৭ই মার্চ, ১৯৭১– রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষণের পর বাঙালি জাতি পাকিস্তানি দুঃশাসনেরর শৃঙ্খল ভেঙে স্বাধীন হতে ঐক্যবদ্ধ হন।
৭ই ডিসেম্বর, ১৯৬৯– জাতীয় পরিষদ এবং সতেরই ডিসেম্বর প্রাদেশিক পরিষদের নির্বচন অনুষ্ঠিত হয়। জাতীয় পরিষদের নির্বাচনে কুড়িগ্রাম–লালমনিরহাট এলাকা থেকে রেয়াজ উদ্দিন আহমেদ এবং কালীগঞ্জ, হাতীবান্ধা ও পাটগ্রাম এলাকা থেকে আজিজুর রহমান নির্বাচিত হন। আর প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে লালমনিরহাট থেকে আবুল হোসেন, কালীগঞ্জ থেকে করিম উদ্দিন আহমেদ এবং হাতীবান্ধা ও পাটগ্রাম থেকে আবিদ আলী নির্বাচিত হন। ক্ষমতা হসÍান্তরকে কেন্দ্র করে শুরু হয় পশ্চিমা শাসকগোষ্ঠীর টালবাহনা। ফলে বাঙালি জাতির আর বুঝতে দেরি হলো না যে, এটা পাক বাহিনীর একটা দুরভিসন্ধি স্বাধীনতা সংগ্রামে ছাত্র, শিক্ষক, কৃষক, মজুর সহ বাংলার আপামর জনতা।
৭ই মার্চ, ১৯৭১– রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষণের পর বাঙালি জাতি পাকিস্তানি দুঃশাসনেরর শৃঙ্খল ভেঙ্গে স্বাধীন হতে ঐক্যবদ্ধ হন। প্রদত্ত ঐতিহাসিক ভাষণের খবর টেলিফোনের মাধ্যমে রাতারাতি লালমনিরহাটে পৌঁছে গেলে লালমনিরহাট শহর উত্তপ্ত হয়ে উঠে। পশ্চিমা শোষক ও তাদের দোসরদের চিরতরে উৎখাত করার দৃঢ় সংকল্পে চারদিকে ¯েøাগান উচ্চারিত হতে থাকে। অবাঙালি তথা উর্দূভাষী বিহারী অধ্যুষিত লালমনিরহাট শহরে বিরাজ করতে থাকে টান–টান উত্তেজনা। পরের দিন সকালে বর্তমান লালমনিরহাট সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় প্রঙ্গনে মো. শহিদুল্লাহকে আহবায়ক করে গঠিত হয় সর্বদলীয় স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ। ঐদিন ছাত্র–যুবকদের একটি বিরাট মিছিল লালমনিরহাট শহর প্রদক্ষিণ করে। মো. সামছুল আলম (নাদু) বাংলাদেশের মানচিত্র খচিত লালমনিরহাটে স্বাধীন বাংলার প্রথম পতাকা তৈরী করেন। নয়ই মার্চ নাজিম উদ্দিন আহমেদ লালমনিরহাট থানার পাশে প্রকাশ্য পাকিস্তানি পতাকায় আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দেন। ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সদস্যগণ সম্মিলিতভাবে বাংলাদেশের মানচিত্র খচিত স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করেন। পরে অবাঙালি তথা উর্দূভাষী বিহারীরা দল বেঁধে এসে পতাকাটি নামিয়ে শহিদ মিনারটি ভেঙ্গে দেয়। এরপর থেকে লালমনিরহাটে শুরু হয় খন্ড খন্ড বিক্ষোভ মিছিল, পাকবাহিনী ও তাদের দোসরদের প্রতিহত করার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ এবং অস্ত্র সংগ্রহ অভিযান। সংক্ষিপ্ত গেরিলা প্রশিক্ষণ প্রদানের দায়িত্ব পালন করেন ক্যাপ্টেন আজিজুল হক।
১৫ই মার্চ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দের সমন্বয়ে আবুল হোসেনকে আহবায়ক করে গড়ে তোলা হয় সর্বদলীয় স্বাধীন বাংলা সংগ্রাম পরিষদের লালমনিরহাট থানা শাখা। প্রথম অবস্থায় এ পরিষদের অন্যান্য সদস্যগণ ছিলেন কমরেড চিত্তরঞ্জন দেব, আবদুল কুদ্দুছ, কমরেড শামসুল হক, কাজী মোসলেম উদ্দিন, ছাত্রনেতা মো. শহিদুল্লাহ প্রমূখ। স্বাধীন বাংলা সংগ্রাম পরিষদের কন্ট্রোলরুম স্থাপিত হয় গোশালা রোড সংলগ্ন বর্তমান পাটোয়ারী ভবনে।
২৩শে মার্চ প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষ্যে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের ডাকে বিকেলে খোর্দ্দসাপটানার তৎকালীন জিন্নাহ মাঠে বিশাল জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। ২৬ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষনার পর লালমনিরহাটে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। রংপুর থেকে পাকবাহিনীর সম্ভাব্য আক্রমণ প্রতিহত করতে কয়েকজন আনসার তিস্তা ব্রীজের পূর্ব পাড়ে প্রতিরোধ সৃষ্টি করে। অল্প সময়ের মধ্যেই প্রধান প্রধান সড়ক, রেলপথ এবং বিমান ঘাঁটি এলাকায় বেরিকেড সৃষ্টি করা হয়। পরদিন সকাল থেকে ছাত্র ও যুবকদের চারটি দলে বিভক্ত করে বর্তমান লালমনিরহাট সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। ঐদিনই দুপুরে থানাপাড়ার মিছিল নিয়ে তৎকালীন আপইয়ার্ড কলোনী অতিক্রম করার সময় বিহারীদের সাথে গোলযোগ বেঁধে যায় এবং এক পর্যায়ে কলোনীতে গোলাগুলি শুরু হয়। এসময় বিহারী জিয়ারত খানের ভগ্নিপতি ই.পি.আর জিয়াউল হক– এর একটি টু–টু বোর রাইফেলের গুলি শাহজাহানের বুকের ডান পাশের পাঁজরে আঘাত হানে। বিকেলে তিনি শহিদ হন। লালমনিরহাটে অবাঙালিদের হাতে প্রথম শহিদ তিনি। তার শহিদ হওয়ার খবর দ্রæত চারিদিকে ছড়িয়ে পড়লে আন্দোলন আরও বেগবান হয়ে উঠে। শহর ব্যাপী চলতে থাকে বাঙালি ও অবাঙালিদের মাঝে ধাওয়া–পাল্টা ধাওয়া ও প্রতিশোধ–প্রতিরোধের পালা। পাকবাহিনী তিস্তা ব্রীজের পশ্চিম পাড়ে অবস্থান নিয়ে আবারও প্রচন্ড গোলাবর্ষণ শুরু করে, লালমনিরহাটে শুরু হয় পাকবাহিনী ও অবাঙালি তথা উর্দূভাষী বিহারী কর্তৃক নির্মম হত্যাকান্ড এবং বাড়িঘরে অগ্নি সংযোগ সহ ব্যাপক ধ্বংসাত্বক কর্মকান্ড। পাকবাহিনী বিমান ঘাটিতে অবস্থান নিয়ে প্রথমে হত্যা করে মহেন্দ্রনগর ইউনিয়নের সাতপাটকী গ্রামের করিম বকস মন্ডলের দ্বিতীয় পুত্র আবুল কাশেম মন্ডলকে। লালমনিরহাট কলেজের এইচ.এস.সি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবুল কাশেম মন্ডলকে তারা বিমান ঘাঁটির পাকা রানওয়েতে আছাড় মেরে আহত করে, তারপর দু’পা দুুদিকে টেনে ছিড়ে ফেলে। তিনি লালমনিরহাটে পাকবাহিনীর হাতে প্রথম শহিদ।
৫ই এপ্রিল, সকালে পাকবাহিনী ইলিয়াস হোসেনকে খুঁজতে জেলা শহরের গোশালা বাজার সংলগ্ন তার বাড়ীতে গিয়ে তাকে খুঁজে না পেয়ে তার বৃদ্ধ পিতা একলাল মিয়াকে ধরে মরাতে মারতে বর্তমান লালমনিরহাট রেলওয়ে ওভার ব্রীজের পশ্চিম পাড়ের রিক্সা ষ্ট্যান্ডে নিয়ে গিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে। রেলওয়ে কর্মচারী আবুল মনসুরকে বিকেলে এখানে এনে অপর এগারো জন সহ এক লাইনে দাড় করিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি করা হয় এবং অন্যান্যদের মত তাকেও মৃত ভেবে ডি.আর.এম অফিসের পাশের একটি গর্তে ফেলে দেয়া হয়, কিন্তু গুলি লাগার পরও তিনি সৌভাগ্যবশত বেঁচে যান। এ স্থানটি লালমনিরহাটের বৃহৎ বধ্যভূমি। রেলওয়ে কর্মকর্তা–কর্মচারীসহ বহুলোককে এখানে ধরে এনে হত্যা করে তাদের মৃতদেহ ডি.আর.এম অফিসের পাশের একটি গর্তে ফেলা হয়।
লালমনিরহাটে বিহারীদের হাতে শাহজাহান শহিদ ও পাক বাহিনীর নিঃসংশ হত্যাকাÐের ঘটনায় প্রতিবাদী যুবক তমিজ উদ্দিনের হৃদয়কে ভীষণভাবে ব্যথিত করে। পরের দিনই ৬ই এপ্রিল, তিনি কাকিনার কয়েকজন যুবককে নিয়ে একটি সংগ্রাম পরিষদ গঠন করেন। এ সংগ্রাম পরিষদ তমিজ উদ্দিনের নেতৃত্বে কালীগঞ্জ থানার সকল অস্ত্র ও গোলাবারুদ জব্দ করে নেন। অন্যদিকে সর্বদলীয় স্বাধীন বাংলা সংগ্রাম পরিষদের কালীগঞ্জ শাখা গঠন করে তৎকালীন এম.পি.এ. করিম উদ্দিন আহমেদ ছাত্র–যুবক–জনতাকে মুক্তিযুদ্ধের জন্য সংগঠিত করতে থাকেন। পাকবাহিনী রেলযোগে কালীগঞ্জে প্রবেশ করে বর্তমান স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স প্রাঙ্গন, করিম উদ্দিন পাবলিক পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গন, ভোটমারী ভাখারীর পুল, শ্রীখাতা পাকার পুল সহ বিভিন্ন এলাকায় ক্যাম্প স্থাপন করে দিনের পর দিন বিক্ষিপ্তভাবে বাড়ীঘরে অগ্নি সংযোগ সহ হত্যাযজ্ঞ চালাতে থাকে। পাকবাহিনী বিভিন্ন এলাকা থেকে নিরীহ লোকজন ধরে এনে মদাতী ইউনিয়নের মুশরত মদাতী গ্রামে বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল হকের বাড়ীর সামনের বাঁশের ঝাড় বেষ্টিত পুকুর পাড়ে জবাই করে পুকুরে ফেলে দিতো। পুকুরটি মৃত দেহের স্তুপে পরিণত হয়েছিল। এটি কালীগঞ্জের বৃহৎ বধ্যভ‚মি হিসেবে পরিচিত।
তৎকালীন হাতীবান্ধা–পাটগ্রামের এম.পি.এ. আবিদ আলীর নেতৃত্বে পশ্চিমা শাসকগোষ্ঠীর ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে হাতীবান্ধা ডাকবাংলো মাঠে জনসভা হয়। ৯ই মার্চ ডাকবাংলো মাঠের উত্তর পার্শ্বে সেনেটারি অফিসের সামনে বাংলাদেশের মানচিত্র খচিত পতাকা উত্তোলন পূর্বক জব্বার আলী মিয়াকে আহŸায়ক করে সর্বদলীয় স্বাধীন বাংলা সংগ্রাম পরিষদের হাতীবান্ধা শাখা গঠন করা হয়। এপ্রিল মাসের প্রথমদিকে পাকবাহিনী হাতীবান্ধায় প্রবেশ করে। প্রাণ বাঁচাতে লোকজন ভারতের দিকে ছুটতে থাকেন। পাকবাহিনী হাতীবান্ধায় প্রবেশ করে প্রথমে গুলি চালায় শিংগীমারীর দিকে। এ সময় মুক্তিযোদ্ধারাও পাল্টা জবাব দেন। পাকবাহিনী বড়খাতা, ভবানীপুর, সিন্দুর্না, গড্ডিমারী, শিংগীমারী, পারুলিয়া সহ বিভিন্ন স্থানে তারা ক্যাম্প স্থাপন পূর্বক ব্যাপক অগ্নি সংযোগ ও হত্যাযজ্ঞের মধ্য দিয়ে হাতীবান্ধায় নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে। পূর্ব সিন্দুর্না নুন খাওয়ার কুড়া, দক্ষিণ সিন্দুর্না কাচারীঘর প্রাঙ্গন, পারুলিয়া উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গন, বড়খাতা উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গন, বড়খাতা প্রধান সড়ক সংলগ্ন এলাকা সহ বিভিন্ন স্থানে তারা নিরীহ লোকজনদের ধরে এনে হত্যা করে। নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ে মুক্তিবাহিনী হাতীবান্ধার বড়খাতায় পাকবাহিনীর অবস্থানের উপর প্রবল আক্রমণ চালায়। জনসাধারণের সহায়তায় দিনের পর দিন আক্রমণের মাত্রা আরোও বাড়তে থাকে। এতে দিশেহারা পাকবাহিনী পর্যুদস্তু হয়ে পড়ে এবং পিছু হটতে বাধ্য হয়। ফলে নভেম্বরের ত্রিশ তারিখে হাতীবান্ধা পাকবাহিনী মুক্ত হয়।
