এই শহুরে জীবনে শরতের সৌন্দর্য দেখার সৌভাগ্য হয় না আজকাল। কেউ কেউ হয়ত জ্যামে আটকা পড়ে শরতের রূপালি চাঁদটা দেখবার ফুসরত পায়। কিন্তু তাও বেশিক্ষণ নয়। ব্যস্ততার ভীড়ে তারা হারিয়ে যায় জীবনের কোলাহলে।
শৈশবের শরৎকাল সবার কাছেই স্বপ্নের মত। বিশেষ করে যারা গ্রাম বাংলায় বড় হয়েছেন। তারা এটাকে ভালোভাবে উপলব্ধি করতে পারেন। স্কুল ফেরা সেই ছেলেটির কথাই ধরা যাক,যে সবুজ ধানের ক্ষেতের মাঝ দিয়ে হেঁটে হেঁটে যাওয়ার সময় দিগন্তহীন আকাশ টাকে দেখে দেখে বড় হয়েছে। সাদা মেঘের শৈল্পিক কারুকাজে সজ্জিত নীলাকাশে মুগ্ধতায় ভরা যার শৈশব। সেই তো প্রকৃতির আসল রূপ দেখেছে।
নদীর ধারের সেই কাশবনের কথা না বললেই নয়। শরতের এই সৌন্দর্যকে উপভোগ করার জন্য প্রকৃতিপ্রেমিরা ছুটে যান কাশফুলের খোঁজে। শহরতলীতে আজকাল কাশফুলের দেখা না মিললেও তারা চলে যান শহর ছেড়ে। যান্ত্রিক জীবনের সবটুকু ক্লান্তি নিঃশেষ করতে।
শারদশশীর মিষ্টি আলোয় প্রকৃতি ঢলে দেয় তার স্বর্গীয় রূপ। এখানেও শহরের মানুষ বঞ্চিত। ছাদের কার্নিশে দাঁড়িয়ে তারা জ্যোৎস্নাচ্ছন্ন রাত উপভোগ করলেও আসল রূপটা দেখতে পাওয়া যায় না। কারণ যেখানে গ্রামের পথ ঘাট,সুবিস্তৃত মাঠে প্লাবিত হয় চাঁদের আলোয় তখন শহরতলীর জোছনাকে তুচ্ছ মনে হয়।
এই প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের কথা ভেবে তাই আক্ষেপ করতে হয়। অন্তত প্রকৃতির রূপ দেখে তারা বড় হোক। শৈশবের কিছুটা সময় কাটুক গ্রাম বাংলার পটভূমিতে। তাদের মনে আসুক সজীবতা। এই সজীব, নির্মল মানুষ গুলোই হয়ে উঠবে দেশের শ্রেষ্ঠ সম্পদ।