মুগ্ধতা ব্লাড ব্যাংকে আপনার দেওয়া তথ্য বাঁচাতে পারে একটি জীবন। আপনার তথ্য দিন, প্রয়োজনে রক্ত খুঁজুন এখানে।

সোহানুর রহমান শাহীন এর একগুচ্ছ কবিতা

সোহানুর রহমান শাহীন

১০ জানুয়ারি, ২০২২ , ৯:০১ পূর্বাহ্ণ ;

সোহানুর রহমান শাহীন এর একগুচ্ছ কবিতা

‘র’ এর গল্প

তার সাথে আর কথা হয় কার, যার
কথা ভেবে বারবার কাঁধে উঠে ভার
ভাবনায় যতবার সে ছিল আমার
তার চেয়ে বেশি তার সাজের বাহার
সাঁঝের বেলায় অবেলার সাথী তার
কাছে সঙ্গী হয়ে আসে পেলে অবসর,
আমি তার ভুলের ভেজানো দরজার
ওপারে পড়ে থাকি কিছুটা অগোচর।

ফিরবার যার নেই আর তাড়াতাড়ি
তার সাথে কেন খায়ালের বাড়াবাড়ি
সে এখন যার থাক ভেসে তার, হার
জিতের জীবন হোক তুচ্ছ আহামরি।

আমি আর তার প্রেম না হবার জ্বর
নিয়ে অবসর খুঁজবার আশা ছাড়ি
প্ররোচনার কবল থেকে পেছনের
সময়ের কথা ভুলে ফিরে যাই বাড়ি।

ঘুম

জলরাত্রির ঘুম ফুরিয়ে এলে আবার অবাঞ্চিত হব
সবরাত্রি পড়ে থাক নদীরবাঁক ফিরে আসা ঢেউয়ে
সাঁতার কাটতে থাকা রমণীর ভেজা আঁচল ঘিরে,
ধীরে ধীরে কামুক বীরে, নামুক নীড়ে খেলাচ্ছলে।

কতো জলের উগ্রতা নিম্ন-তা জানে বিরস মৌনতা
শূন্যতা ভরে কী আজো, সাজো বেহাতের সজনী
দিবস রজনী ভাবো কাম খেয়ালে, নিষিদ্ধ দেয়ালে
ফিরে ফিরে চাও, যা ছিল সঞ্চয় খোয়ালে সকালে।

বিকলে পড়ে থাক! থাক, পড়ে থাক নপুংসক শিশ্ন
জলরাত্রির ঘুম ফুরিয়ে এলে আবার অবাঞ্চিত হব।

শিরোনামহীন পঙক্তি

দূষিত জলের কাছে শুদ্ধতা চেয়ে
একবার জলে নামতে চেয়েছিলাম

বন্দি জলের উঁচুপাড়ে দাঁড়িয়ে যখন
ভাবছিলাম তার গভীরতা নিয়ে,
তখন জল বলেছিল—
ঝড়ের তান্ডব আর ভয়াবহ কম্পনের
ক্ষতে যে গভীরতা সৃষ্টি হয়েছে
তার পরিমাপ হয় না।

নিঃসীম জলের বুকে নেই কুলের প্রকাশ।

নৈশব্দে ঘিরে থাকা সে জল—
পরিশুদ্ধ করে শ্মশানপ্রিয় শবদেহ।

শিরোনামহীন বসন্তের সুবোধ

চুমুর দাগে যেখানে গর্ভবতী হয়
ক্ষুধার্ত কুটুম, সেখান থেকে ভেসে আসে
পরনিন্দার বর্ণনায় শামুকের গান!
মানপতনের সনাক্তপত্র হাতে রেখে
বন্দনাবাক্য সাজায়—
বৃত্তাকার আশ্রমের পোড়াঘরে।

আহা, মরা মাছিদের মহাসম্রাট,
বহুকালের অভ্যাসের দাসত্বে দাম্ভিক!

চেনা মানুষের শহর,
মনুষ্যত্ব বিকানো খোলস ভেঙে
নক্ষত্রের জ্বলজ্বলে আলোয়
পরিশুদ্ধ হও, ফিরতি পথে।

নামকাটা করাত

বড় নামের বড়ো মানুষগুলো আজকাল
নাম ছেঁটেছুটে ছোট হয়।
হাঁকডাকহীন বড়ো নাম অচল প্রায়!
কে ফেরাবে তাদের রুক্ষ প্রলেপ থেকে,
নামসর্বস্ব মানুষের ভেতর দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে
ঘাটতে ঘাটতে সীমানা অতিক্রম করা হয় না।
মাঝপথে নিজের বড়ো নামের অক্ষরগুলো
আষ্টেপৃষ্টে জড়ায় নিজেকে।
বাধা দেয়—
বাঁধহীন বড়ো নাম কেটেফেলার করাত।
ছোট ছোট নামে মানুষের ভীত থেকে
ফিরে এসে ভুলে যেতে চায়, পোশাকী পরিচয়।

পলাতক ঋতুর যোজন

চিহ্নহীন অস্থিরতার পরবাস থেকে উঠে এসে
ঝিমধরা শেষ ট্রেন ধরে বাড়ি ফিরবো ভাবছি;
নিকানো উঠোন বিকানো বিবেক ঝুলে রেখে
আপদামস্তক ফিরে আসি কাপালিক আশ্রমে।

Latest posts by সোহানুর রহমান শাহীন (see all)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *