লক ডাউনের দিনগুলি
আমার ক্লাস পরীক্ষা শেষ। টানা কয়েকদিন পরীক্ষার পর শরীর ক্লান্ত।
ক্লাস চলছে। বসন্তকাল। প্রকৃতি সেজেছে অপরুপ সাজে।
পিকনিকের মওশুম চলে গেলেও অনেকেই এখনো পিকনিকে যাচ্ছে।
নবীন বরণ, নারী দিবস উৎসবের শেষ নাই। বলছিলাম রংপুর সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজের কথা। আমি থাকি তারামন বিবি মহিলা হোস্টেলে।
সরকারি নির্দেশে কলেজ বন্ধ ১৮ মার্চ থেকে। হোস্টেল ছেড়ে বাড়িতে অলস সময় পার করছি। মন পড়ে থাকে রংপুরে আমার প্রিয় ক্যাম্পাসে।
প্রিয় বন্ধুদের মুখ, রাত জেগে খুনসুটি। গিটারের টুংটাং শব্দ, রাত বারোটায় জন্মদিন পালন।
বন্ধুরা কেমন আছিস তোরা?
কেমন কাটছে তোদের এই লকডাউনের দিনরাত।
২৫ তারিখে হোস্টেল থেকে নির্দেশনা, আমাদের জিনিসপত্র সরিয়ে নিতে হবে। আমাদের রুমটাকে সরকার কোয়ারান্টাইনের জন্য ব্যবহার করবে।
দেশের জন্য, অন্যের উপকার হবে এজন্য একদিনের নোটিশে এসে রুম খালি করে দেওয়ার জন্য কষ্ট করে এই লক ডাউনের দিনে উপস্থিত হলাম।
আমার মতো সবাই কষ্ট করে উপস্থিত হোস্টেলে রুম খালি করে দেবার জন্য। সারাদিন নীচতলা, উপরতলা করে রুম খালি করে দিলাম।
অবসন্ন শরীর, বন্ধুদের কাছ থেকে সাময়িক বিচ্ছেদ।
প্রিয় রুমমেট যারা আত্মীয় না হয়েও অন্তরে।
রুমটাকে ছেড়ে যেতে হচ্ছে। ছেড়ে যাচ্ছি রুমে ঝুলানো প্রিয় ছবি। মন পড়ে আছে দেওয়ালে লেখা হ্যাপি বার্থডে। বিষন্ন বিকেলে গান শোনার জন্য জানালার পাশের দুটো সাউন্ড বক্স। আবার কবে আসবো। আবার কবে তোদের সাথে দেখা হবে জানিনা।
ভালো থেকো প্রিয় রুম। ভালো থেকো রুমমেটরা। ভালো থেকো বন্ধুরা। ভালো থেকো জুনিয়ররা।
“ভালবাসার কথা গুলো নাইবা হলো মুখোমুখি ফোনে আজ গলা শুনে কাজ চালিয়ে নাওতো দেখি। বন্দি আমি বন্দি তুমি বন্দি থেকে রুখবো মোরা করোনা নামের বজ্রবলি। আতঙ্ক নয় সর্তক থাকি। ”
ভালো থেকো প্রিয় ক্যাম্পাস।
ভালো থেকো প্রিয় বাংলাদেশ।
শিরিন আক্তার প্রিয়া
সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, রংপুরের শিক্ষার্থী