মুগ্ধতা ব্লাড ব্যাংকে আপনার দেওয়া তথ্য বাঁচাতে পারে একটি জীবন। আপনার তথ্য দিন, প্রয়োজনে রক্ত খুঁজুন এখানে।

হায়রে হাওরে-১

মজনুর রহমান

৩ আগস্ট, ২০২১ , ১০:২৯ অপরাহ্ণ ;

হায়রে হাওরে-১-মজনুর রহমান

আমি মধ্যবিত্ত মানুষ, কাজেই নিম্নবিত্ত ট্রাভেলার। প্রায় সব সফরেই চিন্তা থাকে বাজেট ট্যুরের। নয়তো অফিসের কোন ফাঁকে-ফোঁকরে ঢুকে পড়বার।

ঘোষণা দিয়েছিলাম বাজেট ট্যুরে টাঙ্গুয়ার হাওরে যাব। অন্য সব সফরের মতোই এবারেও ক্যালেন্ডারে চোখ থাকলো যেন পূর্ণিমা রাতে অকুস্থলে থাকতে পারি। অর্থাৎ সফর বাজেটের ভেতরে, কিন্তু ষোলআনা উসুল হওয়া চাই!

হাওরের অথৈ পানিতে ভেসে ভেসে রাত কাটানোর স্বপ্নে ঘুমের ব্যাঘাত হচ্ছিল নিয়মিত।

হায়রে হাওরে-১

আবেগে বুকিং দেয়া নৌকা!

জুটে গেল গোটাকতক মোটাসোটা সঙ্গী। ডা. ফেরদৌস রহমান পলাশ, মুহাম্মদ মকবুল হুসাইন সুমন, আসহাদুজ্জামান মিলন, জাকির আহমদ, শামসুজ্জামান সোহাগ, শরিফুল আলম অপু, মুস্তাফিজ রহমান, আমি, মোহাম্মদ জলিল, মাজহারুল মোর্শেদ। ঢাকা থেকে সিলেটে যুক্ত হবে পল্লব শাহরিয়ার ও জাহিদ কাজী (পড়ুন জাহিদ পাজি)। দল হয়ে গেল। এদের বেশিরভাগেরই বয়স আমার চেয়ে যথেষ্ট বেশি। কিন্তু এদেরকে যে আমারই খেদিয়ে বেড়াতে হবে, মৃদু ধমক দিতে হবে কে জানত! সেটা অবশ্য পরে জানা যাবে।

এবার টিম/ লজিস্টিক ম্যানেজমেন্ট। সে আরেক হ্যাপা। আমার মতো আমার দলের আর কেউই আগে টাঙ্গুয়ার হাওরে যায় নি (অবশ্য আগে গেলে আর আমার সাথে যেতেই বা চাইবে কেন, পথের যা ঝক্কি!)। ফলে আমাকে ফোনে নানান জায়গায় খোঁজ নিতে হয়। সিলেটের ওইদিকে যারা পরিচিত বা পরিচিতের পরিচিত তাদের অধিকাংশই ভাসা ভাসা তথ্য দিচ্ছেন। মূলত ওই পাণ্ডববর্জিত জায়গায় যায় না প্রায় কেউই। আমাদের মতো বোকাদের কথা আলাদা।

শেষে ফেসবুকের শরণ নিলাম। ট্রাভেল গ্রুপগুলো ঘুরে ঘুরে রুট ঠিক করলাম। কী খাব, কোথায় ত্যাগ করবো তাও ঠিক করলাম। এমনকি অনেকগুলো নৌকার মাঝিরও নম্বর পেলাম। এখানে খানিক ঠকে গিয়েছি। সেটা বলি। এদেশের অধিকাংশ ভ্রমণকাহিনী লেখকেরা কাহিনীর শুরু করেন ঢাকা থেকে, শেষও করেন ঢাকায় গিয়ে। খরচের হিসাবেও থাকে ঢাকাই ফ্লেবার। মাঝখানে লেখা থাকে স্থানীয় গাইড, মাঝি এদের নম্বর। লেখার সুরে ফুটে ওঠে গাইড বা মাঝিকে ফোনে বুক্ড করে না গেলে মহাসর্বনাশ হবে। আমিও এক মাঝিকে ফোন দিলাম আল্লাহ ভরসা করে। মাঝির কথায় বোঝা গেল আসলেই তাকে বুক করে না গেলে সর্বনাশ হবে। আমরা যখন যাব তখন আশ্বিনী পূর্ণিমা। এই সময়ে নাকি সারাদেশ থেকে অসংখ্য মানুষ বেড়াতে আসে। নৌকা পাওয়া খুবই কঠিন ব্যাপার। এখনই বুকিং দিলে উনি কিছু কম রাখবেন। এদিকে পূর্ণিমা ছাড়া আমার চলবে না, আবার কমের অফার! আবেগে বুকিং দিয়ে ফেললাম।

(সময়কাল: সেপ্টেম্বর, ২০১৯)

Latest posts by মজনুর রহমান (see all)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *