কবিতা Archives - মুগ্ধতা.কম

কবিতা Archives - মুগ্ধতা.কম

মুগ্ধতা.কম

২১ এপ্রিল, ২০২৩ , ১১:২৪ অপরাহ্ণ

সমুদ্র

আমার মায়ের সমুদ্র দেখা হয়নি কখনও
অথচ আমাদের ঘরে ঝোলে একটা শান্ত সমুদ্রতটের ছবি।

ছবিটি মাকে উপহার দিয়েছিল তার ভাই।
সেই সমুদ্রতটে আছে কয়েকটা নারিকেল গাছ, সাদা বালিয়াড়ি আর দুজন সুখী মানুষ। 
যারা বসে আছে পেছন ফিরে সূর্যের দিকে তাকিয়ে। সূর্যটা অস্ত যাচ্ছে।
গত ত্রিশ বছর ছবিটা আমাদের সাথে থাকার কারণেই কি না জানি না ছবিটাকে আর ছবি মনে হয় না। মনে হয় আমাদের ঘরেরই একটা অংশ, চায়ের কাপ কিংবা বাবার জায়নামাজ। ছবিতে অভ্যস্ত হয়ে যাওয়াতে সমুদ্র নিয়ে আমাদের কারোরই কোনও বাড়তি উচ্ছ্বাস নাই। সমুদ্র মানে বাড়ির সবাই আমরা বুঝি, সূর্য ডুবে যাচ্ছে আর দুজন সুখী মানব মানবী বসে আছে পেছন ফিরে। যেহেতু মুখ দেখা যায় না তাই আমি, আমার বোন, হয়তো আমার মাও নিজেকে কল্পনা করে ছবির মানুষ হিসেবে।
একদিন বুকে সাহস জোগাড় করে জিজ্ঞেস করেছিলাম, মা তোমার সমুদ্র দেখতে মন চায় না?
মা স্মিত হেসে বলেছিল, সমুদ্র দেখার কী আছে, ও তো মরুভূমির মতো, শুধু বালির বদলে আছে জল। সংসারের মরুভূমিতে থেকে আমার আর সমুদ্র দেখার শখ হয় না বাবা।

কবিতা
37 Views

মুগ্ধতা.কম

২১ এপ্রিল, ২০২৩ , ১১:২৪ অপরাহ্ণ

ফেরত টিকেট 

নিখিল আমি কি বেঁচে আছি না কি!        

এই যে বসুদা’র লেটার প্রেসে চাকুরি, ভোর রাতে ঘরে ফেরা          
প্রিন্টারের কালিতে ভেজা মধ্যবিত্ত আত্মা,
এটাকে কি ঠিক বেঁচে থাকা বলে!     
জীবন থেকে ছুটি নিয়েও ক্রমাগত জীবনের ঘানি টেনে চলা,   
বুকের গভীরে লেগে থাকা পৌরাণিক স্পর্শের অনুভূতিগুলো-   
সিনেমার আলো আঁধারীতে বাদামের খোসা ছাড়ানোর মতো       
নিজেকে মেলে ধরা নিজের সুপ্ত বাসনার কাছে,    
কখনো মুচির সুতোয় প্রাণ খুঁজে পাওয়া 
চামড়ার পুরনো স্যান্ডেল পায়ে, দিনের ব্যস্ততার শেষে       
অজস্র দেনা আর খেরোখাতার নিরেট হিসেব মেলানো,
কর্মে-অবসরের প্রতিটি মুহুর্তে জীবনের ঋণ শুধে চলা-  
এটাকে ঠিক কী রকম জীবনের সংজ্ঞায় ফেলবি তুই!
ভবঘুরে জীবনটা তো হতে পারতো অন্যরকম,
অন্য ধরনের একটা কিছু,  
কিন্তু সেটা যে ঠিক কী রকম তা বুঝে উঠতে পারিনি আজও,         
যেমন বুঝিনি বা বুঝতে পারিনি ইতির চাওয়াগুলো-    
আমি কখনো হয়তো বোঝাতে চেয়েছি অন্য একটা কিছু,   
অথচ ঠোঁটের প্রান্ত ছুঁয়ে মোমের মতো যে শব্দগুলো ঝরে পড়েছে  
তা হয়তো বলেছে অন্য স্বপ্নের কথা, যা আমার ছিল না, কখনও ছিল না।    

বুকের যবন ভাষাগুলো তাড়িয়ে ফেরে অনুক্ষণ টুংটাং চুড়ির শব্দে- 
না বলা কথাগুলো আড়ালেই থেকে যায়  
জীবনের আর সব অপূর্ণ চাহিদার মতো।  
নিখিল, বন্ধু আমার,  
তুইই বরং বেশ আছিস, যে আকাশেই থাকিস না কেন,
তারাদের মাঝে তারা হয়ে আছিস আমার নিয়তি দেখবি বলে।    
তোর তো সকাল সন্ধ্যের অফিস নেই,দায়-দায়িত্ব নেই,কর্তব্য নেই,
বসের পাকানো চোখ কিংবা অজস্র ফাইলের নিচে 
ক্রমাগত পিষ্ট হতে থাকা সুক্ষ অনুভূতিগুলোও নেই,    
নেই অফিস শেষে রংচটা বাসে বাদুড়ঝোলা হয়ে  
ঘরে ফেরার অদম্য বাসনা আর কাঁটায় বিদ্ধ ভালোবাসা, 
নিয়ম রক্ষার সঙ্গম, কিংবা জীর্ণ বন্ধনটুকুর জন্য-     
নেই কর্তব্য কাঁধে বিপন্ন বায়সের মতো ভরদুপুরের ছোটাছুটি, 
হ্যাঙ্গারে স্বপ্ন ঝুলিয়ে রাখা আরেকটি সম্ভাবনার প্রত্যাশায়।  
এসব কিছুই নেই, সবচেয়ে বড় কি জানিস! 
তোর মাঝে প্রতিটি মুহুর্তে বেঁচে থাকবার তাড়না নেই,  
ঠোঁটের কোণে তাই বিদ্রুপ ঝুলিয়ে হয়তো আছিস বেশ 
মৃতের নগরীতে অজস্র মৃতদের মতো। আসলে-  
ফেরত টিকেট হাতে আমার এমন একটা মৃত্যুর নিশ্চয়তা চাই-    
যে মৃত্যুর পরে একবার হলেও ফিরে আসা যায় 
ফেলে যাওয়া শরীরের মাঝে, প্রিয় রমণীর মাঝে,     
নিজের ঝাঁঝালো ঘ্রাণের মাঝে ফিরে ফিরে আসা যায় 
ঠিকানা খুঁজে পাওয়া ঘুড়ির মতোন, ভালোবাসার লাটাইয়ের কাছে।     
নিখিল, তুই পারিস কি পাঠাতে একটা ফেরত টিকেট 
জীবনের ওপার থেকে জীবনটাকে দেখব বলে!  

কবিতা
27 Views

মুগ্ধতা.কম

২১ এপ্রিল, ২০২৩ , ১১:১৪ অপরাহ্ণ

বাস্তুহারা স্মৃতিদের চিহ্ন

অতি বিস্তারের তুলাদণ্ডে স্মৃতির চিহ্ন মুছে, মানুষেরাই বাস্তুহারা স্মৃতিরে ডাকায়ে বলি- “ওগোওও যাবার কালে  শুনে যাও! ‘আমি নই, আমরা নই, আমরা নই ;

এর জন্য ঐ, বেহুদা মুনাফাই দায়ীই…!’

আমরা মানুষেরা কেউ কেউ মাতৃ মায়ার চিহ্নে,পিতৃ মায়ার চিহ্নে,

শরিকানার জ্যামিতিক চিত্র এঁকে হঠাৎ-ই বিশিষ্ট হই! 

দীর্ঘ সিদ্ধির শতরঁচে টেক্কা দানের চাতুরীপনায় সামন্ত নৃপতিরা হাত-পা, আবেগ খুলে মাথারে যতনে রাখি । হাঁটবার আনন্দ হারায়ে তাহারেই ডেকে বলি-ওগোওও, শুনে যাও, আমি নই, আমরা নই; আমরা নই; আমরা নই; এর জন্য ঐ  বেদ্দপ পুঁজিতন্ত্রই দায়ীইই…!

