ইদ Archives - মুগ্ধতা.কম

ইদ Archives - মুগ্ধতা.কম

মুগ্ধতা.কম

২৫ জুন, ২০২৩ , ১১:১৫ পূর্বাহ্ণ

রাইয়ান অভির একগুচ্ছ গীতিকবিতা

আপনজনা 

মিছে কেন কাঁদিস মনা

আপন ঘরে ফিরবে না 

তোর আপনজনা। 

অনেক বেশি ভালো তোকে 

বেসেছিল যখন 

তুই অবহেলা করলি তারে 

নিলি না রে যতন

এখন তোর সাজার মেয়াদ 

জীবন জেলখানা।

ভালোবাসি এই কথাটা

বলেছিল যখন 

তুই থাকবি পাশে বলেছিলি

সারাটা জীবন 

তোর সে কথা পথ ভুলেছে

হারিয়ে ঠিকানা।

(২)

মনভোলা 

ওরে ও মনভোলা তুই 

এতোই মনভোলা 

এপার ওপার ঘুরলি ফিরে 

ডুব দিলিনা ভাবসাগরে

এ মন ও মন ঘুরে সারাক্ষণ 

কাটালি বেলা। 

মজিয়া রুপের মোহে 

হারালি তোর প্রেমের মান 

ওরে ও বন্ধু কালাচাঁন

বিষের আগুনে ঢাইলা ঘি 

পুইড়া হইলি কি 

বাড়লো তোর আরও জ্বালা

তালবাহানা করে কতো 

বাইবি দেহতরী খান 

ওরে ও বন্ধু কালাচাঁন

চেয়ে দেখ নিকটে সমন 

করিস না কালক্ষেপণ 

ছিড়বে তোর আয়ুর মালা।

(৩)

ক্ষুধাতুর প্রজন্মের গান 

আমি দেখেছি কিভাবে কাটে মজুরের 

ক্লান্তির সারাবেলা 

আমি দেখেছি ক্ষুধায়

হাত পেতে থাকা

নারীর চোখের জ্বালা 

আমি স্বপ্নবাজের চোখে 

স্বপ্নচুরির খেলা

আমি দেখেছি শিক্ষা

করছে ভিক্ষা বন্ধ পাঠশালা

তবু আসেনা তো পরী নেমে 

সোনার কাঠির ছোঁয়ায় তাদের

যায়না দুঃখ থেমে। 

আমি দেখেছি নীরব চোখের জলে 

মরলেই হবো ধন্য

আমি দেখেছি অশ্রু মৃত্যুর কালে 

বেঁচে থাকার জন্য 

আমি দেখেছি কতো স্নেহের আঙ্গুল 

যায় বদলে নির্ভরতায়

তবু আসেনা পরী নেমে 

তবু যায়না দুঃখ থেমে 

এই শহরের নিঃশ্বাস মরে যায়

(৪)

স্বাধীনতা তুমি 

স্বাধীনতা তুমি শিকল ভাঙা 

কোন মুক্তির গান

স্বাধীনতা তুমি লাল সবুজের 

স্বপ্নের নিশান 

স্বাধীনতা তুমি জাতির পিতার 

মুক্তির হুংকার 

স্বাধীনতা তুমি দেশের মাটিতে 

বাঁচবার অধিকার 

প্রিয় স্বাধীনতা বাঙ্গালির বুকে 

গর্জে ওঠো আবার। 

স্বাধীনতা তুমি সবুজ মাটিতে 

কৃষাণী মায়ের হাসি

স্বাধীনতা তুমি ক্লান্ত দেহে

রাখালের পোড়া বাঁশি। 

স্বাধীনতা তুমি প্রাণের আবেগে 

বারবার ফিরে আসা

স্বাধীনতা তুমি দেশের প্রতি 

অকৃপন ভালোবাসা।

(৫)

