ঈদ ২০২৩ Archives - মুগ্ধতা.কম

ঈদ ২০২৩ Archives - মুগ্ধতা.কম

মুগ্ধতা.কম

২১ এপ্রিল, ২০২৩ , ১১:৪০ অপরাহ্ণ

ইমাম

দশ বারো জন হিংস্র ও হাস্যোজ্জল যুবক ঘিরে আছে এক ইমামকে। ইমাম সাহেব আসরের নামাজে যাওয়ার অনুমতি চাইলেন। যুবকদের বড়ো ভাই বিরক্ত। জিজ্ঞাসা করলেন, পলাইয়া যাবেন না তো?

বিব্রত ও অপমানিত ইমাম সাহেব দৃঢ় কন্ঠে বললেন, না। নামাজ শেষে আসছি। এক প্রকার বন্দিদশা থেকে মুক্তি পেয়ে ইমাম সাহেব মিনিট দশেক হাঁটা দূরত্বের মসজিদের দিকে চললেন। আসরের নামাজ শেষে পুলিশকে ফোনে জানালেন তার বিপদের কথা। ইমাম সাহেব যুবকদের কাছে আসতে আসতে বাইকে দুজন পুলিশ চলে এল। পুলিশ দেখে যুবকেরা মৃদু হাসল। পুলিশ অফিসার ইমাম সাহেবকে বললেন, বিয়া করায় দেন।

ইমাম সাহেব বললেন, আপনারাও এই কথা বলেন! মেয়েটার সম্মান কোথায়? ধর্ষকের সাথে বিয়েতে বসতে রাজি নয় মেয়েটা। জোর করে বিয়ে দিতে বাধ্য করা হচ্ছে ইমামকে। পুলিশও ইমামকে সাহায্য করছে না। এলাকার আলেম সমাজের নীরব সম্মতি আছে যুবকদের প্রতি। কিন্তু আপত্তি শুধু এই ইমাম সাহেবের। পুলিশ চলে গেল। যুবকরা এটা জানত। পুলিশ তাদের দখলে। নানা রকম যুক্তি-তর্ক হচ্ছে কিন্তু ইমাম সাহেব বেয়াদব। কাউকেই পাত্তা দিচ্ছেন না। ধীরে ধীরে লোকজন বেশি হতে লাগল। শিশু, নারী, কিশোর, বৃদ্ধ, স্থানীয় আলেম-ওলামাগণ এলেন। স্থানীয় একজন আলেম সাহেব বললেন, বিয়াশাদি আল্লার ইচ্ছায় হয়। আপনি বাধা দেবার কে?

এলাকাবাসী রাজী আছে, তাদের ইজ্জতের দাম আছে না? একটা মেয়ের জন্য সারাজীবন কেন আমাদের বদনাম বয়ে বেড়াতে হবে?

তবুও ইমাম সাহেব অনড়। বললেন, একজন অপরাধীর সাথে বিয়ে হতে পারে না। তার থাকা উচিত ফাঁসির কাষ্টে। যুবকেরা ক্ষেপে গেল এই কথায়। তারা মারমুখী হয়ে বলল, এই এলাকায় না হলে অন্য এলাকা থেকে হুজুর আনতে হবে। যত টাকা লাগুক। এলাকায় একজন হুজুর হইলে এই সমস্যা। ভাব বেশি।

যুবকদের কথা শুনে ইমাম সাহেব ঘাবড়ে গেলেন। যুবকদের বড়ো ভাই বলল, হুজুর আপনি আমাদের ইমাম। আমরা আপনারে সম্মান করি। আপনি আমাদের সম্মান রক্ষা

করবেন এটাই তো নিয়ম। দশগ্রামে আপনার মতো কেউ নাই। আপনি যদি আমাদের বিপদে এগিয়ে না আসেন কে আসবে?

ইমাম বললেন, আরে ভাই অপরাধীকে শাস্তি না দিয়ে তার পক্ষে যাচ্ছেন কেন? ‘পোলাপান মানুষ আকাম না হয় একটা করছে। মুরুব্বিরা যদি ক্ষমা না করে তাইলে কি হইল?’

‘আপনারা শুধু অপরাধীর কথা ভাবছেন, ভুক্তভোগী মেয়েটার কথা তো ভাবছেন না।’

সেই বড়ো ভাই আরও রেগে গেল। তুই তোকারি করে কথা বলতে লাগল ইমামকে। সে ঘোষণা দিলো, যে করেই হোক এই মেয়ের সাথে আজ রাতেই বিয়ে হবে ধর্ষকের।

আর ধুমধাম করেই হবে বিয়েটা। সে তার সাঙ্গপাঙ্গদের বাসর সাজাতে নির্দেশ দিলো।

এলাকাবাসী বিয়ের দাওয়াত পাবে এতেই তারা খুশি। ন্যায়-অন্যায় তাদের কাছে কোনো বিষয়ই নয়। তারা বিয়ে নিয়ে উল্লসিত।

ইমাম সাহেব উঠে চলে যেতে চাইলেন। যুবকদের বিস্ময় বাড়ল। ইমাম সাহেব বললেন, কাজটা ঠিক হচ্ছে না। এটা অন্যায়।

যুবকেরা এবং এলাকার ময়মুরুব্বিরা কোনো কথা বলল না।

হঠাৎ যুবকদের বড়ো ভাইয়ের মনে হলো, ইমাম যদি আবার নতুন কোনো প্যাঁচ লাগায়? তাই ইমামকে ডেকে হুমকি দিলো, আমরা অন্য হুজুর আনতেছি। আপনার দরকার নাই। এই বিষয়টা নিয়া আর কোনো কথা বলবেন না। কোনো বাড়াবাড়ি করবেন না।

ইমাম সাহেব শুধু বললেন, এই কাজে টাকা ছাড়াও বহু হুজুর, ইমাম পাবেন। অনেক মুফতি, মওলানাও আপনাদের সাথে থাকবে। কিন্তু একটা কথা বলি। এটাই শেষ কথা-এটা কিন্তু অন্যায়।

কথাটা শেষ করা মাত্র ইমাম সাহেবকে একটা চড় মেরে বসল বড়ো ভাই। এরপর শুরু হলো এলপাথাড়ি মার। এলাকাবাসী দর্শকের ভূমিকায়। কিছুক্ষণ আগেও যারা তার পেছনে নামাজ পড়েছে তারাও নীরব। কিছু করছে না কিছু বলছেও না।

ঠিক সেই মুহূর্তে ঝড়োগতিতে ঘর থেকে বিধ্বস্ত একটা মেয়ে বেরিয়ে আসে। তার হাতে একটা দোধারি তলোয়ার। তলোয়ার দিয়ে সে আক্রমণকারী যুবকদের এলপাথারি কোপাতে লাগল। তার ক্ষিপ্র আঘাতে দিশেহারা যুবকেরা দিগি¦দিক পালিয়ে গেল।

রণবিজয়ী মেয়েটি দেখতে পেল, রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে পড়ে আছেন ইমাম সাহেব-যার পেছনে কোনোদিন সে নামাজ পড়ার সুযোগ পায়নি।

জাকির সোহান

সিংগীমারী

হাতীবান্ধা,

লালমনিরহাট।

মোবাইল-০১৭৬৩০৮৮৬১১

ইমাম
41 Views

মুগ্ধতা.কম

২১ এপ্রিল, ২০২৩ , ১১:৩৮ অপরাহ্ণ

ঈদ শপিং 

সজীবের ফোনটা বেজেই চলেছে। একটানা ৭২ বার। সজীব ফোন রিসিভ করছে না। ইনকামিং কল একজনের। তার নাম চৈতী। 

চৈতীর ধৈর্য আছে বলা যায়। একটানা কেউ কল দেয়! অবশ্য সজীবের সহ্য ক্ষমতাও কম না। সে মোবাইল সাইলেন্ট করেনি। চুপচাপ রিংটোন শুনেছে। সজীবের মোবাইলের রিং টোনে চৈতীর কন্ঠ। চমৎকার কন্ঠ। মাঝে মাঝে আশ্চর্য হয় সজীব। এতো সুন্দর কন্ঠ হয় কারো! কি মায়াবী কন্ঠ। তার কন্ঠ শুনলে যে কোন ছেলে পাগল হবে। সজীবও পাগল।

পুরুষ মানুষগুলো হয়তো এমনই। এটা সবাই বলে। কিন্তু আজকাল নারীগুলোও এমন। একঘেয়েমি কাটাতে ভিন্নতা খুঁজে। ভিন্নতা পেলে সময় দিয়ে এগিয়ে যেতে চায়। অবশ্য এতে ভালোবাসার মানুষের প্রতি ভালোবাসা কমে না, বরং বাড়ে। কী হাস্যকর কথা।

আজ সজীব ও চৈতীর ঈদ শপিং করার কথা। সজীবের হাতে টাকা নেই। টাকা পাওয়ার কথা ছিল কিন্তু সে পায়নি। অনেক চেষ্টা করে ফেল করেছে। চৈতীকে সুন্দরভাবে বুঝিয়ে বললেও সে বুঝবে না। চৈতী বোঝে না। কিংবা বুঝতে চায় না। এই অবুঝ ভাবটাও সজীবের ভালো লাগে।

ভালোবাসার অত্যাচার। আসলে এটা অত্যাচার। সেহেরি খাওয়ার পর থেকেই সজীবের ফোন বাজছে। দুই দিন হলো সজীব রুমে একাই আছে। তার রুমমেট ঈদ করতে বাড়িতে চলে গেছে। সজীব যায়নি। তিনটা টিউশনি করায় সজীব। দুইটার টিউশন ফি এখনও দেয়নি। একটি ঈদের পূর্বে দেবে না, জানিয়ে দিয়েছে। গতকাল একটির টাকা দেওয়ার কথা ছিল কিন্তু দেয়নি। আগামীকাল হয়তো দেবে।

দুপুর হবার অপেক্ষা। দুপুর ঠিক ২.০০ টায় সজীব টিউশনি করায়। রমজান মাসে এই সময় বেছে নিয়েছে। অপেক্ষার সময় দীর্ঘ হলেও একসময় শেষ হয়। ২.০০ টা বাজার পূর্বেই সাহেদ হাজির হয় টিউশন বাড়িতে। লাল বোতামে চাপ দেয়। তার স্বভাব অনুযায়ী একবারের বেশি কলিং বেল বাজায় না। কিন্তু অপেক্ষা তার ভালো লাগছে না। পর পর দু বার কলিং বাজিয়ে অপেক্ষা করে। ১০ মিনিট। আবার কলিং বেলে টিপ দেয় সে। দরজা খোলে না। সজীব অবাক হয়। 

কিছুক্ষণ পর পাশের ফ্লাটের দরজা খুলে এক মহিলা বের হয়। সজীবকে দেখে একটি চিঠি ধরিয়ে দেয় আর বলে মমরা গ্রামের বাড়ি চলে গেছে। সে খাম পেয়ে খুশি মনে হাত বাড়িয়ে নেয়। ভাবে- যাক গ্রামের বাড়ি গেলেও টাকাটা দিয়ে গেছে।

মহিলা দরজা বন্ধ করতেই সজীব রাস্তার দিকে পা বাড়ায়। খামটা হাতে নিয়ে সে বুঝতে পারে খামের ভিতরে টাকা নেই। কোনো চিঠি থাকতে পারে। সজীব খাম খোলে না। ভাঁজ করে পকেটে রেখে দেয়। চৈতীর সাথে আর দেখা করবে না। পিচ ঢালা রাস্তায় হাঁটতে থাকে। মাঝে মাঝে আকাশের তাকায়। বিশাল আকাশের নিচে নিজেকে একমাত্র অসহায় পুরুষ মনে করে। এই শহরে ঈদের পূর্বে চেনা মুখগুলো কয়েকদিনের জন্যে হারিয়ে যায়। আবার কিছু অচেনা মুখ যোগ হয়। সজীবের দৃষ্টিতে সবই অচেনা মুখ। আকাশের বিশালতা তাকে স্পর্শ করে না। কুয়োর অন্ধকার তাকে টানে। চেনা হাসির শব্দে রিকশার দিকে তাকায় সজীব।

চৈতীর হাসি। সেই হাসি। অসম্ভব চমৎকার কন্ঠের সুর মেশানো হাসি। বাতাসের  বেগের চেয়েও তীব্রতার সাথে ছুটে চলছে রিকশা। চৈতীর পাশে অন্য কেউ। কয়েক সেকেন্ডের জন্য চৈতী আর সজীবের চোখে চোখ আটকে যায়। বাতাসের সাথে মিলিয়ে যায় সব।

ঈদ শপিং 
64 Views

মুগ্ধতা.কম

২১ এপ্রিল, ২০২৩ , ১১:২৯ অপরাহ্ণ

রমজান-পরবর্তী জীবনযাত্রা যেমন হওয়া উচিত

পবিত্র মাহে রমজান আমাদের মাঝ থেকে বিদায় নিয়ে চলে যাচ্ছে। বাতাসে বিদায়ের সুর। একদিকে বিদায় বার্তা অন্যদিকে খুশির বারতা নিয়ে আসছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। একমাস সিয়াম সাধনা করে আমরা উপহার স্বরুপ পেয়েছি এই ঈদ। গত একমাসে আমরা আমাদের জীবনযাপনের রুটিনে এনেছিলাম ব্যপক পরিবর্তন। শেষরাতে ঘুম থেকে উঠে সাহরি খাওয়া,নামাজ পড়া, সারাদিন পানাহার থেকে বিরত থাকা এবং ইফতারি করা। এসময় আমাদের ঘুমের এবং শরীরে পানির পরিমান কমে গিয়েছিল সর্বোপরি আমাদের বিপাক প্রক্রিয়ায় ব্যপক পরিবর্তন সাধিত হয়েছিল। শরীরের নাম মহাশয়, যাহা সহাবেন তাহাই সয় বলেই শরীর দ্রুত অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছিল রোজার সময়ের জীবনযাপনে। ঈদের মাধ্যমে আমরা আবার ফিরে যাবে আগের রুটিনে। একথা আমাদের সবার জানা যে দিনে একবার খাওয়া শরীরের জন্য ক্ষতিকর তাই আমাদের উচিত হবে একবারে অনেক খাবার না খেয়ে অল্প অল্প করে ঘনঘন খাওয়া। ক্যালরি হিসেবে সকালেই বেশি পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করতে হবে।  সকালের নাস্তায় রাখতে পারেন আমিষসমৃদ্ধ ডিম, ডাল সাথে ফলমূল। রাতে খাদ্যতালিকায় থাকবে লো ক্যালরিসমৃদ্ধ খাবার। শরীরকে কর্মক্ষম রাখার জন্য নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে। সেটা হতে পারে ৩৫/৪০ মিনিট হাঁটা অথবা ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ। ব্যায়াম শরীর থেকে ক্ষতিকর পদার্থ যেমন বের করে দেয় তেমনি অতিরিক্ত ক্যালরি পুড়িয়ে শরীরকে রাখে চনমনে। যে কোনো সময়ে ব্যায়ামই পারে হার্ট ও লাংসকে কর্মক্ষম রাখতে।

রমজান মাসের ঘুমের ঘাটতি পূরণ করার জন্য আপনাকে একটা নির্দিষ্ট সময়ে বিছানায় যেতে হবে এসময় নেয়া যাবে না সাথে কোন ইলেকট্রনিক ডিভাইস। সুস্থ শরীরের জন্য নিয়মিত ৬ থেকে ৭ ঘন্টা ঘুমানো দরকার।
রমজানে আমরা অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছিলাম বাড়ির তৈরি খাবারে তাই হুট করে বাইরের হোটেলের খাবার খেলে পেটের বিভিন্ন অসুখে আক্রান্ত হতে পারি। এড়িয়ে চলতে হবে এসব।

ঈদের দিন জিহ্বাকে সংযতকরে খাদ্য গ্রহণ করতে হবে। অতিরিক্ত তেল চর্বি যুক্ত পোলাও, কোর্মা, গোস্ত পেট খারাপের কারণ হতে পারে। তাই একবেলা পোলাও খেলেও অন্যবেলা সাদাভাত খাবার চেষ্টা করবেন। যারা ডায়াবেটিস ও হার্টের রোগী তারা নিয়মের বাইরে না গিয়ে সঠিক সময়ে সঠিক ওষুধ গ্রহণ করতে ভুলবেন না।

জীবন-যাপন
55 Views

মুগ্ধতা.কম

২১ এপ্রিল, ২০২৩ , ১১:২৯ অপরাহ্ণ

রোজার মেজাজ

রোজায় বিকেল হলেই শাহানা বেগমের মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়। ইফতার বানানোর তড়িঘড়ি পরে যায়। যে তালে কাজ করেন সে তালে চিৎকার চেচামেচি করেন। তাঁর গালাগালিতে ছেলেটা নামাজের অজুহাতে বের হয়ে যায়। মেয়েরা কাজের সহযোগিতা করতে গেলে বকাবকির শেষ থাকে না। কে কবে কী দোষ করেছে সব বলতে শুরু করে দেন। নানা পদের ইফতার বানিয়ে যখন আজান দিবে তখনও কাজ শেষ করতে পারেন না। সবাই ইফতার করে নামাজে যায় তখন শাহানা বেগম পানি মুখে দিয়ে নামাজ পড়ে ইফতার খান। তখন শাহানা বেগমের আর কোনো রাগ থাকে না, খুব স্বাভাবিক সহজ সরল। এ বিষয়টা সবাই জানে বলে চুপাচাপ থাকে।

এখন ছেলেমেয়েরা যে যার মতো বাইরে থাকে, তাদেরও ঘর সংসার হয়েছে। স্বামী গত হয়েছেন অনেক আগেই।

ঘরে শাহানা বেগম একাই। রোজা আসে যায় শাহানা বেগমের চিৎকার চেচামেচিও নেই ইফতার বানানোর শারীরিক শক্তিও নেই।

পুরো বাসায় একা একদম একা।

অনুগল্প
25 Views

মুগ্ধতা.কম

২১ এপ্রিল, ২০২৩ , ১১:২৪ অপরাহ্ণ

সমুদ্র

আমার মায়ের সমুদ্র দেখা হয়নি কখনও
অথচ আমাদের ঘরে ঝোলে একটা শান্ত সমুদ্রতটের ছবি।

ছবিটি মাকে উপহার দিয়েছিল তার ভাই।
সেই সমুদ্রতটে আছে কয়েকটা নারিকেল গাছ, সাদা বালিয়াড়ি আর দুজন সুখী মানুষ। 
যারা বসে আছে পেছন ফিরে সূর্যের দিকে তাকিয়ে। সূর্যটা অস্ত যাচ্ছে।
গত ত্রিশ বছর ছবিটা আমাদের সাথে থাকার কারণেই কি না জানি না ছবিটাকে আর ছবি মনে হয় না। মনে হয় আমাদের ঘরেরই একটা অংশ, চায়ের কাপ কিংবা বাবার জায়নামাজ। ছবিতে অভ্যস্ত হয়ে যাওয়াতে সমুদ্র নিয়ে আমাদের কারোরই কোনও বাড়তি উচ্ছ্বাস নাই। সমুদ্র মানে বাড়ির সবাই আমরা বুঝি, সূর্য ডুবে যাচ্ছে আর দুজন সুখী মানব মানবী বসে আছে পেছন ফিরে। যেহেতু মুখ দেখা যায় না তাই আমি, আমার বোন, হয়তো আমার মাও নিজেকে কল্পনা করে ছবির মানুষ হিসেবে।
একদিন বুকে সাহস জোগাড় করে জিজ্ঞেস করেছিলাম, মা তোমার সমুদ্র দেখতে মন চায় না?
মা স্মিত হেসে বলেছিল, সমুদ্র দেখার কী আছে, ও তো মরুভূমির মতো, শুধু বালির বদলে আছে জল। সংসারের মরুভূমিতে থেকে আমার আর সমুদ্র দেখার শখ হয় না বাবা।

কবিতা
37 Views

মুগ্ধতা.কম

২১ এপ্রিল, ২০২৩ , ১১:২৪ অপরাহ্ণ

ফেরত টিকেট 

নিখিল আমি কি বেঁচে আছি না কি!        

