সাথে মানিয়ে নিতে যেমন একটা বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হয়েছিল তেমনি আবার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত হতেও শিক্ষার্থীরা পুনরায় নানা ধরনের সংকটের মধ্য দিয়ে যেতে পারে। যা তাদের মানসিক স্বাস্থ্যেও ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে।
শিক্ষার্থীদের মাঝে নিচের পরিবর্তনগুলো দেখা যেতে পারে –
১. শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত যাওয়ার প্রতি অনীহা বা অনুপস্থিতি বেড়ে যাওয়া
২. মনোযোগের সমস্যা
৩. আগ্রহের অভাব
৪. পরীক্ষা ভীতি
৫. আবেগীয় পরিবর্তন এবং মেজাজের পরিবর্তন
৬. পড়াশোনা নিয়ে অতিরিক্ত চাপ অনুভব করা
এসকল পরিবর্তনের প্রতি অভিভাবক ও শিক্ষকদের সচেতন হওয়া এবং তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ গ্রহন করা অতীব জরুরী। অন্যথায় এর প্রভাব দীর্ঘমেয়াদী হতে পারে। হতে পারে ভয়ানক ক্ষতির কারণ।
এসকল ক্ষেত্রে সমাধানের জন্য অভিভাবক, শিক্ষক এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করা প্রয়োজন। পাশাপাশি এই পরিবর্তনের সাথে মানিয়ে নেয়ার পথ কিছুটা মসৃণ করার জন্য কিছু কাজ করা যেতে পারে, যেমন –
১. প্রথমেই কঠিন রুটিন তৈরি না করা
২. একাডেমিক ক্লাশের পাশাপাশি ভিন্ন ধরনের কার্যক্রম রাখা, যাতে করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত হওয়ার প্রতি আগ্রহ তৈরি হয়।
৩. হোম ওয়ার্কের চাপ কম রাখা বা প্রথম দিকে হোম ওয়ার্ক না দেয়া।
৪. শ্রেণিকক্ষে অংশগ্রহনমূলক পদ্বতিতে পাঠদান করা।
সর্বোপরি, শিক্ষার্থীদের উৎসাহ প্রদান করা এবং প্রয়োজনে মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ গ্রহণ করা।