মুগ্ধতা ব্লাড ব্যাংকে আপনার দেওয়া তথ্য বাঁচাতে পারে একটি জীবন। আপনার তথ্য দিন, প্রয়োজনে রক্ত খুঁজুন এখানে।

সাতষট্টিতম জন্মদিনে বাবার জন্য দোয়া কামনা

মুগ্ধতা.কম

১৮ জুলাই, ২০২১ , ৯:৫৮ অপরাহ্ণ

সাতষট্টিতম জন্মদিনে বাবার জন্য দোয়া কামনা

আমার বাবা বিশিষ্ট সাহিত্যিক, সংগঠক ও সাংবাদিক  আনওয়ারুল ইসলাম রাজু আল্লাহর রহমতে আজ ৬৮ বছরে পা রাখলেন। তার জন্ম ১৯ জুলাই, ১৯৫৪ খ্রিষ্টাব্দ, বাংলা ৪ শ্রাবণ, ১৩৬২সাল। আজ ১৯ জুলাই ২০২১ তার ৬৭ তম জন্মদিন। সাহিত্য-সংস্কৃতির প্রতি নিবেদিতপ্রাণ  ও নিষ্ঠাবান লোকগবেষক আনওয়ারুল ইসলাম রাজু সম্প্রতি বৈশ্বিক মহামারি কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়ে আল্লাহর অশেষ রহমতে সুস্থতা লাভ করেছেন। এজন্য আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া জানিয়ে তার পরবর্তী জীবনের জন্য সবার দোয়া কামনা করছি।

আমার বাবার পৈত্রিক নিবাস সাবেক রংপুর (বর্তমান গাইবান্ধা) জেলার পলাশবাড়ি উপজেলার হরিনাথপুর গ্রামে। মা-মরহুমা আনোয়ারা বেগম শেফালি, বাবা- মরহু মআব্দুর রহমান সরকার। বর্তমান আবাস-‘হীরাঝিল’, বাড়ি# ২২৮/৩, সড়ক # ০৩, দক্ষিণ ঠিকাদারপাড়া, আলমনগর, রংপুর।

লেখকের বাবা

লেখকের বাবা

প্রাথমিক শিক্ষা বাড়ির পার্শ্ববর্তী  মরাদাতেয়া ফ্রি প্রাইমারি স্কুলে। তালুক জামিরা জুনিয়র হাইস্কুলে ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ার পর নাকাইহাট হাইস্কুল থেকে ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দে মানবিক বিভাগে এসএসসি পাশ করেন। গাইবান্ধা কলেজ থেকে ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দে (পরীক্ষা-১৯৭৩ খ্রি.) বিজ্ঞান বিভাগে এইচএসসি পাশ করে রংপুর কারমাইকেল কলেজে বি.এসসি পাস কোর্স ভর্তি হয়েছিলেন। কিন্তু সাহিত্য-সংস্কৃতির প্রতি বিশেষ অনুরাগ বশত এই কোর্স শেষ না করে পরে একই কলেজে বাংলা সম্মান শ্রেণিতে ভর্তি হন এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ১৯৭৭ খ্রিস্টাব্দের পরীক্ষায় (১৯৭৯ খ্রি. অনুষ্ঠিত) উচ্চতর দ্বিতীয় শ্রেণিতে ৪র্থ স্থান অর্জনসহ বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে সম্মান ডিগ্রি লাভ করেন। পরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে  দ্বিতীয়  শ্রেণিতে স্নাতোকত্তর ডিগ্রি অর্জন  করেন (১৯৭৮ খ্রিষ্টাব্দের পরীক্ষা ১৯৮১ খ্রিস্টাব্দে অনুষ্ঠিত)। দীর্ঘ সেশন জটের কারণে চাকরির বয়সসীমার প্রান্তিকলগ্নে এম.এ ফাইনাল পরীক্ষার ৫ মাস আগেই সোনালী ব্যাংকে চাকরিতে যোগ দেন। এই ব্যাংকে সাফল্যের সাথে চাকরির মেয়াদ পূর্ণ করে সিনিয়র অফিসার হিসেবে ২০১১ খ্রিষ্টাব্দে অবসর গ্রহণ করেন। চাকরিকালে তিনি “ব্যাংকিং ডিপ্লোমা” অর্জন করেন এবং বিভিন্ন সময়ে পেশাগত অনেক প্রশিক্ষণ সাফল্যের সাথে সম্পন্ন করেন।

