মুগ্ধতা ব্লাড ব্যাংকে আপনার দেওয়া তথ্য বাঁচাতে পারে একটি জীবন। আপনার তথ্য দিন, প্রয়োজনে রক্ত খুঁজুন এখানে।

ফাতাহ্, পিএলও এবং ইয়াসির আরাফাত

মুগ্ধতা প্রতিবেদক

২৪ মে, ২০২১ , ৮:৫৩ অপরাহ্ণ

ফাতাহ্, পিএলও এবং ইয়াসির আরাফাত

একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের উদ্দেশ্যে মুনাজ্জামাত্ আল তাহ্রি ফিলিস্তিনিয়াহ্ [ইংরেজিতে প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশন (পিএলও), বাংলায় ফিলিস্তিনি মুক্তি সংস্থা] নামক সংগঠনটি ১৯৬৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। ১০০ এর বেশি দেশ এই সংগঠনকে ফিলিস্তিনিদের ন্যায়সংগত প্রতিনিধি হিসেবে বিবেচনা করে ও এর সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক বজায় রেখেছে। ১৯৭৪ সাল থেকে পিএলও জাতিসংঘের পর্যবেক্ষক সদস্যের মর্যাদা ভোগ করছে। ১৯৯১ সালে মাদ্রিদ সম্মেলনের আগ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল একে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে দেখত। ১৯৯৩ সালে প্রেসিডেন্ট ইয়াসির আরাফাতের নেতৃত্বাধীন পিএলও ইসরায়েলের অস্তিত্ব মেনে নেয় এবং জাতিসংঘের ২৪২ ও ৩৩৮ নং প্রস্তাব স্বীকার করে নেয় ও সহিংসতা প্রত্যাখ্যান করে। এর প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েল সরকারিভাবে পিএলওকে ফিলিস্তিনিদের প্রতিনিধি হিসেবে মেনে নেয়।

অন্যদিকে প্রেসিডেন্ট ইয়াসির আরাফাতের রাজনৈতিক সংগঠনের নাম ফাতাহ মুভমেন্ট। দলের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হিসাবে ইয়াসির আরাফাত ইসরায়েলী দখলদারির বিরুদ্ধে সারাজীবন সংগ্রাম করেন। কিংবদন্তীতুল্য আরাফাত জীবনের একটা দীর্ঘ সময় আরাফাত ধর্মনিরপেক্ষ ফাতাহ দলের নেতৃত্ব দেন। ১৯৫৮-১৯58 সালের মধ্যে তিনি এই দলটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। প্রাথমিকভাবে ইসরায়েলের অস্তিত্বের সম্পূর্ণ বিরোধী থাকলেও পরে আরাফাত জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সিদ্ধান্ত ২৪২ মেনে নিয়ে নিজের অবস্থান পরিবর্তন করেন।

১৯৬০ ও ৭০-এর দশকে আরাফাতের ফাতাহ দল জর্ডানের সাথে মতপার্থক্যজনিত কারণে গৃহযুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে, যার ফলে আরাফাত বিতর্কিত হয়ে পড়েন। জর্ডান থেকে বিতাড়িত হয়ে তিনি লেবাননে অবস্থান নেন, যেখানে তিনি ও তার ফাতাহ দল ইসরাইলের ১৯৭৮ ও ১৯৮২ সালের আগ্রাসন ও আক্রমণের শিকার হন। দল-মত-নির্বিশেষে ফিলিস্তিনী জনগোষ্ঠীর অধিকাংশ মানুষ আরাফাতকে বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং ফিলিস্তিনীদের স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রতীক হিসাবে সম্মান করে থাকে। তবে অনেক ইসরাইলী তাকে সন্ত্রাসবাদী হিসাবে অভিহিত করে থাকে।

জীবনের শেষভাগে আরাফাত ইসরাইলী সরকারের সাথে কয়েক দফায় শান্তি আলোচনা শুরু করেন। ১৯৯১ সালের মাদ্রিদ সম্মেলন, ১৯৯৩ সালের অসলো চুক্তি এবং ২০০০ সালের ক্যাম্প ডেভিড সম্মেলন এর মাধ্যমে আরাফাত ইসরাইলীদের সাথে কয়েক দশকের সংঘাতের অবসান ঘটানোর প্রয়াস নেন। ইসরাইলীদের সাথে এই সমঝোতা স্থাপনের জন্য আরাফাতের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ তার নতজানু নীতির তীব্র নিন্দা করে। ১৯৯৪ সালে আরাফাত অসলো শান্তি চুক্তির জন্য আইজাক রবিন ও শিমন পেরেজ এর সাথে একত্রে নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করেন। কিন্তু একই সময়ে হামাস ও অন্যান্য রাজনৈতিক ও সামরিক সংগঠনের উত্থান ঘটে, যারা ফাতাহ ও আরাফাতের ক্ষমতার ভিত্তি দুর্বল করে দিয়ে ফিলিস্তিনের বিভিন্ন এলাকায় রাজনৈতিক ক্ষমতা দখল করে নেয়।

[উইকিপিডিয়া অবলম্বনে রেদওয়ান শুভ ]