এই যে বসুদা’র লেটার প্রেসে চাকুরি, ভোর রাতে ঘরে ফেরা          
প্রিন্টারের কালিতে ভেজা মধ্যবিত্ত আত্মা,
এটাকে কি ঠিক বেঁচে থাকা বলে!     
জীবন থেকে ছুটি নিয়েও ক্রমাগত জীবনের ঘানি টেনে চলা,   
বুকের গভীরে লেগে থাকা পৌরাণিক স্পর্শের অনুভূতিগুলো-   
সিনেমার আলো আঁধারীতে বাদামের খোসা ছাড়ানোর মতো       
নিজেকে মেলে ধরা নিজের সুপ্ত বাসনার কাছে,    
কখনো মুচির সুতোয় প্রাণ খুঁজে পাওয়া 
চামড়ার পুরনো স্যান্ডেল পায়ে, দিনের ব্যস্ততার শেষে       
অজস্র দেনা আর খেরোখাতার নিরেট হিসেব মেলানো,
কর্মে-অবসরের প্রতিটি মুহুর্তে জীবনের ঋণ শুধে চলা-  
এটাকে ঠিক কী রকম জীবনের সংজ্ঞায় ফেলবি তুই!
ভবঘুরে জীবনটা তো হতে পারতো অন্যরকম,
অন্য ধরনের একটা কিছু,  
কিন্তু সেটা যে ঠিক কী রকম তা বুঝে উঠতে পারিনি আজও,         
যেমন বুঝিনি বা বুঝতে পারিনি ইতির চাওয়াগুলো-    
আমি কখনো হয়তো বোঝাতে চেয়েছি অন্য একটা কিছু,   
অথচ ঠোঁটের প্রান্ত ছুঁয়ে মোমের মতো যে শব্দগুলো ঝরে পড়েছে  
তা হয়তো বলেছে অন্য স্বপ্নের কথা, যা আমার ছিল না, কখনও ছিল না।    

বুকের যবন ভাষাগুলো তাড়িয়ে ফেরে অনুক্ষণ টুংটাং চুড়ির শব্দে- 
না বলা কথাগুলো আড়ালেই থেকে যায়  
জীবনের আর সব অপূর্ণ চাহিদার মতো।  
নিখিল, বন্ধু আমার,  
তুইই বরং বেশ আছিস, যে আকাশেই থাকিস না কেন,
তারাদের মাঝে তারা হয়ে আছিস আমার নিয়তি দেখবি বলে।    
তোর তো সকাল সন্ধ্যের অফিস নেই,দায়-দায়িত্ব নেই,কর্তব্য নেই,
বসের পাকানো চোখ কিংবা অজস্র ফাইলের নিচে 
ক্রমাগত পিষ্ট হতে থাকা সুক্ষ অনুভূতিগুলোও নেই,    
নেই অফিস শেষে রংচটা বাসে বাদুড়ঝোলা হয়ে  
ঘরে ফেরার অদম্য বাসনা আর কাঁটায় বিদ্ধ ভালোবাসা, 
নিয়ম রক্ষার সঙ্গম, কিংবা জীর্ণ বন্ধনটুকুর জন্য-     
নেই কর্তব্য কাঁধে বিপন্ন বায়সের মতো ভরদুপুরের ছোটাছুটি, 
হ্যাঙ্গারে স্বপ্ন ঝুলিয়ে রাখা আরেকটি সম্ভাবনার প্রত্যাশায়।  
এসব কিছুই নেই, সবচেয়ে বড় কি জানিস! 
তোর মাঝে প্রতিটি মুহুর্তে বেঁচে থাকবার তাড়না নেই,  
ঠোঁটের কোণে তাই বিদ্রুপ ঝুলিয়ে হয়তো আছিস বেশ 
মৃতের নগরীতে অজস্র মৃতদের মতো। আসলে-  
ফেরত টিকেট হাতে আমার এমন একটা মৃত্যুর নিশ্চয়তা চাই-    
যে মৃত্যুর পরে একবার হলেও ফিরে আসা যায় 
ফেলে যাওয়া শরীরের মাঝে, প্রিয় রমণীর মাঝে,     
নিজের ঝাঁঝালো ঘ্রাণের মাঝে ফিরে ফিরে আসা যায় 
ঠিকানা খুঁজে পাওয়া ঘুড়ির মতোন, ভালোবাসার লাটাইয়ের কাছে।     
নিখিল, তুই পারিস কি পাঠাতে একটা ফেরত টিকেট 
জীবনের ওপার থেকে জীবনটাকে দেখব বলে!  

কবিতা
27 Views

মুগ্ধতা.কম

২১ এপ্রিল, ২০২৩ , ১১:১৪ অপরাহ্ণ

বাস্তুহারা স্মৃতিদের চিহ্ন

অতি বিস্তারের তুলাদণ্ডে স্মৃতির চিহ্ন মুছে, মানুষেরাই বাস্তুহারা স্মৃতিরে ডাকায়ে বলি- “ওগোওও যাবার কালে  শুনে যাও! ‘আমি নই, আমরা নই, আমরা নই ;

এর জন্য ঐ, বেহুদা মুনাফাই দায়ীই…!’

