মুগ্ধতা ব্লাড ব্যাংকে আপনার দেওয়া তথ্য বাঁচাতে পারে একটি জীবন। আপনার তথ্য দিন, প্রয়োজনে রক্ত খুঁজুন এখানে।

এবং বিয়ে

আসহাদুজ্জামান মিলন

২০ মে, ২০২৩ , ১০:৩৭ পূর্বাহ্ণ ;

এবং বিয়ে

রাস্তা দিয়ে হাঁটার সময় কোনো দিকে তাকায় না সৌম্য। সে অবশ্য খুব ধীরে—ধীরে হাঁটে না। হাঁটার গতিবেগ অনেক থাকে। মাঝে—মাঝে দু’একজন ধাক্কাও খায়। ওহহ্ সরি। উত্তর শোনার অপেক্ষা করে না। ভাবখানা এমন যেন খুব তাড়া আছে তার। আসলে তার হাঁটার স্টাইলটাই এরকম। কেউ যদি তার সাথে হাঁটা শুরু করে সৌম্য খুব বিরক্ত হয়, বলে—এত ধীরে কেউ হাঁটে? 

সৌম্যর সাথে এ—জন্যেই কেউ হাঁটতে চায় না। এতে সৌম্য রাগ করে না, অভিমানও নেই তার। খুশি হয় মনে-মনে। এই এক দ্রুত হাঁটার কারণে হয়তো তার প্রেমিকা স্থায়ী হয় না। প্রত্যেক মেয়ে চায় তার ভালোবাসার মানুষের সাথে ধীর পায়ে হাঁটবে আর গল্প করবে। 

এ ব্যাপারে সৌম্য অপারগ। সে চেষ্টা করেও পারেনি। দ্রুত হাঁটতে—হাঁটতে কথা বলবে, এই ধরণের মেয়ে পাওয়া যাবে কি? হয়তো-বা সম্ভব না। সৌম্যর জীবনে প্রেম দৌঁড়ায় ওর হাঁটার গতির চেয়েও দ্রুত।

সেই সৌম্য আজ ধীর গতিতে হাঁটছে। একটা খবর তার হাঁটার গতি কমিয়ে দিয়েছে। আনমনে সে হাঁটছে আর ভাবছে। এত দ্রুতগতির পুরুষের সাথে কীভাবে তাল মিলিয়ে চলবে একটা মেয়ে! সকল প্রেমিকার মতো সেও চলে যাবে না তো! মা যেহেতু বিয়ে ঠিক করেছে, বিয়ে হবে সে ব্যাপারে তার সন্দেহ নেই! কিন্তু টিকবে কি না, সে ব্যাপারে যথেষ্ট সন্দেহ আছে তার। 

আচ্ছা, হাত ধরে কোন গোধূলি বেলায় পার্ক কিংবা নদীর ধারে ধীরে—ধীরে না হাঁটলে কি মেয়েরা সাথে থাকতে চায় না! কেমন যেন সব গুলিয়ে যায়। এ সময়ের মেয়েরা কেমন যেন, সামান্য কিছু অমিল হলেই সম্পর্ক ভাঙ্গে!

সৌম্য নিজ খেয়ালে হাঁটছে। কিন্তু সে দ্রুত গতিতে হাঁটছে না। স্বাভাবিক গতিও না। অতি ধীর গতি। বিয়ে কি পুরুষ মানুষের গতি কমিয়ে দেয়? অবশ্যই না। যদি তাই হতো তাহলে সব পুরুষ বিয়ে করতো না। অবিবাহিত পুরুষের সংখ্যা দিন—দিন বাড়তো। বিয়ে মানুষকে স্বাভাবিক জীবনে বিচরণ করতে সাহায্য করে। সকল পুরুষ কিংবা নারী সঠিক বয়সে বিয়ের পিঁড়িতে বসা উচিত। জন্মের পর মায়ের কোলে। এরপর হামাগুড়ি, এরপর হাঁটা। তারপর জীবন যুদ্ধে অংশ নেওয়া। 

সঠিক সময়ে যারা বিয়ে করে না বা করতে পারে না তারা পিছিয়ে পড়া দলে নাম লেখায়। ধীর গতিতে হাঁটলেও সৌম্য অল্প সময়ে পৌঁছে যায় তার আবাসস্থলে। বাসায় ঢুকতে বেশ কোলাহল মনে হলো। খালাতো চাচাতো ভাই বোনদের হৈচৈ শুনে বুঝতে বাকি রইলো না, তার বিয়ের সব আয়োজন বোধহয় আজই হবে। কোনোদিকে না তাকিয়ে নিজ ঘরে ঢুকে পরে সৌম্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *