কবিতা

কবিতা

মুগ্ধতা.কম

১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ , ৮:০৮ অপরাহ্ণ

বাদল রহমান এর কয়েকটি কবিতা

 ১. ডোগা 

কোনো এক কালে

কোনো এক ভাবুক কুমার

তার কল্পিত নারীর বুকের 

অমৃত সুধার কথা ভাবতে ভাবতে  

নির্মাণ করেন আমায়।

পদ্যকারেরা পদ্য-পয়ারে ভজেন –

আমি সুঠাম নারী কামনাহারের লীলা দুধসাগরের ঢেউ

হাতের তালুতে তুলে নেয়া – দুই পাহাড়ের চূড়া। 

আবার তারা অন্ত্যমিলে ছন্দ কেটে বলেন –

আমি

উষ্ণতা ছড়ানো জাদুর ভাণ্ড

কোমলতা ধরানো ক্ষীরের বাটি

শিহরণ জাগানো ঘনো ননীর আধার।

আমি চাষা-ভূষাদের নজরকাড়া সুখ।

গাঁও-গ্রামের প্রান্তিক বধূরা আমায় ভালোবেসে সযত্ন করে 

শিকেয় তুলে রাখেন। 

আমি কল্পনার আল্পনাময় স্তনরূপী 

লালচে চিটে মাটির ডোগা।

২. বাসনা 

আমি 

কুমারপাড়ার তরুণ নগেনেশ্বরপালের 

হাতে গড়া বরেন্দ্রমাটির বাঙালি বাসনা

বিশুদ্ধ জল 

পেটে ধরে রাখি

রোদঝরা দিনের ছাতিফাঁটা  দুপুরে 

আমার পেটে ধরা জল 

পান করিও 

পান করে 

শীতল করিও পরান

আমার ঠোঁটে ঠোঁট রেখে 

খাঁটি বাঙাল হইও

খাঁটি ঘটি হইও 

৩. কলসি 

আমি

খাঁটি লাল চিটকে মাটির খাঁটি কলসি।

বাংলার বাংলাগানে আছে — 

কে যাও গো –

কলসি কাঁকে,

সখী সনে জল আনিতে ; পুকুরঘাটে..

অঙ্গনার কাঁকই আমার সংসার, 

কাঁঁকই আমার প্রেম ; 

কাঁকই আমার সম্বন্ধ আধার। 

আবার, ললনাবতীর ছলনা গানে

পূর্ণাঙ্গ নবযৌবনা ভালোবাসার পূুর্ণ যৌবনে বলে — 

পরানের কলসি রে, তুই যে মোর কৃষ্ণলীলা, তোরে লয়ে যাবো যমুনা ; তোরে লয়ে খেলবো খেলা স্রোতমত্ত জলে।  

আমি কলসি – কাঁকবরেণ্য  মাটির শিল্প। 

৪. ঘটি 

আমি

খাঁটি মাটির

এ দেশি খাঁটি ঘটি

ঘটিরা এক হও, এক হও। 

মানুষ –

মাটিকে ভালোবাসো, মাটিকে কাছে টেনে নাও ; মাটির ভালোবাসা সর্বত্র বিলাও। 

৫. ঘড়া

মাটির ঘড়া-

তুমি যদি হও বাসনার মেঘ

ঝরে পড়ো দেখি আমার বুকে।

মাটির ঘড়া-

বৃষ্টি পড়ে, পাতা নড়ে ; বন-বাদাড়ে।

দেহে দেহে ঘর্ষণে, 

দেহদ্বয়ের বত্রিশ নাড়ীর রক্তমেঘে 

হঠাৎ চমকায় বিদ্যুৎ । 

বুকে বুকের সংগম, শীতল জলবীজের তরঙ্গ, উষ্ণতার তাপ কী অদ্ভুত ; শিহরণে ! 

জাদুর ঘড়া ছত্রিশ গড়ে , 

ঘড়ার দেহ প্রথম নজর কাড়া ধন , 

অমৃত ঘাম অঝোরে ঝরে ;

ঘামের স্রোতে উদাস কুমারের জগৎ প্লাবন। 

হায়! সময়ের ব্যবধানে, পালবংশীয়রা আর-

মাটির প্রেম, মাটির ভালোবাসা; 

ভালোবাসতে বাসতে পুড়ে না আগুনে।

বাদল রহমান এর কয়েকটি কবিতা

আহমেদ অরণ্য

১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ , ৮:০৮ অপরাহ্ণ

আহমেদ অরণ্য এর কয়েকটি কবিতা

এবং ছায়া-কথা

ছায়ার গল্পে আমি সুখী উচ্চারণ। তথা, তুমি লুকায়িত কথা। সাধক এবং ছায়া কথা!

২.

পুরোনো ব্যথার মতো 

মাঝে-মাঝে পুরোনো ব্যথা, চিনচিন করে ওঠা-ভালো। তোমার মুখ মনে পড়ে। আর ছিটকে পড়ে বর্তমান এবং ফর্মালিনযুক্ত আপেল!

. ..

তোমার হয়তো বালাশির কথা মনে আছে, মনে আছে কি?

—কথা ছিল, শুধু পাশাপাশি বসে থাকব। হাত, কিংবা ঠোঁটের খুব কাছে দিয়েও হাঁটব না—আমরা। কিন্তু কে শোনে কার কথা! আমরা নৌকায় ছিলাম। জলের উপর। নির্জন রঙের জল আর আফিম মেশানো—বিকেলে—যেন—প্রেমের সিম্ফনি। .  ..  আহা প্রেম!

. ..

কিন্তু আমার যে—মাছের জীবন প্রিয়? 

সারাদিন—জলে সাঁতরায়, গার্লফ্রেন্ড নিয়ে ডেটিংয়ে যায়, আর জীবনের পাঠ শিখিয়ে—সঙ্গম শেষে, ভুলে যায় অতীত!

আর, তুমিতো পুরোনো ব্যথার মতো চিন চিন করে ওঠো—আইরিন!

৩.

মৃত্যু এবং একটি বিশ্রী কবিতা

স্বপ্ন জলসায়, মৃত্যুকে—বোকা দেখায় ভেবে—শুকনো পাতার গহীনে আর উপকরণ খুঁজি না। 

নতুন পাঠ্য বই—আর সংবিধানের গল্পে—

তোমরা আপেলকে সুন্দরী বলো—শুনে, মুক্তমনা হয়ে উঠি। এবং মুচকি হেসে তোমাদের ভুলে যাই!

২.

বিনিময় বিশেষণে শুধু কয়লা পাওয়া যায়। সাথে,

সাঁতারহীন মাছ, রাবার বিশেষ মন, আর উলঙ্গ আয়নায়, বিশ্রি একটি কবিতা।

তারপর—পথে, কুকুরটির ব্যাস্ত সময় কাটে ইতিহাস রচনায়!

আহমেদ অরণ্য এর কয়েকটি কবিতা

মুগ্ধতা.কম

১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ , ৮:০৮ অপরাহ্ণ

আগুনের পরশমণি ছোঁয়াও প্রাণে; এ জীবন পুণ্য করো

তাপের সমতা চাই প্রতাপী সূর্যের কাছে আজ;

রক্তের সমতা চাই বুদ্ধিদাতা মস্তিষ্কের কাছে।

আগুন পরশমণি কে বুলাবে ক্রিসমাস দিনে?

তারই সাথে দেখা হোক অজস্র মানবস্রোতে মিলে,

আজকের এই পুণ্য ক্ষণে।

মানুষকে কোনো একটা খেলা খেলতেই হয়!

কতটা আম খেতে পারে একজন, 

কতটা কাঁঠাল-কোয়া, তারও আছে কম্পিটিশন।

খেলা আছে হাই-ডিগ্রি ভোল্টেজ আলোয়;

খেলা আছে নীল নীল মৃদু ঝিলমিল;

খেলা আছে মিতালির ও শত্রুতার; তিক্ততার ও মিত্রতার; 

টেবিলের ওপর তাসের; নিচের ত্রাসের;

রক্তচোখের কিংবা আর্দ্র চোখের; 

উঁচু নাক ও চ্যাপ্টা নাকের।

এমন খেলা কি আছে–একপক্ষ জার্সিওয়ালা, বুটওয়ালা, —  প্রতিপক্ষ নগ্নদেহে নগ্ন পায়ে?

এমনও কি খেলা আছে, কাপ আছে, ট্রফি আছে–

গোল্ডেন গ্লাভস্ আছে, ব্যালন ডিঅর আছে 

ফিফার অধীন–

যেখানে একটা পক্ষ প্রশিক্ষণে পক্ক কঠিন;

অথচ অপর পক্ষ অর্থাভাবে পায় নাই কোচ?