ক্ষয়ে যাবার গান 

জঞ্জালে ভরা রুম 

আর অপরিকল্পিত ঘুম

আমার অলস পথচলা 

আর ক্লাস মিস করে ফেরা 

জানি সময় আমার যায় বয়ে

তবু থাকব আমি আমার হয়ে। 

আমার স্বপ্নেরা খুঁজে পায়না ঠিকানা 

আমার গল্পটার সমাপ্তি অজানা 

আমি জানি শুধু 

ক্লান্ত একটা দিনের মতো 

যাচ্ছি জীবন টা বয়ে। 

আমার নিঃশ্বাসের কেউ সত্যি খোঁজে না

আমার বিশ্বাসের কেউ 

জন্ম জানেনা 

আমি জানি শুধু 

একটু হাসির অন্তরালে 

যেতে ক্ষয়ে ক্ষয়ে।

রাইয়ান অভি

রাইয়ান অভি

রাইয়ান অভির
67 Views

মুগ্ধতা.কম

২৫ জুন, ২০২৩ , ১০:৪৬ পূর্বাহ্ণ

দেবব্রত সিংহর ৩ টি কবিতা

তাহাদের  চৈত্র কথা

সে ছিল এক দিনফুরনো চৈত্র বেলা

সে ছিল এক চৈত্র শেষের মেলাতলা

তখনো জ্বলেনি হ্যাজাক

তখনো জ্বলেনি বাতি

গ্রামের শেষে মাঠের মাঝে

মুঠো মুঠো আবিরগোলা

সূযিডোবা আলোয়

সে এক মেলা আমোদী মানুষের মেলাতলা

সে এক উপচে পড়া ভিড়জমানো মেলাতলা

সেই ভিড়ের মাঝে বাঁশিওয়ালার কাছে

সে কিনছিল বাঁশি

বাঁশের তৈরি আড়বাঁশি

সে তেমন কোন বাঁশি বাজিয়ে না

উঠতি বয়সের হুজুগে পড়ে

আউলি বাউলি হাওয়ার দিনে

সন্ধ্যা রাতের উঠানে

তালাই পেতে ফু দেয় বাঁশিতে

দেখতে সে নেহাত মন্দ না

শ্যামলাবরণ

লম্বাগড়ন

টিকালো নাকে কোকড়ানো চুলে

তাকে ভালোই লাগে দেখতে

শুধু দোষের মধ্যে দোষ

সে বড় জেদি ছেলে

নাছোড় জেদে যখন যেটা মনে করে

সেটাই করে ছাড়ে ।

তা সে যাই হোক

বাঁশি কেনার পরে সে গেল চড়কথানে

হাতে ঘোরানো সারি সারি 

নাগরদোলার ওখানে

সেখানে তখন সঙ্গিনী দুই মেয়েকে নিয়ে

দাঁড়িয়েছিল একজনা

চৈত্র দিনের দিন ফুরনো আঁধারে

আলতারাঙা শাড়ি পরে 

মেলাতলাটা আলো করে দাঁড়িয়েছিল।

চড়কথানের নাগর দোলায় এক খাটিয়ায়

বসার কথা চারজনের

তাই দেখে সে এগিয়ে গেলে যখন

তখন আলতারাঙার সঙ্গিনী দুই মেয়ে

মুখিয়ে উঠলে রে রে করে

তবু নাগরদোলার লোকেরা 

তাকে জোর করে দিলে বসিয়ে

তার সমুখে আলতারাঙা

তার চোখে চোখ পড়তেই

সে নামিয়ে নিলে চোখ

তখন বুকের ভিতর রেলগাড়ি

কু ঝিকঝিক রেলগাড়ি

ঠিক তখনই চড়কথানের লোকেরা

চালিয়ে দিলে নাগরদোলা

তখন মাঠের ওদিকে নদীর ধারে

চৈত্র শেষের হাওয়ারা কোথায় ছিল কে জানে

তারা ছুটে এসে উড়িয়ে দিলে

আলতা রাঙার শাড়ির আঁচল

উড়িয়ে দিলে খোঁপায় বাঁধা ঢেউ খেলানো 

কালো এলো চুল

এলোমেলো সেই হাওয়ার তোড়ে

শাড়ির আঁচল সামলে নিয়ে

খানিক পরে তারা তিনজনে মেতে উঠলে খেলায়

রুমাল ফেলার খেলায়

খেলার শেষে যখন থামলো নাগরদোলা

তখন তার কি জেদ চাপলো কে জানে

সে আলতারাঙার রুমাল খানা

পকেটে নিলে পুরে।

তারপর তাই নিয়ে সে ঝগড়াঝাটি বিশাল

সেই সঙ্গে হই হট্টগোল চেঁচামেচি

তার হেলদোল নেই কোনো

সে আলতারাঙা কে বললে হেসে,

“এই শুন তুমার নীল রুমাল খানা

আখন থাকে থাকবেক আমার কাছে

আমার কাছেই থাকবেক।”

তাই শুনে ধো ধো করা পলাশের আগুন

এক পলকে ছড়িয়ে গেল আলতারাঙার মুখে

আর সঙ্গিনী সেই দুজন মেয়ে

তারা তখনই জ্বলে উঠলে

জ্বলে উঠলে জ্বলন্ত ক্রোধে

তখন মেলা বেড়ানো একদল মারকুটুনে ছেলে

জামার হাতা গুটিয়ে এলো ছুটে

তাই দেখে নাগরদোলার লোকেরা তাদের সামলে দিলে

বললে, “তুমরা যাও যাও

ইখানে কিছু হয় নাই যাও

ইয়ারা সব আমাদে ঘরের ছেলামেইয়া

তুমরা ভিড় কর না যাও।”

তারপর আর কি

তারপর মেলা ফিরতি লোকের সঙ্গে

রাঙাধুলার পথে

বাঁশির সুরে গান ধরলে সে,

‘ তোকে মনে লাগেছে করব বিহা

দাড়ি কাটে লি মাইরি করব বিহা।’

ওদিকে তখন আলতারাঙার সঙ্গিনী দুই মেয়ে

বাড়ি ফিরে সুঁচকে ফাল করে

পাড়া শুদ্ধো যত লোক সবাইকে দিলে তাতিয়ে

বাদ গেল না চৌকিদার বাপও

সে সব বৃত্তান্ত শুনে লাঠি উঁচিয়ে

গর্জে উঠলে রাগে

পাগড়ি বেঁধে খাকি পোশাক পরে

থানায় যাওয়ার তোড়জোড় করলে

ওই ছেলেকে বেঁধে আনার তোড়জোড় করলে।

যার জন্যে এত তোড়জোড় 

এত আয়োজন

এত তর্জন

এত গর্জন

সে তখন মাটির কোঠাঘরে দোর দিয়ে

একা একা অন্ধকারে উপুড় হয়ে শুয়ে

তার রাত পাহারা দেওয়া চৌকিদার বাপ

আর সঙ্গে যত পাড়ার লোকজন

আর সঙ্গিনী সেই মুখরা দুই মেয়ে

তারা জানতেই পারলে না কেউ

কেউ পারলে না জানতে

ওই নীল রুমালের সঙ্গে কখন যে

হা ঘরে সেই বাউন্ডুলে ছেলের কাছে

তাদের ফুলপরী মেয়ের

ফুলের মতন মনটাও গেছে খোয়া

সে তারা জানতে পারলে না একজনও।

জানতে পারেনি সে নিজেও

মেলাতে ওই রুমাল নিয়ে কত ঝগড়াঝাটি

কত কথা কাটাকাটি

বাড়ি ফিরে আবার সেই তাকেই

একটিবার

শুধু একটিবার দেখতে চেয়ে

বুকের ভিতরে এত উচাটন

এত হুটোপাটি

কেন হয় এসব

কিসের জন্য হয়

তা কিছুতেই ভেবে পেলেনা সে

অন্ধকারে কোঠাঘরে

এসব কথা ভাবতে ভাবতে

কখন যে বাদল নেমেছে দুচোখে

তাও সে টের পেলে না কিছুই

এক সময় আকাশ-পাতাল ভেবে টেবে

আচমকা তার মনে হল

একেই বোধহয় ভালোবাসা বলে

বোধহয় একেই বলে ভালোবাসা ।

_______________________________

পিতৃতর্পণ

তখন মহানগরীর অতিব্যস্ত ফুটপাতে

খিদে পেটে হাঁটতে হাঁটতে মনে হত

বড় বিনির্বৃত্ত এই সংঘর্ষ

আবার মহানগরী থেকে দূরে বহু দূরে

রাঙ্গামাটির গ্রামে ভাঙ্গা ঘরের উঠানে

দাঁড়ালে মনে হত

বড় দুর্বহ এই দারিদ্র

তার মাঝে তিনি যখন শুধোতেন,

‘ কি রে কোথাও কিছু পেলি?’

তখন তার অসুখিত মুখের দিকে তাকিয়ে

আমার সমস্ত সত্তা জুড়ে উঠে আসত হাহাকার

বিষয়ভাগ্যে প্রতারিত শীর্ণকায় আত্মভোলা মানুষ

তার দিকে এক পলক তাকালেই মনে হত

নিষ্ঠুর সময় কি নির্মমভাবে তাঁর মুখাবয়বে

বাড়িয়ে চলেছে রেখাচিত্রের নকশা

অকালে অবহেলায় অবজ্ঞায়

নির্দয় দারিদ্র্যের প্রখর উত্তাপে

ঝলসে গেছে তাঁর শিল্পী সত্তার সবটুকু নির্যাস

এসব দেখতে হত

নীরব দর্শকের ভূমিকায়

উচ্চশিক্ষার অক্ষম বেকারত্বকে সঙ্গে নিয়ে

দেখে যেতে হত দিনের পর দিন

অথচ এরকম কথা ছিল না

কত কিছুই তো করার ছিল

এসব ভাবতে ভাবতে লিখেছিলাম লেখাটা

তাঁকে নিয়ে আমার প্রথম লেখা

তাঁকে নিয়ে আমার প্রথম গল্প

একদিন এক বিকেলে আকাশবাণীর 

গল্প পাঠের আসরে

আমি পড়েছিলাম সেই গল্প

গ্রামের বাড়িতে মাটির উঠানে রেডিওতে সে গল্প শুনে 

চোখের জলে ভেসে গেছিলেন মা

অন্য কিছু না

বাবাকে নিয়ে দুঃখেরা সব কেমন করে

অভিতাপের দহনে দগ্ধ করেছিল ছেলেকে

তা নিয়েই লেখা হয়েছিল সেই দুঃখকথা

তিনি শুনেছিলেন

একাগ্রচিত্তে নিবিষ্টমনে শুনেছিলেন

তারপর আনন্দে উদ্বেল হয়ে বলেছিলেন মাকে

‘আমার কাছে তো কোন টাকা নেই

যদি থাকত টাকা

তাহলে ওকে আমি পুরস্কার দিতাম

একশ টাকার পুরস্কার

আর একটা কথা তোমায় বলে রাখি

কথাটা তুমি শুনে রাখো

আমিও তো লিখতাম একসময়

তবে এমন লেখা লিখতে পারিনি কখনো

তাই কি ঠিক করেছি জানো

ওকে আমার কলমটা দেবো তুলে

ও সেই কলম দিয়ে মানুষের কথা লিখবে

যাদের কথা কেউ কখনো লেখে না

তাদের কথা লিখবে l

____________________________

রামকিঙ্কর

.. .আমি রামকিঙ্কর  

আমার বাপের নাম চন্ডীচরণ বেজ

মায়ের নাম সম্পূর্ণা

একবার সুরেন কে লিয়ে কইলকাতায় 

এক এগজিবিশনে দেখি আমাকে লিয়ে লেখা হইছে

আমি সাঁওতাল

অনেকেরই এমনি ধারণা

সাঁওতালদের মূর্তি টুর্তি বেশি গড়েছি বলে

বাবুরা বোধহয় ভাবে ইরকম

কইলকাতায় আমার গড়া কোনো মূর্তি নাই

কোনদিন কেউ বলেও নাই কিছু করতে

উখানে যারা আছে বসে

তারা নিজেদের নিয়ে এত ব্যস্ত

কাউকে কিছু বলার মতন তাদের ফুরসত কোথায়।

দেখো নাম যশ খ্যাতি অর্থ

কোনোটা নিয়ে কোনোদিন কিছু ভাবি নাই আমি

শান্তিনিকেতনের আগানে বাগানে যেসব মূর্তি গড়েছি

পয়সা নিইনি

পয়সার জন্যে বেচে দিইনি

আমার শিল্প আমার সাধনা

চাহিদা আর যোগানের বাজারি তত্ত্বে

বিশ্বাস করি না আমি

শিল্প

আমার কাছে শিল্পের কোন হেতু নাই

শিল্প একটা খেলা

এই খেলাতে হারজিতটা বড় কথা নয়

খেলাটাই আসল

আজকে যেটা হার কালকে সেটা জিত।

আমি রামকিঙ্কর

গুরুদেবের রাঙামাটির ধুলা ছাড়ে 

কোথাও যাই নাই আমি

বিদেশ যাওয়ার ডাক আসেছে বহুতবার

যাই নাই

শান্তিনিকেতনের মাটি ছাড়ে কোথাও যাই নাই

কি হবেক যাইয়ে

ছবি আঁকা

মূর্তি গড়া

সে তো এলেমের কথা হে

তার জন্যে অত দরজায় দরজায়

ভিখ মাগতে হবেক কিসের লাগে

অত দরজায় দরজায় 

ভিখ মাগতে হবেক কিসের লাগে।

_________________________________

দেবব্রত সিংহ

দেবব্রত সিংহ: পশ্চিমবঙ্গের খ্যাতিমান কবি। বাঁকুরার আঞ্চলিক ভাষায় ‘তেজ’ কবিতাটি লিখে তিনি বাংলা ভাষাভাষীদের কাছে তুমুল জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন। 

দেবব্রত সিংহর ৩ টি কবিতা
39 Views

মুগ্ধতা.কম

২৫ জুন, ২০২৩ , ১০:৪২ পূর্বাহ্ণ

জগলুল হায়দার এর ছড়াগুচ্ছ

ইষ্টি মিষ্টি বিষটি

ইষ্টি এলো

মিষ্টি এলো

বিষটি এলো মেঘে

ঈশান 

বিষাণ

কি শান জাগা বেগে!

বেগে বেগে

রেগেমেগে

বর্ষা নামুক ঝেঁপে

গরম যায়ে

খড়ম পায়ে

ডাটা দিবো মেপে।

ডাটা পেলে

হাঁটা ফেলে

মেঘ বসিবে নেটে

ইষ্টি মিষ্টি 

মুষল বিষটি

ঝরবে খরা কেটে।

___________________________

আশার আলো

হালকা হালকা মেঘ উঁচিয়ে

তপ্ত রোদের রেখা

ঝিলের জলে শাপলা শালুক

কলমি কমল লেখা।

পাখির ঠোঁটে হাজার কথা

মুগ্ধ করা শিসে

ফুলের খুশি পাতার নাচন

পায় না খুঁজে দিশে।

খুশির দোলায় ধানের শীষে

আশার আলো আভা

কৃষ্ণচূড়া পলাশ বনে

দারুণ লালের লাভা।

লাল ছড়িয়ে গোধূলি যায়

স্বপ্ন ছবি এঁকে

বোশেখ গিয়ে জ্যৈষ্ঠ এলে

ফল হাসে সব পেকে।

_______________________________

পথ পেরিয়ে

পথটা নিজেও হাঁটতে জানে

সঙ্গে হাঁটে রোদও

পথের উপর মেঘও হাঁটে

ছায়ার শুভবোধও।

হাঁটতে হাঁটতে পথটা জিরায়

পথের পাশেই রিকশা ভিড়ায়

টঙ দোকানে চা খায়

চাঁদ তারাদের ইচ্ছে ছুঁতে

ভাসে মনের পাখায়।

পথ কখনো মাঠ সাথে নেয়

কলমি কমল ভাঁট সাথে নেয়

উঁচিয়ে মাথা আগায়

নিজের মনে একান্তে সব

পথের দিশা জাগায়।

পথটা আবার চলতে লাগে

পথের কথা বলতে লাগে

ভর দিয়ে তার দু পায়

পথ খুঁজে নেয় ক্রমে ক্রমে

পথের নানা উপায়।

পথের সাথে হাওয়া চলে

অক্সিজেনের দাওয়া চলে

চলতে চলতে নদী

পথ বলে তাও ব্রিজ নেবো না

সাঁতরে পারি যদি।

পথটা ঠিকই সাতটা সাগর

তেরো নদীর চক্ষু ডাগর

সাঁতরে সাঁতরে পেরোয়

সেসব নিয়ে পথের বাঁকে

ফিচার কতো বেরোয়।

সেই ফিচারের পাতায় পাতায়

কত্ত শোভন সূচি গাঁথায়

ফ্রেম বাঁধা পথ- কবি

পথ পেরিয়ে পথে দেখি

আমারই মুখ ছবি!

জগলুল হায়দার এর ছড়াগুচ্ছ
20 Views

মুগ্ধতা.কম

২৫ জুন, ২০২৩ , ১০:৩৫ পূর্বাহ্ণ

মিনহাজ উদ্দিন শপথ এর একগুচ্ছ হাইকু

১.

হলুদ ঘুড়ি 

নীল আকাশ ছাদে

কী বাহাদুরি 

২.

কেমন খেলা

ভোরের পাঠশালা

বেলা- অবেলা

৩.

বাইজি ঘর

নূপুরে ঝংকার 

রাত্রিভর

৪.

জল কাননে

মাছের বিলাপ শুনি

ভোর ফাগুনে

৫.

বাঁশের বাঁশি 

নীরবতার গান

দরদে ফাঁশি 

৬.

রঙিন হাত

বিকেল করে পাঠ

অপার স্বাদ

৭.

কুকুর ঘ্রাণে

মুনিবের শাদা জামা

বাঁচায় প্রাণে

৮.

গোলাপ ঘরে

শাদার উৎসব 

জোছনা ঝরে

৯.

খাঁচায় টিয়া

ঠোঁটে চেতনাস্বর

আমার হিয়া

১০.

ঘুঘুটা একা

দুপুরে ছায়া তলে

মনন রেখা

১২.

এই গরমে 

আলোচনায় কাক

পুড়ে শরমে

১৩.

কেমন ছায়া

 শ্রাবণ রাত্রিতে 

মিলন মায়া

১৪.

মেঝেতে লাশ

ঘরে মাছির ভোঁ ভোঁ

কেন এ ফাঁশ

১৫.

আমার গাছ 

ভাবনা তোমাকেই

সোলালি ভাঁজ

১৬.

মনের মাঝি

আমাকে নাও টেনে

প্রেমেতে মজি

১৭.

আমের আঁটি

চুষে নাও এখন

শূন্য বাটি

১৮ 

মেঘের ঘরে 

এ কোন জলছবি

বকুল ঝরে

১৯.

কী যে পুলক

ঋতুর ভাঁজে ভাঁজে

রাঙায় বুক

২০.

ছায়ার ঘরে

গাছের ইতিহাস 

ফাগুনে পুড়ে

২১

জবার ঢেউ

ভোরের গায়ে লাগে

পরানে মউ

২২.

একটা চক

কালো জলেতে নেমে 

হলো যে বক

২৩.

হলুদ জামা

চোখে আদর পেয়ে 

কী রমরমা 

২৪.

ভোরের খাতা

সারাটা রাত লিখি

অণু কবিতা

২৫.

ঋতুর গানে

রুমালে ফুল তুলি

ফাগুন টানে

মিনহাজ উদ্দিন শপথ

মিনহাজ উদ্দিন শপথ

মিনহাজ উদ্দিন শপথ এর একগুচ্ছ হাইকু
32 Views

মুগ্ধতা.কম

২৫ জুন, ২০২৩ , ১০:২৭ পূর্বাহ্ণ

নজরুল মৃধার কবিতাগুচ্ছ

কালপাঠ্য

আগামীকাল যদি পাওয়া যেত আজ

আজ পেতাম যদি গতকাল

তাহলে কি বদলে যেত জীবনের ঢাল।

সব সময়কে যদি বাঁধা যেত

সুসময়ের চাকায়।

তাহলে পড়তে হতো না

দুঃসময়ের গোলক ধাঁধায়।

____________________

বললাম

একদিন শহরের সেরা ভাস্কর শিল্পীকে বললাম—

আমাকে একজনের মুখের ভাস্কর্য বানিয়ে দিতে হবে।

শিল্পী বললেন কেন?

বললাম, প্রকাশ্যে রাজপথে ভাঙবো বলে।

নগরীর মস্তবড় কবিকে বললাম—

একজনকে নিয়ে নিবেদিত কবিতা লিখে দিতে হবে।

কবি বললেন কেন? 

আমি বললাম—

কুচি—কুচি করে ছিঁড়ব বলে। 

একদিন এক ব্যবসায়ীকে বললাম—

তুমি কী অচিন গন্তব্যের পথ দেখাবে।

ব্যবসায়ী বললেন কেন?

বললাম, নিজের সঞ্চিত অভিজ্ঞতা

নিলামে তুলব বলে। 

শেষে একদিন এক নাবিককে বললাম—

সাগরে যেতে একটি জলযান দিবে।

নাবিক বললেন কেন?

আমি বললাম—

সেই জলযানসহ নিজেকে অতল জলে 

তলিয়ে দিব বলে।

____________________

অপেক্ষা  

মনের চাপায় পিষ্ঠ নিহত মনের ইচ্ছে হল দেহ হয়ে

ইথার ভ্রমণে যাবে।

মহাশূন্যে পরিব্যাপ্ত অতি সূক্ষ্ম কাল্পনিক বায়বীয় পদার্থ যে ইথার

তা জানা ছিলনা।

ছিলনা জানা কোন ঠিকানা।

তার পরেও খুঁজে ফিরি ইথারের প্রথম শব্দটি,

প্রথম মানব বাক্যের পাশাপাশি মহামানবদের অমিয় বাণী,

চলে যাওয়া স্বজনদের হাসি-কান্না, সুখ-দুখের কথপোকথন।

যন্ত্র-ষড়যন্ত্রের ফিসফিস শব্দ,

জীবন নামের হাইওয়ে ক্লান্তি জটে আটকে থাকা 

সেই সব শব্দ খুঁজে ফিরি ইথারে। 

এমন সময় বোধ বলে উঠলো

দূর বোকা এসবতো দেহের উর্ধে।

দেহ—ছেড়ে আয়, দেখবি নিঃশব্দের  মাঝে শব্দের খেলা,

জলছাড়া বরফ, বায়ু ছাড়া আয়ু, অন্ধকারের আলোকছটা আরও কত কী!

তাই তো, এখন শুধু অপেক্ষা  আর  প্রতিক্ষা. ..

________________________

মনের পাসওয়ার্ড তোমার হাতে

মনের পাসওয়ার্ড তোমার হাতে 

দেয়ার পর তুমি বলেছিলে

বার কোটি বছর আগে পৃথিবীতে 

প্রথম যে ফুলটি ফুটেছিল

তা এনে দিলে সম্বৃদ্ধির আগামী উপহার দিব।

সেই ফুল হাতে দাঁড়িয়ে থেকেও—

তোমার দেখা নেই কোটি বছর।

প্রস্তর কিংবা চামড়ায়  পৃথিবীর 

প্রথম প্রেমপত্র লিখতে পারিনি বলে,

তুমি  উপহার দিলে অনুরাগ ও অনুযোগ।

পাসওয়ার্ড হারিয়ে মন বাজারের শ্রমিক হিসেবে

এখন প্রতিদিন হাজার হাজার মন এবং মনন 

উঠানামা করছি—

শুধু তোমারই আশায়।

_______________________

মঙ্গল মৃত্তিকা

বরফে—বরফ জ্বালিয়ে করি আগুন

জল ঢেলে তা হয় দ্বিগুণ

পাথরে—পাথরে রতি স্নান

প্রজাপতির গায়ে শুদ্ধতার ঘ্রাণ

কাব্যযজ্ঞে নিমগ্ন মন

মঙ্গল মৃত্তিকায় খোঁজে

নির্দোষ প্রাণ।

_________________________

নজরুল মৃধা: কবি ও সাংবাদিক, রংপুর

নজরুল মৃধা: কবি ও সাংবাদিক, রংপুর

নজরুল মৃধার কবিতাগুচ্ছ
34 Views

মুগ্ধতা.কম

২৫ জুন, ২০২৩ , ১০:২৪ পূর্বাহ্ণ

আদিল ফকিরের একগুচ্ছ কবিতা

                    

ভালোবাসা

ঝিঙেটা নুয়ে,

হলদে ফুলটা শুয়ে,

সবুজ পাতায় কাদামাখা-

চেয়ে থাকা পিপীলিকা,

তোমার অযত্নে,

বেঁচে থাকা অচেনা-

আমি ঝিঙে লতা।

কার সাথে বলি কথা-

আমি এক ভালোবাসা ।

সব ঝিঙে ফুল-

গগন সমান ভুল,

ভেসে থাকা মেঘমালা-

অযত্ন এক ভালোবাসা।

বসে থাকা কুকুরটা-

বিয়ে বাড়ির হাড়টা-

আজও হয়নি চোষা,

চেয়ে আছে দুই চোখ-

মুখে শুধু  লালা।

তোমার অযত্নে –

তবুও ফুটে ওঠে-

প্রকৃতির এক ভালোবাসা।

প্রজাপতির পাখা মেলা,

কাঠঠোকরার কাঠ কাটা-

ঠক্ ঠক্ শব্দে-

চেয়ে আছে অযত্ন,

ছোট্ট একটা ভালোবাসা।

—————–

বাসন্তী

আজ থেকে তোমার নাম দিলাম বাসন্তী 

যখন আকাশ ডাকবে, ঝড়বৃষ্টিতে জানালার পর্দা উড়বে

আমি ডাকবো- বাসন্তী—, ও বাসন্তী—

যখন উঠানের বকুল ফুলে গন্ধ-

আমি ডাকবো- বাসন্তী—, ও বাসন্তী—

খোলাকাশে যখন একটা আবাবিল

দেখা যায়, যায় না-

আমি ডাকবো-বাসন্তী, ও বাসন্তী

হয়তবা তুমি তখন বসে- বাবুর আঁকা ছবিতে-

রং করা ব্যস্ত….

আমি ডাকবো- বাসন্তী—, ও বাসন্তী—

তুমি একদিন, না একদিন – বলবে তো

কি- ডাকছো কেন?

আমি বলবো- এসো জমি চাষ করি

লাল শাকের বীজ বুনবো, সবুজ শাকের বীজ বুনবো।

ঐ ক্ষেতের আইলে তুমি বসে থাকবে-

আমি ডাকবো-বাসন্তী—, ও বাসন্তী—

– কী হয়েছে,  দেখছো না-

ঐ বনের পাখিসব অঙ্কুরিত বীজগুলো খেয়ে সাড়া।

বাসন্তী, ও বাসন্তী- যাক্  না খেয়ে

তবু-তো পাখিরা ভালো থাকবে

পাখিরা উড়বে…

পাখিরা কিচিরমিচির করবে

বাসন্তী, ও বাসন্তী……..!

দুজনা মিলে পাখির উড়াল দেখবো।

ময়ূরাক্ষী

ভালবাসবি আমাকে? আয় চলে আয়। ফাগুন শিমুল বনে দুজনের চলা। স্পিড বোটে ভেসে যাওয়া,তোর লম্বা চুল উড়ে আসা। এক রেখার দুই প্রান্তে সেলফি তোলা। ফুচকার ঝালে এক সাথে আ-উ করা। ট্রেন পথে হেঁটে চলা। জ্যোৎস্নায় দুজনের ছায়া। দুই ছাদে দুজনের উড়িয়ে দেওয়া ঘুড়ি, আকাশের বুকে কথা বলা। তোমার মা রেগে যাবে বলে- কফির ধোঁয়ায় তোমাকে ছদ্মনামে ডাকা, ময়ূরাক্ষী।যখন তুমি দূরে- এক- সময়ে আকাশের চাঁদ দেখা। সেই চাঁদের বুকে কততো কথা আঁকা।

ময়ূরাক্ষী- ভালবাসবে আমায়? তাহলে একটা কবিতা নিয়ে এসো। বসো, এই দিঘিপাড়ে। গোলাপের পাপড়িগুলো দিঘির জলে ভেসে দাও। আমি স্নান দিবো- সেই গোলাপ ধোয়া জলে। রাঁজহাসের মতন ডুব ডুব। তোমার হিহিহিহি হাসি। দিঘির জলরাশি, মেতিয়ে উঠবে। আকাশ বাতাসে ফাগুনের মাতাল- তুমি সেই ময়ূরাক্ষী।

ময়ূরাক্ষী, যাবে মোর গ্রামে? দেখবে সেই মেঠোপথ। মাঠের পর মাঠ। এক্কাগাড়িতে উঠবে! ঘোড়ার টগবগে তোমার সেই মন মাতানো হিহিহিহি হাসি।

কিষাণ ধরবে আবার সেই ধান চারা লাগানোর গান।

ময়ূরাক্ষী,  এসো।

এবেলা সে বেলা

শীতকালে এনায়েতপুর গ্রামে মিষ্টি রোদের রশ্মিতে – মাদুরে বসে পড়তাম-

হাঁটু ভাঙা – দ

কান মুচরি- ধ

পেট কাটা – ষ

বয়ে শূণ্য – র

ঢয়ে শূণ্য – ঢ়

হিলিবিলি-ল

ব-এ আঁকড়ি- ক

পাশে বসে থাকা ছোট বোন- কুমকুম, টালাতে মুড়ি ও গুড় খাচ্ছিলো। সেই গুড়ের লোভ সামলাতে না পেরে- টুপ করে ওর টালা হতে মুখে দিতাম… ও ভ্যা করে কাঁদতো…’মোর গুড় খাইলি ক্যান’! মা এসে থ-পাশ থ-পাশ করে দু’একটা পিঠে লাগাতো… আর বলতো- পড়্ পড়্

আবার পড়া শুরু…

নিজের হাত-টা  সোজা করে বলতাম-

হাত সই- ই

হাত সই- ই

হাত সই- ই

আজও সব আছে। বর্ণমালা আছে। এনায়েতপুর আছে। আমার মা আছে। শীতকাল আছে। কুমকুম আছে। মাদুর আছে। আমি আছি।

তবে – আমি দূরে, মা গ্রামে।কুমকুম স্বামীর বাড়ি। শীতের সেই মিষ্টি রোদ- এনায়েতপুরে। এক টুকরো সেই গুড়- ঘাঘটের চরে!… আর কুসার (আখ) মাড়া হয় না…

বর্ণমালাও আছে, তবে সে বেলার মতো নেই! ওরা পাথরের বর্ণগুলো- এখন ভাঙে…

নারী

আমার মাথায় হাজার নারীর গহনা – কারণ আমি একজন ফেরিওয়ালা!

ত্রিশের ঘরের জোড়া সংখ্যা বারবার- আমাকে শুনতে হয়-

কারণ আমি একজন ছোট কাপড় বিক্রেতা!

সেইদিন বাহিরের খোলা দরজায় এক নারীপ্রেম তাকিয়েছিল! ভাবছি তাকে একটা উপহার দিব-

আমি বলেছিলাম-

বত্রিশ?

তিনি বলেছিলেন-

না!

আমি বলেছিলাম-

চৌত্রিশ?

তিনি বলেছিলেন-

না!

আমি বলেছিলাম-

ছত্রিশ?

তিনি বলেছিলেন-

না!

আমি বলেছিলাম-

আটত্রিশ?

তিনি বলেছিলেন-

আমি একজন ধর্ষিতা নারী-

আমার জীবনে কোনো সংখ্যা…  গহনার প্রয়োজন নেই!

স্বাধীনতা

আমার একটা প্রেম আছে-কাঁদে এবং হাসে।আমার একটা কয়েন আছে, হারিয়ে, এবং খুঁজে পাওয়া যায়।আমার একটা আয়তকার আছে।তুমি চাইলেই মাঝে একটা বৃত্ত দিতে পারো।

কয়েন

আমি সেই পঁচিশ পয়সা। ক’বছর হয় দুষ্টু বাবুর হাত থেকে, শহরের এক ডাস্টবিনে আছি।

তবে আমার বিশ্বাস- সহজে আমি পচে যাব না। একদিন যাব তোমাদের হাতে…! ও! কী আনন্দ – এই ডাস্টবিন সংস্করণ হবে, কোথাও না কোথাও আমি যাব– আমি সেই পঁচিশ পয়সা। শুনেছি, কোন কালের পঁচিশ পয়সা বর্তমান জাদুঘরে।

বেহেস্তি

আপনি ধরলায় কেন?

মেঘ…

আপনি…?

এইতো রিমঝিম বৃষ্টি…

শুধু- মেঘের জন্য…?

না,…  আকাশ!

জল স্রোত!

আপনি… শুধু বৃষ্টি?

না,না…

বেহেস্তি!

বেহেস্তি! বেহেস্তি কে?

আমার বেহেস্তি! কথা বলে,

কখনো উড়ে… ধবধবে মন-

এক্কেবারে মেঘের মতন-

পরিচয় করে দেবেন?

হুম! অবশ্যই…

আসুন-

নৈঋত এর দিকে দেখুন…

হুম- কই?

ঐ- তো দেখুন না- কীভাবে বসে আছে-

শাদা! এক্কেবারে শাদা-

দেখুন না, কীভাবে তাকিয়ে আছে- কাজল রেখা!

হুম, দেখছি- বাহ্!

শুনুন – উনাকে কষ্ট দিবেন না…

নচেৎ কাজলরেখা- কাজল জল হবে-

না! না! না!….. এভাবে বলবেন না-

কাজল জল- অসম্ভব…

এই শাদা মেঘে- কাজল জল…

না! না!- আমার বেহেস্তি

একটা সুখ

একটা উপলব্ধি 

একটা অনুভব

আমার বেহেস্তি – আমার বেহেস্তি

আমার বেহেস্তি- আমার বেহেস্তি!

বেশ্ তো- আর কয়েকবার – ‘আমার বেহেস্তি’  বলুন তো…

আমার বেহেস্তি, আমার বেহেস্তি।

-কী ব্যাপার- আপনি চোখের জল ফেলছেন কেন-?

না! রিমঝিম বৃষ্টি…

চলুন! এক সাথে কিছুক্ষণ ধরলার বুকে….    

চলুন….!

