কবিতা Archives - মুগ্ধতা.কম

কবিতা Archives - মুগ্ধতা.কম

মুগ্ধতা প্রতিবেদক

৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ , ৩:৩৫ অপরাহ্ণ

শিস খন্দকারের নতুন কবিতার বই

অমর একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হয়েছে কবি শিস খন্দকাররের দ্বিতীয় কবিতার বই ‘সংসার ও দেহসমগ্র’। প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান মূর্ধন্য বইটি বাজারে এনেছে।
বইটিতে শিস খন্দকারের বাছাই করা বেশকিছু কবিতা রাখা হয়েছে। নির্ঝর নৈঃশব্দ আকর্ষণীয় প্রচ্ছদ করেছেন।
বইমেলায় মূর্ধন্য’র ২৬৪-২৬৫ নম্বর স্টলে বইটি পাওয়া যাচ্ছে। ৬৪ পৃষ্ঠার বইটির মূল্য ধরা হয়েছে ২০০ টাকা।
এছাড়াও ২৫% ছাড়ে এবং ‘নগদ’ পেমেন্টে ২১% ক্যাশব্যাকে পাওয়া যাচ্ছে রকমারিতে। এর আগে ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দে শিস খন্দকারের প্রথম কবিতার বই ‘আয়নায় অলীক সঙ্গম’ প্রকাশ করেছিল পাতাপ্রকাশ, রংপুর। সেই বইটি মেলায় পাওয়া যাবে পাতা প্রকাশের ৫৫৭ নম্বর স্টলে।
**

বই : সংসার ও দেহসমগ্র
লেখক : শিস খন্দকার
ধরন : কবিতা
প্রচ্ছদ : নির্ঝর নৈঃশব্দ্য
মূল্য : ২০০ টাকা
প্রকাশনী : মূর্ধন্য
স্টল : ২৬৪-২৬৫

মুগ্ধতা.কম

৫ সেপ্টেম্বর, ২০২১ , ১১:৫৭ পূর্বাহ্ণ

বায়জীদ বোস্তামী বাপ্পীর যুগল কবিতা

জোড়া শালিক

দুটো ভেঙে যাওয়া মানুষ জোড়া লাগে-

কাছে রাখা অতীত ভুলে, এঁটে বসে শরীরে;

গন্ধ ভুলে যায়, বসন্ত ছিঁড়ে খায় মগজ-

বৈরী মন, খোলা চাবুকের ছেঁকা হয় ।

 

সমুদ্র স্নান, চোখে ভাসা রোদ্দুর শহর,

শয্যাশায়ী প্রাক্তন, বিছানায় রোজকার ক্লান্তি-

অসুখের বারান্দায় ঝুপড়ি খেলাঘর সব

মুখ বুজে সয়ে যাওয়া খেয়ালি বায়না।

 

কুড়ি বছরের জমে যাওয়া ভুতুড়ে শরীর-

মেঝে-করিডোরে খেলা করে সুখ উল্লাসে।

ছায়ানীড়ে ভরা যৌবন স্মৃতি, সাড়া দেয়;

ভিজে যায় দুটো ভেঙে যাওয়া মানুষ।

পুরনো সংসার, সাজানো বাগান বিলাস-

নিমিষেই, ঘুনে ধরা নিছক স্বপ্ন লাগে।

লিখে রাখা ডায়রির পাতা খসে পড়ে জানালায়-

ক্লান্ত পথিক খুঁজে নিয়েছে ঠিকানা।

 

অসুস্থ আহ্লাদী, নালা-নর্দমায় ভেসে যায়-

পানির কলে নতুন রিংটোন বাজে, মাঝ রাতে;

পাড়ার গলি-গতরে লাল-নীল বাতি জ্বলে

ভ্রমর জুটেছে-গো জোড়া শালিকের দলে।

কবিও খোরাক হয় কবিতার

কবির খেয়ালি খোরাক হয় ‘কবিতা’

না না সে কবিতার কথা বলিনি;

কেউ কবি হয়, কেউ ‘কবিতা’!

