মুগ্ধতা ব্লাড ব্যাংকে আপনার দেওয়া তথ্য বাঁচাতে পারে একটি জীবন। আপনার তথ্য দিন, প্রয়োজনে রক্ত খুঁজুন এখানে।

বৃষ্টি এসে থেমেছিলো আমাদের স্টেশনে

বিজু সপ্তর্ষি

১ অক্টোবর, ২০২৩ , ১১:২৩ পূর্বাহ্ণ

ঘুম চোখের পাতা ছুঁয়ে আলতো আলিঙ্গনে এক ফোঁটা জল গড়িয়ে পরতেই নীলিমার ঘুুম ভাঙলো,
আরে অয়ন তুই কখন এসেছিস?

—এইতো কিছুক্ষন! তোর ঘুম দেখছিলাম।

ডাকিসনি কেন?

—খালা বললো তোর জ্বরটা আজ আরও বেড়েছে, তো চেয়ারে বসে এভাবে কেউ ঘুমায়?

বৃষ্টি দেখছিলাম।

—গতকাল থেকে কিছু খাসনি, চল আমরা আজ বাইরে খাবো।

আলমারি খুলে নীল শাড়িটা ছু্ঁতেই ইসরাখের দেয়া সেই নীল চুরিগুলোর কথা মনে পরে গেলো নীলিমার।
অয়ন ফ্লোরে পা ছড়িয়ে বসে আছে। টি টেবিলে জমানো এ্যালবাম, হাসিমাখা মুখে কি অদ্ভুদ দেখায় নীলিমাকে, ভাবতেই সে রুপালি নখ পালিশে একজোড়া পা দেখে উঠে দাঁড়ালো, কি অদ্ভুদ লাগছে নীলিমাকে।
নীল শাড়ি চুরি আর টিপে যেন সেজেছে প্রকৃতি।

বাইরে টিপ বৃষ্টি, কিছুদূর হাঁটতেই হলি ফ্যামিলি হাসপাতাল, ইস্কাটনের পথে পরে থাকা ঝড়া পাতা, ডাস্টবিনের ময়লা, ধুলো জড়ানো ফুটপাথ সব কিছুই বলছে শূন্যতার কথা, ইসরাখের হারিয়ে যাওয়ার গল্প। হলি ফ্যামিলির ক্যান্টিনে কফিতে চুমুক দিতে দিতে অয়ন বলল, নীলিমা!

—হুম বলে অয়নের দিকে তাকাতেই কয়েক ফোঁটা জল গাল বেয়ে টেবিলে পরার আগেই অয়নের হাত স্পর্শ করলো।

এভাবেই আগলে রাখতে চাই তোকে নীলিমা।তুই কি আমার চার দেয়ালের সঙ্গি হবি? তুই চাইলে পুরো আকাশটাকে আমাদের ছাদ বানাবো। মনের মত রাঙিয়ে নিস। অয়নের হাত কাঁপছে।

কফির শেষ চুমুকটা দেয়ার আগেই, খোঁপার বাঁধন খুলে দিয়ে বললো, চল আজ পুরো শহর রিকশায় ঘুরবো।

কমলাপুরের কাছে এসেই নীলিমা রিকসা থেকে নেমে প্লাটফর্মের দিকে হাঁটছে, অয়ন পিছনে।

৩ নম্বর প্লাটফর্ম থেকে সন্ধ্যার ট্রেন ছাড়বে, নীলিমার বুকে পাড় ভাঙগার শব্দ।

এই প্লাটফর্মে শেষ দেখা হয়েছিলো ইসরাখের সাথে, নতুন বর সে, হাতে লাগানো হলুদ ছোঁয়া মেহেদি রং।

পিছনের দিকে হাত বাড়িয়ে নীলিমা শক্ত করে অয়নের হাত চেপে ধরে বলতে লাগলো, একবার ডাউন ট্রেনের মত বৃষ্টি এসে থেমেছিলো আমাদের স্টেশনে।