আমরা মানুষেরা কেউ কেউ মাতৃ মায়ার চিহ্নে,পিতৃ মায়ার চিহ্নে,

শরিকানার জ্যামিতিক চিত্র এঁকে হঠাৎ-ই বিশিষ্ট হই! 

দীর্ঘ সিদ্ধির শতরঁচে টেক্কা দানের চাতুরীপনায় সামন্ত নৃপতিরা হাত-পা, আবেগ খুলে মাথারে যতনে রাখি । হাঁটবার আনন্দ হারায়ে তাহারেই ডেকে বলি-ওগোওও, শুনে যাও, আমি নই, আমরা নই; আমরা নই; আমরা নই; এর জন্য ঐ  বেদ্দপ পুঁজিতন্ত্রই দায়ীইই…!

তারপরও বাস্তুহারা স্মৃতির চিহ্ন নিশ্চিহ্ন করে;  অভিযোজ্য মমতার ততোধিক সম্পূট খুলে; গনগনে চিতায় পুড়ায়া ক্যান কেউ বিলাপ করে কও! ক্যান কেউ  বিনুনি পেঁচায়ে কাঁন্দে ! 

ক্যান বলে ফের,’মনে রাইখ্যো এই আমারে’…!

কবিতা
24 Views

মুগ্ধতা.কম

২১ এপ্রিল, ২০২৩ , ১১:১৪ অপরাহ্ণ

অবেলার বাজী

কি আর হবে হিসাব কষে, ভিরেছি এসে অবেলায়।

সময় কত চইলা গেছে, দিনে দিনে হেলায় হেলায়।

রঙ্গিন যত স্বপ্ন সবি, সাদা কালোয় মুড়িয়ে।

স্বপ্নের সাথে বাজি খেলা, চলে কি আর খুড়িয়ে!

আমার এখন সন্ধা বেলা, আল্লার নামে যায় চলে।

কেউ কি আর সাথ দিবে, রঙ্গিন আলোয় হেসে খেলে।

আমি এখন ফেলনা খেলনা , আমায় পাশে রাখাই দায়।

দুরে দুরে রাখাই ভাল, সম্মান নিয়ে বাঁচা যায়।

বুঝবে না কেউ কোনদিনও, আকুল মনের কি আশা

ব্যর্থ চেষ্টায় ব্যস্ত সবে, মিটবে না মোর পিপাসা।

দুরে ঠেলার মিছিল চলে, চলে মিছিল আজ গোপনে।

খুব বেশি হই খুশি, সুখ দেখিলেও স্বপনে।

ঘুনে ধরা জীবন নিয়ে, যায় কি বলো আর চলা।

পাহাড় সমান ব্যাথা আমার, সকলি কী যায় বলা।

ভেবে দেখ কি আর হবে, সবইতো ভাই নিয়তি।

আমার তোমার সবার বেলায়, হয় যে এমন পরিনতি।

আর কত দিন! আর কত কাল!, স্বজতনে রব পড়িয়া।

জীবন থেকে বাঁচার উপায়, উপায় শুধুই মরিয়া।

এখন শুধুই আশায় থাকি, ডাকবে কবে দয়াল সাঁই।

ফল কবে আসবে আমার? এ দুনিয়ার পরীক্ষায়।

কবিতা
Comments Off
22 Views

জাকির আহমদ

২১ এপ্রিল, ২০২৩ , ১০:৫৭ অপরাহ্ণ

জাকির আহমদ এর ছড়াগুলো 

হামার অমপুর

অমপুর হামার অঙ্গে ভরা
অঙ্গীন হামার মন
অঙ্গীন দ্যাশোৎ হামার আছে
সাত আজার ধন।

বেগম ওকেয়ার জন্ম হইল
হামার অমপুরোত
এশশাদ মামুর জন্মও কিন্তু
হামার বাড়ির গোড়োত।

প্রধানমন্ত্রী শ্যাখ হাসিনা
তায়ো হামার নোক
বিজ্ঞানী ওয়াজেদ মিয়ার
জন্যে হামার শোক।

(২)