আদিল ফকির

আদিল ফকির

আদিল ফকিরের একগুচ্ছ কবিতা
34 Views

মুগ্ধতা.কম

২৫ জুন, ২০২৩ , ১০:২০ পূর্বাহ্ণ

তৃণলতা কুরচির একগুচ্ছ কবিতা

নিথর

ঝিঁঝি পোকার ডাকও অসহ্য লাগে। সেলাইয়ের বড়সড় ফোঁড়ে বন্ধ করে দিতে ইচ্ছে হয় এদের শব্দ করার মুখ। বাতাসের শব্দও বিরক্তিকর বাদ্যযন্ত্র হয়ে বেজে ওঠে, দিগ্বিদিক শূন্য হয়ে ধেয়ে আসা সন্ধ্যাগুলোতে।  পৃথিবীর কাল-রেখায় এই-ক্ষণগুলোকে কেন জন্মাতে হয়, তা-জানিনে, সুনীতি। শুধু মুছে দিতে ইচ্ছে করে সমস্ত মিথ্যে পাখির ডাক, যা উড়ে যেতে চায় পুড়িয়ে দিয়ে বোরো ধানের খেত এবং শীত নেমে আসা শাল মহুয়ার বন।

————–

বৃক্ষান্তরাল

রাতের নৈঃশব্দ্যে কান পেতে নীরবে তার নিশ্বাস শুনি। প্রতিটি নিশ্বাস দিনে ঘটে যাওয়া একটি করে গল্প, যার রচয়িতা প্রকৃতি, আর শ্রোতা নির্জন বৃক্ষ।

ঘন রাতে জানালার কোল ঘেঁষে, আমি যখন কবিতা যাপন করি, ১৮ নম্বর হাউজের প্রিয় হাসনাহেনা বৃক্ষ, তুমি কি শুনে ফেলো আমার ভেতরের অস্পষ্ট ভাষার অব্যক্ত গদ্যগুলো? তোমার নিচে দাঁড়িয়ে থাকে রাতের যে প্রহরী, তার নিকোটিন ধোঁয়ায় সুবাস গুঁজে দিয়ে, তুমিও কি শুষে নাও কিছু নেশা?

আচমকা রাতের নিস্তব্ধতা ভেঙে দিয়ে গলির মোড়ে একদল কুকুরের ব্যথাতুর ডাক, কী লিখতে চায় রাত্রির পিঠে?

তখন সুদূর কোনো গ্রামে পদ্ম দিঘিতে থেমে গেছে হাঁসের জলকেলি। পাড়ে দাঁড়িয়ে থাকা সারি সারি নারিকেল গাছ চিরল চিরল পাতায় লিখছে শান্ত জলে পূর্ণ-চাঁদের সাঁতার, ঈশানকোণে ধানক্ষেত ফালিফালি করছে মোহন বাঁশিসুর!

—————————-

নক্ষত্রতিলক

দোলপূর্ণিমা রাতে আকাশে তর্জনী তুলে দ্বিখণ্ডিত করি

১টি নক্ষত্র, তোমার ললাটে ফেলব ব’লে। ভূমণ্ডলের বহু দূর হতে বিস্ময় জাগানিয়া হে, তুমি হয়ে ওঠো সুন্দর, আর আমি হয়ে যাই তোমার ললাটতটের নক্ষত্রতিলক!

——————————-

স্ফুরিত

শরৎ-পূর্ণিমার আকাশ ক্যানভাস, মেঘের ভাঁজে-ভাঁজে কত দোল। শাদা-নীল মেঘ দুলে-দুলে মিলিয়ে যায় দৃষ্টি’র বহু দূর, অথবা মেঘই গোপন বার্তাবাহক, নৈঃশব্দ্যে প্রাপকের ঠিকানায় ছুটে যায় রাত ফুরোবার আগে

রাতের রং চোখে জমা হলে, নির্জনে ঈশ্বর খুঁজতে গিয়ে, সংজ্ঞাহীন এঁকে ফেলি স্ফুরিত তোমার মুখশ্রী। মেঘদূত বয়ে নিয়ে গেলে সেই আঁকা, অন্তরীক্ষে চোখ রেখে চিত্রীকে দেখতে পাও?

প্রবাহিত সময় জুড়ে খোলা আকাশের ভরা চাঁদের আলোয় পুড়ে যায় দূর পাহাড়ের বন, শ্যাওলা পড়া ঘাটে বাঁধা নৌকাটা কী বলে পাড় ঘেঁষা কাশফুলকে, কেউ জানে না…

————————

জোনাকি

গহিনে থাকা  নিশ্চুপ পাখিটি ছুটে যেতে চায়, ডানায় জড়িয়ে আজন্ম জমে থাকা শতসহস্র হলুদ চিঠি। বসন্তদিন থেকে সূর্যমুখীরং নিয়ে আত্মমগ্ন অক্ষরগুলো উড়ছে আলো জ্বেলে জ্বেলে। কাগজে সাজাতে পারি না কিছুতেই। ডানায় ভর করে এলোমেলো অক্ষরগুলো না লেখা বাক্য হয়ে চলে গেলে তোমার কাছে, তাদের, তুমি—’জোনাকি’ বলে কাছে ডেকো!

