জীবনবোধ নিয়ে সবসময়ই ভাবুক মন ভাবে। তাকে রসদ যোগায় জীবনের নানান চড়াই উতরাই, আনন্দ, দুঃখ, বেদনা। আমাদের দৈনন্দিন জীবনের উচ্ছ্বলতা, উৎকণ্ঠা, আবেগ আমাদেরকে তাড়িত করে। আশেপাশের প্রকৃতি পরিবেশ তখন শান্তির পরশ বুলিয়ে মগজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে যায়। পারিপার্শ্বিক জীবনভাবনা সমবেদনাকে উদ্বুদ্ধ করে।
আমরা জীবনকে ধারণ করি।
আমরা সময়কে ধারণ করি।
আমরা কবিতাকে ধারণ করি।
আমরা কবি হতে বাধ্য হই।
নাওয়ে এবার পাল তুলেছি হাল ছেড়েছি জলে
আমার মধ্যে হাজার স্বপ্ন চেঁচিয়ে কথা বলে
ঘুমের মধ্যে আমি চেঁচাই, নাকি স্বপ্ন চেঁচায়
এই কথাটাই মগজজুড়ে সত্যিই কে যে প্যাঁচায়!
দুর্মূল্যের বাজার থেকে সবজি-চালের দাম
মগজটাকে খামচে দিল অল্প আয়ের কাম।
আমার মধ্যে আমি নেই গো এখন ছিঁটেফোঁটা
অল্প আয়ের জীবনটাতে খাচ্ছি কেবল খোঁটা।
দেশজ ঐতিহ্যের চেতনায় ঋদ্ধ হতে হতে
ভেষজ উদ্ভিদের মত লালন করে চলেছি বৈমাত্রেয় সংস্কৃতি
আমাদের অধুনা বাঙাল স্বভাবে এটা কোন বিষয় নয়
টেংরা-পুঁটির আড়তে এখন পাঙাস মাছের জোশ আসে
তাতে আফসোসের বদলে তৈলাক্ত হাত চাটতে চাটতে মৎস ভোজ বলেই চালিয়ে নেয়া সহজতর
সর্বাগ্রে নির্ভেজাল খুঁজতে গিয়ে ভেজালের ভেতর গড়াগড়ি
শুধুমাত্র হাড়-হাভাতের কপালে জোটে নির্ভেজাল দুঃখ-কষ্ট
দুপুরের রোদে বসে কচি শসায় তেষ্টা মেটাতে গিয়ে ভাবি
ইয়া পরওয়ারদেগার, আমাদের মানুষ করো, তবে খাঁটি বাঙাল বানাও!
শহুরে কথায় আমি দিশা ফিরে পাই
হেঁটে হেঁটে রচনা করি অলিতে গলিতে যত্রতত্র কীর্তি-কথকতা
সায় দেয় কোন এক বিভূতিরঞ্জন দাশ
তবে তিনি এও বলেন- যতিচিহ্ন ঠিক রাখো, দশা মত দাঁড়ি।
বাড়ি বাড়ি ভিক্ষে করে যৎ কিঞ্চিৎ আয় করে যে
তিনি কি ঠিক রেখেছেন জীবন পূর্ণচ্ছেদ?
দমে দমে হাঁটো নয়তো পূর্ণ দমে খাটো
তবুও কী অবলীলায় হেঁটে যায় শত বছরের মাসী!
দাঁড় টানো দর বুঝে, ভাড় টানো ঘাড় বুঝে
কী এমন কথা থাকে চাঁদ মাঝির মনে
কেউ বোঝেনা, কেউ বোঝে তো শুধু হেসে মরে।
যন্ত্রের দাপটে গণতন্ত্র জড়সড়
কে জানে কে ছোট আর কে বড়?
রাস্তায় রাস্তায় জরুরি অবস্থা চলছে
শুনশান রাস্তা তা-ই চেঁচিয়ে বলছে।
আশ্চর্য যৌবন হেঁটে যায় চিরচেনা পথ ছেড়ে
অজানার পথে পথে অচেনা রেখায়
দু’পাশে মহুয়াবন, সারি সারি চেনাগাছ
লতাগুল্ম, সবজিমাচা, সরিষার ক্ষেত
তার সাথে সখ্য শুধু পাখি-নীলাকাশের
এখানে অদম্য যুবা প্রণয়ের ফাঁদে
কৌতূহলে চেয়ে থাকে দূর অজানাতে।