দেশটাতো ভাই আমার দেশ
আমার মাতৃভূমি
এদেশেতেই থাকবো আমি
বাঁচবো যতদিনই।

এদেশ আমার এদেশ তোমার
এদেশ তাদের নয়
তাদের সাথে লড়তে হবে
আসবে মোদের জয়।

জঙ্গী বা তার সঙ্গীরা হোক
থাকুক যতই শক্তি
তাল পাবে না উড়ে যাবে
দিলে একটা চুটকি।

(৩)

সত্য হলে শক্তি থাকে
মিথ্যে হলে ভয়
সত্যকেই ধারণ কর
মিথ্যেকে নয়।

মিথ্যে দিয়ে সাময়িক
ভালো থাকা যায়
সত্যের জয় হবেই হবে
জেনো নিশ্চয়।

(৪)

একটি ছড়ার মন ভালো নেই
একটি ছড়ার ভালো
একটি ছড়া আলোয় ভরা
একটি ছড়া কালো।

একটি ছড়ার কষ্ট অনেক
একটি ছড়া দুঃখের
একটি ছড়ায় দুঃখ যে নাই
সেই ছড়াটি সুখের।

(৫)

শিশুরাতো ফুলের মতো
ছোট্ট সুন্দর ফুল
ফুলগুলোকে ভুল শিখিয়ে
আমরাই করি ভুল।

শিশুরাতো পাখির মতো
ছোট্ট সুন্দর পাখি
সেই পাখিদের আঁখি দিয়ে
দেখাই মোরা ফাঁকি।

শিশুরাতো পবিত্র হয়
নিষ্পাপ হয় মন
সেই শিশুদের ভালো কিছু
শেখাই প্রতিজন।

22 Views

মুগ্ধতা.কম

২১ এপ্রিল, ২০২৩ , ১০:৫৬ অপরাহ্ণ

রেজাউল করিম জীবন এর ছড়াগুলো

ছড়া কবি

চলছে প্রেম ছড়ার সাথে
সকাল দুপুর রাতে
লিখতে ছড়া খাতা কলম
রাখছি নিজের হাতে।

লিখবো ছড়া দেশকে নিয়ে
নিজেকে দিবো সঁপে
ব্শ্বি জানুক ছড়ার দেশ
ছন্দ মালার জপে।

ছড়ায় ছড়ায় তুলবো ফুটে
আমার দেশের ছবি

শস্য শ্যামল সোনার বাংলা
বলবে আমায় কবি।

(২)
বন্ধু

বন্ধু আমার বাবা-মা
বন্ধু ভাই-বোন
বন্ধু আমার প্রতিবেশী
বন্ধু আপনজোন।

বন্ধু আমার খেলার সাথী
বন্ধু সহ-পাঠি
বন্ধু আমার বিপদ দেখে
বাড়ায় হাতের লাঠি।

বন্ধু আমার সুখে দুখে
জীবন পাশে থাকা
বন্ধু মানে জীবন দিয়ে
আগলে কাছে রাখা।

বন্ধু হবে এমন বন্ধু 
বন্ধু চিরপাশে
বন্ধু যেন না হয় কভু
কষ্ট দেখে হাসে।

(৩)
জাওয়াদ বাবুর স্বপ্ন

জাওয়াদ বাবু স্বপ্ন দেখে
দেশটা কেমন হবে
মানুষ মাঝে হিংসা নয়
শান্তি শুধু রবে।

দেশটা হবে স্বপ্নপুরী
সৎ মানুষের চাষ
সত্য কথার ফুলঝুরিতে
মিথ্যে হবে নাশ

সড়কপথে ঝরবে নাতো
অকালে কারো প্রাণ
মাদকছেড়ে ছেলেরা সব
ছড়াবে ফুলের ঘ্রাণ।

ঘুষ রবে না অফিস পাড়ায়
চিটিং ফিটিং বন্ধ
রাজনীতিতে সুদিন রবে
বন্ধ হবে দ্বন্দ্ব।

নিজের কাজে ব্যস্ত রবে
অন্যকে নিয়ে নয়
নিজের ভালো দেশের ভালো
এমন ভাবনাতে রয়।

জাওয়াদ বাবুর স্বপ্ন শুনে
মা বাবা হন খুশি
ভালো থেকে কাজ করো
এমন স্বপ্নই পুষি।

22 Views