আমার বাবা আনওয়ারুল ইসলাম রাজু ছাত্রজীবন থেকেই সাহিত্য-সংস্কৃতি চর্চার সাথে নিবিড়ভাবে জড়িত। এসব বিষয়ে হাতেখড়ি মূলত পারিবারিক ঐতিহ্যসূত্রে শৈশবেই। সাহিত্য-সংস্কৃতির প্রতি বিশেষ অনুরাগী তাঁর দাদা আমির উদ্দীন সরকার (মরহুম) ও দাদি আমিরন নেসা (মরহুমা)-এর কাছ থেকে ছোটবেলায় মুখে মুখে শোনা গল্প-ছড়া-কবিতা ও ইতিহাস-ঐতিহ্যভিত্তিক নানা কাহিনী-কিংবদন্তী তাঁর শিশুমনে কল্পনা ও সৃজনশীলতার বীজ বুনে দিয়েছিল, যার অঙ্কুরোদ্গমে ভীষণভাবে সহায়ক হয়েছিল বাড়ির দুটি কাঠের আলমারিতে স্তুপীকৃত পারিবারিক সংগ্রহ এবং কিছুকাল আগে লুপ্ত হরিনাথপুর ইয়ং স্টারস ক্লাব এন্ড লাইব্রেরির নানা ধরণের বই-পত্রের এক বিশাল ভা-ার। এছাড়া পরিচিত বন্ধু-স্বজনদের কাছ থেকে ধার করে এবং প্রাইমারি, হাইস্কুল ও কলেজ লাইব্রেরি থেকে নিয়মিতভাবে বই সংগ্রহ করে পড়তেন।

প্রাইমারি ও হাইস্কুলে পড়ার সময়েই ছড়া, কবিতা ও নাটক রচনার পাশাপাশি আবৃত্তি, অভিনয়, বিতর্ক, বক্তৃতা ইত্যাদি বিষয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে প্রশংসা ও পুরস্কার অর্জন করেন। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে এর ধারাবাহিকতা আরও পরিণতি ও বিস্তৃতি লাভ করে। তাঁর লেখালেখির বিষয় ছড়া, কবিতা, ছোটগল্প, প্রবন্ধ এবং লোকসংস্কৃতি ও ইতিহাস-ঐতিহ্য বিষয়ক গবেষণা। কলেজ বার্ষিকী ও সাময়িকীসহ দেশ ও বিদেশের বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা, লিটল ম্যাগাজিন ও গবেষণা জার্নালে তাঁর লেখা প্রকাশিত এবং বেতারে প্রচারিত হয়েছে।

প্রকাশিত গ্রন্থসমূহ :

গবেষেণা গ্রন্থ:

» ‘রংপুরের লোকসাহিত্য ও সংস্কৃতি’- অ্যাড আইডিয়া  প্রকাশন, রংপুর;

» ‘রংপুরের লোকসংস্কৃতি ও  আদিবাসী লোকসাহিত্য’- সেইবই ডটকম, ঢাকা।

যৌথ গবেষণা গ্রন্থ:

» ‘ভাওয়াইয়া’- সিধুভাই কল্যাণ ট্রাস্ট, ঢাকা।

» ‘বাংলার ভাওয়াইয়া’- সম্পাদক: ড. রতন বিশ্বাস, বলাকা প্রকাশন,  কলকাতা।

» ‘সমাজ  ও লোকসংস্কৃতি- সম্পাদনা: গৌতম সরকার ও সুদেব সরকার, বুকস হেভেন পাবলিকেশানস্, কলকাতা।

» ‘তরাই-ডুয়ার্সেও লোকসংস্কৃতি- সম্পাদনা : ডক্টর আব্দুর রহীম গাজী,  বঙ্গীয় সাহিত্য সংসদ, কলকাতা।

ছড়াগ্রন্থ :

» ছড়ায় স্বদেশ ছড়ায় জীবন, ঈক্ষণ প্রকাশন, রংপুর।

এছাড়া, দেশ ও বিদেশের বিভিন্ন গবেষণাগ্রন্থ ও পত্র-পত্রিকায়  এবং সেমিনার ও কর্মশালায় লোকসাহিত্য ও সংস্কৃতি বিষযক গবেষণামূলক প্রবন্ধ প্রকাশিত ও পঠিত  হয়েছে।

অন্যান্য গবেষণা কর্ম :

» এশিয়াটিক সোসাইটির  “বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রকল্প”-এর গবেষণা  সহকারি  ও বাংলা একাডেমির “লোকজ সংস্কৃতির বিকাশ’ গবেষণা প্রকল্পের ‘ফোকলোর সংগ্রাহক’ হিসেবে দায়িত্ব পালন।

পুরস্কার, পদক ও সম্মাননা:

» সাহিত্য-সংস্কৃতি ও গবেষণা বিষয়ে  আন্তর্জাতিক, জাতীয়সহ বিভিন্ন পর্যায়ে সম্মাননা, পদক  ও পুরস্কারপ্রাপ্ত।

আমার বাবা আনওয়ারুল ইসলাম রাজু ‘কারমাইকেল কলেজ বার্ষিকী’ (১৯৭৫-৭৬) ও এই কলেজের পত্রিকা বিভাগের একুশে সাময়িকী ‘সংশপ্ত’ (১৯৭৭), বাংলা বিভাগের একুশের সংকলন ‘শোণিতে সূর্যোদয়’(১৯৭৫), শাব্দিক মুখপত্র ‘প্রতিরোধ’, রংপুর সাহিত্য-সংস্কৃতি পরিষদ মুখপত্র ‘রংপুর সাহিত্যপত্র’ সম্পাদনাসহ আনেকগুলো সাহিত্য পত্রিকা ও সংকলন, স্মারকগ্রন্থ ও স্মরণিকা সম্পাদনা ও প্রকাশনার সাথে সম্পৃক্ত ।

তিনি ছাত্র জীবন থেকেই বিভিন্ন সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথেও জড়িত। ১৯৭৪ খ্রিষ্টাব্দে কারমাইকেল কলেজে প্রতিষ্ঠিত “শাব্দিক সাংস্কৃতিক সংসদ” এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এবং এই কলেজের বাংলা সমিতি ও বাংলা সেমিনারের সম্পাদক ছিলেন তিনি। এছাড়া তিনি কতিপয় কবিতাকর্মী, রংপুরের সদস্য, ছড়া সাহিত্য পরিষদ, রংপুরের কোষাধ্যক্ষ, অভিযাত্রিক সাহিত্য-সংস্কৃতি সংসদ, রংপুরের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। ২০০২ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত  রংপুর সাহিত্য-সংস্কৃতি পরিষদের সূচনালগ্ন থেকেই তিনি জড়িত আছেন। পর্যায়ক্রমে এই সংগঠনের যুগ্ম-আহ্বায়ক, সাহিত্য সম্পাদক, যুগ্ম-সম্পাদক, সাধারণ সম্পাদক, সহ-সভাপতি এবং সভাপতির দায়িত্ব পালনের পর বর্তমানে আজীবন সদস্য ও উপদেষ্টা পদে অধিষ্ঠিত রয়েছেন। তিনি সোনালী ব্যাংক অফিসার্স ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন, রংপুর এর প্রচার ও প্রকাশনা সম্মপাদক এবং ব্যাংকার্স ক্লাব, রংপুরের দপ্তর ও মিলনায়তন সম্পাদক ছিলেন।

বাংলাদেশ বেতার, রংপুর কেন্দ্রের সঙ্গেও তাঁর সংশ্লিষ্টতা প্রায় পাঁচ দশকের। শুরু ১৯৭৪ সালে কারমাইকেল কলেজে পড়ার সময় ‘ক্ষেতে-খামারে’ অনুষ্ঠানে “দেওয়ানির বৈঠকখানায়” ‘সমাজ গঠনে যুব সমাজে যুবসমাজের ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনার মধ্য দিয়ে। এরপর  তরুণকণ্ঠ, সাহিত্য বিচিত্রা, সম্ভার, সুখিজীবন, অহংকারের বাংলাদেশসহ সাহিত্য-সংস্কৃতি বিষয়ক অনুষ্ঠানে কথিকা পাঠ, আবৃত্তি,স্বরচিত কবিতা-গল্প-প্রবন্ধপাঠ এবং বিভিন্ন জাতীয় দিবস ও বার্ষিকী উপলক্ষে  বিশেষ অনুষ্ঠান গ্রন্থনা ও উপস্থাপনা, চলতি ঘটনার পর্যালোচনা, গ্রন্থ আলোচনা, সংবাদপত্রের সম্পাদকীয় আলোচনা ইত্যাদিতে অংশগ্রহণ করে থাকেন। এছাড়া, ১৯৭৭ খ্রিস্টাব্দে অনুষ্ঠান ঘোষক ও ১৯৮১ খ্রিষ্টাব্দে সংবাদ পাঠক হিসেবে কণ্ঠস্বর পরীক্ষায় উত্তীর্ণ এবং ২০০৯ খ্রিস্টাব্দে বাংলাদেশ বেতারের গীতিকার হিসেবে তালিকাভূক্ত হন। পাশাপাশি ১৯৮৫ খ্রিস্টাব্দ থেকে আঞ্চলিক বার্তা সংস্থা, বাংলাদেশ বেতার, রংপুর-এর চুক্তিভিত্তিক সংবাদ অনুবাদক (এ-গ্রেডভূক্ত) হিসেবে নিয়োজিত রয়েছেন।

