আমার মায়ের সমুদ্র দেখা হয়নি কখনও
অথচ আমাদের ঘরে ঝোলে একটা শান্ত সমুদ্রতটের ছবি।
ছবিটি মাকে উপহার দিয়েছিল তার ভাই।
সেই সমুদ্রতটে আছে কয়েকটা নারিকেল গাছ, সাদা বালিয়াড়ি আর দুজন সুখী মানুষ।
যারা বসে আছে পেছন ফিরে সূর্যের দিকে তাকিয়ে। সূর্যটা অস্ত যাচ্ছে।
গত ত্রিশ বছর ছবিটা আমাদের সাথে থাকার কারণেই কি না জানি না ছবিটাকে আর ছবি মনে হয় না। মনে হয় আমাদের ঘরেরই একটা অংশ, চায়ের কাপ কিংবা বাবার জায়নামাজ। ছবিতে অভ্যস্ত হয়ে যাওয়াতে সমুদ্র নিয়ে আমাদের কারোরই কোনও বাড়তি উচ্ছ্বাস নাই। সমুদ্র মানে বাড়ির সবাই আমরা বুঝি, সূর্য ডুবে যাচ্ছে আর দুজন সুখী মানব মানবী বসে আছে পেছন ফিরে। যেহেতু মুখ দেখা যায় না তাই আমি, আমার বোন, হয়তো আমার মাও নিজেকে কল্পনা করে ছবির মানুষ হিসেবে।
একদিন বুকে সাহস জোগাড় করে জিজ্ঞেস করেছিলাম, মা তোমার সমুদ্র দেখতে মন চায় না?
মা স্মিত হেসে বলেছিল, সমুদ্র দেখার কী আছে, ও তো মরুভূমির মতো, শুধু বালির বদলে আছে জল। সংসারের মরুভূমিতে থেকে আমার আর সমুদ্র দেখার শখ হয় না বাবা।