25-03-23 Archives - মুগ্ধতা.কম

25-03-23 Archives - মুগ্ধতা.কম

মুগ্ধতা.কম

২৫ মার্চ, ২০২৩ , ২:৩৬ অপরাহ্ণ

পরিবৃত

তুলির আঁচড়ে ক্যানভাসের বুকে কি এঁকে চলেছো চিত্রকর! নিদ্রামগ্ন কবির বিক্ষত হৃদয়, বিখন্ড নৈশ প্রহরে

মাকড়শা খামারে যে শুধু আবাদ করে খন্ড প্রেমের তন্দ্রা আর হিসেব কষে বিপন্ন কবিতার খাতায়। নিঃসঙ্গ

জ্যোৎস্নায় সময় জল ভেঙে সর্বাঙ্গে মাখে যৌবন কাঁদা আর হৃদয় সুড়ঙ্গে অনাবাদী প্রেম নিয়ে অপেক্ষারত

সঙ্গম প্রার্থনায়। চিত্রকর ক্যানভাসটি ফ্রেমহীন! মেঘরাঙা হস্তে ফুটালে কি খন্ডিত ব্যথার সম্মিলিত স্বাক্ষর,

নাকি সেই নিঃসঙ্গ পথ যা্ হাঁটছে কেবলি সূর্যাস্ত বরাবর! অবশেষে শোনো ঐ জড় ক্যানভাসটির রঙসকলই

কেবল পারে ঢেকে দিতে গোধূলির ক্ষয়ে যাওয়া যৌবন আর শূন্য দেয়ালের অসারতা।

পরিবৃত
32 Views

রবীন জাকারিয়া

২৫ মার্চ, ২০২৩ , ২:৩৫ অপরাহ্ণ

শুধু তোমারই নাম

সেই কবে কিংবা কোন কৌতুহলে 

এক ডায়েরি লিখেছিলাম আমি

মনে পড়েনা একদম৷

ডায়েরির প্রতিটি পাতায়

শৈশব-কৈশোর-যৌবনের স্মৃতিচারণ,

ইনা-মিনা-টিনা আরো কত

প্রেয়সীর নাম৷

প্রতিটি প্রেমে কত শর্তের কসম৷

এটা থাকলে ওকে আর 

সেটা থাকলে তাকে পাওয়া যায়!

এখন প্রেমে চলছে বানিজ্যিকিকরণ, 

লেনা-দেনার পারস্পরিক চুক্তি যেন!

হাতে হাত, অধরে অধর 

কিংবা শরীরে শরীর রাখার মূল্যগুলোও

মেটানো যায় “গিফট’ নামক এক অদ্ভুত মূল্যে!

যেমন করে ঘুষের নাম হয়েছে ‘মিষ্টির টাকা’!