আমার বাবা একজন ভাল বিতার্কিক ও বিতর্ক প্রশিক্ষক। তিনি ১৯৭৬ ও ১৯৭৭ খ্রিস্টাব্দে বিটিভি আয়োজিত প্রথম ও দ্বিতীয় ‘বাংলাদেশ টেলিভিশন জাতীয় বিতর্ক প্রতিযোগিতা’য় রংপুর কারমাইকেল কলেজ দলের সদস্য হিসেবে অংশগ্রহণ করে দলীয়ভাবে বিজয়ী হন। তিনি অনেক বিতর্ক কর্মশালায় প্রশিক্ষণ দান করেছেন এবং বিতর্ক শিল্পের কলাকৌশল বিষয়ে তাঁর অনেক  লেখা কারমাইকেল কলেজ বিতর্ক পরিষদ-এর প্রকাশনা ‘মণীষা’সহ বিভিন্ন বিতর্ক বিষয়ক পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে।

তিনি একজন আবৃত্তিকার এবং  আবৃত্তি প্রশিক্ষক। স্বরশৈলী আবৃত্তি চর্চা কেন্দ্র, রংপুর ও রংপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে আবৃত্তি প্রশিক্ষক  হিসেবে নিয়োজিত আছেন। এর আগে শাব্দিক সাংস্কৃতিক একাডেমি, রংপুর এবং অভিযাত্রিক সাহিত্য ও সংস্কৃতি সংসদ, রংপুর পরিচালিত আবৃত্তি প্রশিক্ষণ কোর্সেও এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন।

সাংবাদিকতার অঙ্গণে তার বিচরণ পাঁচ দশক পেরিয়ে গেছে। সংবাদের প্রতি তাঁর প্রথম আগ্রহ জন্মে ৪র্থ শ্রেণিতে পড়ার সময় ১৯৬৩ খ্রিস্টাব্দে বাড়িতে প্রথম রেডিও আসার সুবাদে। রেডিওর সংবাদ বুলেটিনগুলো খুব আগ্রহ সহকারে শুনে মনে রাখতেন এবং পরে জরুরি সংবাদগুলো অন্যান্যদের জানাতেন। বিশেষ করে ১৯৬৫ খ্রিস্টাব্দে পাক-ভারত যুদ্ধের সময় আমার দাদু  রেডিওর সংবাদ নিয়মিতভাবে মনিটর করে একটি ডাইরিতে লিখে রাখতেন।  পাশের গ্রামের  দাদার এক বন্ধু  মরহুম মোজাম্মেল হক সরকার (নাদু সরকার) প্রতিদিন বিকেলে এসে আমার বাবার কাছে জানতে চাইতেন “কিরে রয়টার আজকের খবর কি বল ?”। ‘রয়টার’ মানে কী তখন সেটা  জানা না থাকলেও তখন ক্লাস সিক্স পড়–য়া কিশোর বয়সে দাদুর ডাইরি থেকে মনিটরকৃত খবরগুলো তাঁকে পড়ে শোনাতেন। এতে  সংবাদ সম্পর্কে একটা ধারণার পাশাপাশি রেডিওর সংবাদ পাঠকদের অনুকরণে সংবাদপাঠের একটা অভ্যেসও গড়ে ওঠে তার মধ্যে।

আনুষ্ঠানিকভাবে সাংবাদিকতার শুরু বাংলাদেশের স্বাধীনতার অব্যবহিত পরে ১৯৭২ খ্রিস্টাব্দে ফেরদৌস আহমেদ কোরায়েশী সম্পাদিত তৎকালীন অর্ধসাপ্তাহিক ‘দেশবাংলা’ পত্রিকার মাধ্যমে-প্রথমে গাইবান্ধা ও পরে রংপুর জেলা সংবাদদাতা হিসেবে । পরবর্তীতে তিনি জাতীয় বাংলা দৈনিক  “দৈনিক ইনকিলাব”, “দৈনিক লাল সবুজ”,  “দৈনিক নতুন দিন”, দৈনিক দেশবাংললা, “সাপ্তাহিক একুশের কন্ঠ”, ইংরেজি দৈনিক “দি টেলিগ্রাফ” ও “দি নিউজ টুডে” পত্রিকার রংপুর জেলা সংবাদদাতা হিসেবে কাজ করেছেন।

