এলে? হতাশার ভাষা প্রকৃতির মুখে
মাতাল ‘লু’ হাওয়ায় ধূলোয় ধূসরিত বুকে,
বিরান প্রান্তরে হা-হাকারের সৃষ্টি
কবে আসবে সবার প্রতীক্ষিত বৃষ্টি?
ধানক্ষেত সতেজ-সবুজ সেচকলের জলে
বৃষ্টির আশায় প্রতীক্ষিত—
বৃক্ষ-গুল্ম-লতা হা-হুতাশ করে।
বিনা বৃষ্টিতে চাতকের দলও ঝিমিয়ে গেছে
এমন রুক্ষতা ছিল না কখনো পৌষ-মাঘে।
শুধু একবার এসো হে বৃষ্টি প্রকৃতির কোলে
পরম ভালোবাসায় রাখবে সবে মনের অতলে,
গরীব কৃষকের জ্বালানি নেই, কি দিবে সেচকলে
ঢেঁকি কলে কৃষাণীর রোদ্রে গা গলে।
ব্যাগুলো সব শুকনো খালে দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে
পা বাঁধা নৌকাগুলোও, বড় খালের পাড়ে।
অবশেষে এলো সেই প্রতীক্ষিত বৃষ্টি
হিমেল হাওয়ায়, লতা—পাতায় উল্লাসের সৃষ্টি।
এলো এমন মতো-রবি ঠাকুরের সেই—
“বাদলের ধারা ঝরে ঝরঝর
আউশের ক্ষেত জলে ভরভর।”
তবু কারোর অসুবিধে নেই বৃষ্টির তরে
কিশোর—কৃষক সবার আজ আনন্দে বুক ভরে
কল—ছলে বৃষ্টির পানি গড়িয়ে গড়িয়ে চলে
বৃষ্টির তালে সবাই আজ আনন্দে হারাবার দলে।
বন্যায় ভাসো, কাদায় মাতো আর যাই কর তুমি
বজ্রপাত আর গুড়ুম স্মরে কাঁপিয়ে তোল না ভূমি।
নূপুর পায়ে ঝমঝমিয়ে শুধুই এগিয়ে চলো
মেঘলা আকাশ, অন্ধকার আর বৃষ্টিতে—
দিন—রাতের হিসেবে বাজিয়েছো এলোমেলো,
কারো মনে স্মৃতি জাগাও বেদনার বা মিষ্টি
তুমি চাতক পৃথিবীর এতোদিনের প্রতীক্ষিত বৃষ্টি