মুগ্ধতা ব্লাড ব্যাংকে আপনার দেওয়া তথ্য বাঁচাতে পারে একটি জীবন। আপনার তথ্য দিন, প্রয়োজনে রক্ত খুঁজুন এখানে।

জীবনানন্দ দাশের বৃষ্টির কবিতা

জীবনানন্দ দাশ

১২ আগস্ট, ২০২৩ , ৮:৫৮ অপরাহ্ণ

কেমন বৃষ্টি ঝরে

কেমন বৃষ্টি ঝরে—মধুর বৃষ্টি ঝরে—ঘাসে যে বৃষ্টি ঝরে—রোদে যে বৃষ্টি ঝরে আজ
কেমন সবুজ পাতা—জামীর সবুজ আরও—ঘাস যে হাসির মতো—রোদ যে সোনার মতো ঘাসে
সোনার রেখার মতো—সোনার রিঙের মতো—রোদ যে মেঘের কোলে—তোমার গালের টোলে রোদ
তোমার চুলে যে রোদ—মেঘের মতন চুলে—তোমার চোখে যে রোদ—সেও যে মেঘের মতো চোখ
আকাশে সোনালি চিল পাখনা ছড়ায়ে কাঁদে—(এমন সোনালি চিল)—সোনালি রেণুর মতো ঝরিছে কান্না আহা, মিশরে শুনেছি যেন কবে
আকাশে এমন ছেঁড়া ময়লা মেঘের রাশ—পড়েছে তাদের ছায়া নীলের ঘোলা জলে নিঝুম পিরামিডে
এমনই সোনালি রোদ—সোনার থামের মতো—ঘিয়ের শিখার মতো রয়েছে আকাশ ছিঁড়ে তবু
কেঁদেছে সোনালি চিল এমনই আকাশ ঘুরে—শুনেছি মিশরে আমি হাজার হাজার যুগ আগে
তোমার চুলে যে রোদ—মেঘের মতন চুলে—তোমার চোখে যে রোদ—সেও যে মেঘের মতো চোখ
কেমন বৃষ্টি ঝরে—মধুর বৃষ্টি ঝরে—ঘাসে যে বৃষ্টি ঝরে—রোদে যে বৃষ্টি ঝরে আজ।

[জীবনানন্দ দাশ (১৭ ফেব্রুয়ারি, ১৮৯৯ – ২২ অক্টোবর, ১৯৫৪) ছিলেন বিংশ শতাব্দীর অন্যতম প্রধান আধুনিক বাঙালি কবি, লেখক ও প্রাবন্ধিক৷ তিনি বাংলা কাব্যে আধুনিকতার পথিকৃতদের মধ্যে অন্যতম৷ তার কবিতায় পরাবাস্তবের দেখা মিলে৷ জীবনানন্দের প্রথম কাব্যে নজরুল ইসলামের প্রভাব থাকলেও দ্বিতীয় কাব্য থেকেই তিনি হয়ে ওঠেন মৌলিক ও ভিন্ন পথের অনুসন্ধানী। মৃত্যুর পর থেকে শুরু করে বিংশ শতাব্দীর শেষ ভাগে তিনি জনপ্রিয়তা পেতে শুরু করেন এবং ১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দে যখন তার জন্মশতবার্ষিকী পালিত হচ্ছিল, ততদিনে তিনি বাংলা সাহিত্যের অন্যতম জনপ্রিয় কবিতে পরিণত হয়েছেন৷
গ্রামবাংলার ঐতিহ্যময় নিসর্গ ও রূপকথা-পুরাণের জগৎ জীবনানন্দের কাব্যে হয়ে উঠেছে চিত্ররূপময়, তাতে তিনি ‘রূপসী বাংলার কবি’ অভিধায় খ্যাত হয়েছেন৷]