26-03-23 Archives - মুগ্ধতা.কম

কবিতা

একটি তর্জনী উচানো কবিতা

গল্পের শুরু— তারপরসময়টা সাতই মার্চ উনিশ শ একাত্তর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সেই দিগন্ত বিস্তৃত মাঠ(আজ যেখানে বঙ্গবন্ধু স্মৃতিস্তম্ভ)সেদিন সেখানে তর্জনী উচিয়ে পাঠ হয়েছিলো একটি শ্রেষ্ঠ কবিতাউচ্চারিত হয়েছিলোএকটি ভুবন কাঁপানো হৃদয়স্পর্শী ভাষণ।সে কবিতা যেনএকটি জাতির জীবনের সুখ-দুঃখের অভিধানসে কবিতা যেনএকটি জাতির হাসি-কান্নার অনাবিল ইতিহাস।সেদিন সে উদ্যানেসিংহের মতো গর্জে উঠেছিলোযে কণ্ঠদীপ্ত প্রত্যয়ে ধ্বনিত হয়েছিলো যে ভাষণপ্রকম্পিত করেছিলো মাঠ-ঘাট-প্রান্তর, আকাশ—বাতাস অমর অজর  সেই কবিতার মহান কারিগর ছিলেন—হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি আমাদের মহান নেতাবঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সেদিন সে কবিতা শোনার জন্যএ উদ্যানে এসেছিলোসারাদেশ থেকে অগনন মানুষ—যোগ দিয়েছিলোকামার-কুমার, জেলে-তাঁতি, কুলি-মুজুরছাত্র-জনতা অফুরান। কানায় কানায় ভরে উঠেছিলো এই মাঠনেমেছিলো জনতার ঢল।কি এক উত্তাল ব্যকুলতায়সে কবিতা শোনার জন্যকী এক গভীর উচ্ছাসময় আবেগে সেদিন সে ভাষণ শোনার জন্য অপেক্ষা অধীর জনতা প্রহর গুণছিলো পিনপতন নিরবতায়।অবশেষে  সকল অধীরতা ভেদ করে সকল নীরবতা ভঙ্গ করেবজ্র কণ্ঠেউচ্চারিত হয়েছিলোকাঙ্ক্ষিত সেই অমর কবিতাগর্জে উঠেছিলো কাঙ্ক্ষিত সেই অগ্নিশপথ ভাষণ—“এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম “ এ যেন এক মাঠ জনতারলালিত স্বপ্নের অনিবার্য প্রত্যাশাকাঙ্ক্ষিত মুক্তির উম্মুক্ত স্মারক। দিকে দিকে চারিদিকে দিগন্তভেদী সে কবিতাসে কবিতার প্রতিটি শব্দঅবিনাশী হয়ে ছড়িয়ে পড়েছিলো সারা বিশ্বে—তারপর—অশেষ সে কবিতার প্রতিটি শব্দ,প্রতিটি পঙক্তি আজও আমাদের নিত্য পাঠের  অনির্বাণ বর্ণমালা।

কবিতা

একটি তর্জনী উচানো কবিতা

গল্পের শুরু— তারপরসময়টা সাতই মার্চ উনিশ শ একাত্তর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সেই দিগন্ত বিস্তৃত মাঠ(আজ যেখানে বঙ্গবন্ধু স্মৃতিস্তম্ভ)সেদিন সেখানে তর্জনী উচিয়ে পাঠ হয়েছিলো একটি শ্রেষ্ঠ কবিতাউচ্চারিত হয়েছিলোএকটি ভুবন কাঁপানো হৃদয়স্পর্শী ভাষণ।সে কবিতা যেনএকটি জাতির জীবনের সুখ-দুঃখের অভিধানসে কবিতা যেনএকটি জাতির হাসি-কান্নার অনাবিল ইতিহাস।সেদিন সে উদ্যানেসিংহের মতো গর্জে উঠেছিলোযে কণ্ঠদীপ্ত প্রত্যয়ে ধ্বনিত হয়েছিলো যে ভাষণপ্রকম্পিত করেছিলো মাঠ-ঘাট-প্রান্তর, আকাশ—বাতাস অমর অজর  সেই কবিতার মহান কারিগর ছিলেন—হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি আমাদের মহান নেতাবঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সেদিন সে কবিতা শোনার জন্যএ উদ্যানে এসেছিলোসারাদেশ থেকে অগনন মানুষ—যোগ দিয়েছিলোকামার-কুমার, জেলে-তাঁতি, কুলি-মুজুরছাত্র-জনতা অফুরান। কানায় কানায় ভরে উঠেছিলো এই মাঠনেমেছিলো জনতার ঢল।কি এক উত্তাল ব্যকুলতায়সে কবিতা শোনার জন্যকী এক গভীর উচ্ছাসময় আবেগে সেদিন সে ভাষণ শোনার জন্য অপেক্ষা অধীর জনতা প্রহর গুণছিলো পিনপতন নিরবতায়।অবশেষে  সকল অধীরতা ভেদ করে সকল নীরবতা ভঙ্গ করেবজ্র কণ্ঠেউচ্চারিত হয়েছিলোকাঙ্ক্ষিত সেই অমর কবিতাগর্জে উঠেছিলো কাঙ্ক্ষিত সেই অগ্নিশপথ ভাষণ—“এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম “ এ যেন এক মাঠ জনতারলালিত স্বপ্নের অনিবার্য প্রত্যাশাকাঙ্ক্ষিত মুক্তির উম্মুক্ত স্মারক। দিকে দিকে চারিদিকে দিগন্তভেদী সে কবিতাসে কবিতার প্রতিটি শব্দঅবিনাশী হয়ে ছড়িয়ে পড়েছিলো সারা বিশ্বে—তারপর—অশেষ সে কবিতার প্রতিটি শব্দ,প্রতিটি পঙক্তি আজও আমাদের নিত্য পাঠের  অনির্বাণ বর্ণমালা।

মুগ্ধতা.কম

২৬ মার্চ, ২০২৩ , ৮:৪৩ অপরাহ্ণ

একটি তর্জনী উচানো কবিতা

গল্পের শুরু— তারপরসময়টা সাতই মার্চ উনিশ শ একাত্তর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সেই দিগন্ত বিস্তৃত মাঠ(আজ যেখানে বঙ্গবন্ধু স্মৃতিস্তম্ভ)সেদিন সেখানে তর্জনী উচিয়ে পাঠ হয়েছিলো একটি শ্রেষ্ঠ কবিতাউচ্চারিত হয়েছিলোএকটি ভুবন কাঁপানো হৃদয়স্পর্শী ভাষণ।সে কবিতা যেনএকটি জাতির জীবনের সুখ-দুঃখের অভিধানসে কবিতা যেনএকটি জাতির হাসি-কান্নার অনাবিল ইতিহাস।সেদিন সে উদ্যানেসিংহের মতো গর্জে উঠেছিলোযে কণ্ঠদীপ্ত প্রত্যয়ে ধ্বনিত হয়েছিলো যে ভাষণপ্রকম্পিত করেছিলো মাঠ-ঘাট-প্রান্তর, আকাশ—বাতাস অমর অজর  সেই কবিতার মহান কারিগর ছিলেন—হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি আমাদের মহান নেতাবঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সেদিন সে কবিতা শোনার জন্যএ উদ্যানে এসেছিলোসারাদেশ থেকে অগনন মানুষ—যোগ দিয়েছিলোকামার-কুমার, জেলে-তাঁতি, কুলি-মুজুরছাত্র-জনতা অফুরান। কানায় কানায় ভরে উঠেছিলো এই মাঠনেমেছিলো জনতার ঢল।কি এক উত্তাল ব্যকুলতায়সে কবিতা শোনার জন্যকী এক গভীর উচ্ছাসময় আবেগে সেদিন সে ভাষণ শোনার জন্য অপেক্ষা অধীর জনতা প্রহর গুণছিলো পিনপতন নিরবতায়।অবশেষে  সকল অধীরতা ভেদ করে সকল নীরবতা ভঙ্গ করেবজ্র কণ্ঠেউচ্চারিত হয়েছিলোকাঙ্ক্ষিত সেই অমর কবিতাগর্জে উঠেছিলো কাঙ্ক্ষিত সেই অগ্নিশপথ ভাষণ—“এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম “ এ যেন এক মাঠ জনতারলালিত স্বপ্নের অনিবার্য প্রত্যাশাকাঙ্ক্ষিত মুক্তির উম্মুক্ত স্মারক। দিকে দিকে চারিদিকে দিগন্তভেদী সে কবিতাসে কবিতার প্রতিটি শব্দঅবিনাশী হয়ে ছড়িয়ে পড়েছিলো সারা বিশ্বে—তারপর—অশেষ সে কবিতার প্রতিটি শব্দ,প্রতিটি পঙক্তি আজও আমাদের নিত্য পাঠের  অনির্বাণ বর্ণমালা।

26-03-23 Archives - মুগ্ধতা.কম

মুগ্ধতা.কম

২৬ মার্চ, ২০২৩ , ৮:৫৮ অপরাহ্ণ

সৈনিক

আচ্ছা তারা কি জানে আমার বাবা একজন স্কুল শিক্ষক? তার চেয়েও বড় কথা তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা? জানলে নিশ্চয় এই আচরণ তারা আমার বৃদ্ধ বাবার সাথে করতে পারতেন না। আমি বাবার ছোট মেয়ে। ছোট বলতে সবার ছোট। মা কয়েকবছর আগে গত হয়েছেন। তিনি গত হয়ে ভালোই হয়েছে। বাবা এখন একজন রিটায়ার্ড স্কুল শিক্ষক। আগের মতো আয়-রোজগাড় তার নেই। আমাদের বাবা-মেয়ের চলতেই কত কষ্ট হয়। আমি জানি মা বেচে থাকলে মায়ের আরো কষ্ট হতো। তিনি আবার বেশি কষ্ট সইতে পারেন না। সইতে পারলে কি আর এতো তাড়াতাড়ি ওপারে যাওয়ার টিকেট কাটতেন? ভাবির সাথে সেদিন মায়ের একটু তর্ক লেগেছিল। মা-বাবার প্রেমের বিয়ে না তবুও মা বাবাকে খুব ভালোবাসতো। বাবা তার সারাটা জীবন পার করলেন মানুষকে শিক্ষা দিয়ে। সেই বাবাকে কেউ যদি লেখাপড়ার বিষয়ে জ্ঞান দেয় তা কি বাবার ভালো লাগবে নাকি মায়ের? বাবা ধৈর্যশীল মানুষ তাই তিনি সয়ে গেছেন কিন্তু মায়ের তো আর অত ধৈর্য নেই। তাই ভাবির সাথে তর্কটা লেগে যায়। ভাইয়া রাতে ফিরলে ভাবি ভাইয়াকে কী যে বলল, তা শুনেই ভাইয়া সেকি রাগ মায়ের উপর। মায়ের বড় ছেলে ভাইয়া। খুব আদর করত মা ভাইয়াকে। ভাইয়া নাকি বাবা-মার কত সাধনার ধন। বিয়ের সাত বছর পরও যখন সন্তান হচ্ছিল না তখন কত তাবিজ-কবজ করে নাকি ভাইয়াকে পায়। যাহোক ধান ভাঙতে আর শিবের গান না গাই। সেদিন ভাইয়া মাকে অনেক কথা শুনিয়েছিল। ওই যে বললাম মায়ের আমার ধৈর্য কম ছিল। তাই ছেলের কথাগুলো বোধ হয় তার খুব লেগেছিল। কোথায় লেগেছিল কে জানে। মা রাতে ঘুমিয়ে পড়লেন কিন্তু পরদিন সকালে আর তার ঘুম ভাঙল না। চিরতরে ঘুমিয়ে গেলেন আমার মা। সেই থেকে আমার বাবার একমাত্র চিন্তাও আমি ভরসাও আমি। অন্য ভাই-বোনেরা যে যার সংসার নিয়ে ব্যস্ত। আমার তো আর সংসার নেই তাই আমি সারাদিন বাবাকে নিয়েই ব্যস্ত থাকি। আমার সংসার থাকবেই বা কি করে? কাকসুন্দরী মেয়েদের কি কেউ বিয়ে করতে চায়? কেউ চাইলেও তাদের বাড়তি চাওয়া পূরণ করার সাধ্য যে বাবার নেই।

বাবাকে  নিয়ে আমি এখন আমাদের জেলার সরকারি মেডিকেলে আছি। বাবার শ্বাসকষ্টটা অনেক বেড়ে গেছে। শীতে মেডিকেলে রোগীর সংখ্যা বেশি। তাই বাবার স্থান হয়েছে ফ্লোরে। আমি কর্তব্যরত একজন নার্সকে বললাম একটা বেডের ব্যবস্থা করে দিতে। তিনি আমাকে বললেন-আপনারা কি এমন ভিআইপি লোক যে বেড না হলে আপনাদের চলবেই না। বেশি অসুবিধা হলে কেবিন ভাড়া নিন। অনেক আরামে থাকবেন।

আমি বলতে চাইলাম, আমার বাবা একজন………

কিন্তু বাবা আমাকে ইশারা করে নিষেধ করলেন। বাবার কথা -যুদ্ধ করেছি আমার দায়য়বদ্ধতা থেকে, দেশ মাতৃকাকে রক্ষা করতে। এখানে সেখানে ‘মুক্তিযোদ্ধা’ ‘মুক্তিযোদ্ধা’ বলে সুযোগ সুবিধা লাভের জন্য নয়।আর দশজন লোক যেভাবে বাঁচে আমিও সেভাবেই বাঁচতে চাই।

বাবা একটু সুস্থ হলে আমি বাবাকে নিয়ে গ্রামে যাওয়ার জন রেলস্টেশনের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হই। কিন্তু কি এক কারনে পুলিশ রাস্তা বন্ধ করে রেখেছে। আমাদের রিক্সাটা ছিল সবার সামনে। রিক্সাওয়ালা অহেতুক বেল বাজিয়ে চলেছেন। ডিউটিরত পুলিশটা এসে রিক্সাওয়ালাকে কষে একটা চড় দিলেন। ট্রাফিক পুলিশ না থানার পুলিশ। বাবা রিক্সাওয়ালার পক্ষ নিয়ে পুলিশকে বললেন, বাবা ধাপ্পড়টা না দিলেও পারতেন। পেশায় না হোক আপনার থেকে তো বয়সে বড়, তার গায়ে হাত তোলা কি ভালো কাজ?

পুলিশটার আত্মসম্মানবোধ হয় একটু বেশি। উনি আমার বাবার কলার টেনে ধরে রিক্সা থেকে নামালেন। “আমাকে আইন শেখাও বেটা, আমাকে আইন শেখাও? এবার দেখ কেমন লাগে।”

আমি বাবাকে ছাড়িয়ে নেওয়ার অনেক চেষ্টা করলাম কিন্তু উনি আমাকেও একটা ধমক দিয়ে চুপ করিয়ে দিল। বাবা তার স্বভাব সূলভ উত্তর দিলেন- আমিতো আইন নিয়ে কিছু বলিনি। আপনি যে কাজটা করলেন সেটা না করলেও পারতেন তাই বলেছি। ক্ষমতা হাতে পেয়ে তো রীতিমতো তার অপব্যবহার করছেন আপনি। একজন রিক্সাওয়ালা বেল বাজালে তার গায়ে হাত তুলতে হবে এটা কোন আইনে আছে বলেন তো।

মাত্র কয়েক সেকেন্ড। আমার বাবা তার উঁচু মাথা নিচু করে ফেললেন। অথচ জীবনে কখনো আমি বাবাকে মাথা নিচু করে হাঁটতেও দেখিনি। মাথা নিচু করে নাকি ভীতুরা হাটাচলা করে। অথচ আজ আমার সাহসী বাবা মাথা নিচু করে আছে আমার সামনে। চুপচাপ বাবা রিক্সায় উঠে এল। কিছুক্ষণ পর রাস্তা খুলে দেওয়া হলো। আমরা চলে এলাম। বাড়িতে এসে বাবা সবসময় চুপচাপই থাকত। মেয়ের সামনে থাপ্পড় খাওয়া কোনো কাপুরুষ বাবাও সহজে হজম করতে পারবে না। আর আমার বাবা তো সাহসী বাবা, একাত্তরের বীর সৈনিক। তিনি কীভাবে এই লজ্জা হজম করবেন। একসপ্তাহও কাটল না। এই লজ্জা নিয়ে আমার বাবার পক্ষে এই নিষ্ঠুর পৃথিবীতে বেঁচে থাকাটা কতটা অসম্ভব ছিল তা একমাত্র আমি জানতাম। তাই তিনিও মায়ের পথ অনুসরণ করলেন। কাউকে কিছু বুঝতে দিলেন না। নিঃশব্দে চলে গেলেন। বাবা মারা যাওয়ার কথা শুনে সেনাবাহিনীর লোকজন এসেছিল আমার বাবাকে সম্মান জানাতে। আমি তাদের তা করতে দেইনি। এতে আমার অন্যান্য ভাইবোন এমনকি গ্রামবাসীও আমার উপর চরম ক্ষেপেছিল। কেন করতে দিব? যে সম্মান আমার বাবা বেঁচে থাকতে পায়নি মরে গিয়ে সেই সম্মান সে কী করবে? কী লাভ সেই সম্মান পেয়ে? সবাই জানে আমার বাবা বার্ধক্য কিংবা শ্বাসকষ্টজনিত কারণে মারা গেছে। কিন্তু আমি তো জানি বাবা কেন মারা গেছে। বাবার প্রতিটি দীর্ঘশ্বাস, উদাস চাহনি আমাকে বারবার শিহরিত করত, আমাকে ভাবাতো, আমাকে ভয় পাইয়ে দিত। একজন মানুষ কীভাবে তিলে তিলে শেষ হয়ে যায় আমি আমার বাবাকে দেখে তা বুঝেছি।

একজন  সাহসী যোদ্ধা যিনি যুদ্ধ করে  দেশের জন্য বিজয় ছিনিয়ে এনেছিলেন কিন্তু জীবন যুদ্ধে তিনি পরাজিত সৈনিকের মতো মাথা নত করে চলে গেলেন এই পৃথিবীর মায়াজাল ছিন্ন করে।

সৈনিক
Comments Off
30 Views

ডা.ফেরদৌস রহমান পলাশ

২৬ মার্চ, ২০২৩ , ৮:৫৮ অপরাহ্ণ

উপমহাদেশে অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসার শুরু যেভাবে

১৮৩৫ সালে উপমহাদেশে সর্ব প্রথম ‘কলকাতা মেডিকেল কলেজ’ প্রতিষ্ঠিত হয়। কলকাতা মেডিকেল কলেজে এমবিবিএস সমমান কোর্সে বাংলা ও বিহারের হাতে গোনা অল্প কয়েকজন শিক্ষার্থী পড়াশোনার সুযোগ পেত। পাকিস্তান শাসনামলে পূর্ব বাংলার কিছু কিছু জায়গায় হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার প্রচলন শুরু হয়। সেই সাথে আস্তে আস্তে পূর্ব বাংলায় ‘অ্যালোপ্যাথিক’ চিকিৎসা বিদ্যার উন্নতি হতে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশে সর্ব প্রথম ১৯৪৬ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। তখন থেকে চিকিৎসা বিদ্যায় স্নাতক এম.বি.বি.এস ডিগ্রি, ১৯৬১ সালে দন্ত চিকিৎসা বিদ্যায় স্নাতক বি.ডি.এস ডিগ্রি চালু হয়। এই স্নাতক ডিগ্রিগুলো পরিচালিত হচ্ছে এদেশের বিভিন্ন পাবলিক ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে।

পরবর্তীতে এদেশে চিকিৎসাবিদ্যায় ও দন্ত চিকিৎসাবিদ্যায়  স্নাতকোত্তর ডিগ্রি চালু হয়। সেই সাথে ১৯৫৭ সালের দিকে ব্রিটিশ- পাকিস্তান পিরিয়ডের এদেশের মধ্যম মানের এল.এম.এফ, এম.এম.এফ চিকিৎসকের কোর্স দু’টি তৎকালীন সরকার বন্ধ করে দেয়। তবে, ঐ কোর্স বন্ধ করার পূর্বে তৎকালিন পূ্র্ব পাকিস্তান- বাংলাদেশ সরকার ১৯৬০ সাল থেকে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত স্যার সলিমুল্লাহ্ মেডিকেল কলেজে ( প্রাক্তন ঢাকা মেডিকেল স্কুল) ব্রিটিশ-পাকিস্তান পিরিয়ডের চিকিৎসাবিদ্যায় লাইসেন্সশিয়েট অব মেডিকেল ফ্যাকাল্টি, মেম্বার অব মেডিকেল ফ্যাকাল্টি (এল. এম. এফ; এম. এম. এফ) সার্টিফিকেট কোর্সধারী ডিপ্লোমা সমমান চিকিৎসকদের ২ বছর মেয়াদে কনডেন্সে এমবিবিএস কোর্স করিয়ে প্রশাসন, জেলা ও মহুকুমা হাসপাতালে নিয়োগ প্রদান করেন। পরবর্তীতে এই চিকিৎসকরা অনেকেই মেডিকেল অধ্যাপকও হয়েছেন।

[চিকিৎসা বিজ্ঞানের ইতিহাস: আদি থেকে আঞ্চলিক’ গ্রন্থের পাণ্ডুলিপি থেকে]

উপমহাদেশে অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসার শুরু যেভাবে - ডা. ফেরদৌস রহমান পলাশ
27 Views

মজনুর রহমান

২৬ মার্চ, ২০২৩ , ৮:৫৮ অপরাহ্ণ

মুগ্ধতা ব্লাড ব্যাংক: রক্তের মতো দামি

হঠাৎ মস্তিষ্কপ্রসূত কিছু আইডিয়া বড়ো কিছু হয়ে ধরা দিতে পারে। ‘মুগ্ধতা ব্লাড ব্যাংক’ আমাদের এমনই হঠাৎ জন্ম নেওয়া এক স্বপ্নের নাম। আমরা হঠাৎ করে ভাবতে শুরু করে করলাম, সামাজিকভাবে এদেশের মানুষ এখন রক্তদানে অনেক সচেতন হলেও রক্তের প্রাপ্যতা এখনও শতভাগ হয়ে উঠতে অনেক দেরি। সেক্ষেত্রে এমন কোনো প্লাটফর্ম যদি হাতের কাছে থাকে যেখানে চাইলেই কেউ একজন রক্তদাতা খুঁজে নিয়ে তার সাথে যোগাযোগ করতে পারবেন, তাহলে কেমন হয়। এই চিন্তা থেকেই মুগ্ধতা ব্লাড ব্যাংকের প্রতিষ্ঠা।

এখন আমাদের এই পোর্টালে অনেকেই নিজেদের রক্তের গ্রুপ নিবন্ধন করছেন। আবার অনেক মানুষ রক্ত খুঁজে পাচ্ছেন- সেটিও আমরা জানতে পারছি।

খুব সম্প্রতি শুরু হওয়া এই উদ্যোগে যে সাড়া আমরা পাচ্ছি তাতে আমাদের তৃপ্তি অনেক গুণ বেড়ে গেছে। গত মাসখানেক সময়ের মধ্যে এই পোর্টালে প্রায় দুইশো মানুষ নিজেদের রক্তদাতা হিসেবে নিবন্ধন করেছেন।
এখন আমরা পরিকল্পনা করছি তরুণদের নিয়ে ক্যাম্পাসভিত্তিক ছোটো ছোটো কমিটি করে দেবার, যাতে করে অনলাইন ছাড়াও রক্তদাতাদের মধ্যে মোটামুটি সহজ পন্থায় যোগাযোগ করা যায়।

সম্পূর্ণ মানবিক এই উদ্যোগে আপনিও সঙ্গী হতে পারেন শুধু রক্তদাতাদের তথ্য নিবন্ধন করে। যে কেউ এখানে তথ্য নিবন্ধন করতে পারবেন নিজের এবং অন্যের।

আসুন নিজে রক্তদানে উদ্বুদ্ধ হই অন্যকে উদ্বুদ্ধ করি। নিজের অজান্তেই হয়তো আপনি বাঁচিয়ে দিতে পারেন অসংখ্য প্রাণ।

যে রক্তের বিনিময়ে আমাদের স্বাধীনতা এসেছে, সেই রক্তেরই আরেকটি অনন্য উদ্যোগ সফলতা পাবে সবার আন্তরিক সহযোগিতায়।

মুগ্ধতা ব্লাড ব্যাংক

মজনুর রহমান
সম্পাদক, মুগ্ধতা ডট কম।

মুগ্ধতা ব্লাড ব্যাংক - রক্তের মতো দামি
25 Views

মুগ্ধতা.কম

২৬ মার্চ, ২০২৩ , ৮:৪৩ অপরাহ্ণ

একটি তর্জনী উচানো কবিতা

গল্পের শুরু— তারপর
সময়টা সাতই মার্চ উনিশ শ একাত্তর 
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সেই দিগন্ত বিস্তৃত মাঠ
(আজ যেখানে বঙ্গবন্ধু স্মৃতিস্তম্ভ)
সেদিন সেখানে তর্জনী উচিয়ে 
পাঠ হয়েছিলো একটি শ্রেষ্ঠ কবিতা
উচ্চারিত হয়েছিলো
একটি ভুবন কাঁপানো হৃদয়স্পর্শী ভাষণ।
সে কবিতা যেন
একটি জাতির জীবনের সুখ-দুঃখের অভিধান
সে কবিতা যেন
একটি জাতির হাসি-কান্নার অনাবিল ইতিহাস।
সেদিন সে উদ্যানে
সিংহের মতো গর্জে উঠেছিলো
যে কণ্ঠ
দীপ্ত প্রত্যয়ে ধ্বনিত হয়েছিলো যে ভাষণ
প্রকম্পিত করেছিলো মাঠ-ঘাট-প্রান্তর, আকাশ—বাতাস 
অমর অজর  সেই কবিতার 
মহান কারিগর ছিলেন—
হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি 
আমাদের মহান নেতা
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। 
সেদিন সে কবিতা শোনার জন্য
এ উদ্যানে এসেছিলো
সারাদেশ থেকে অগনন মানুষ—
যোগ দিয়েছিলো
কামার-কুমার, 
জেলে-তাঁতি, কুলি-মুজুর
ছাত্র-জনতা অফুরান। 
কানায় কানায় ভরে উঠেছিলো এই মাঠ
নেমেছিলো জনতার ঢল।
কি এক উত্তাল ব্যকুলতায়
সে কবিতা শোনার জন্য
কী এক গভীর উচ্ছাসময় আবেগে 
সেদিন সে ভাষণ শোনার জন্য 
অপেক্ষা অধীর জনতা 
প্রহর গুণছিলো পিনপতন নিরবতায়।
অবশেষে  
সকল অধীরতা ভেদ করে 
সকল নীরবতা ভঙ্গ করে
বজ্র কণ্ঠে
উচ্চারিত হয়েছিলো
কাঙ্ক্ষিত সেই অমর কবিতা
গর্জে উঠেছিলো 
কাঙ্ক্ষিত সেই অগ্নিশপথ ভাষণ—
“এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম 
এবারের সংগ্রাম 
আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম “

এ যেন এক মাঠ জনতার
লালিত স্বপ্নের অনিবার্য প্রত্যাশা
কাঙ্ক্ষিত মুক্তির উম্মুক্ত স্মারক। 
দিকে দিকে চারিদিকে দিগন্তভেদী সে কবিতা
সে কবিতার প্রতিটি শব্দ
অবিনাশী হয়ে 
ছড়িয়ে পড়েছিলো সারা বিশ্বে—
তারপর—
অশেষ সে কবিতার 
প্রতিটি শব্দ,প্রতিটি পঙক্তি 
আজও আমাদের নিত্য পাঠের  
অনির্বাণ বর্ণমালা।

কবিতা
25 Views