 

কখনও শরীর হইনি কারোর-

শরীরী উম্মাদনা লোভ দেখায় কবিতার,

অশরীরী কবিতার!

 

বেঁচে থাকা হয় ডিম-কুসুমের খোলসে

বেঁচে থাকাটাই কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

কবি শরীরে খোয়া যেতে পারে না,

আলগা সুখ দুয়ারে কাঁটা হয়।

 

যা ছিল তা শরীরী ‘কবিতায়’ অস্ত যায়-

কবিও খোরাক হয় ‘কবিতার’।

আহসান লাবিব

১৯ আগস্ট, ২০২১ , ১০:৪৪ অপরাহ্ণ

একগুচ্ছ শুভ্র কবিতা: আহসান লাবিব

১.
উত্তর পত্র

আমার একটা অন্যায় খামের ভিতর
ডাকপিওনের ব্যাগে ঝুলতে ঝুলতে যাচ্ছে;
১০/১১ হাবিবুল্লাহ স্ট্রিট,  রাজধানী __

নিজেকে অপেক্ষার শেকলে বাঁধলাম,
লাম বলে মীম’এ যাওয়ার সাথে সাথেই শেকলে জং ধরে গেলো।

তবুও কোনো কবুতরের ডানা-
আমার বাড়ির দিকে ঝাপটায়নি আজ পর্যন্ত।

২.
বিচ্ছেদের কোনো দু’আ থাকলে

আমাদের কোনো কথা ছিল না
কাগজে কলম শুয়ে থাকতো__

আমি শব্দহীন ঠোঁট নড়াতাম,
সক্কাল সন্ধ্যা তুমি রেলিংয়ে মুখ ঝুলিয়ে রাখো
হাওয়া তোমাকে চিনে ফেললেই বইতে শুরু করে
তুমি মক্কার দিকে মুখ ঘুরিয়ে নিতে।

মুয়াজ্জিন তোমার কানে আযান পৌঁছে দিলে
তুমি সিজদায় খোদার সাথে কথা বলতে,
আমি দূর থেকে আমিন বলতাম।

তারপর থেকে__
আমাদের এখন আর কোনো কথাই হয় না।

৩.
মনগড়া কবিতা

টেবিলে আঙুল ঠকঠকিয়ে অপেক্ষা গুণন করার পর
কেনো যেনো তুমি ভাগ হয়ে যাও__
ছাদ পেটা ঘরে ঝুলে থাকা সিলিংফ্যানে টলছে
তোমার জন্য লেখা মনগড়া কবিতার কোলাজ।
আজ তুমি নেই,
মনে হয়
দূর কোনো গলির পথে অচেনা ফেরিওয়ালার ঠোঁট।

আমার ঘরের
খুলে রাখা জানালা’র পাঁজর দিয়ে নক্ষত্রের নীড় দেখে
খাঁচায় বন্দী হয়ে থাকা জোড়া কোয়েল
চেঁচিয়ে যাচ্ছে রাতের কানের কাছে;
প্রেম হোক সবার মুক্তির পথ, হে জেলার মুক্তি দাও।

৪.
হাবিবুন নাজিরা

আম্মার মুখটা নরম মাটির আঁচড়ে আঁকা
আমার শেষ ঠিকানা;
তার চোখ জুড়ে বাছুর ছানার দুরন্ত শৈশব
চুল মেঘলা আকাশে ঢেকে যাওয়া বর্ষাকাল
ঠোঁটে ঘাসের গায়ে জন্ম নেওয়া শিশিরের ফুল
হাতের তালুতে পুকুরের চঞ্চল ঢেউয়ের রেখা
কপালে যেন কৃষকের সোনালি ধানের ক্ষেত
গায়ে যেন জড়িয়ে নিয়েছেন পূর্ণিমার চাদর
পায়ের কদমে কেঁপে ওঠা আমার হৃদ স্পন্দন
আঁচলের গিটে ঝনঝন করা বুধবারের নয়ার হাট
হাঁটু গেড়ে বসা মুনাজাতের অক্ষর, পশ্চিম মুখ

