আমি-ই যদি বঙ্গবন্ধুর দেখানো সেই সোনার বাংলাদেশ হয়ে থাকি!
তাহলে,আমি এখনও কেন শুনতে পাই পিদিমের ঘরে
আঙুল দুলিয়ে শিশু পদাবলী পড়ে।
এই সোনার শহরে কত প্রেম নিরুপায়
অজান্তে জন্মায়,আর মরে যায়।
যার পায়ে রোজ হেঁটে যায়-
বুভুক্ষুদের দল;
পায়ের নিচে রক্তরেখা
চোখের নিচে জল।
এই কি আমার সোনার দেশ?
তাহলে, আমার ডাক নাম কেন লজ্জা?
কেন, সত্য কথা বলতে গিয়ে আমি- বুয়েটের ছাত্রাবাসে নিষ্টুরভাবে পিঠিয়ে হত্যা হওয়া আবরার।
বছরের পর বছর পেরিয়ে যাবার পরেও যার বিচার পাইনি আমি!
আমি আগুনে পুড়ে যাওয়া নুসরাত।
আমি বাবার মৃত্যুর দিন গণ-ধর্ষিত হওয়া হিরা মনি।
আমি অকারনে পুলিশের গুলিতে গুলিবিদ্ধ অবসর মেজর।
আমি করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু পরে জানাযাবিহীন দাফন।
আমি বাসে গণ-ধর্ষিতা মাজেদা।
আমি বৃদ্ধ নানার দ্বারা ধর্ষিতা ছোট্ট নাতনি।
আমি ছেলের সামনে ধর্ষিতা মা।
আমি ভাইয়ের সামনে ধর্ষিতা বোন।
আমি রানা প্লাজায় ধুলোয় ওড়া লাশ।
আমি মসজিদে এসিতে বিস্ফোরিত ছাই হয়ে যাওয়া লাশ।
আমি নদীতে লঞ্চডুবি হয়ে নিখোঁজ হওয়া শত লাশ।
আমি সরকারি ভবনে রডের বদলে বাঁশ।
আমি ধ্বসে পরা ভবনের নিচে লাশের পঁচা গন্ধ।
আমাকে জন্মের আগেই পাওয়া যায় ময়লার ডাস্টবিনে।
আমি প্রায় আটারো-কোটি মানুষের ভাগ্য নিয়ে জুলে আছি কাঁটাতারে।
এই আমি-ই কি সোনার বাংলার মুখ?
এই আমি কি সোনার বাংলার জনগণ?
না, আমি আমার বঙ্গবন্ধুর দেখানো সেই সোনার বাংলার কেউ না।
আমি হলাম স্বাধীন বাংলার পরাধীন জনগণ।
আমি লাল-সবুজের কফিন।
তাই, আমার বিবেকের দরজা বন্ধ।
এটাই কি বঙ্গবন্ধুর দেখানো সোনার বাংলাদেশ?
আমরা কি বাংলাদেশের-ই স্বপ্ন দেখতাম?