তারপরও বাস্তুহারা স্মৃতির চিহ্ন নিশ্চিহ্ন করে;  অভিযোজ্য মমতার ততোধিক সম্পূট খুলে; গনগনে চিতায় পুড়ায়া ক্যান কেউ বিলাপ করে কও! ক্যান কেউ  বিনুনি পেঁচায়ে কাঁন্দে ! 

ক্যান বলে ফের,’মনে রাইখ্যো এই আমারে’…!

কবিতা
24 Views

মুগ্ধতা.কম

২১ এপ্রিল, ২০২৩ , ১১:১৪ অপরাহ্ণ

অবেলার বাজী

কি আর হবে হিসাব কষে, ভিরেছি এসে অবেলায়।

সময় কত চইলা গেছে, দিনে দিনে হেলায় হেলায়।

রঙ্গিন যত স্বপ্ন সবি, সাদা কালোয় মুড়িয়ে।

স্বপ্নের সাথে বাজি খেলা, চলে কি আর খুড়িয়ে!

আমার এখন সন্ধা বেলা, আল্লার নামে যায় চলে।

কেউ কি আর সাথ দিবে, রঙ্গিন আলোয় হেসে খেলে।

আমি এখন ফেলনা খেলনা , আমায় পাশে রাখাই দায়।

দুরে দুরে রাখাই ভাল, সম্মান নিয়ে বাঁচা যায়।

বুঝবে না কেউ কোনদিনও, আকুল মনের কি আশা

ব্যর্থ চেষ্টায় ব্যস্ত সবে, মিটবে না মোর পিপাসা।

দুরে ঠেলার মিছিল চলে, চলে মিছিল আজ গোপনে।

খুব বেশি হই খুশি, সুখ দেখিলেও স্বপনে।

ঘুনে ধরা জীবন নিয়ে, যায় কি বলো আর চলা।

পাহাড় সমান ব্যাথা আমার, সকলি কী যায় বলা।

ভেবে দেখ কি আর হবে, সবইতো ভাই নিয়তি।

আমার তোমার সবার বেলায়, হয় যে এমন পরিনতি।

আর কত দিন! আর কত কাল!, স্বজতনে রব পড়িয়া।

জীবন থেকে বাঁচার উপায়, উপায় শুধুই মরিয়া।

এখন শুধুই আশায় থাকি, ডাকবে কবে দয়াল সাঁই।

ফল কবে আসবে আমার? এ দুনিয়ার পরীক্ষায়।

কবিতা
Comments Off
22 Views

মুগ্ধতা.কম

২ মে, ২০২২ , ৫:৩৬ অপরাহ্ণ

মাটির অতল থেকে

আমি থাকবো না এই যাযাবর শহরে

যাব চিত্তহারিণী গাঁয়ে এই বৈশাখে

বৃক্ষশাখে পাখি ডাকা ভোরে

আনন্দের উত্থিল সুখে পান্তারপাতে

হাসি দেখবো দুরন্ত বালকের।

 

শৈশবের ধান কুড়ানির –

কুঁড়েঘরের চেনা অতিথি হবো

মোহন নদীর হাঁটুজলের জলকেলিতে

জলের কাছে চেয়ে নেবো হৃদয়ের অছেঁড়া সুখ।

 

আকাশের বর্গা টপকে যাবো না নীলিমার নীলের ভেতর

তারাদের জলশালয়ে গাইবো না চন্দ্রের গীত

রহস্যের গভীরে লুকাবো না দেহ

অগ্নিস্নান শেষে এই বৈশাখে রুদ্র ছোবলের প্রতিবাদী হবো।

 

চিত্তহারিণী গাঁয়ের –

আবাদি মাটির অতল থেকে তুলে আনবো

এক আঁটি জ্বলজ্বলে ফসল।

এই বৈশাখে আমি থাকবো না

এই যাযাবর শহরে  …

ঈদ সংখ্যা - ২০২২
392 Views

মজনুর রহমান

২ মে, ২০২২ , ৫:২৯ অপরাহ্ণ

মজনুর রহমানের পাঁচটি কবিতা 

ঝড়

বাতাসবনে কাঁপছে কেমন নুয়ে পড়া আলো

বহুদূরের কান্নার স্বর, কে তারে চমকালো?