এসব কিছু জড়োসড়ো করে আম্মা
শীতল পাটির মতো
কোল বিছিয়ে বসে থাকা সরল ছায়াবৃক্ষ।

প্রমথ রায়

১৪ মার্চ, ২০২১ , ১২:০২ অপরাহ্ণ

প্রমথ রায়ের দুটি কবিতা

কবি আমি অপভ্রংশ

আমি জিন্স পাঞ্জাবি পড়ে কবিতা লেখা শিখে গেছি 

ক্ষয়ে যাওয়া স্যান্ডেল শব্দ তৈরি করে না

                 বরং বেদনাকে জাগিয়ে তোলে,

ডাইরির ভাঁজপাতায় লুকিয়ে রাখা লুকোচুরি 

ভুলে যাওয়া সংখ্যার মতো আর্তনাদ করে

তোমার জমিয়ে রাখা জলসা ঘর শ্যাওলা বন্দি,

আমি রাত জেগে জেগে ভাবি তোমার ইনবক্সের ইতিহাস

তবু একমুঠো রাত আমাকে দিও

আমি সাইকেলের বেলের শব্দ শুনে ভাবি

রাস্তা এখনও রাতের প্রহরীদের প্রলাপ শোনে,

আমি রাতের কারফিউ জেনে ভেবেছিলাম

আবার কি দুমুঠো শব্দে ফুঁ দিয়ে ভাবতে হবে

সব কথা পকেটের ভাঁজে জমা থাকে না

কেউ কেউ অকারণে ভালোবাসে

                                     রাত নয় আমাকে

আমি রাত হতে চাই, অন্ধকারে লুকিয়ে রাখা জোনাকি

তবুও তোমার দেওয়া শর্তমালা বিনাশর্তে চুরি হলে ভাবি

এসব কবিতা নয়, বরং চুরিরই এক অনভ্যেস গাঁথা ।

——————————————————————

শহর নামক ছেঁড়া  পাতা

শহর নামক ছেঁড়া পাতা আমার বাতুলতার মূল্যহ্রাস

আমি কাঠগোলাপ দিয়ে কিনতে চেয়েছি

তোমার হাত বদলানোর ভুভুজেলা

হর্ষধ্বনি হ্রাস করো, আমিও জুতোর রং বদলে নিয়েছি

চামড়া কাটতে কাটতে আমি এখন চামড়াজাত বস্তু

এ কথা লিখে রাখো রাতের নিয়ন বাতির বিলবোর্ডে

আমিও জোনাকীর আলো জমিয়ে রেখে ভেবেছি

তোমার কাছে ছিড়ে নিবো এক টুকরো শহর

তারপর……

তারপর আমরা এ শহরেরই আদিম অ্যাডাম এবং ঈভ।

মজনুর রহমান

১০ মার্চ, ২০২১ , ১:১৩ পূর্বাহ্ণ

মজনুর রহমানের কবিতা: টেলিফোন

আপনাকে বলা হচ্ছে না
আপনি ভুল করে বৃষ্টি ফেলে গেছেন আমাদের বাড়িতে,
ফেরত দেবো দেবো করেও ওদিকে যাওয়া হচ্ছে না।
বাড়িতে অনেক কাজ,
পোষা মেঘগুলো বাচ্চা দিতে শুরু করেছে
গ্রাম থেকে অসুস্থ ঝড়েরা আসে ডাক্তার দেখাতে
দুটো অসুস্থ নদী বিছানায় পড়ে আছে
তাদের সবাইকে সামলাতে হয় একা।

এদিকে আমাদের বুড়ো পাহাড়টা প্রতিবেশীর চাঁদকে আছাড় মেরেছে
সেই প্রতিবেশী মামলা করেছে
মামলার কাজে মাঝে মাঝে আকাশে ছুটতে হয়।

তবু সময় করে আপনার বৃষ্টিকে নাওয়া-খাওয়া করাচ্ছি
উঠানে ছেড়ে দিলে ওরা মেঘের বাচ্চাদের সাথে খেলে,
দেখতে বড় ভালো লাগে
একেক সময় মনে হয়, রেখে দিই।