তৃণলতা কুরচি

কবিঃ তৃণলতা কুরচি

তৃণলতা কুরচির একগুচ্ছ কবিতা
41 Views

এস এম খ‌লিল বাবু

২৫ জুন, ২০২৩ , ১০:১৬ পূর্বাহ্ণ

এস এম খ‌লিল বাবুর একগুচ্ছ গীতিকবিতা

১. আধুনিক গান

গীতিকার: এস এম খলিল বাবু

জীবন থে‌কে খ‌সে পড়া

এক‌টি ভালবাসা

আপন আয়নায় মুখ দে‌খি

‌সেখা‌নেও সেই  দুরাশা ।।

‌যেখা‌নেই আ‌মি দুহাত‌ বাড়াই

সবখা‌নে দে‌খি শুন্যতাই

এক‌টি ক‌বিতা হ‌য়ে‌ছে লেখা

‌সেখা‌নেও নেই স্বপ্নআশা ।।

‌মি‌থ্যে বন্ধ‌নে জ‌ড়ি‌য়ে থে‌কে

অনাদ‌রে নি‌য়ে যায় কে ডে‌কে

কি পেলাম সবই আজ হিসাব ক‌রি

হৃদ‌য় মা‌ঝে দে‌খি শুধু নিরাশা ।।

২. আধুনিক গান

শুন‌ছি আ‌মি কো‌কিল শ্যামার

মন মাতা‌নো সুর

সাম‌নে দে‌খি এক‌টি গ্রাম

ছায়া‌তে ভরপুর।

‌সেই‌তো আমার বঙ্গবন্ধুর

বা‌ড়ি ফরিদপুর।

খুব দূ‌রে নয়, এই‌তো কা‌ছেই

টুঙ্গিপাড়ার মা‌টি

এই খা‌নের জ‌ন্মে‌ছে যে

বাঙা‌লি সে খাঁটি ।

এক‌টি স্বাধীন দেশ এ‌নে দেয় নেতা মু‌জিব‌ুর ।

জীবনটা জু‌ড়ে দেশ‌প্রেম তার

জমাট বাঁধা বু‌কে

‌নির্ভ‌য়ে‌তে মাথা রা‌খেন

কো‌টি মানুষ সু‌খে।

‌বিশ্ব‌নেতা শেখ মুজি‌বের মনটা সম‌ুদ্দুর ।

৩. আধুনিক গান

গীতিকার: এস এম খলিল বাবু

তু‌মি কোনটা পে‌য়ে খু‌শি হও

দুঃখ না‌কি সুখ

ফাগুন রাঙা দিন‌ট‌া নাকি

ব্যথা ভরা বুক।।

‌তোমার চো‌খে ভে‌সে বেড়ায়

ছন্দ ভরা তান

হৃদয় জু‌ড়ে ভ‌রি‌য়ে আ‌ছে

মাতাল সু‌রের গান।

প্রশ্ন জা‌গে কার কথা‌তে ভ‌রে

‌তোমার বুক।।

তু‌মি ক‌ঠিন না কি কোমল নে‌বে

সুখগু‌লো কি বি‌লি‌য়ে দে‌বে

‌কোন ছ‌বি‌টি আঁ‌কো তু‌মি

সকাল থে‌কে সাঁঝে

আ‌লো না‌কি আঁধার খো‌ঁজো

সাদা কা‌লোর মা‌ঝে।

ভাল মন্দ কোনটা পে‌লে

শিউ‌রে  ওঠে  বুক ।।

৪. আধুনিক গান

গীতিকার: এস এম খলিল বাবু

‌তোমা‌কে ভালবা‌সি ব‌লে

‌নি‌জে‌কে ভালবা‌সি না

‌তোমার হা‌সি দেখ‌বো বলে

‌নি‌জে এখন হা‌সি না ।।

‌তোমার ভালবাসার ফাঁদে

মন জ‌ড়ি‌য়ে এখন কাঁদে

আজকাল মন দি‌য়ে মন কেনা

যায় না।।

‌তোমার হা‌সির ছটায় ছটায়

মু‌ক্তো ঝ‌রে ফোঁটায় ফোঁটায়

ফুল ফাগুনও মুগ্ধ হ‌য়ে

তোমার ক‌রে বন্দনা ।

৪. আধুনিক গান

গীতিকার: এস এম খলিল বাবু

ডানা মেলা সুখগু‌লো তোমায় দিলাম

দুঃখ আমার হা‌তে

‌সিগ্ধ সকাল তোমার কা‌ছে

‌আঁধার আমার সা‌থে।।

‌তোমার আ‌ছে র‌ঙের নুপুর

আমার কা‌ছে তপ্ত দুপুর

‌তোমায় ডা‌কি শুদ্ধ ক‌রে

‌জোছনা ঝরা রা‌তে।।

‌তোমার আ‌ছে স্বপ্ন কথা

আমার মৌন নিঝুমতা

তু‌মি আমার অনুরা‌গের

জীবন ছায়া প‌থে।।

৫. আধুনিক গান

গীতিকার: এস এম খলিল বাবু

হৃদ‌য়ের জ‌মি‌নে পোড়া মা‌টি আজ

বৃ‌ষ্টি ঝ‌রেনি কতকাল

‌তোমার ভালবাসা তোমার কা‌ছেই

আমার আছে স্মৃ‌তির সকাল ।।

‌যে ব্যথা এত‌দিন বু‌কে নি‌য়ে ‌বেড়ালাম

‌কেউ তা দে‌খে‌নি নির‌বেই সইলাম

‌নিয়‌তির বিধান মে‌নে নি‌য়ে

থাক‌তে হ‌বে বু‌ঝি একা‌কি চিরকাল।।

এবু‌কের গভী‌রে যে নাম‌টি শুদ্ধ ক‌রে লেখা

ম‌নের ভেত‌রের মন‌টি‌কে যায়‌নি দেখা

এত অ‌ভিমান, লু‌কোচু‌রি মাথায় নি‌য়ে

বাঁচ‌তে হ‌বে আর কতকাল।।

৬. আধুনিক গান

গীতিকার: এস এম খলিল বাবু

তু‌মি ভালবাসার ছু‌টি নি‌য়ে চ‌লে গে‌লে

দূ‌রে গে‌লে আর এলে না

‌তোমার কি ছ‌ু‌টি শেষ হয় ন‌া 

তু‌মি বু‌ঝি মন বো‌ঝে না।।

‌দি‌নের শে‌ষে সন্ধ্যা না‌মে

আ‌সে না চি‌ঠি নীল খা‌মে

প্রদীপগু‌লো পু‌ড়ে পু‌ড়ে

জা‌নি‌য়ে দেয় তার বেদনা।।

‌তোমার প্রে‌মের একটু ছায়ায়

ঘু‌রে বেড়াই সেই  না  মায়ায়

কত রৌদ্র খরায় দাঁ‌ড়ি‌য়ে আ‌ছি

তু‌মি বৃ‌ষ্টি হ‌লে না।।

৭. আধুনিক গান

গীতিকার: এস এম খলিল বাবু

সারা দিন সারা রাত স্বপ্ন দে‌খি

এই  বু‌কে তার ছ‌বি  শুধুই আঁ‌কি

এই আ‌লে এই ছায়া বু‌কেই ঢাকি।।

হৃদ‌য়ের ক্যানভাস ভ‌রে‌ছে নী‌লে

সুখগু‌লো কু‌ড়ে কু‌ড়ে খে‌য়ে‌ছে গি‌লে

‌বিষা‌দে ভরা এই  জীব‌নে  অপূর্নতা র‌য়ে‌ছে বা‌কি।।

‌বেদনার কা‌লি দি‌য়ে লি‌খি ক‌বিতা

‌বো‌শে‌খের হাওয়া‌তে ও‌ড়ে স‌বই তা

স্মৃ‌তির পাতায় মুখ গুঁ‌জে

‌বিরহ নি‌য়ে ক‌রি মাখামা‌খি।

গীতিকারঃ এস এম খ‌লিল বাবু

এস এম খ‌লিল বাবুর একগুচ্ছ গীতিকবিতা
41 Views