মুগ্ধতা ব্লাড ব্যাংকে আপনার দেওয়া তথ্য বাঁচাতে পারে একটি জীবন। আপনার তথ্য দিন, প্রয়োজনে রক্ত খুঁজুন এখানে।

মায়ের ভালোবাসা আমার কাছে অত্যাচারের মতো মনে হয়।

সোহেল হাসান গালিব

২০ মে, ২০২৩ , ১০:৫১ পূর্বাহ্ণ ;

মায়ের ভালোবাসা আমার কাছে অত্যাচারের মতো মনে হয়।

যেমন খুব ছোটবেলায় আম্মা আমাকে স্কুলে যেতে দিতেন না এই ভয়ে যে, আমি গাড়ি-চাপা পড়তে পারি। এজন্য ক্লাস টু-তে পড়ার আগে অলমোস্ট আমার স্কুলে যাওয়া হয় নাই। অক্ষরজ্ঞানের ক্ষেত্রে আমি তাই স্বগৃহে স্বশিক্ষিত। 

বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় আম্মা চাইতেন না আমি হলে থাকি। সে কারণে সেকেন্ড ইয়ার পর্যন্ত বাড়িতেই থেকেছি। তিনি অসম্ভব বিরক্ত ছিলেন আমার ‘বাংলা’ পড়া নিয়ে। বাংলা আবার পড়ার কী আছে! তার আরও রাগ আমার কবিতা লেখার কসরত দেখে। উনার দৃঢ় বিশ্বাস, এগুলা কবিতা হয় না। বরং আমার বন্ধু মাদলের কবিতা কিছুটা হয়।

আম্মার ধারণা, তার সন্তানদের মধ্যে আমার বুদ্ধি বেশি। কিন্তু সবই ‘আকাইম্মা’ বুদ্ধি। সম্প্রতি তিনি আবিষ্কার করেছেন, ধর্ম বিষয়ে আমি অনেক জানি, কিন্তু খুবই কম মানি। এদিকে আমিও টের পেয়েছি, তার গোপন দুর্বলতা ও আস্থা বড় ছেলের উপর। বড় ছেলে ডাক্তার, হাজি, নামাজি, ভদ্র ও বিনয়ী। এ নিয়ে আমার দুঃখের শেষ নাই। তবে আশ্চর্যের বিষয় এই যে, বড় ছেলের সঙ্গে তিনি বেশিদিন থাকতে পারেন না। তার নাকি দম বন্ধ হয়ে আসে।

আম্মার যে জিনিশটা আমার সবচেয়ে মজা লাগে, সেটা হলো, উনি কোনোদিন আমাকে বা আমার ভাইবোনদের মারতে পারেন নাই। খুব ছোটবেলা থেকেই দেখেছি, প্রচণ্ড ক্ষেপে গিয়ে আমাকে মারার জন্য হাত তুলেছেন ঠিকই, কিন্তু সেই হাত কাঁপতে কাঁপতে গুটিয়ে গেছে নিষ্ফল আক্রোশে। ছেলের গায়ে আঘাত করবেন তিনি! এ যে রীতিমতো পাপ। ভাবখানা এমন।

এজন্য মায়ের শাসন আমার কাছে একটা কৌতুককর ব্যাপার। আজ এই মা দিবসে তার প্রতি আমার সকৌতুক ভালোবাসা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *