মুগ্ধতা.কম

১৯ মার্চ, ২০২৩ , ৭:৩৯ অপরাহ্ণ

খোকা থেকে বঙ্গবন্ধু

যাকে বাদ দিলে বাংলাদেশের ইতিহাস বলা যাবে না তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান।

তাঁর জন্ম হয় ১৯২০ সালের ১৭ই মার্চ বুধবারে গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া গ্রামে বনেদি শেখ পরিবারে। তাঁর বাবা শেখ লুৎফর রহমান তাঁর  নাম রাখেন খোকা। খোকা খুব আদরের নাম। দিনে দিনে বড় হয় খোকা। পায়ে হেটে সেই খোকা স্কুলে যায়। দুচোখ মেলে সে বাংলার মাঠ-ঘাট, পথ-প্রান্তর, সোনালি ধানের ক্ষেত দেখে এবং তাঁর চোখ জুড়িয়ে যায়। খোকা যত বড় হয় তত তার বন্ধুর সংখ্যা বাড়ে। খোকা প্রায় তার বন্ধুদের বাড়িতে নিয়ে আসে এবং তার মাকে বলে মা ওদের খেতে দাও। মা আনন্দের সাথে তার বন্ধুদের খেতে দেন। বর্ষাকালে খোকার বাবা তাকে একটি ছাতা কিনে দেন। একদিন খোকা ছাতা ছাড়া ভিজে ভিজে বাড়ি ফেরে। কারণ সে তার ছাতা তার বন্ধু গোপালকে দিয়েছিল। শীতের সময় খোকার বাবা তাকে একটি চাদর কিনে দেন। একদিন চাদর ছাড়াই খোকা বাড়িতে আসে। মা বলে -” তোর চাদর কোথায়? ” খোকা বুক ফুলিয়ে বলে, “মাগো পথের ধারে গাছের নিচে এক বৃদ্ধ মহিলা শীতে কাঁপছিল।  আমি আমার চাদরটি তাকে দিয়েছি”। মা অবাক হয়ে খোকার দিকে তাকিয়ে থাকেন এবং ভাবেন গরিব মানুষের প্রতি তার এত দরদ! ও নিশ্চয় বড় হয়ে মানুষের জন্য অনেক কিছু করবে। তিনি ছোটবেলা থেকে অনেক দয়ালু ও পরোপকারী ছিলেন।

তিনি সাঁতার কাটতে পছন্দ করতেন। তিনি পশুপাখি ভালোবাসতেন।  তিনি বাড়িতে পুষতেন ময়না ও শালিক। তিনি বোনদের সাথে নিয়ে পুষতেন কুকুর ও বানর। তার প্রিয় খেলা ছিল ফুটবল। খোকার বন্ধু গোপাল করুণ সুরে বাঁশি বাজায়। খোকা বন্ধুকে বলে, “তোর বাঁশির সুরে আনন্দ নেই কেন রে গোপাল?” গোপাল হতাশ হয়ে বলে,”আমার চারদিকের মানুষের জীবনে আনন্দ নেই রে খোকা”। খোকা নিশ্চুপ থেকে ভাবে, তাইতো।  আমার চারদিকে এমন অবস্থাই তো দেখছি। এই অবস্থা বদলাতে হবে। দেশের নানা কথা ভাবতে ভাবতে বড় হয় খোকা। স্কুল পার হয়ে কলেজে ঢোকে সে। বাংলার মানুষের কথা, দেশের কথা তাঁকে নিয়ত ভাবায়। তিনি পার হন কলেজের চৌকাঠ। আরো বড় হন তিনি। যুক্ত হন রাজনীতির সঙ্গে। গরিব মানুষের দুঃখ দূর করার জন্য আন্দোলন করেন। আস্তে আস্তে তিনি হয়ে ওঠেন এই জাতির নেতা। দেশের মুক্তির জন্য ১৯৭১ সালে ডাক দেন স্বাধীনতার। 

তিনিই আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান।

আবিদ হানিফ ফাইয়াজ,

৮ম শ্রেণি (ইংরেজি ভার্সন) 

ইন্টারন্যাশনাল গ্রামার স্কুল, রংপুর।

কিশোর রচনা - খোকা থেকে বঙ্গবন্ধু - আবিদ হানিফ ফাইয়াজ
68 Views

হাই হাফিজ

১৯ মার্চ, ২০২৩ , ৭:৩৮ অপরাহ্ণ

মুজিব মানে

মুজিব মানে বর্ণমালা, শিশুর মুখের হাসি,

মুজিব মানে সদ্যফোটা গোলাপ রাশি রাশি।

মুজিব মানে বায়ান্নতে ভাষার আন্দোলন,

মুজিব মানে বাংলা ভাষা, অমূল্য রতন।

মুজিব মানে উদার চিত্ত, মুক্ত নীলাকাশ,

মুজিব মানে উদ্দীপনা, উৎসাহ, উচ্ছ্বাস!

মুজিব মানে পাল তোলা নাও, ভাটিয়ালি সুর।

মুজিব মানে প্রভাত রবি, শীতার্ত রোদ্দুর।

মুজিব মানে বাঙালিদের শক্তি সাহস বল,

মুজিব মানে তরুণ যুবার যুদ্ধে নামার ঢল।

মুজিব মানে ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ,

মুজিব মানে মিটিয়ে দেয়া জুলুম দুঃশাসন।

মুজিব মানে দুর্বার গতি, বাঙালির হিম্মত,

মুজিব মানে স্বাধীনতা, রঞ্জিত রাজপথ।

মুজিব মানে বাংলা মায়ের দুঃখ-কষ্ট শেষ,

মুজিব মানে সার্বভৌম স্বাধীন বাংলাদেশ।

মুজিব মানে
45 Views

মুগ্ধতা.কম

১৯ মার্চ, ২০২৩ , ৭:৩০ অপরাহ্ণ

আবু হানিফ জাকারিয়ার দুটি ছড়া

নিশ্বাসে মুজিব

একটা মানুষ সবার নেতা

সব দলেরই হয়তো।

দেশে এখন লাখো নেতা

তার মত কেউ নয়তো।

এক ডাকেতে সবাই এল

যুদ্ধজয়ের বিশ্বাসে।

আজো মুজিব মিশে আছে

সব মানুষের নিশ্বাসে।

নেতা আসে নেতা যায়

তারমত কেউ হয় না।

নিজের স্বার্থে সবাই নেতা

দেশের কথা কয় না।

তাঁর আদর্শ নিয়েই যদি

নেতা হতো গণ্ডা দুতিন।

এই বাংলায় অনেক আগে

এসে যেত সবার সুদিন।

দেশ যদি আজ সোনার হতো

হত মুজিবের জন্য।

মুজিব মুজিব জপে সবাই

ভিতরে চিন্তা অন্য।

শোকের মাসে ব্যস্ত সবাই

শোকের নামে শোডাউনে।

দল ক্ষমতায় না থাকলে যে

থাকত মুজিব গোডাউনে।

সব ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে

আসুন সবাই সম্মান করি।

নিজের স্বার্থ বাদ দিয়ে দেই

সবাই মিলে এদেশ গড়ি।

মহান এক নেতা

সকল দেশেই আছে নেতা

আছে সবার ইতিহাস।

সব শাসকই চেয়েছিল যে

বাংলা মায়ের সর্বনাশ।

দুশো বছর ইংরেজ শাসন

করল এই দেশটাকে।

দু’যুগ ধরে পাকিস্তানিরাও

দিলো সবার খত নাকে।

এমন দেশের স্বাধিকারে

গর্জে উঠল এক নেতা।

অদম্য সাহসী নেতা তিনি

ছিলেন বেশ স্বাধীনচেতা।  

লাখে লাখে মানুষ যখন

এক সুতোয় গাঁথা হয়।

সেই নেতাকে মারার জন্য

অনেক ফাঁদ পাতা হয়।

স্বাধীনতার ঘোষণা দিলো 

একাত্তরের ৭ই মার্চ।

২৫ তারিখ বন্দি মুজিব

শুরু অপারেশন সার্চ।

লাখোলাখো বীর বাঙালি

জীবন দিয়ে শহিদ হলো।

যাঁর কথাতে লাফিয়ে পড়ে

এমন নেতা কোথায় বল?

জেল-জুলুম অত্যাচারও 

দমাতে তাঁকে পারেনি।

দেশ স্বাধীনের স্বপ্ন দেখা

একদিনও তো ছাড়েনি।

সারা জীবন রাজনীতিতে

নিজেকে বিলিয়ে দিলেন।

নিজ দেশের লোকের কাছে

তিনি কি ফিরিয়ে নিলেন?

তবুও সেই মহান নেতা

পেলেন না একটু ছাড়।

সারাজীবন কাঁদলেও কি

সেই নেতাকে পাব আর?

হাজার বছরে এমন নেতা

কোন দেশেই আসে না।

তাঁর মত করে এই দেশকে

কেউ তো ভালোবাসে না।

আবু হানিফ জাকারিয়ার দুটি ছড়া
46 Views

জাকির আহমদ

১৯ মার্চ, ২০২৩ , ৭:২৪ অপরাহ্ণ

ভাষা-সৈনিক আলহাজ মজিবর রহমান মাস্টার

বাংলাদেশ ও বাঙালি জাতিকে খুবই ভালোবাসতেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান। দেশ ও জাতিকে অতিরিক্ত ভালোবাসার কারনেই তাঁকে প্রাণ দিতে হয়েছে বলেও মনে করেন ভাষা সৈনিক ও মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মো. মজিবর রহমান মাস্টার। কয়েক বছর আগে ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে  দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেছিলেন।

এ বছর ভাষা আন্দোলনে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ পদক পেয়েছেন তিনজন। তাদের মধ্যে একজন রংপুরের গুণী শিক্ষক, ভাষা সৈনিক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মজিবর রহমান মাস্টার। এ উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে করা স্মৃতিচারণমূলক সাক্ষাৎকারটি পুনঃপ্রকাশ করা হলো। 

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ভোররাতে বঙ্গবন্ধু ঘাতকের গুলিতে নির্মমভাবে নিহত হওয়ার কয়েক ঘন্টা আগে বঙ্গবন্ধুর সাথে সাক্ষাৎ করেছিলেন আওয়ামীলীগের এই নেতা। সেই স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তিনি বলেন; বাকশাল গঠন হওয়ার পর দেশের পরিস্থিতি খারাপ হতে থাকে। সবার মধ্যে ছিল অজানা ভয়, উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা। বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যদের মেরে ফেলা হবে এমন গুজবও ছিল। সব সেক্টরেই চলছিল অস্থিরতা। এ ধরনের উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ঢাকায় অবস্থান করছিলেন তিনি। বদরগঞ্জ থানা কো-অপারেটিভ এসোসিয়েশনের (টিসিসি) চেয়ারম্যান থাকার কারনে টিসিসিকে দেয়া হাছকিং মিলের সমস্যা নিয়ে সে সময় দিলকুশায় মেজর ডালিমের অফিসে প্রায় প্রতিদিনই যেতেন তিনি। মেজর ডালিম তাকে প্রতিদিনই বেশ আপ্যায়ন করতেন। কিন্তু ১১ আগস্ট থেকে মেজর ডালিম কারো সাথেই আর দেখা করতেন না। ফলে, তিনিও আর তার সাথে সাক্ষাত করতে পারেননি। ‘মেজর ডালিমের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর থেকে বুকটা কেঁপে উঠেছিল’- বলেন মজিবর মাস্টার। 

তৎকালীন জেলা বাকশালের সাধারণ সম্পাদক মজিবর রহমান মাস্টার বলেন, ঢাকায় গেলে তিনি গণভবন একটু দূরে হাটখোলা বোর্ডিংয়ে রাত যাপন করতেন। মেজর ডালিমের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর পাশের এমপি হোস্টেলে যাতায়াত বেড়ে গিয়েছিল তার। সেখানে রংপুর অঞ্চলের এমপিদের সাথে তাঁর কথা হতো, তিনি দেশের উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলতেন তাদের সাথে। বঙ্গবন্ধু যে ধানম-ির ৩২ বাড়িতে নিরাপদ নয় সে বিষয়েও কথা হয়। কথা হয়, তাঁরা বঙ্গবন্ধুর সাথে দেখা করে বর্তমান পরিস্থিতির কথা জানাবেন।