পতিতাপল্লি ভেঙ্গে বাড়িয়েছি ভাসমান পতিতা

আর লম্পটের লঙ্গরখানা৷

সহজে এখন প্রেমিক হওয়া যায় 

কিন্ত জীবনসঙ্গী নয়৷

কোনো শর্তই পূরণ করতে পারিনি জীবনে

তাই পাওয়া হয়নি ইনা-মিনা-টিনাদের৷

তোমাকে যেদিন বিয়ে করলাম

পরিবারের চাপে৷

মনে হতো মেরে ফেলি কোনো এক রাতে৷

কত অযত্ন আর অবহেলা করেছি তোমায়৷

কিচ্ছুটি না বলে 

শুধু সয়ে গেছো নিরালায়৷

আজ এই মধ্যরাতে 

আমার হাতে সেই ডায়েরিখানা৷

নস্ট্রালজিক না হয়ে বরং ক্ষিপ্ত হাতে

ছিঁড়ে ফেলি ডায়েরির কত শত পাতা৷

আগুনে পুড়িয়ে ফেলি ছেঁড়া কাগজের সাথে

ইনা-মিনা-টিনাদের নাম চিরতরে৷

‘নিউ লুক’ প্রাপ্ত ডায়েরির 

অবশিষ্ট একটি পাতায় লিখে রাখলাম 

শুধু তোমারই নাম৷

শুধু তোমারই নাম
Comments Off
67 Views

এস এম আনোয়ার আজাদ

২৫ মার্চ, ২০২৩ , ২:২৬ অপরাহ্ণ

মুক্তি নেব

আমি পাগল হবো, মাতাল হবো, একদিন স্বাধীন হবো—ই হবো।

পারবেনা কেহ আপন হতে, চাইবে না আর কাছে পেতে

আমি পাখি হবো, উড়াল দেব ঐ আকাশ ফুড়ে

জরাজীর্ণ এ পৃথিবীকে দেখবনা আর আপন করে।

গাইব আমি স্বার্থের গান, আমি বাউল হবো।

থাকবেনা কো পিছুটান, সন্ন্যাসী জিবন বেছে নেব।

হবোই আমি! ঘর ছাড়া এক পথিক হবো।

যাযাবরের জীবন মত হাসি মুখে মেনে নেব।

আমার আমিকে খুন করে, জীবন থেকে পলাতক হবো।

আমি খুনি হবো। আমার জন্য আমি ভীতি হবো।

শৃঙ্খলার বেড়ি ছিড়ে আমি উচ্ছৃঙ্খল হবো।

আমি মন খুলে হাসব।

হাসতে হাসতে মাটিতে গড়াগড়ি দেব।

দৃষ্টির সীমানায় চলে যাব। প্রাণ ভরে নিঃশ্বাস নেব।

পিছুটান, মান-অভিমান সব ঝেড়ে ফেলে,

আমি বন্য হবো, আমি অনন্য হবো।

নিত্য নিয়ম থেকে মুক্তি নেব, আমি এক অন্য আমি হবো।

মুক্তি নেব
38 Views

মুগ্ধতা.কম

২৫ মার্চ, ২০২৩ , ২:২১ অপরাহ্ণ

এস এম খলিল বাবুর তিনটি ছড়া

‌১.

তোমার ঘ‌রে আ‌লোর নাচন

এখন চে‌য়ে দে‌খি

‌চোখ মে‌লি‌য়ে ফ্যাল‌ফে‌লি‌য়ে

শুধুই চে‌য়ে থা‌কি!

আমারও‌তো ই‌চ্ছে ক‌রে 

‌তোমার কা‌ছে বস‌তে

আমারও‌তো ই‌চ্ছে ক‌রে

একটু খা‌নি হাস‌তে।

আমার ম‌নের স্বপ্নগু‌লো

‌কে ক‌রে‌ছে পণ্ড

প্রশ্ন জা‌গে ভালবাসায়

আজ কে বে‌শি ভণ্ড।

(২)

ভালোবাসি তাকে

কত কথা মনে পড়ে 

মনে পড়ে যাকে

ভালোবাসি ভালোবাসি

ভালোবাসি তাকে ॥ 

তাকে ছাড়া বাঁচি না 

তার হাসি  দেখি না 

তাকে নিয়ে হৃদয়টা করে হইচই

আজ তাকে হারানোর ব্যথাগুলো সই ॥

আজ থাকি দু’জনে দুই দি‌কে মুখ

আমি নেই ব্যথাগুলো সে খোঁজে সুখ।

(৩)

ভাষার লড়াই চলে

বায়ান্নতে ভাষার লড়াই

একাত্তরে যুদ্ধ

স্বাধীনতা পেলাম বলে

পাকবাহিনী ক্ষুব্ধ।

লড়াই চলে প্র‌তি‌দি‌নেই

লড়াই চলে মুক্তির

লড়াই চলে বানান নি‌য়ে

লড়াই চলে যুক্তির॥

এস এম খলিল বাবুর তিনটি ছড়া
28 Views

মুগ্ধতা.কম

২৫ মার্চ, ২০২৩ , ১:০৪ অপরাহ্ণ

বনলতার বিয়ে

বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে নিয়মিত চাকরি প্রার্থীদের দীর্ঘ লাইন। বনলতার গা শিউড়ে ওঠে এই লাইন দেখে। এক বছর আগেও সে এই লাইনে নিয়মিত দাঁড়াত। অন্য কোথাও এত ইন্টারভিউ দেয়নি। ব্যাংকেই সবচে বেশি দিয়েছে। তার ধারণা এখানেই সবচেয়ে নিরাপদ চাকরি পাওয়া যায়। সেটা সত্যিও হয়েছে। সে একটা সরকারি ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার আজ।