১৫ মার্চ, আবিদ আলীর নেতৃত্বে গঠিত হয় সর্বদলীয় স্বাধীন বাংলা সংগ্রাম পরিষদের পাটগ্রাম শাখা। পাকবাহিনী হাতীবান্ধা থেকে পাটগ্রামে প্রবেশের চেষ্টা করলে প্রবল প্রতিরোধের মুখে তাদের সে প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয় এবং পাটগ্রামের অধিকাংশ এলাকা মুক্তিযুদ্ধের শেষ সময় পর্যন্ত পাকবাহিনী মুক্ত থাকে। এখানকার বুড়িমারী হাসর উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় ছয় নং সেক্টর হেড কোয়ার্টার। পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী ইউনিয়নের হাসর উদ্দিন দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে ছিল এ সেক্টরের হেড কোয়ার্টার। এ কারণে বুড়িমারী মুক্তিযুদ্ধের অধিকাংশ সময় শত্রুমুক্ত ছিল বলে জানান বীর মুক্তিযোদ্ধারা। অক্টোবর মাসের দশ তারিখে পরিদর্শনে আসেন প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের প্রধান মন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদ। তিনি হাসর উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ে রাত্রি যাপন করেন ্এবং এ এলাকার সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন।
৪ঠা ডিসেম্বর, ভারত আনুষ্ঠানিক ভাবে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করলে মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় বাহিনীর সমন্বয়ে যৌথ কমাÐ গঠিত হয়, যা মিত্র বাহিনী নামে পরিচিতি পায়। এ সময়ে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মরণপণ লড়াইয়ে আর মুক্তিকামী জনগনের দুর্বার প্রতিরোধের মুখে বড়খাতা, হাতীবান্ধা, কালীগঞ্জ, আদিতমারী ও লালমনিরহাটে এক এক করে পতন হতে থাকে পাকবাহিনীর। তাদের উপর আক্রমণ তীব্র আকার ধারণ করলে পাকবাহিনী দ্রæত পিছু হটে লালমনিরহাটে এসে জমায়েত হতে থাকে। বীর মুক্তিযোদ্ধারা তাদের গোপনীয় স্থান টেরপেয়ে চারিদিক থেতে লালমনিরহাটকে ঘিরে ফেলে। অবস্থা বেগতিক দেখে ঐ দিনে অর্থাৎ ডিসেম্বরের ছয় তারিখ ভোরে তারা তিস্তা ব্রিজ হয়ে রংপুর ক্যান্টনমেন্টের দিকে চলে যায়। ফলে সে দিনই লালমনিরহাট জেলা পাকবাহিনী মুক্ত হয়।
লালনিরহাট মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সূত্রে জানা যায় যে, এ জেলায় প্রায় ২০০০ জন মুক্তিযোদ্ধা, যুদ্ধে অংশগ্রহন করেন। এঁদেও মধ্যে শহিদ হন ৩১ জন, ( লালমনিরহাটে ১০ জন, আদিতমারী ২ জন, কালীগঞ্জে ৭ জন, হাতীবান্ধায় ৯ জন, পাটগ্রামে ১ জন এবং কুমিল্লা জেলার ২ জন)। জেলায় ১ হাজার ৫৪৪ জন মুক্তিযোদ্ধা জীবিত রয়েছেন। ৩৩০ জন মুক্তিযোদ্ধা মৃত্যু বরণ করেছেন।
৩০ লাখ শহিদ ২ লাখের বেশী মা বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম ভ’খÐ, একটি লাল সবুজের পতাকা। বাঙালির স্বাধিকার আন্দলন, বুকে লালন করা স্বপ্নের মুক্তিযুদ্ধ এবং তার বাস্তব চিত্র যে এতোটাই নির্মম, মর্মান্তিক ও বেদনাদায়ক হতে পারে সেটা সত্যি ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন।
৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধের সকল সংগঠক, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও নাম না জানা হাজারো দেশ প্রেমিক নারী–পুরুষ, যারা দেশকে ভালোবেসে, মাতৃভুমিকে রক্ষা করার জন্য নিজের সবকিছু উজার করে দিয়ে, নিজেরি অজান্তে চলে গেছেন মৃদু পায়ে হেঁটে পরোপারের দিকে তাদের প্রতি রইলো বিন¤্র শ্রদ্ধা ও হাজারো সালাম।
তথ্য সূত্র–
১। লালমনিরহাট জেলার মুক্তিযুদ্ধের উইকিপিডিয়া।
২। লালমনিরহাট জেলার মুক্তি যুদ্ধ ও গণহত্যা– মানিক আব্দুর রাজ্জাক।
৩। মুক্তিযুদ্ধে লালমনিরহাট– ড. আশরাফুজ্জামান মÐল।
৪। চার শতাব্দীর লালমনিরহাট–ড. মুহাম্মদ মনিরুজ্জামান।