তিনি রংপুর থেকে প্রকাশিত অধিকাংশ সংবাদপত্রে বিভিন্নভাবে জড়িত ছিলেন। ১৯৮১ খ্রিষ্টাব্দের ২৭মে  খন্দকার গোলাম মোস্তফা বাটুল সম্পাদিত “দৈনিক দাবানল”এর প্রথম সংখ্যায় “আমরা চাই সংবাদপত্র আমাদের কথা বলুক”  শিরোনামে বিশেষ সম্পাদকীয়টি তারই লেখা এবং স্বনামে প্রকাশিত। দীর্ঘদিন এ পত্রিকায়  ‘সাত-সতেরো’ এবং ‘বেরসিকের বখাটে কলম’ শিরোনামে কলাম লেখেন এবং সেই সাথে অনুবাদক হিসেবেও কাজ করেন। এছাড়াও তিনি  রংপুর থেকে প্রকাশিত “সাপ্তাহিক প্রতিফলন”এর বার্তা সম্পাদক, “দৈনিক পরিবেশ” এর প্রথম বার্তা সম্পাদক, “দৈনিক বিজলীর” সাহিত্য সম্পাদক, “সাপ্তাহিক রংপুর বার্তা”র  সম্পাদক, “দৈনিক রংপুর” ও “দৈনিক আখিরা” এর বার্তা সম্পাদক, “দৈনিক যুগের আলো”এর সম্পাদকীয় লেখক ও সাহিত্য সম্পাদক, “দৈনিক রংপুর চিত্র” এবং “দৈনিক বাহের সংবাদ” পত্রিকার সহকারী সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। বেতার সাংবাদিকতার সাথেও জড়িত ৮০ এর দশক থেকে। সাংবাদিকতা বিষয়ক অনেক প্রশিক্ষণ ও  কর্মশালায় তিনি অংশগ্রহণ এবং প্রশিক্ষণ দান করেছেন। তিনি রংপুর প্রেসক্লাবের  সাবেক সদস্য।

আমার বাবা সাহিত্য-সংস্কৃতি চর্চা ও সাংবাদিকতার মত গুরুদায়িত্ব নিষ্ঠার সাথে পালনের পাশাপাশি পারিবারিকভাবে আমাদের জন্য অত্যন্ত দায়িত্ববান অভিবাবক ও বন্ধু।

তবে পারিবারিক জীবনে নানা ঘাত-প্রতিঘাত পাড়ি দিতে হয়েছে তাকে। দাম্পত্য জীবনের শুরুতেই তার জীবনসঙ্গিনি আমার মা রংপুর ক্যান্ট: পাবলিক কলেজের প্রভাষিকা মনোয়ারা বেগম হীরাকে হারাতে হয় এক ভুল চিকিৎসার শিকার হয়ে। আমি তখন ৪ বছরের শিশু। সেসময় আমার ও বাবার দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন আমার খালামণি মোরশেদা বেগম মীরা। বুক উজার করা স্নেহ-ভালোবাসা দিয়ে তিনি আমার বাবা ও আমাকে এবং আমার ২ সন্তানকে আগলে রাখেন ৩০টি বছর। কিস্তু গত বছর এক দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে তিনিও আমাদের ছেড়ে চলে যান। ফলে পারিবারিকভাবে আমরা দারুণভাবে বিধ্বস্ত। তারপরেও আমার বাবা ২ নাতি-নাতনি, কন্যা-জামাতাসহ অসংখ্য শুভার্থী-স্বজন এবং সাহিত্য-সংস্কৃতি-সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে সতীর্থ ও শিক্ষার্থীদের আন্তরিক শুভেচ্ছা-ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে সবাইকে সাথে নিয়ে এ অঙ্গনে আজীবন পথ চলতে চান। এজন্য ৬৭তম জন্মতিথিতে তাঁর পরিপূর্ণ সুস্থজীবনের সবার দোয়া কামনা করি।আল্লাহ সবাইকে হেফাজত করুন।

আমিন।