অনেক লড়াই করতে হয়েছে তার। সফলতার খবর গ্রামের চারদিকে এখনও উড়ছে। বয়সও অনেক হলো। এখন বিয়ে দরকার। বনলতার পাত্র মেলা কঠিন হয়ে পড়েছে। জাতে নমশুদ্র হওয়ায় যোগ্য পাত্র মিলছে না। বনলতার বেশ তাড়াও আছে বিয়ের। সে গভীরভাবে দীর্ঘশ^াস নিতে পারে- চাকরিটার জন্য। তার বিশ^াস বিয়ে থা হবে এক সময়। সুখে দিন কাটাবে। কিন্তু পাত্রের তীব্র আকালে তার অনেক কলিগ বলে, দেশে পাত্র না পেলে ভারতে যান, ওখানকার ছেলেকে বিয়ে করুন। সরকার অনুমতি দেবে নিশ্চয়।

বনলতার কেমন যেন লাগে। দেশের ছেলে ছাড়া মন কোথাও সায় দেয় না। নিজ জাতে তার সমমর্যাদার ছেলে নাই-এটা সে ভালোভাবেই বুঝতে পারছে। এই কারণে যাকে তাকে বিয়েও করতে পারছে না। মহাবিপদে সে। মেয়ে কলিগরা টিপ্পনি কাটতে কাটতে তাদেরই বিরক্ত লেগে গেছে। ছেলে কলিগরা মজা নেয় শুধু। একবার তো বনলতা বিরক্ত হয়ে এক মেয়েকে বলেই ফেলেছে, আপনিও তো যাকে তাকে বিয়ে করতে চাচ্ছেন না। আমাকে কেন জোর করেন?

মেয়ে কলিগটা প্রতি উত্তরে বলে, দেখুন, প্রচুর অফার পাচ্ছি তাই যাচাই-বাচাই করতে সময় লাগছে।

বনলতা সমবয়সী সেই কলিগকে বলে, আপনার প্রচুর অফার তাই যাচাই বাচাই করতে সময় লাগছে আর আমার তো কোনো পাত্রই খুঁজে পাচ্ছি না তাই সময় লাগছে। ব্যাপারটা দু’জনের একই-সময় লাগছে কোনো না কোনো কারণে। এটা নিয়ে প্যাঁচ লাগানোর কি আছে?

এই কথা শোনার পর কোনো কলিগই আর এ নিয়ে কথা বলতে আসেনি বনলতার সাথে।

২ ॥

বাবা অসুস্থ হওয়ায় বনলতা বাড়িতে । বাংলা সিনেমায় মুমূর্ষু বাবা মেয়েকে বিয়ে দিয়ে যেমন মরতে চান বনলতার বাবারও আকুতি তেমন। আশ-পাশের লোকজন মুসলিম, বাদবাকি বামন আর হ্মত্রিয়। বনলতার বাবা দ্রুত চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে উঠলেন। ফলে বিয়ের করুণ চাপটা কমে গেলো আপাতত। বনলতা আবার ঢাকায় চলে এল- বাবাকে পাত্র দেখার জোর তাগদা দিয়ে। কিন্তু বাবা তো মনে হয় মেয়ের পাত্র খুঁজতে খুঁজতে আবারও অসুস্থ হয়ে যাবে…

অফিসে লাঞ্চ বিরতির সময় বনলতার এক বিবাহিত সিনিয়র কলিগ ইনিয়ে বিনিয়ে কথা বলতে বলতে তাকে প্রেমের অফার দিয়ে বসল। সে হেসে উড়িয়ে দিলো। অফিস শেষে বাসা আসার পথে সেই কলিগের সাথে আবার দেখা। দুজনে চা খেতে বসল। বনলতা সিনিয়র কলিগকে বুঝিয়ে বলল, এটা অসম্ভব।

– কেন?

– ধর্ম।

– কেউ জানবে না। এটা জাস্ট প্রেম। আর কিছু না।

– এ নিয়ে আর কথা নয়, বনলতা বাই বলে চলে গেল।

বৃহস্পতিবার অফিস শেষে এক সমবয়সী কলিগ চান্স পেয়ে চায়ের অফার দিলো বনলতাকে। সেদিনও থ্যাংকস বলে বাসার দিকে চলছে। এই কলিগ তার ডিভিশনের নয়- অন্য  একটা ডিভিশনের। নাম-আদিল। আদিল পিছু নিয়ে কাছে এসে বলল, কথা আছে।

বনলতা বললো, কী কথা?

– জরুরি কথা।

– ফোনে জানান।

ফোন নম্বর নেই জানালে আদিলকে ফোন নম্বর দিলো বনলতা।

 রাতে আদিল ফোন দিয়ে বললো, কাল তো শুক্রবার। আসুন রমনায় কথা বলি।

– কখন?

– সকালে আসুন। সারাদিন ঘুরব।

– সকালে যেতে পারব না। বিকেলে ফ্রি থাকব।

– তাহলে বিকেলে আসুন।

– ওকে।

পরের দিন রমনাতে আদিল আর বনলতার দেখা। এই কথা সেই কথার শেষে বিয়ের কথা। আদিল জানাল, আপনাকে আমার ভালো লাগে।

বনলতা জানাল, আমারও একটু একটু আপনাকে ভালো লাগে।

আদিল খুশি হলো, আগে জানাননি কেন?

– এই সম্পর্ক ঠিক নয়।

– কেন?

– আমি হিন্দু আপনি মুসলিম।

– তাতে কী?

– সমাজের পরতে পরতে সমস্যায় পড়তে হবে।

– কোনো সমস্যা হবে না যদি আপনি রাজি থাকেন।

– কীভাবে?

– আপনি মুসলিম হয়ে যান।

অনেক আশায় অনেক সংকোচ নিয়ে আদিল বললেও এই প্রস্তাবে বনলতার কোনো ভাবান্তর নেই। বরং এতে আদিলই বিচলিত হয়ে গেল।  আর এ ধরনের প্রস্তাব তো বনলতার কাছে নতুন নয়।

সে হেসে বলল, আপনাকে আমার ভালো লাগে তা আগে জানাতে পারিনি, অথচ আপনি কত সহজভাবে ভালো লাগার কথাটা জানালেন। আবার ধর্ম পাল্টানোর কথাও বললেন। আমি কিন্তু আপনাকে কখনও ধর্ম পাল্টানোর কথা বলছি না। ভালো লাগার কারণে আমি ধর্ম পাল্টালে আপনি কি পাল্টাবেন? আপনি কি হিন্দু হতে পারবেন?

আদিল নানান যুক্তি দিতে লাগল তার ধর্মের পক্ষে। শ্রেষ্ঠত্বের ইতিহাস আবৃত্তি করতে করতে বললো, মানুষ অন্য ধর্ম থেকে মুসলিম হয়, মুসলিম থেকে অন্য ধর্মে যায় না।

এক পর্যায়ে প্রেম-প্রণয়ের চেয়ে ধর্মপ্রচারটাই মুখ্য হয়ে উঠল রমনায়। সন্ধ্যা হয়ে এলে দুজন দুদিকে বিদায় নিয়ে চলে গেল।

৩ ॥

জীবনের তাগিদে সাপে-নেউলে এক হতে পারে। ঠিক তেমনি এক তাগিদে বনলতার বিয়ে পাক্কা বামনের ছেলের সাথে। জাত-পাতের অনেক ব্যাপার থাকলেও একটা বিশেষ কোটায় তা এখানে কার্যকর হচ্ছে না। শতসহস্র সাধনার বিশ্বাস সুযোগ পেলে গোপনে একটু দম নেয়। ছেলে তো বেকার,  জাত-পাতের খরচা বহন করার সামর্থ্য নেই। তার দরকার এমন একজন যে তার বিশ্বাসকে টিকিয়ে রাখার জ্বালানি সরবরাহ করতে পারবে। মেয়ে চাকরি করে- অনেক টাকা ইনকাম করে। আর কী চাই? কারণ ছেলের জাত বামন হলেও বলার মতো কোনো সম্পত্তি নেই। ছেলের বাবার যা ছিল তা কীভাবে যে খরচ হয়েছে সে খবর নতুন প্রজন্মের কেউ জানে না। চাকরিজীবী বনলতার মাধ্যমে যদি বামনের হারানো গৌরব ফিরে আসে এই গোপন আশায় বিয়েতে এক পায়ে রাজি ছেলেপক্ষ। আর অপরদিকে জীবন যৌবন উপভোগ করতে শুদ্র পরিচয় মগজ থেকে শুকাতে সময় লাগেনি বনলতার।

বনলতার বিয়ে
42 Views