গল্পের শুরু— তারপর
সময়টা সাতই মার্চ উনিশ শ একাত্তর
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সেই দিগন্ত বিস্তৃত মাঠ
(আজ যেখানে বঙ্গবন্ধু স্মৃতিস্তম্ভ)
সেদিন সেখানে তর্জনী উচিয়ে
পাঠ হয়েছিলো একটি শ্রেষ্ঠ কবিতা
উচ্চারিত হয়েছিলো
একটি ভুবন কাঁপানো হৃদয়স্পর্শী ভাষণ।
সে কবিতা যেন
একটি জাতির জীবনের সুখ-দুঃখের অভিধান
সে কবিতা যেন
একটি জাতির হাসি-কান্নার অনাবিল ইতিহাস।
সেদিন সে উদ্যানে
সিংহের মতো গর্জে উঠেছিলো
যে কণ্ঠ
দীপ্ত প্রত্যয়ে ধ্বনিত হয়েছিলো যে ভাষণ
প্রকম্পিত করেছিলো মাঠ-ঘাট-প্রান্তর, আকাশ—বাতাস
অমর অজর সেই কবিতার
মহান কারিগর ছিলেন—
হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি
আমাদের মহান নেতা
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
সেদিন সে কবিতা শোনার জন্য
এ উদ্যানে এসেছিলো
সারাদেশ থেকে অগনন মানুষ—
যোগ দিয়েছিলো
কামার-কুমার,
জেলে-তাঁতি, কুলি-মুজুর
ছাত্র-জনতা অফুরান।
কানায় কানায় ভরে উঠেছিলো এই মাঠ
নেমেছিলো জনতার ঢল।
কি এক উত্তাল ব্যকুলতায়
সে কবিতা শোনার জন্য
কী এক গভীর উচ্ছাসময় আবেগে
সেদিন সে ভাষণ শোনার জন্য
অপেক্ষা অধীর জনতা
প্রহর গুণছিলো পিনপতন নিরবতায়।
অবশেষে
সকল অধীরতা ভেদ করে
সকল নীরবতা ভঙ্গ করে
বজ্র কণ্ঠে
উচ্চারিত হয়েছিলো
কাঙ্ক্ষিত সেই অমর কবিতা
গর্জে উঠেছিলো
কাঙ্ক্ষিত সেই অগ্নিশপথ ভাষণ—
“এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম
এবারের সংগ্রাম
আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম “
এ যেন এক মাঠ জনতার
লালিত স্বপ্নের অনিবার্য প্রত্যাশা
কাঙ্ক্ষিত মুক্তির উম্মুক্ত স্মারক।
দিকে দিকে চারিদিকে দিগন্তভেদী সে কবিতা
সে কবিতার প্রতিটি শব্দ
অবিনাশী হয়ে
ছড়িয়ে পড়েছিলো সারা বিশ্বে—
তারপর—
অশেষ সে কবিতার
প্রতিটি শব্দ,প্রতিটি পঙক্তি
আজও আমাদের নিত্য পাঠের
অনির্বাণ বর্ণমালা।