জার্সি নেই বুট নেই; শরীরে প্রোটিন নেই?

বিচিত্র এ বিশ্বমাঝে সব-ই আছে।

আম আছে জাম আছে নাম আছে।

গ্রাম আছে নদী আছে জল আছে।

শুধুই নদীর জল পান করে বেঁচে-থাকা 

তুমুল সাঁতারু আছে, খেলোয়াড় আছে;

মনোবল সম্বল করে জিতে নেয় শ্রেষ্ঠ মেডাল।

মেডাল দু’হাতে তুলে আকাশকে উপহাস করে!

ড্রিবলিং প্রাকটিস করে এই দল বুকের ভেতর,

বল আর ব্লাডার যেইখানে সারাদিন চালায় হাপর।

ওদিকে টিকেট নেই ফ্লাইটের;

পকেট গড়ের মাঠ!

অন্তঃসারশূন্য এই কংকর নগর;

হৃদপিণ্ডশূন্য এই আশ্চর্য শহর–

যেখানে হৃদয় সস্তা, শ্রম সস্তা, মেধাও কখনও 

সস্তা দরে বিক্রি হলে আশ্চর্য হবার কিছু নেই!

হ্যারিকেন তলে, দূরে, বহুদূরে আজও হাসি 

হেসে চলে কৃষিমাতা — প্রসন্ন ভরাট!

লক্ষ্মীর আঁচলে আজও চাল ছাড়া আর কিছু নেই।

তাপের সমতা চাই প্রতাপী সূর্যের কাছে আজ;

রক্তের সমতা চাই বুদ্ধিদাতা মস্তিষ্কের কাছে।

আগুন-পরশমণি কে বুলাবে ক্রিসমাস দিনে?

তারই সাথে দেখা হোক অজস্র মানবস্রোতে মিলে,

আজকের এই পুণ্য ক্ষণে।

আগুনের পরশমণি ছোঁয়াও প্রাণে; এ জীবন পুণ্য করো

সোহানুর রহমান শাহীন

১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ , ৮:০৮ অপরাহ্ণ

ইচ্ছের ক্রীতদাস

হাই হাফিজ

১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ , ৮:০৭ অপরাহ্ণ

আবার হেসে উঠবে পৃথিবী

দেখো, একদিন পৃথিবী ঠিক শান্ত হয়ে যাবে,

আকাশের নীলে মিশে হাসবে, খেলবে,

আনন্দ উল্লাস করবে আবার এ পৃথিবী।

মন খারাপ করে থাকবে না বেশি দিন।

পৃথিবীর মানুষগুলো

ঠিক মানুষ হয়ে উঠবে আবার,

স্বমহিমায় সমুজ্জ্বল হবে মনুষ্যত্ববোধ।

জয় হবে মানবতার, মানব সভ্যতার।

থাকবে না কোনো অমানবিকতা,

অনাচার, অনিয়ম, অসভ্যতা।

থাকবে না কোনো

সৌহার্দ-সম্প্রীতির দেয়াল।

সাগর-মহাসাগরে

নাচবে খেলবে উত্তাল নির্মল ঢেউ।

সবুজে সবুজে আবার হেসে উঠবে প্রকৃতি।

চঞ্চল ঝর্ণাধারার ছন্দোময় নৃত্যের তালে

নাচবে সুউচ্চ পাহাড়, গাইবে পাখ-পাখালি।

সুন্দর এ পৃথিবী দেখে আনন্দে খুশিতে

আড়ালে মুচকি হাসবে বিধাতা।

শক্তি পরাশক্তি থাকবে না কোনো দম্ভ।

দেশ মহাদেশ থাকবে না কোনো বিভাজন।

থাকবে শুধু মানুষ, থাকবে মনুষ্যত্ববোধ,

শুধুই একপৃথিবী মানবতা।

আবার হেসে উঠবে পৃথিবী

মুগ্ধতা.কম

১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ , ৮:০১ অপরাহ্ণ

আমি কার পথ অনুসরণ করছি!