কে মেখেছে অন্ধকারে পুরান দিনের জ্বর

অনেকগুলো ব্যথার পাশে অনেকগুলো ঝড়।

 

একটা ঝড়ে বৃক্ষ ভাঙে আরেকটাতে পাতা

মোমের আলোয় কারা যেন লুকিয়ে রাখে মাথা,

মাথা লুকায় ব্যথা লুকায় মোম কাঁপে তিরতির

একটা ভাঙা আয়না দেখে করছে সবাই ভিড়।

 

আয়না ভাঙার শব্দ এমন কারো মালুম হয় না

ঝড় আসে তাই কোনো বাতাস ঘরের ভেতর রয় না।

জীবন-১১

যেদিক থেকে বইছে বাতাস

চক্ষু তুলে দেখে

ঘরঘরিয়ে ঘুরছে চাকা

বুকের ভেতর থেকে।

 

চাকার ভেতর রঙের ছিটা

ছিটকে পড়ে মুখে

মেশিন চলে চাকা ঘোরে

সামান্য এক বুকে।

 

কোথাও আশা টিকটিকিয়ে

কোথাও ঘড়ি বাজে

আয়না ভেঙে লাগবে জোড়া

জীবন দেখার কাজে।

 

বইছে বাতাস ঘুরছে চাকা

বাজছে তিরস্কার

বেঁচে আছেন এতটুকুই

মস্ত পুরস্কার।

মেঘ

ঘরের ভেতর দুঃখ অনেক

ঘরের ভেতর কান্না

চুলার ওপর চলছে এখন

মেঘের মাংস রান্না।

 

মেঘ করেছে উঠানজুড়ে

হরেক পদের দুঃখে

মাংসগুলো পাতে নিয়ে

ঐ যে ঢাকে মুখ কে?

 

মুখের খাবার মানুষগুলো

ছড়িয়ে দেয় বাইরে

পথে ঘাটেও দুঃখ অনেক

খাবার মানুষ নাইরে।

 

মেঘ করেছে, এমন মেঘের

বসতবাড়ি কইরে

আমিষ খাবার ইচ্ছে হলে

আমিই তো মেঘ হইরে!

ভয়

রাত বাড়ে আর বাড়ে আমার

বুড়ো হবার ভয়

চক্ষু আমার আটকে রাখে

হাজার রকম ক্ষয়।

 

একটা ক্ষয়ে তারা ফোটে

অন্যটাতে জ্বর

আকাশজুড়ে ফুটছে এখন

মুহুর্মুহু ঝড়।

 

ঝড়ের পরে ঝড়ের আগে

নয়ন ভেজায় কে

ওই যে দেখো আকাশ থেকে

খবর এসেছে।

ঈদ সংখ্যা - ২০২২
350 Views

মুগ্ধতা.কম

২ মে, ২০২২ , ৫:২৪ অপরাহ্ণ

ঈদ এলো 

খুশির বার্তা নিয়ে বছর ঘুরে ঈদ এসেছে,

শাওয়াল মাসের নতুন চাঁদ তাই হেসেছে,

 

একমাস সিয়াম সাধনার শেষ,

পবিত্রতার শুভ্র চাদরে মিশে,

ঈদ এলো রে,

আনন্দে চারদিক ভরে গেলো যে,

নতুন জামা নতুন জুতায় ছোটদের নানা বায়না,

বুজতে শেখার বয়সে সেই মজাটা আর হয় না,

 

চাঁদ রাতে মেহেদী রাঙা হাতে মেয়েরা প্রতীক্ষায় রয়,

নানান রকম মিষ্টান্ন খাবার বাসায় রান্না হয়,

নামাজ শেষে ছোটরা ব্যস্ত সালামি তোলায়,

 

তাদের আনন্দ কোলাহল যেন সব কষ্ট ভোলায়,

গরীব দুখীরাও ফিতরা যাকাত পায়,

একটু স্বস্তিতে তাদের ইদও কেটে যায়,

ঈদ সবার সুন্দর হোক সকল দ্বিধা কেটে যাক,

সকলের ইচ্ছে আকাঙ্খা গুলো পূর্ণতা পাক,

নতুন রঙে সুন্দর করে জীবন সাজাই,

সকলকে থেকে ঈদ মোবারক জানাই।

ঈদ সংখ্যা - ২০২২
209 Views