অবশেষে ১৪ আগস্ট মাগরিবের নামাযের পর রংপুর অঞ্চলের ১৯ জন এমপি, মুন্সিপাড়ার হিরু উকিলকে সাথে নিয়ে ৩২ নাম্বারের বাড়িতে যান মজিবর রহমান মাস্টার। বিষয়টি রংপুর-৪ (পীরগাছা- কাউনিয়া-গঙ্গাচড়া) আসনের এমপি আব্দুল আউয়াল বঙ্গবন্ধুর নিকট উপস্থাপন করবেন বলেও ঠিক করা হয়। এসময় উপস্থিত ১৯জন এমপিরা হলেন, রংপুর-৪ (পীরগাছা- কাউনিয়া-গঙ্গাচড়া) আসনের এমপি আব্দুল আউয়াল, রংপুর সদরের সিদ্দিক হোসেন, মিঠাপুকুরের হামিদ উজ জামান, পীরগঞ্জের মতিয়ার রহমান, বদরগঞ্জ-তারাগঞ্জের আনিছুল হক চৌধুরী, গাইবান্ধার লুৎফর রহমান, কুড়িগ্রামের সাদাকাত হোসেন ছক্কু মিয়া, সামসুল হক চৌধুরী, কুড়িগ্রাম রাজারহাটের সরওয়ার্দী, নাগেশ্বরীর নূরুল ইসলাম পাপ্পু, লালমনিরহাটের ভোলা মিয়া, পাটগ্রামের আবেদ আলী মিয়া, কালিগঞ্জের করিমউদ্দিন মিয়া, নীলফামারীর আ: রউফ, জোনাব আলী, আফসার মোক্তার, কিশোরগঞ্জের আজহারুল ইসলাম প্রমুখ।

মজিবর রহমান মাস্টার বলেন, ‘আমরা যখন ৩২ নাম্বারে যাই বঙ্গবন্ধু তখন লনে পায়চারি করছিলেন। আমাদের দেখে তিনি অবাক হন; জানতে চান রংপুরে কোন সমস্যা হয়েছে কি-না। আমরা তখন জানাই যে কোন সমস্যা না, এমনিতেই দেখা করার জন্য আমাদের আসা।’ এরপর লনের মধ্যেই বড় একটি মোড়ায় বসেন বঙ্গবন্ধু আর আমরা তাঁকে ঘিরে ছোটছোট মোড়ায় বসি- বলেন মজিবর মাস্টার। প্রায় রাত সাড়ে দশটা পর্যন্ত বিভিন্ন বিষয়ে কথা হয়, কয়েক দফায় নাস্তাও খাওয়া হয় সেখানে। এক সময় পরিকল্পনা অনুযায়ী এমপি আব্দুল আউয়াল বঙ্গবন্ধুকে বলেন, তিনি এখানে নিরাপদ নন। তার নিরাপত্তা বাড়ানো দরকার। মজিবর মাস্টার বলেন, ‘এ কথা শোনার সাথে সাথে বঙ্গবন্ধু চিৎকার করে ওঠেন- বলেন ‘আমাকে পাঞ্জাবিরা মারতে পারেনি আর বাঙালিরা মারবে, এটা হতেই পারেনা; আমি এখান থেকে কোথাও যাবোনা।’ এসময় বঙ্গবন্ধু উত্তেজিত হয়ে পড়েন, বারবার বলতে থাকেন ‘বাঙ্গালীরা আমাকে মারবেনা, মারতে পারেনা’।

এরপর আরও কিছু সময় সেখানে অবস্থান করার পর আমরা ফিরে আসি। এমপিরা তাদের হোস্টেলে এবং আমি হাটখোলা বোর্ডিংয়ে রাত কাটাই। সকালে সাথে থাকা রেডিওর খবরে জানতে পারি বঙ্গবন্ধু আর নেই! তাঁকে স্ব-পরিবারে হত্যা করা হয়েছে। এ খবর শোনার পর মনে হয়েছিলো আমার পায়ের তলায় বুঝি মাটি সরে গেছে-আবেগ আপ্লুত হয়ে বলেন মজিবর রহমান মাস্টার। তিনি বলেন, এরপর অনেক ইতিহাস। এমপি হোস্টেলে তিনি গিয়ে ছিলেন, সেখানে থাকা এমপি ও রংপুরের আওয়ামী লীগ নেতাদেরকে বলেছিলেন প্রতিবাদ মিছিল বের করার জন্য, কিন্তু কেউ সাড়া না দেয়ায় সেটি আর করা হয়ে ওঠেনি তার। জীবনের শেষপ্রান্তে এসে এখনো এই যন্ত্রণা বয়ে বেড়াচ্ছেন তিনি।

আলহাজ্ব মো. মজিবর রহমান মাস্টার এর সংক্ষিপ্ত জীবনী: রংপুর জেলার বদরগঞ্জ উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়নের চিয়ারপাড়া গ্রামের বাসিন্দা প্রয়াত সেরাজ উদ্দিনের ছেলে আলহাজ মজিবর রহমান মাস্টার। তার দুই ছেলে মোস্তাফিজার রহমান মজনু ও মোস্তাকুর রহমান শিক্ষক ও প্রকৌশলী। মেয়ে মোনসেফা খানম গৃহিণী। তারা  সবাই বিয়ে করেছেন। ১৯৯৫ সালে প্রবেশিকা পরীক্ষা দিয়ে পদাগঞ্জ দাখিল মাদরাসায় শিক্ষকতা শুরু করেন। পদাগঞ্জ হাইস্কুল ও কলেজ থেকে সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে অবসরে যান। তিনি ১৯৬৯ সাল থেকে ৯০ সাল পর্যন্ত বদরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।  বাকশাল গঠনের পর তিনি দীর্ঘদিন রংপুর জেলা কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এ ছাড়া তিনি বদরগঞ্জ শাখা টিসিসি’র চেয়ারম্যান ছিলেন। সে সময় তিনি বদরগঞ্জের কুতুবপুর ইউপি চেয়ারম্যনও ছিলেন। বদরগঞ্জে কমিউনিস্ট পার্টির নেতা জীতেন দত্ত, ইদ্রিস লোহানী ও ইউসুফ লোহানীর অনুপ্রেরণায় তিনি ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনে যোগ দেন। সেসময় তিনি মেট্রিক পরীক্ষার্থী ছিলেন।

মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেয়ার সময় মজিবর মাস্টার শ্যামপুর হাই স্কুলে সহকারী শিক্ষক হিসেবে ছিলেন। ’৭১ সালে ঢাকার রেডক্রস ময়দানে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চ  ভাষণের পর তিনি বদরগঞ্জে সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদ গঠন করেন। তিনি ওই কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। আহ্বায়ক ছিলেন এমএলএ এলাহী বকস্ সরকার। তবে তাকে শ্যামপুর আঞ্চলিক সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক করা হয়েছিল। বীর বাঙালি অস্ত্র ধরো বাংলাদেশ স্বাধীন করো, জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু এই তিনটি স্লোগানকে বুকে ধারণ করে ২৮ মার্চ তিনিসহ হাজার হাজার মুক্তিকামী মানুষ রংপুর ক্যান্টনমেন্ট ঘেরাও করতে গিয়েছিলেন। সে সময় পাকহানাদারের গুলিতে অসংখ্য বাঙালি শহীদ হন। ১ এপ্রিল সৈয়দপুর ক্যান্টনমেন্ট থেকে ক্যাপ্টেন আনোয়ারের নেতৃত্বে ৩ শতাধিক আনছার, পুলিশ ও সেনা সদস্য বদরগঞ্জে আসেন। সেই বহরে অংশ নেন মজিবর মাস্টার। বদরগঞ্জ থেকে তারা দিনাজপুরের ফুলবাড়িতে যান। সেখানে তাদের গ্রেনেড দিয়ে যুদ্ধে যাওয়ার প্রশিক্ষণ শুরু করেন। বাবার কাছে যুদ্ধে যাওয়ার জন্য বিদায় নিয়ে ৬নং সেক্টরের কমান্ডার ক্যাপ্টেন নোয়াজেসের সঙ্গে  তিনি নীলফামারীর চিলাহাটির ৩টি স্থানে গেরিলা যুদ্ধে অংশ নেন। পরে তিনি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিনের সঙ্গে কলকাতায় দেখা করেন। তার নির্দেশে তিনি ভারতের কুচবিহারের টাপুরহাট ইয়থ ক্যাম্পে সহকারী রিক্রুটিং অফিসার হিসেবে যোগ দেন।

ভাষা-সৈনিক আলহাজ মজিবর রহমান মাস্টার জাকির আহমদ
39 Views