যতটুকু জানলাম-

সবকিছু দেখতে নেই, জানতেও নেই আগ বাড়িয়ে 

যেমন চলছি বা যেমন চলছে চলুক

আমি উল্লুক, তাই অমনই থেকে যাই আরো কিছুদিন

কিছুদিন, মানে কেয়ামতের আগে আরও একটা কেয়ামত না হওয়া অবধি।

দজ্জাল বের হয়েছে বেশ আগে, এখন শুধু…

সিংগায় ফু দেয়া মাত্র এক শ্রেণির মানুষ 

মৃত্যু ভয়ে ভীত না হয়ে উল্লাস করবে আমার বিরুদ্ধে

তরবারি হাতে ছুটে আসবে কতল করার প্রত‍্যয়ে

আমার তখন আর কোন কিছু জেনে লাভ হবে না

তখন নাকি সবাই ইয়া নফসি ইয়া নফসি করে

মাতম তুলবে।

অতপর শিকল পরিহিত আমাকে জিজ্ঞাসা করা হবে-

আমি কার পথ অনুসরণ করেছি?

আমি কেবল আকাশের দিকে তাকিয়ে বলবো

আমাকে ক্ষমা করো হে প্রিয় স্বদেশ!

আমি কার পথ অনুসরণ করছি!

মুগ্ধতা.কম

১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ , ৮:০১ অপরাহ্ণ

সোমের কৌমুদী

১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ , ৮:০০ অপরাহ্ণ

নৌকার পাটাতনে ঘুমায় প্রহর – সোমের কৌমুদী

ভরা যুবতী নদীর বুকে ছলাৎ ছলাৎ জল

শুদ্ধ করে তোলে দু’তীরের সবুজকে

সবুজকে করে তোলে আরো সবুজ, করে তোলে প্রাণবন্ত।

দিগন্তহীন নীল আকাশ নিজেকে হারায় নদীর জলে।

নদীর বুকের ছলাৎ ছলাৎ জলে

সদ্য নির্মিত রঙিন পালতোলা নৌকা এগিয়ে চলে

পাটাতনে ঘুমন্ত কাশফুল সকাল

রঙিন পালের ছেঁড়া খোপ স্নিগ্ধ সকালকে বিমর্ষ করে তোলে। 

নৌকা ছুটে চলে প্রহরের পর প্রহর পেরিয়ে

গ্রামের পর গ্রাম পাটাতনে খুঁজে নেয় আশ্রয়

মহাকালের মত দীর্ঘ দুপুর শেষে একটা সোনালি বিকাল

হেলে পড়ে পাটাতনে, বিমর্ষ সকালের মাঝে নিজেকে লুটায়।

প্রহরের শেষে প্রহর আসে, শেষ হয় অষ্টপ্রহর

নৌকা ছুটে চলে, এগিয়ে যায় সামন থেকে আরো সামনে

সোনালী বিকাল ফের মিলে স্বচ্ছ শুভ্র প্রাতে

তবু রাত আসে না, আঁধার ভেড়ে না নৌকার পাটাতনে।

নৌকার পাটাতনে ঘুমায় প্রহর - সোমের কৌমুদী

মুগ্ধতা.কম

১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ , ৮:০০ অপরাহ্ণ

ভগিনী 

আঠারোশো আশি সালের

নয়-ই ডিসেম্বর

পিতা তাহার জহির উদ্দীন

আবু আলী হায়দার।

মাতা রাহাতুন্নেসা সাবেরা চৌধুরানী 

অন্ধকারে আলো দিতে 

জন্মালো জানি।

সভ্যতার শৃঙ্খল ভাঙতে 

হয়তো এলেন তিনি

সবার মুখ করতে উজ্জ্বল 

আসলেন যিনি 

চার দেয়ালে বন্দি সমাজের

দিয়ে ছিলেন মুক্তি 

তিনিই নারী জাগরণের অগ্রদূত

খণ্ডাতেন  শত যুক্তি।

নারীদের শিক্ষা পথের অগ্রসর

নারী সমাজে কাণ্ডারি 

তিনি অন্ধকারে পিদিম

তিনিই আলোর দিশারী। 

ভয় করে জয়

জাগো গো ভগিনী 

আহা কি বিশ্বয় প্রতিবাদ 

জাগো জাগো নারী সমাজ

ডাক দিয়েছিলো বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত। 

এই দিনে মৃত্যু তার 

এই দিনে জন্ম

তিনিই মহীয়সী 

জানুক প্রজন্ম।

ভগিনী - সরকার বাবলু

রবীন জাকারিয়া

১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ , ৮:০০ অপরাহ্ণ